Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

২০২০-র অ্যাসোচেম প্রতিষ্ঠা সপ্তাহ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

২০২০-র অ্যাসোচেম প্রতিষ্ঠা সপ্তাহ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০

 

 

নমস্কারজি,

 

অ্যাসোচেমের অধ্যক্ষ শ্রী নিরঞ্জন হীরানন্দানিজি, এ দেশের শিল্প জগতের প্রেরণা পুরুষ বরিষ্ঠ শিল্পপতি শ্রী রতন টাটাজি, দেশের শিল্প জগতকে নেতৃত্ব প্রদানকারী সমস্ত বন্ধুগণ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ,

 

আমাদের দেশে বলা হয়, “কুর্বন্নেহ কর্মাণি জিজী-বিষেৎ শতং সমাঃ!” অর্থাৎ, কাজ করতে করতে ১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকার ইচ্ছা রাখ। একথা অ্যাসোচেমের ক্ষেত্রেও সম্পূর্ণ সত্য। বিগত ১০০ বছরে আপনারা দেশের অর্থনীতিকে, কোটি কোটি ভারতবাসীর জীবনকে উন্নততর করার কাজে লেগে রয়েছেন। একথা শ্রী রতন টাটাজির জন্যও, সম্পূর্ণ টাটা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও ততটাই প্রযোজ্য। ভারতের উন্নয়নে টাটা পরিবারের, টাটা গোষ্ঠীর অবদানের জন্য আজ এখানে তাঁকে সম্মানিতও করা হচ্ছে। দেশের উন্নয়নে টাটা গোষ্ঠীর বড় ভূমিকা রয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

বিগত ১০০ বছরে আপনারা স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশের উন্নয়ন যাত্রার প্রত্যেক উত্থান-পতনের অংশীদার। অ্যাসোচেমের প্রতিষ্ঠার প্রথম ২৭ বছর পরাধীনতার সময়ে কেটেছে। সেই সময় দেশের স্বাধীনতা তাদের সবচাইতে বড় লক্ষ্য ছিল। সেই সময় আপনাদের স্বপ্নগুলির ডানা মেলা শৃঙ্খলাবদ্ধ ছিল। এখন অ্যাসোচেমের জীবনে আগামী যে ২৭ বছর আসছে তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ থেকে ২৭ বছর পর ২০৪৭-এ দেশ স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি পালন করবে। এখন আপনাদের পায়ে কোনও শৃঙ্খল নেই। ২৮ স্পর্শ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে আর আপনাদের এই স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে হবে। আগামী বছরগুলিতে আগ্মনির্ভর ভারতের জন্য আপনাদের সম্পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। এই সময় বিশ্ব চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। নতুন প্রযুক্তি রূপে সমস্যাগুলি আসবে। আবার অনেক নতুন নতুন সরল সমাধানও আসবে। আর সেজন্য আজ সেই সময় এসেছে যখন আমাদের পরিকল্পনাও করতে হবে, আবার সক্রিয়ও থাকতে হবে। আমাদের প্রত্যেক বছরকে, প্রত্যেক লক্ষ্যকে রাষ্ট্র গঠনের একটি বৃহত্তর লক্ষ্যের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

আগামী ২৭ বছরে ভারতের আন্তর্জাতিক ভূমিকাই শুধু নির্ধারণ করতে হবে তাই নয়, আমাদের ভারতীয়দের স্বপ্ন এবং সমর্পণ উভয়েরই পরীক্ষা নিতে হবে। এই সময় ভারতীয় শিল্পরূপে আপনাদের  সামর্থ্য, দায়বদ্ধতা এবং সাহসকে সারা বিশ্বে আমাদের একবার প্রত্যয়ের সঙ্গে দেখিয়ে দিতে হবে। আর আমাদের চ্যালেঞ্জ শুধুই আত্মনির্ভরতার নয়, আমাদের এই লক্ষ্যকে কত দ্রুত বাস্তবায়িত করতে পারি সেটাও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।

 

বন্ধুগণ,

 

