Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

৭৪-তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতির উদ্দেশে ভাষণ


আমার প্রিয় দেশবাসী,

স্বাধীনতার এই পবিত্র উৎসবে  সমস্ত দেশবাসীকে অভিনন্দন। আর অনেক অনেক শুভকামনা। আজ যে আমরা স্বাধীন ভারতে শ্বাস নিচ্ছি, এর পেছনে ভারতমাতার লক্ষ লক্ষ পুত্রকন্যার ত্যাগ, তাঁদের বলিদান, আর ভারতমাতাকে স্বাধীন করে তোলার প্রতি তাঁদের সমর্পন, আজ এমন সব আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের, স্বাধীনতার বীরদের, নরসিংহদের, বীর শহীদদের প্রণাম জানানোর এই অনুষ্ঠান।

আমাদের সেনার লড়াকু জওয়ান, আমাদের আধাসামরিক দল, আমাদের পুলিশ জওয়ানরা, নিরাপত্তা বাহিনীগুলির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক, ভারতমাতা রক্ষায় মোতায়েন থাকেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকেন। আজ তাঁদের সবাইকেও অন্তর থেকে সমাদরে স্মরণ করার, তাঁদের মহান ত্যাগ তপস্যাকে প্রণাম জানানোর উৎসব। আরও একটি নাম – শ্রী অরবিন্দ ঘোষ। বিপ্লবের দূত থেকে আধ্যাত্মিক যাত্রা, আজ তাঁর সংকল্প, তাঁর জন্মজয়ন্তী। আজ তাঁর সংকল্পকে আমাদের সংকল্পকে পূর্ণ করার জন্য তাঁর আশীর্বাদ যেন বর্ষিত হতে থাকে।

আমরা একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আজ ছোট ছোট শিশুদের আমার সামনে দেখা যাচ্ছে না। ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যত ওরা, কেন? করোনা তাঁদের সবাইকে আটকে রেখেছে। এই করোনার সময়কালে লক্ষ লক্ষ করোনা যোদ্ধা, তা তাঁরা ডাক্তার, নার্স, সাফাইকর্মী, অ্যাম্বুলেন্স চালক, কার কার নাম বলবো? তাঁরা এত দীর্ঘ সময় ধরে যেভাবে ‘সেবা পরমো ধর্ম’ এই মন্ত্রকে পালন করে দেখিয়েছেন, পূর্ণ সমর্পনভাব নিয়ে ভারতমাতার সন্তানসন্ততিকে সেবা করেছেন, এমন সমস্ত করোনা যোদ্ধাদেরও আজ আমি প্রণাম জানাচ্ছি।

 এই করোনার সময়কালে আমাদের অনেক ভাইবোন এই করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন, অনেক পরিবারের ওপর প্রভাব পড়েছে। অনেকে নিজেদের প্রাণ হারিয়েছেন। আমি এমন পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই। আর এই করোনার বিরুদ্ধে, আমার বিশ্বাস, ১৩০ কোটি দেশবাসীর অদম্য ইচ্ছাশক্তি, সংকল্প শক্তি, আমাদের এক্ষেত্রেও জয় এনে দেবে, আমরা অবশ্যই বিজয়ী হবোই।

 আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বিগতদিনেও আমরা একপ্রকারে অনেক সংকটের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। বন্যার প্রকোপ, বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব, পূর্ব ভারত, দক্ষিণ ভারত, পশ্চিম ভারতের কিছু এলাকা, কোথাও ধ্বস – মানুষকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, অনেক মানুষ নিজের প্রাণ হারিয়েছেন, আমি সেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতিও সমবেদনা জানাই। আর রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এমন সঙ্কট সময়ে হামেশা, দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে, কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলি মিলেমিশে দ্রুত যথাসম্ভব সাহায্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব, তা সাফল্যের সঙ্গেও করছি।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান আমাদের জন্যে, এটা স্বাধীনতার অনুষ্ঠান, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা মনে করে, নতুন সংকল্পের প্রাণশক্তির উৎসে পরিণত হয়। এক প্রকার দিবসটি আমাদের জন্য নতুন প্রেরণা নিয়ে আসে, নতুন উদ্দীপনা, নতুন উৎসাহ নিয়ে আসে। আর এবার তো আমাদের জন্যে সংকল্প করা খুব জরুরীও। কারণ আগামী বছর যখন আমরা স্বাধীনতা দিবস পালন করবো, তখন আমরা ৭৫ বছরে প্রবেশ করবো। এটি নিজেই একটি অনেক বড় সুযোগ। সেজন্য আজ আগামী দু-বছরের জন্য, অনেক বড় সংকল্প নিয়ে আমাদের এগোতে হবে, ১৩০ কোটি দেশবাসীকে এগোতে হবে। স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষে যখন প্রবেশ করবো, আর স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ যখন পূর্ণ হবে, আমরা আমাদের সংকল্প পূর্তির এক মহা উৎসব রূপে তা পালন করবো।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আমাদের পূর্বজরা, অখণ্ড, একনিষ্ট তপস্যা করে, ত্যাগ ও বলিদানের উচ্চ ভাবনাগুলিকে উৎসাহ দানের মাধ্যমে আমাদের যে রকম স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাঁরা নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু আমাদের একথা ভুললে চলবে না, যে দাসত্বের এত দীর্ঘ সময়কালে কোনও সময় এমন ছিল না, কোনও অ়ঞ্চল এমন ছিল না, যখন স্বাধীনতার আকাঙ্খা মূর্ত হয়নি, স্বাধীনতার ইচ্ছা নিয়ে কেউ না কেউ প্রচেষ্টা করেনি, লড়াই লড়েনি, ত্যাগ করেনি। আর এক প্রকার যৌবন জেলে কাটিয়ে দিয়েছেন, জীবনের সমস্ত স্বপ্নকে ফাঁসির দড়িকে চুম্বন করে আহুতি দিয়েছেন, এমন বীরদের প্রণাম জানিয়ে, অদ্ভূত… তাঁরা নিজেরা একদিকে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের ধারা, আর অন্যদিকে গণ আন্দোলনের ধারা, পূজনীয় বাপুজীর নেতৃত্বে রাষ্ট্র- জাগরণের সঙ্গে গণআন্দোলনের ধারা স্বাধীনতা আন্দোলনকে একটি নতুন প্রাণশক্তি দিয়েছে। আর আমরা আজ স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারছি।

এই স্বাধীনতা আন্দোলন ও ভারত-আত্মাকে দাবিয়ে দেওয়ারও নিরন্তর প্রচেষ্টা হয়েছে, অসংখ্য চেষ্টা হয়েছে। ভারতকে নিজের সংস্কৃতি, রীতি, রেওয়াজ – এই সবকিছু থেকে উপড়ে ফেলার জন্য কত চেষ্টাই না হয়েছে। সেই সময়কাল ছিল, শত শত বছরের সময়কাল ছিল। সাম-দাম-দণ্ড-ভেদ সবকিছু তাদের চরমে ছিল, আর কিছু মানুষ এটা মেনে চলতেন, যে আমরা তো – ‘যাবৎ চন্দ্র দিবাকরঃ’ এখানে রাজত্ব করতে এসেছি। কিন্তু স্বাধীনতার আকাঙ্খা তাঁদের সমস্ত উচ্চাকাঙ্খাকে ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। তাঁদের ভাবনা ছিল, এত বড় বিশাল দেশ, অনেক রাজারাজড়া, নানা ভাষা উপভাষা, পোশাক পরিচ্ছদ, খাদ্যাভ্যাস, অনেক ভাষা, এত বিবিধতার ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা দেশ কখনও ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম লড়তে পারবে না। কিন্তু এই দেশের প্রাণশক্তি তাঁরা চিনে উঠতে পারেননি। আভ্যন্তরীণ প্রাণশক্তি। একতার সূত্র, যা আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছে, তা স্বাধীনতা যুদ্ধে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে ময়দানে অবতীর্ণ হলে, দেশ স্বাধীনতার যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছে।

