নয়াদিল্লি, ০৬ এপ্রিল, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী – স্বাগত, বন্ধুগণ!
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – ধন্যবাদ, ধন্যবাদ স্যার!
প্রধানমন্ত্রী – স্বাগত!
প্রধানমন্ত্রী – আমি আপনাদের সকলের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত। আমার মনে হয় যে, আপনাদের দলকে ভারতীয় জনগণ এখনও মনে রেখেছে। দেশবাসী সেই সময়ের কথা ভোলেননি, যখন আপনারা ভারতীয় দলকে পরাজিত করেছিলেন।
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – স্যার, আজ আপনার সঙ্গে দেখা করা আমাদের জন্য অনেক সম্মান ও সৌভাগ্যের। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এই সময় ও সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমরা আপনার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
প্রধানমন্ত্রী – আপনাদের মধ্যে কতজন এখনও ভারতের সঙ্গে কিছু না কিছুভাবে যোগাযোগ বজায় রেখেছে?
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – আমি মনে করি, প্রায় সকলেই।
প্রধানমন্ত্রী – ওহ্, আমি বুঝতে পারছি। ভারতের সঙ্গে আপনার কিভাবে সম্পর্ক, সনৎ?
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – স্যার, আমি মুম্বাই ইন্ডিয়ানস্ দলের সঙ্গে ছিলাম এবং এখানকার বেশিরভাগ খেলোয়াড় আইপিএল – এ খেলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী – আচ্ছা, আপনি আইপিএল – এ খেলেছেন।
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – আর, কুমার ধর্মসেনা তখন আম্পেয়ার ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী – হ্যাঁ।
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – হ্যাঁ, তাই…
প্রধানমন্ত্রী – সম্ভবত, আপনিই আম্পেয়ার ছিলেন, যখন ভারত ২০১০ সালে আমেদাবাদে খেলেছিল। আমি সেই ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলাম। তখন আমি মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম। ১৯৮৩ সালে ভারত যখন বিশ্বকাপ জিতেছিল
এবং ১৯৯৬ সালে আপনার দল যখন বিশ্বকাপ জিতেছিল, দুটি ইভেন্টই ক্রিকেট বিশ্বকে উল্লেখযোগ্যভাবে বদলে দিয়েছিল। আমি বিশ্বাস করি যে, ১৯৯৬ সালে আপনার দল যেভাবে খেলেছিল, তা একঅর্থে টি-২০ ক্রিকেটের জন্ম।
আমি অন্যদের কাছ থেকেও শুনতে চাই যে, তাঁরা এখন কি করছেন? কেউ কি সেই বিষয় ভাগ করে নিতে চান? আপনি কি এখনও ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত? আপনি কি বর্তমানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন?
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – আমাদের বেশিরভাগ খেলোয়াড়রাই এখনও কোনও না কোনোভাবে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত। আমি বিশ্বাস করি যে, আপনার সঙ্গে আজ দেখা করতে আসা বিশ্বকাপ ফাইনালের চেয়েও বেশি চাপের ছিল।
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – আমার মনে হয়, আমরা এমন এক পরিস্থিতি, ভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই, যেখানে ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী – বোমা বিস্ফোরণ!