ভারতের সাফল্য নিয়ে আজ বিশ্বে যত ইতিবাচকতা গড়ে উঠেছে, তা হয়তো এতটা আগে কখনও ছিল না। এই ইতিবাচকতা গড়ে উঠেছে ১৩০ কোটিরও বেশি ভারতবাসীর অভূতপূর্ব আত্মবিশ্বাস থেকে। এখন এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভারত নতুন পথ তৈরি করছে, নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

 

বন্ধুগণ,

 

প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য সরকারের নীতি কী, রণনীতি কী, আগের তুলনায় বর্তমানে কী পরিবর্তন এসেছে, তা নিয়ে বিগত অধিবেশনে সরকারের মন্ত্রীগণ এবং অন্যান্য বন্ধুগণ আপনাদের সকলের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন। একটা সময়ে আমাদের দেশে এমন পরিস্থিতি ছিল, তারপর এমন পথে চলে যাচ্ছিল – কেন ভারত? এখন যেসব সংস্কার দেশে হয়েছে, তার যা প্রভাব দেখা যাচ্ছে, তারপর বলা হচ্ছে, ভারত কেন না? এখন যেমন আগে বলা হত, যখন করের হার এত বেশি ছিল যে কেউ বিনিয়োগ করার আগে ভাবত, কেন ভারত? আজ সেই মানুষেরাই বলেন, যে দেশে করের হার সবচাইতে বেশি প্রতিযোগিতামূলক তাহলে ভারত কেন না? আগে নিয়ম-নীতির এত জাল ছিল যে স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করতেন কেন ভারত? আজ তাঁরাই বলছেন যে শ্রম আইনে কর্মসম্পাদন সহজ হয়েছে, তাহলে ভারত কেন না? আগে এই প্রশ্ন উঠত, যে দেশে এত লাল ফিতের ফাঁস তাহলে ভারত কেন? এখন সেই লোকেরাই দেখছেন যে আর কোনও লাল ফিতের ফাঁস নেই। সেইজন্যই বলছেন, ভারত কেন নয়? আগে অভিযোগ আসত যে উদ্ভাবনের কোনও সংস্কৃতিই তেমন ছিল না। তাহলে, কেন ভারত? আজ ভারতের স্টার্ট-আপ ব্যবস্থার শক্তি দেখে বিশ্ববাসী বিশ্বাসের সঙ্গে বলছে ভারত কেন নয়? আগে বলা হত যে প্রত্যেক কাজে  সরকার এত নাক গলায়, তাহলে,ভারত কেন? আজ যখন বেসরকারি অংশীদারিত্বে আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে, তখন সেই মানুষেরাই জিজ্ঞাসা করছেন, ভারত কেন নয়? আগে অভিযোগ উঠত যে ডিজিটাল পরিকাঠামোর অভাবে কাজ সম্ভব নয়, তাহলে, ভারত কেন? আজ যখন এত আধুনিক ডিজিটাল ব্যবস্থা আমাদের দেশে গড়ে উঠেছে, তখন আবেগের সঙ্গে সবাই বলে, ভারত কেন নয়?

 

বন্ধুগণ,

 

নতুন ভারত নিজের সামর্থ্যে ভরসা রেখে, নিজের সম্পদে ভরসা রেখে আত্মনির্ভর ভারতকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। আর এই লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য উৎপাদন শিল্পে আমাদের বিশেষ অগ্রাধিকার রয়েছে। উৎপাদন শিল্পকে উৎসাহ প্রদানের জন্য আমরা নিরন্তর সংস্কার আনছি। সংস্কারের পাশাপাশি, পুরস্কারকেও আজ দেশের নীতির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম করে তুলেছি। প্রথমবার ১০টিরও বেশি ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা-ভিত্তিক উৎসাহ ভাতার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে অত্যন্ত কম সময়েই এর ইতিবাচক ফলও আমরা দেখতে পাচ্ছি। এভাবে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, উন্নত পরিষেবা এবং পণ্য পরিবহণকে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলার জন্য যে সমস্ত প্রচেষ্টা চলছে, সেগুলিও শিল্প জগতের জন্য পুরস্কারস্বরূপ। পরিভাষা পরিবর্তন থেকে শুরু করে যোগ্যতা পরিবর্তন, সরকারি চুক্তিতে অগ্রাধিকার কিংবা অর্থের জোগান সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলি সমাধান হলে আমাদের লক্ষ লক্ষ অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ উৎসাহিত হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