 আমরা এটাও জানি যে সেই সময়কালে সাম্রাজ্যবাদী ভাবনা নিয়ে যারা ছিলেন, বিশ্বে যেখানে সম্ভব সেখানেই সাম্রাজ্য কায়েম করায় চেষ্টা করেছে। নিজেদের পতাকা পুঁতে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন বিশ্বের সর্বত্র একটি প্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে, অলৌকিক স্তম্ভ হয়ে ওঠে, আর বিশ্বের সর্বত্র স্বাধীনতার আকাঙ্খা মূর্ত হয়ে ওঠে। আর যারা সাম্রাজ্যবাদের অন্ধ দৌড়ে ব্যস্ত ছিলেন, নিজেদের পতাকা পোঁতার কাজে ব্যস্ত ছিলেন, তাঁরা নিজেদের উচ্চাকাঙ্খা, সাম্রাজ্যবাদের উচ্চাকাঙ্খাকে কায়েম করতে বিশ্বকে দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধে ঠেলে দিয়েছে, মানবতাকে তছনছ করে দিয়েছে। জীবনকে ধ্বংস করেছে, বিশ্বকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করে দিয়েছে। কিন্তু তেমন সময়কালেও যুদ্ধের বিভীষিকার মধ্যেও ভারত নিজের স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে ত্যাগ করেনি, এতে কোনও শ্লথতা কিম্বা নমনীয়তাকে প্রশ্রয় দেয়নি, দেশ জীবন উৎসর্গ করার প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করতে থাকে, কষ্ট সহ্য করার সময় কষ্ট সহ্য করতে থাকে, গণআন্দোলনের প্রয়োজনে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে থাকে। আর ভারতের এই লড়াই বিশ্বে স্বাধীনতার আবহ গড়ে তোলে। আর ভারতের এই শক্তি বিশ্বে যে পরিবর্তন এনেছে, তা গোটা বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। ইতিহাস এই কথা কখনও অস্বীকার করতে পারবে না।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

স্বাধীনতার লড়াইয়ে গোটা বিশ্বে ভারতের ঐক্যবদ্ধতার শক্তি, নিজের সমগ্রতার শক্তি, নিজেদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি নিজেদের সংকল্প সমর্পন ও প্রেরণা, সেই প্রাণশক্তি সম্বল করে দেশ এগিয়ে যেতে থাকে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

করোনা বিশ্বব্যাপী মহামারীর মাঝে ১৩০ কোটি ভারতবাসী সংকল্প নিয়েছে। এই সংকল্প, আত্মনির্ভর হওয়ার, আজ সব ভারতবাসীর মন মস্তিষ্কে ছেয়ে আছে আত্মনির্ভর ভারত – এই স্বপ্নকে সংকল্পে পরিবর্তিত হতে দেখছি। আত্মনির্ভর ভারত – এটি শুধুই একটি শব্দ নয়, এটি আজ ১৩০ কোটি দেশবাসীর জন্য মন্ত্র হয়ে উঠেছে।

 আমরা জানি, যখন আত্মনির্ভরতার কথা বলি, আমাদের মধ্যে যাঁরাই ২৫-৩০ বছরের বেশি বয়স, তাঁরা সবাই নিজেদের পরিবারে তাঁদের বাবা-মা, অন্য প্রবীণদের কাছে হয়তো শুনেছেন, হ্যাঁ ভাই, পুত্র, কন্যা, তোমাদের ২০-২১ বছর বয়স হয়ে গেছে, এখন নিজের পায়ে দাঁড়াও। ২০-২১ বছর বয়সী সন্তানসন্ততিদের কাছে পরিবার তাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা করে। আমরা তো স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি থেকে এক কদম দূরে রয়েছি। আমাদের জন্যও, ভারতের মতো দেশের নিজের পায়ে দাঁড়ানো অনিবার্য হয়ে উঠেছে। আত্মনির্ভর হয়ে ওঠা অনিবার্য। যা পরিবারের জন্য অনিবার্য প্রয়োজন, তা দেশের জন্যও প্রয়োজন। সেজন্য আমার বিশ্বাস, ভারত এই স্বপ্নকে চরিতার্থ করে ছাড়বে। আর তার কারণ, আমার দেশের নাগরিকদের সামর্থ্যের ওপর আমার আস্থা রয়েছে, আমি আমার দেশের প্রতিভাদের নিয়ে গর্বিত। দেশের যুবশক্তিতে, মহিলাদের মধ্যে – অপ্রতিম সামর্থ্যতে আমার ভরসা রয়েছে। আমার ভারতের ভাবনা, ভারতের দৃষ্টিভঙ্গীর ওপর ভরসা রয়েছে। আর ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে, যে ভারত যদি একবার দৃঢ়সংকল্প হয়, তাহলে তা করে দেখায়।

