মঞ্চে উপস্থিত পাঞ্জাবের মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী ভি পি সিং, আমার মন্ত্রিসভার সদস্য, আমার সহযোগী ডঃ হর্ষ বর্ধন, অন্যান্য গণ্যমান্য অতিথিবৃন্দ, এখানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রী এবং প্রতিনিধিগণ। আপনাদের সকলকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই।
ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনের উদ্বোধন করে, প্রখ্যাতসব বৈজ্ঞানিক, বিদ্বান ব্যক্তিবর্গ এবং ছাত্রছাত্রীদের সান্নিধ্য পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
আমি আপনাদের মাঝে সঠিক সময়ে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কুয়াশার জন্য দেরি হয়ে গেল।
বন্ধুগণ, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সমৃদ্ধির এই ভূমিতে এ বছর ইন্ডিয়ান সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন যথাযথ বিষয় নির্বাচন করেছে – ‘ভাবী ভারত : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ভারতের মহানতা আমাদের জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবশ্যই নিহিত, কিন্তু এই মহানতার আসল উদ্দেশ্য আমাদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে সমাজের কাজে লাগানো।
বন্ধুগণ, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু, সি ভি রমন, মেঘনাদ সাহা এবং সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মতো বিজ্ঞানীরা এর সদস্য ছিলেন। ন্যূনতম সম্পদ সম্বল করে অধিকতম লড়াইয়ের যুগে তাঁরা নিজেদের ভাবনা ও আবিষ্কারের মাধ্যমে মানুষের সেবা করেছেন। আজও আমরা তাঁদের প্রত্যয় এবং সৃষ্টিশীলতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছি। ১৯১৭ সালে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতায় দেশের প্রথম বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র বোস ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া গড়ে তোলেন। তাঁর উদ্বোধনী ভাষণেই আমরা বিজ্ঞানের উপযোগিতার একটি সংহত ভাবনার প্রতিফলন দেখতে পাই। তিনি বলেছিলেন, “এই প্রতিষ্ঠানটিতে আজ জাতির উদ্দেশে একটি নিছক গবেষণাগার রূপে উৎসর্গ করতে চাই না, আমি এটিকে একটি বিজ্ঞান মন্দির রূপে তুলে ধরতে চাই।” শত শত বৈজ্ঞানিকের নিরন্তর গবেষণা ও গভীর মৌলিক অন্তর্দৃষ্টির যোগফল হল ভারতীয় প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং রাষ্ট্র নির্মাণ। আমাদের আধুনিক বিজ্ঞান মন্দিরগুলির মাধ্যমেই আমরা ভারতের বর্তমানকে সমৃদ্ধ ও নিরাপদ রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতকেও সুরক্ষিত রাখতে পারবো।
বন্ধুগণ, আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীজি আমাদের একটি স্লোগান প্রদান করেছেন, ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’। আজ থেকে কুড়ি বছর আগে পোখরানে পারমানবিক পরীক্ষার সাফল্যের পর তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে, আমাদের মহান প্রধানমন্ত্রী অটলজি রাষ্ট্র গঠনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব অনুধাবন করে সেই স্লোগানে যোগ করেন, ‘জয় বিজ্ঞান’। তিনি বলেন, ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান’। আমি মনে করি এখন সময় এসেছে আরেক পা এগোনোর। সেজন্য আমি সেই স্লোগানে যোগ করতে চাই ‘জয় অনুসন্ধান’! কাজেই এখন স্লোগানটি হবে, ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান’।
আসলে বিজ্ঞানের লক্ষ্যসাধন দুটি উদ্দেশ্য পূরণের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। প্রথমটি হল গভীর কিংবা অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন জ্ঞানের উন্মেষ। দ্বিতীয়টি হল, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সেই জ্ঞানের ব্যবহার। এই দুটি উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আমাদের উদ্ভাবন এবং স্টার্ট-আপকে গুরুত্ব দিতে হবে।