দেশ আজ কোটি কোটি যুবক-যুবতীর সুযোগ প্রদানের জন্য উদ্যোগগুলির পাশে রয়েছে। আজ ভারতের যুব সম্প্রদায় উদ্ভাবনের মাধ্যমে স্টার্ট-আপ দুনিয়ায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছে। আমরা একটি দক্ষ এবং বাণিজ্য-বান্ধব সরকার গড়ে তোলার চেষ্টা নিরন্তর চালিয়ে যাচ্ছি। এখন অ্যাসোচেমের মতো সংগঠনকে, আপনাদের প্রত্যেক সদস্যকেও এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যে আপনাদের দ্বারা যেন দেশের প্রান্তিকতম ব্যক্তিটিও উপকৃত হন। এর জন্য শিল্প জগতের ভেতরেও আপনাদের সংস্কারকে উৎসাহ যোগাতে হবে। যে পরিবর্তন আমরা নিজেদের মধ্যে দেখতে চাই, সেই পরিবর্তন আমাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানেও করতে হবে। যত স্বাধীনতা, যত অন্তর্ভুক্তিকরণ, যত হাত ধরা, যত স্বচ্ছতা আপনারা সরকারে কিংবা সমাজে রাখতে চান, ততটাই শিল্পের ভেতর মহিলাদের জন্য, নবীন প্রতিভাদের জন্য, ছোট ছোট শিল্প গড়ে তোলার জন্য আমাদের সবাইকে সুনিশ্চিত করাও, আমাদের কর্পোরেট প্রশাসন থেকে শুরু করে লাভ ভাগ করে নেওয়া পর্যন্ত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অভ্যাসগুলিকে যত দ্রুত সম্ভব গ্রহণ করতে হবে। লাভ-কেন্দ্রিক দৃষ্টিকোণ নিয়েই আমরা সেগুলিকে প্রয়োজন-কেন্দ্রিক গড়ে তুলব। সমাজের পাশাপাশি যত বেশি সম্ভব সংহতি সম্ভব হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

আপনাদের থেকে ভালো করে কারা বুঝতে পারবে যে সৎ মতামত সব সময়েই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে  কত বড় ভূমিকা পালন করে। অনেকবার আমাদের সঙ্গে অনেকের দেখা হয়। তাঁরা বলেন যে অমুক কোম্পানির শেয়ার খুব ভালো, অমুক ক্ষেত্রটি খুব ভালো, এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে দাও। কিন্তু আগে এটা দেখি যে পরামর্শদাতা, প্রশংসাকারী নিজেই সেখানে বিনিয়োগ করছেন কিনা। একথা অর্থনীতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য; আজ ভারত অর্থনীতিতে বিশ্বের আস্থা অর্জন করেছে এটা তার প্রমাণ। বিশ্বব্যাপী মহামারীর সময়ে যখন গোটা বিশ্ব বিনিয়োগ নিয়ে ব্যতিব্যস্ত, তখন ভারতে রেকর্ড পরিমাণ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এবং এফপিআই এসেছে। বিশ্বের এই আত্মবিশ্বাস নতুন স্তরে পৌঁছাক, এর জন্য বাড়িতেও আমাদের নিজস্ব বিনিয়োগকে অনেকগুণ বাড়াতে হবে। আজ আমাদের কাছে প্রত্যেক ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনাও রয়েছে, আর নতুন সুযোগও রয়েছে।

 

বন্ধুগণ,

 