 আর সেজন্য আমরা যখন আত্মনির্ভরতার কথা বলি, বিশ্ববাসী তখন উৎসুক হয়ে ওঠে, ভারতের প্রতি প্রত্যাশাও রয়েছে। আর সেজন্য, আমাদের সেই প্রত্যাশা পূরণের জন্য নিজেদের যোগ্য করে তোলার অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে।

আমাদের নিজেদের তৈরি করার অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে। ভারতের ভাবনা-চিন্তায়, ভারতের মতো বিশাল দেশ, ভারত যুবশক্তিতে পরিপূর্ণ দেশ, আত্মনির্ভরতার প্রথম শর্ত হল, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ভারত। এটাই তার ভিত্তি। আর এটাই উন্নয়নকে নতুন গতি, নতুন প্রাণশক্তি জোগাতে সামর্থ্য রাখে।

 ‘বিশ্ব এক পরিবার’ এই শিষ্টাচারগুলি নিয়ে ভারত প্রতিপালিত হয়েছে। বেদে যেমন লেখা ছিল, ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’, তেমনি বিনোবা জি বলতেন, ‘জয় জগৎ’। আর সেজন্য আমাদের জন্য বিশ্ব একটি পরিবার। আর সেজন্য আর্থিক উন্নয়নও হবে, কিন্তু তার পাশাপাশি মানব এবং মানবতারও কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠতে হবে। একে গুরুত্ব দিতে হবে, এসব নিয়েই আমরা এগিয়ে চলি।

আজ, দুনিয়া ইন্টার- কানেক্টেড, এবং ইন্টার ডিপেন্ডেন্ট, আর সেজন্য সময়ের দাবি হল, বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের মতো দেশের অবদান বাড়াতে হবে। ভারতের মতো বিশাল দেশের অবদান বাড়াতে হবে, বিশ্বকল্যাণের জন্যও এটা ভারতের কর্তব্য। আর ভারতের অবদান বাড়াতে হলে, ভারতের নিজেকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে। ভারতকে আত্মনির্ভর হতে হবে। আমাদের বিশ্বকল্যাণের জন্যও নিজেদের সমর্থ্য করে তুলতে হবে। আর তখনই আমাদের শিকড় মজবুত করতে হবে। আমাদের নিজেদের সামর্থ্য হলে তবেই আমরা বিশ্বকল্যাণের জন্য পদক্ষেপ নিতে পারি।

আমাদের দেশে অপার প্রাকৃতিক সম্পদ আছে, কী নেই বলুন তো? আজ সময়ের দাবি হল, আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদগুলির মূল্যয়াণ করতে হবে। আমাদের মানবসম্পদ মূল্য উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। আর আমরা দেশ থেকে কতদিন কাঁচামাল বিদেশে পাঠাতে থাকবো? কাঁচামাল বিদেশে পাঠিয়ে ফিনিসড প্রোডাক্ট আমদানি করতে থাকা, এই খেলা কতদিন চলতে থাকবে? আর সেজন্য, আমাদের আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। আমাদের প্রতিটি শক্তিতে বিশ্বের প্রয়োজন অনুসারে মূল্য যুক্ত করা আমাদের দায়িত্ব, এই ভ্যালু অ্যাডিশন করার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। বিশ্বে অবদান রাখতে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