আমাদের সরকার নবীন বৈজ্ঞানিকদের উদ্ভাবন প্রবণতাকে সাহায্য করতে ‘অটল ইনোভেশন মিশন’ শুরু করেছে। বিগত চার বছরে পূর্ববর্তী চল্লিশ বছরের তুলনায় অনেক বেশি প্রযুক্তি-ভিত্তিক ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন করা হয়েছে। এখন শিল্পমহল দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সময়ানুগ নির্দেশনার মাধ্যমে তাদের অর্থানুকূল্যে এবং স্টার্ট-আপগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে হবে। আমাদের বৈজ্ঞানিকদের দেশের সাধারণ মানুষের সুলভে স্বাস্থ্য পরিষেবা, গৃহনির্মাণ, নির্মল বায়ু, জল এবং শক্তি উৎপাদন, কৃষি উৎপাদন এবং পরিবেশ-বান্ধব খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে নতুন নতুন উদ্ভাবনের কথা ভাবতে হবে। বিজ্ঞান যেখানে বিশ্বজনীন, প্রযুক্তি হওয়া উচিৎ স্থানীয় পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুসারে, স্থানীয় উপাদান-নির্ভর এবং স্থানীয় সমস্যা সমাধানকারী।
বন্ধুগণ, আজ আমাদের সামনে যে সামাজিক, আর্থিক চ্যালেঞ্জগুলি রয়েছে, সেগুলি সমাধানের জন্য ‘ন্যাশনাল রিসার্চ ল্যাবরেটরিজ অ্যান্ড সায়েন্টিফিক অর্গানাইজেশন’কে সুলভ, সুগম এবং সস্তা সমাধান তৈরি করতে হবে। আমি আপনাদের কিছু উদাহরণ দিচ্ছি। আমাদের দেশে এমন কৃষকদের সংখ্যাই বেশি যাঁদের মালিকানাধীন জমির পরিমাণ ২ হেক্টরেরও কম। তাঁদের চাই এমন প্রযুক্তি যাতে কম শ্রমে অধিক ফলন হয়। আমরা কৃষি বিজ্ঞানে অনেক উন্নতি করেছি। আমাদের দেশে ফলনও বেড়েছে, গুণমানও সুনিশ্চিত হয়েছে, কিন্তুন ‘নতুন ভারত’-এর প্রয়োজন মেটাতে অনেক কিছু করার প্রয়োজন রয়েছে, নতুন করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্প্রসারণের প্রয়োজন হয়।
‘বিগ ডেটা অ্যানালিসিস’, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লক চেন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত অনেক প্রযুক্তির সুলভ মূল্যে ব্যবহার কিভাবে চাষের কাজে লাগবে তার ওপর আমাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। এখন সময়ের চাহিদা হল, এই সমস্ত আবিষ্কারের সঙ্গে সেন্সর প্রযুক্তি, ড্রোন, স্যাটেলাইট ইমেজিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি প্যাকেজ বানিয়ে কিভাবে আমাদের কৃষকদের সাহায্য করা যায় তা দেখা। এই সাহায্যের ফলে কৃষকরা নিজেদের ফসল, আনাজপাতি, সেচ, সার, পরিবহণ এবং কীটনাশক সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিসমূহের সাহায্যে নিতে পারবে।
বন্ধুগণ, যেভাবে আমরা ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’-এর ক্ষেত্রে লাগাতার এগিয়ে যাচ্ছি, তেমনই, আমাদের ১২৫ কোটি ভারতীয়দের ‘ইজ অফ লিভিং’ নিয়েও দ্রুত কাজ করতে হবে। এর গতিপথ কেমন হবে তা স্পষ্ট করার জন্য আমাদের কিছু প্রশ্ন নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, আলাপ-আলোচনার, মন্থনের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা কম বৃষ্টিপাতসম্পন্ন অঞ্চলগুলিতে উন্নত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খরা ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করতে পারি? আমরা কি বর্ষা, ঘূর্নিঝড় এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভবিষ্যদ্বাণী প্রক্রিয়ায় সংস্কার করে আরও কার্যকরী করতে পারি? তাহলে তো কৃষি উপকৃত হবেই, অনেক মানুষের জীবনও বাঁচানো যাবে।
আমরা কি দেশে দশকের পর দশক ধরে অপুষ্টি সমস্যার শিকার অসংখ্য শিশুর জীবনকে উন্নত করতে কোনও প্রযুক্তিগত সমাধান খুঁজে বের করতে পারি? আমরা কি দেশকে চিকনগুনিয়া এবং এনসেফেলাইটিস থেকে মুক্ত করার পথ খুঁজে যেন করতে পারি? বর্জ্য থেকে শক্তিতে রূপান্তরণের মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতার জন্য সস্তা এবং উপার্জনকারী কোন অধিক কার্যকরী পদ্ধতি খুঁজে বের করতে পারি? আমরা কি পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে ‘রি-সাইক্লিং’ এবং ‘কনজারভেশন’ সংক্রান্ত নতুন প্রযুক্তি গড়ে তুলতে পারি? আমরা কি এমন কোনও প্রক্রিয়া আবিষ্কার করতে পারি যাতে আমাদের দেশের সংবেদনশীল সংস্থাগুলিকে দুর্ভেদ্য সাইবার নিরাপত্তা প্রদান করা যায়? আমরা কি সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও সস্তা এবং সুলভ করে তুলতে পারি যাতে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর ব্যক্তিও সহজে একে আপন করে নিতে পারেন?