বিনিয়োগের আরেকটি দিকও রয়েছে যা নিয়ে আলোচনা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেটা হল গবেষণা ও উন্নয়ন-নির্ভর বিনিয়োগ। ভারতের গবেষণা ও উন্নয়ন-নির্ভর বিনিয়োগ বৃদ্ধির পথে যাওয়ার অত্যন্ত প্রয়োজন রয়েছে। আমেরিকার মতো দেশে যেমন ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে আসে, তেমনি আমাদের দেশেও ততটাই বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে আসে। এরও একটা বড় অংশ তথ্যপ্রযুক্তি ও ওষুধ উৎপাদন শিল্প এবং যানবাহন ক্ষেত্র থেকে আসে। অর্থাৎ, আজ গবেষণা ও উন্নয়নে বেসরকারি ক্ষেত্রের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। কৃষি, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, শক্তি উৎপাদন, নির্মাণ শিল্প ইত্যাদি প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রতিটি ছোট-বড় কোম্পানিকে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য একটি নিশ্চিন্ত টাকার অঙ্ক ঠিক করা উচিৎ।

 

বন্ধুগণ,

 

আজ যখন ‘লোকাল’কে ‘গ্লোবাল’ করে তোলার জন্য আমরা মিশন মোডে কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছি, তখন আমাদের প্রতিটি ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে আগামী যে কোনও তাৎক্ষণিক চাহিদাকে ভারত কিভাবে বাস্তবায়িত করবে, তার জন্য একটি কার্যকরী ব্যবস্থাপনা থাকা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আপনারা বিদেশ মন্ত্রকেরও সাহায্য নিতে পারেন। কোভিডের এই সঙ্কট সময়ে আমরা দেখেছি যে বিদেশ মন্ত্রকের সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক উন্নততর ব্যবস্থাপনা থাকলে কিভাবে আমরা দ্রুতগতিতে নিজেদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারি! বিদেশ মন্ত্রক, কমার্স অ্যান্ড ট্রেড আর অ্যাসোচেমের মতো শিল্প সংগঠনগুলির মধ্যে উন্নততর বোঝাপড়া আজ সময়ের চাহিদা। আমি আপনাদেরকে অনুরোধ জানাই, এই আন্তর্জাতিক রূপান্তরণ নিয়ে দ্রুতগতিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে, দ্রুতগতিতে সাড়া দিতে কিভাবে উন্নততর ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়, এক্ষেত্রে আপনারা অবশ্যই সরকারকে নিজেদের পরামর্শ। দিন। আপনাদের পরামর্শ আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।

 

বন্ধুগণ,

 

ভারত নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে বিশ্বকে সাহায্য করতেও সক্ষম। কৃষক থেকে শুরু করে ওষুধ শিল্প পর্যন্ত ভারত এটা করে দেখিয়েছে। করোনার সঙ্কট সময়েও সমস্ত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ভারত ‘বিশ্বের ঔষধি নির্মাণ কেন্দ্র’এ পরিণত হয়ে ওঠার দায়িত্ব পালন করে সারা পৃথিবীতে প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছিয়েছে। এখন ভ্যাক্সিন নিয়ে ভারত নিজেদের প্রয়োজন তো মেটাবেই, বিশ্বের অনেক দেশের প্রত্যাশাও পূরণ করবে।

 

বন্ধুগণ,

 

গ্রাম ও শহরের মধ্যে বিভাজনকে হ্রাস করানোর জন্য সরকার যে প্রচেষ্টা ছয় বছর ধরে করছে, শিল্প জগৎ সেই প্রচেষ্টাগুলিকে গুণিতক হারে বাড়াতে পারে। অ্যাসোচেমের সদস্যরা আমাদের গ্রামে উৎপাদিত পণ্যগুলিকে বিশ্ব মঞ্চে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন। আজকাল আপনারা হয়তো দেখেন বা শোনেন, যে কোনও গবেষণায় দেখা গেল কোনও ফসলে বেশি প্রোটিন আছে! তখন মানুষ সেটা খাওয়া শুরু করে দেয়। আমরাও সেটা আমদানি করতে শুরু করে দিই। আমরা জানতেও পারি না যে আমাদের বাড়িতে, আমাদের টেবিলে, পাতা থালায় কিভাবে বিদেশি জিনিস প্রবেশ করছে। আমাদের দেশে উৎপন্ন সমতুল্য জিনিসের অনেক বড় ভাণ্ডার রয়েছে। আর এই ভাণ্ডার দেশের কৃষকদের কাছে আছে, দেশের গ্রামগুলিতে আছে। আমাদের জৈব চাষ ঔষধি পণ্য এমনই অনেক কিছুকে অ্যাসোচেম প্রচার ও প্রসার করতে পারে। বিশ্বের বাজারে ভারতের উৎপাদিত পণ্যের ঢাক পেটাতে পারে। এইসব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় নিয়মিত প্রতিযোগী হয়ে উঠে এগুলির প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে স্টার্ট-আপগুলিকে উৎসাহ দিয়ে আপনারা এই কাজ করতে পারেন। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারগুলি এবং খামার সংগঠনগুলি সবাই মিলেমিশে এই লক্ষ্যে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। যদি আমাদের খামার ক্ষেত্র উন্নত হয়ে ওঠে, উন্নত পরিকাঠামো পায়, উন্নত বাজার পায়, তাহলে আমাদের গোটা গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধির শিখরে পৌঁছতে পারে।