এভাবে আমরা কৃষি ক্ষেত্রে, একটা সময় সময় ছিল যখন আমাদের বাইরে থেকে গম আমদানী করে আমাদের পেট ভরাতে হতো। কিন্তু আমাদের দেশের কৃষকরা অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন। আত্মনির্ভর ভারত, আজ কৃষিক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হয়েছে। আজ ভারতের কৃষকরা শুধু ভারতবাসীর পেট ভরান না, আজ ভারত সেই অবস্থায় রয়েছে যে, বিশ্বে যাদের প্রয়োজন, তাঁদেরকেও আমরা খাদ্য সরবরাহ করতে পারি। এটা যদি আমাদের শক্তি হয়, আত্মনির্ভরতার এই শক্তি, তাহলে আমাদের কৃষি ক্ষেত্রেও মূল্য সংযোজন অত্যন্ত প্রয়োজন। বিশ্বের প্রয়োজন অনুসারে আমাদের কৃষিজগতে পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। বিশ্বের প্রত্যাশা পূরণের জন্যে আমাদের নিজেদের কৃষিজগতকেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

আজ দেশ অনেক নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে, আর সেজন্য এখন আপনারা দেখুন, মহাকাশ ক্ষেত্রকে আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। দেশের যুব সম্প্রদায়ের সামনে সুযোগ এসেছে। আমরা কৃষিক্ষেত্রকে আইনের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে দিয়েছি, অনেক বন্ধন থেকে মুক্ত করে দিয়েছি। আমরা নিজেদের আত্মনির্ভর করে তোলার চেষ্টা করছি। যখন ভারত মহাকাশ ক্ষেত্রে শক্তিশালী হবে, তখন প্রতিবেশীরাও অবশ্যই এর মাধ্যমে লাভবান হবেন। যখন আপনি শক্তি উৎপাদন ক্ষেত্রে শক্তিশালী হন, তখন যে দেশ তাদের অন্ধকার দূর করতে চায়, ভারত তাদের সাহায্য করতে পারে। দেশে যখন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামো আত্মনির্ভর হয়ে ওঠে, তখন বিশ্বের অনেক দেশের পর্যটন গন্তব্য হিসেবে, স্বাস্থ্য গন্তব্য হিসেবে ভারত তাদের পছন্দের দেশ হয়ে উঠতে পারে। আর সেজন্য প্রয়োজন হল, ভারতে উৎপন্ন পণ্য কিভাবে গোটা বিশ্বের প্রশংসা আদায় করে নিতে পারে। আর একটা সময় ছিল, যখন আমাদের দেশে যা উৎপন্ন হত, আমাদের দক্ষ মানবসম্পদ প্রশিক্ষিত মানব সম্পদ যে যে পণ্য উৎপাদন করতো, গোটা বিশ্বে তার প্রশংসা হত… ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে।

আমরা যখন আত্মনির্ভরতার কথা বলি, তখন শুধু আমদানী কম করতে হবে, এটাই আমাদের ভাবনা নয়। যখন আত্মনির্ভরতার কথা বলি, তখন আমাদের যে দক্ষতা, আমাদের যে মানব সম্পদের সামর্থ্য… যখন পণ্য বাইরে থেকে আসতে শুরু করে, তখন সেই সামর্থ্য বিলীন হতে শুরু করে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তা নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের নিজেদের সেই সামর্থ্যকে বাঁচাতে হবে… বাড়াতেও হবে। দক্ষতাকে বাড়াতে হবে, সৃষ্টিশীলতাকে বাড়াতে হবে… আর এই সমস্ত কিছু নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে জোর দিতে হবে – আত্মনির্ভর ভারতের জন্য, আমাদের সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আমি জানি, যখন আমি আত্মনির্ভরতার কথা বলি, তখন অনেক আশঙ্কাও জাগিয়ে তোলা হয়। আমি একথা মানি, যে আত্মনির্ভর ভারতের জন্য লক্ষ লক্ষ চ্যালেঞ্জ রয়েছে, আর যখন বিশ্ব প্রতিযোগিতার মোড-এ থাকে, তখন চ্যালেঞ্জগুলিও বেড়ে যায়। কিন্তু দেশের সামনে লক্ষ লক্ষ চ্যালেঞ্জ থাকলেও, দেশে রয়েছে কোটি কোটি সমাধান সৃষ্টিকারী শক্তিও…. আমাদের দেশবাসীও রয়েছেন, যারা সমাধানের সামর্থ্য রাখেন।

আপনারা দেখুন, করোনার সঙ্কটকালে আমরা দেখেছি, অনেক ক্ষেত্রেই

****