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – হ্যাঁ, ভারত আমাদের সাহায্য করেছিল। ভারত তাদের দল পাঠিয়েছিল। বিশ্বকে দেখিয়েছিল যে, এটি একটি নিরাপদ জায়গা। আর এটাই ছিল শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম কারণ। তাই, আমরা ভারতের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
প্রধানমন্ত্রী – আমার মনে আছে, যখন ভারতীয় দল শ্রীলঙ্কা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সময় বোমা বিস্ফোরণের কারণে অন্যান্য দলগুলি সেখানে যেতে অস্বীকার করেছিল। আপনার খেলোয়াড়রা ভারতের এই পদক্ষেপে কতটা প্রশংসা করেছিল। ভারত প্রকৃতার্থেই ক্রীড়া অনুরাগীর মনোভাব দেখিয়েছিল।
আমরা বলেছিলাম, “চলো, আমরা যাই এবং দেখি কি হয়”।
এই ধরনের আচরণ ক্রীড়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রশংসা কুড়িয়েছিল। আজও ভারতের মানুষ সেই ক্রীড়া প্রেমের কথা স্মরণ করে। একদিকে যেমন বোমা বিস্ফোরণের মতো আতঙ্ক ছিল, তেমনই অন্যদিকে ক্রীড়া প্রেমের চেতনাও ছিল।
সেই একই চেতনা আজও অব্যাহত রয়েছে। ১৯৯৬ সালের বোমা বিস্ফোরণ যেমন সমগ্র শ্রীলঙ্কাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, ঠিক তেমনই ২০১৯ সালে একই রকম একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল – গীর্জার ভেতর বোমা বিস্ফোরণ। এরপরও আমিই প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে শ্রীলঙ্কা সফর করেছিলাম। আনন্দ ও দুঃখের উভয় সময়েই শ্রীলঙ্কার পাশে রয়েছে ভারত। এটাই ভারতের স্থায়ী চেতনা।
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – স্যার, আমার প্রথম সফর ছিল ১৯৯০ সালে। আমার মনে আছে, আমি একমাস ভারতে ছিলাম। আমি বলব, যখনই শ্রীলঙ্কা সঙ্কটে পড়ে, বিশেষ করে আর্থিকভাবে – ভারত সর্বদা এগিয়ে আসে এবং সাহায্য করে। তাই, আমরা ভারতের প্রতি সর্বদা কৃতজ্ঞ। কারণ, আমরা মনে করি যে, ভারত আমাদের ভাই। তাই, আমরা যখন ভারতে যাই, তখন সেই দেশকেও আমাদের বাড়ি বলে অনুভব হয়। ধন্যবাদ স্যার। ধন্যবাদ।
শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় – যেমন রমেশ বলছিল, যখন শ্রীলঙ্কায় অস্থিরতা ও সমস্যা ছিল, তখন আমরা পেট্রোল, ডিজেল, বিদ্যুৎ, আলো ছাড়াই ছিলাম। আমি মনে করি যে, আপনি এবং আপনার সরকার আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন। তাই, আমরা সর্বদা আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই এবং আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের প্রশিক্ষক হিসেবে আমি আপনার কাছে একটি অনুরোধ করব যে, ভারত যদি জাফনায় একটি আন্তর্জাতিক মাঠ তৈরিতে সাহায্য করে। এতে জাফনার উত্তর-পূর্বাংশের মানুষের বিশেষ উপকারে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী – আমি জয়সূর্যর কাছ থেকে এইসব কথা শুনে সত্যিই আনন্দিত। ভারত সর্বদা ‘প্রতিবেশী সর্বাগ্রে’ নীতি মেনে চলে। যখনই আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলি কোনও না কোনও সঙ্কটের মুখোমুখী হয়েছে, ভারত সর্বদাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মায়ানমারে সাহায্য পাঠিয়েছে ভারত। আমরা বিশ্বাস করি যে, আমাদের প্রতিবেশী এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির কল্যাণে সাহায্য করা ভারতের কর্তব্য। শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্য করেছে ভারত। আমরা আমাদের ভূমিকা পালন করার জন্য সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি। কারণ, এটিকে আমাদের নৈতিক কর্তব্য বলে মনে করি। আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন যে, আজও আমি বেশ কয়েকটি নতুন উন্নয়মমূলক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছি। জাফনার প্রতি আপনাদের উদ্বেগ আমাকে সত্যি ভাবিয়ে তুলেছে। শ্রীলঙ্কার একজন প্রবীন ক্রিকেটার জাফনায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা দেখতে চান। এই অনুভূতি অনুপ্রেরণাদায়ক। জাফনাকে পেছনে ফেলে রাখা উচিৎ নয়। আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলি সেখানেই হওয়া উচিৎ। আপনার পরামর্শের গুরুত্ব অপরিসীম। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে, ভারত অবশ্যই এই প্রস্তাবটি বিবেচনা করে দেখবে এবং কিভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, তা খতিয়ে দেখবে। আপনারা সকলেই আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য সময় দিয়েছেন – এর জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। প্রিয় স্মৃতিগুলির কথা আবার মনে পড়ছে। আপনাদের সকলের মুখ দেখতে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি যে, ভারতের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে, আমি সর্বদা আপনাদের পাশে থাকব।
(প্রধানমন্ত্রীর এই কথপোকথনটি হিন্দিতে ছিল)
SC/SS/SB…
Cricket connect!
— Narendra Modi (@narendramodi) April 5, 2025
Delighted to interact with members of the 1996 Sri Lankan cricket team, which won the World Cup that year. This team captured the imagination of countless sports lovers! pic.twitter.com/2ZprMmOtz6
A wonderful conversation with members of the Sri Lankan cricket team that won the 1996 World Cup. Do watch… pic.twitter.com/3cOD0rBZjA
— Narendra Modi (@narendramodi) April 6, 2025