 

বন্ধুগণ,

 

একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে অটলজি ভারতকে হাইওয়ের মাধ্যমে যুক্ত করার লক্ষ্য রেখেছিলেন। আজ দেশে ‘ফিজিক্যাল’ এবং ‘ডিজিটাল’ পরিকাঠামো নির্মাণে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের কৃষকরা কিভাবে ‘ডিজিটাল’ পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছতে পারেন, সেজন্য দেশের প্রত্যেক গ্রাম পর্যন্ত ‘ব্রডব্যান্ড’ যোগাযোগ ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়ার কাজে আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছি। এভাবে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রকে আরও শক্তি প্রদান করতে, তথ্যপ্রযুক্তি এবং বিপিও-গুলির বাধা-বিপত্তি সরানো হয়েছে। ডিজিটাল ক্ষেত্রের নিরাপত্তার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

উন্নত পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য লগ্নি-সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সুযোগ ব্যবহার করতে হবে। সরকারি ক্ষেত্রের ব্যাঙ্কগুলিকে শক্তিশালী করা, বন্ড বাজারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি – এইসব সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। এভাবে সার্বভৌমিক সমৃদ্ধি তহবিল এবং পেনশন তহবিলগুলির ক্ষেত্রে কর-এ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আরইআইটি এবং আইএমভিআইটি-গুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরিকাঠামো-সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিগুলিকেও সম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

জরুরি পরিষেবা প্রদান ও সঠিক আবহ গড়ে তোলার কাজ সরকার করতে পারে, সরকার উৎসাহ যোগাতে পারে, নীতিতে পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু আপনাদের মতো শিল্প জগতের নেতৃত্ব প্রদানকারী বন্ধুরাই এই সহায়তাকে সাফল্যে পরিবর্তিত করবেন। আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করবেন। সেজন্য নিয়ম-নীতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের জন্য দেশ দায়বদ্ধ। বিগত ছয় বছরে আমরা ১,৫০০-রও বেশি পুরনো আইন বাতিল করে দিয়েছি। দেশের প্রয়োজন দেখে নতুন আইন প্রণয়নের কাজও নিরন্তর জারি রয়েছে। ছয় মাস আগে যে কৃষি সংস্কার করা হয়েছে, সেগুলির মাধ্যমে এখন দেশের কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা সবাইকে আত্মনির্ভর ভারত নির্মাণে একনিষ্ঠ হয়ে সঙ্কল্পবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাই। অ্যাসোচেমের সমস্ত সদস্য বন্ধুদের আগামী বছরগুলির জন্য আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। শ্রী রতন টাটাজিকেও আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভকামনা। আর অ্যাসোচেম নতুন উচ্চতা অতিক্রম করুক। আগামী ২০৪৭-এ স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তি আপনাদের পরবর্তী ২৭ বছর সেই লক্ষ্য নিয়ে আজকের এই আপনাদের শতবার্ষিকী সমারোহ সম্পন্ন করবেন এটা আমার পূর্ণ বিশ্বাস। আরেকবার আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

ধন্যবাদ।

***

 

 

CG/SB/DM