আমাদের বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে জুড়তেই হবে। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে ভারতের অগ্রগতিকে স্তব্ধ করার অধিকার কারোর নেই। আমাদেরকে মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে নেতৃত্ব দিতে হবে। আমাদের সময়োপযোগী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে এবং তা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই।
বন্ধুগণ, ভারতে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ২০১৪ সাল খুব ভালো ছিল। আমাদের এ বছরের সাফল্যের মধ্যে রয়েছে বিমানের উপযোগী জৈব জ্বালানি উৎপাদন, দৃষ্টিহীনদের জন্য ‘দিব্যনয়ন’ নামক একটি যন্ত্র আবিষ্কার, সার্ভিক্যাল ক্যান্সার, যক্ষ্মা এবং ডেঙ্গি নির্ণয়ের জন্য সস্তা উপকরণ, সিকিম ও দার্জিলিং এলাকায় ‘রিয়েল টাইম’ ধ্বস সংক্রান্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা চালু করা ইত্যাদি। আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। আমাদের গবেষণা এবং বিভিন্ন শিল্প উপাদানের উন্নয়ন সাফল্যকে সস্তায় জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে শক্তিশালী বাণিজ্যিক উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। রূপান্তরণ সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন, উৎপাদন এবং যথাযথ ব্যবস্থাপনাই ভারতের ভবিষ্যতকে সমৃদ্ধতর করে তুলতে পারে। সম্প্রতি সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রকাশনার সংখ্যার বিচারে ভারত এখন বিশ্বের অগ্রগণ্য পাঁচটি দেশের অন্যতম। এটা কম সাফল্য নয়, সমস্ত সংশ্লিষ্ট সব বৈজ্ঞানিক ও বিজ্ঞান বিষয়ে লেখকদের আমাদের আন্তরিক প্রশংসা জানাই। উন্নত ভারত, আধুনিক ভারত, বৈজ্ঞানিক ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই সাফল্য শক্তিশালী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছে।
বন্ধুগণ, উন্নত ভারত গড়ে তুলতে আজ ভারতের বিজ্ঞানকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হতে হবে। শুধু প্রতিস্পর্ধা দেখালে চলবে না, আমাদের শ্রেষ্ঠ হতে হবে। নিছকই গবেষণার স্বার্থে গবেষণা নয়, আমাদের উদ্ভাবন যে সেই স্তরে পৌঁছয় যে সমস্ত বিশ্ব আমাদের অনুসরণ করে।
এই সাফল্য অর্জনের জন্য আমাদের গবেষণার বিস্তৃত বাস্তু ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আবহাওয়া পরিবর্তনের মোকাবিলা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পপুলেশন ডায়নামিক্স, বায়ো-টেকনলজি এবং ডিজিটাল মার্কেট প্লেসকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তবেই আমরা দেশের নবীন প্রজন্মের মেধাশক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবো।
আগামীদিনে জ্ঞান-বিশ্বে নেতৃত্ব প্রদানকারীদের সারিতে দাঁড়ানোর জন্য দেশের গবেষণা ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যথাসম্ভব প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি গবেষণাকে উৎসাহ যোগাতে হবে।
বন্ধুগণ, যে কোন দেশের মেধার সৃষ্টিশীলতা এবং পরিচয় তার ইতিহাস, কলা, ভাষা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতেই গড়ে ওঠে। সমস্ত সংস্কারের বন্ধন মুক্ত হয়ে গবেষণা করতে হবে। এখন কলা ও সংস্কৃতি, সমাজ বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ফিউশনের মাধ্যমে গবেষণা চালাতে হবে। এটাই আমাদের দেশের পরিচয়কে শক্তিশালী এবং গৌরবময় করে তুলতে পারে।
বন্ধুগণ, আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে আমাদের দেশের প্রাচীন জ্ঞান ছিল গবেষণা নির্ভর। ভারতীয় বিদ্বানরা বিজ্ঞান থেকে গণিত, কলা থেকে সাহিত্য, ভাষা বিজ্ঞান থেকে অর্থশাস্ত্র এবং চিকিৎসাশাস্ত্র থেকে দর্শন পর্যন্ত সমস্ত বিশ্বকে ঋদ্ধ করে, জ্ঞানকে প্রজ্জ্বলিত করেছে। আবার সময় এসেছে বিশ্বে ভারতের সেই স্থান ফিরে পাওয়ার। এটা তখনই সম্ভব যখন আমরা বিশ্বের তিনটি বৃহত্তম অর্থ ব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠে গবেষণা এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্বকে পথ দেখাতে পারবো।
বন্ধুগণ, আমাদের জাতীয় গবেষণাগারগুলি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি, আইআইটি, আইআইএম, টিআইএফআর এবং আইএসইআরগুলি দেশের গবেষণা ও উন্নয়নের মেরুদণ্ডস্বরূপ। যদিও দেশের ৯৫ শতাংশেরও বেশি ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়াশোনা করে যেখানে গবেষণার ক্ষেত্রটি সীমাবদ্ধ। আমি সেজন্য ‘প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন পর্ষদ’কে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এবং সমস্ত রাজ্যের সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অনুকূল অ্যাকশান প্ল্যান নির্ণয় করার পরামর্শ দিয়েছি।
বন্ধুগণ, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের তিরুপতি অধিবেশনে আমি সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেমের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। আমাদের ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’কে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী করে তোলার সম্ভাবনা এর রয়েছে। আমরা রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা অ্যানালিসিস ইত্যাদি ক্ষেত্রে গবেষণা, প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে এই সমস্যাকে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগে রূপান্তরিত করতে পারি। সরকার ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেমের জাতীয় স্তরে গবেষণার জন্য ৩,৬০০ কোটি টাকারও অধিক অর্থ বিনিয়োগ মঞ্জুর করেছে। এই মিশনে রয়েছে গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, মানবসম্পদ, দক্ষতা, উদ্ভাবন, স্টার্ট-আপ ইকো সিস্টেম এবং নিবিড় শিল্প ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিচালিকা শক্তি হল তথ্য। বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে কর্মরত আমাদের বৈজ্ঞানিকেরা কার্যকরী তথ্য নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে তথ্য সৃষ্টি থেকে তথ্য প্রবাহ, তা থেকে তথ্য নিরাপত্তা, তা থেকে তথ্য শেয়ার করা এবং তা থেকে তথ্য ব্যবহার করার সঠিক উপায়গুলি নিয়মিত অভ্যাস করেন।
বন্ধুগণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আমাদের সামর্থ্য, আমাদের দক্ষতা সম্পর্কে জানা যাচ্ছে আমাদের সাম্প্রতিক মহাকাশ অভিযানগুলির সাফল্যের মাধ্যমে। সম্প্রতি আমরা কারটোস্যাট-২ সিরিজের উপগ্রহ সহ নেভিগেশন, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সাইবার স্পেকট্রাল ইমেজিং সংশ্লিষ্ট আরও ৩০টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছি। ২০০০-২২-এর মধ্যে তিনজন ভারতীয়কে মহাকাশে পাঠানোর প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে।
‘ইসরো’ এর জন্য একটি বিশেষ প্রযুক্তি ‘ক্রিউ এস্কেপ সিস্টেম’-এর নমুনা প্রদর্শনও করেছে। আমি আমাদের বৈজ্ঞানিকদের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই আমার বৈজ্ঞানিক ও মহাকাশচারী বন্ধুরা আমাদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত করবেন।
বন্ধুগণ, এরকম অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনা সম্ভব। আমরা কি প্রযুক্তির শক্তি দিয়ে কনটিনিউয়াস অপারেটিং রেফারেন্স স্টেশন্স নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারি না যাতে আমরা হাই রেজোলিউশন জিও স্পেশাল ডিজিটাল ডেটা পেতে পারি? তাহলে আমাদের নাবিকরা, বৈজ্ঞানিকরা, পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা বিস্তারিত তথ্য পেতে পারেন। এটি উন্নয়ন প্রকল্পগুলির পরিকল্পনা, তদারকি, ব্যবস্থাপনা এবং সেগুলির বাস্তবায়নকে আরও কার্যকরী করে তুলতে পারে।
বন্ধুগণ, এর আগে যখন ইম্ফলে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশন হয়েছিল, তখন আমি আপনাদের কাছে একটি আবেদন রেখেছিলাম যে বৈজ্ঞানিকদের ‘সিক্ল সেল অ্যানিমিয়া’ সমস্যা থেকে নিরাময়ের পথ, সস্তা, সুলভ এবং কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের অনেক জনজাতি ভাই-বোন আজ এই রোগে জেরবার। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে সিএসআইআর-এর ডিবিটি ইতিমধ্যেই এই লক্ষ্যে অভিযান শুরু করেছে। উভয় সংস্থার বৈজ্ঞানিকরা এখন এই রোগকে প্রতিহত এবং নিরাময় করার পাশাপাশি ‘জিন থেরাপি’র মাধ্যমে হিমোগ্লোবিনের খামতি সংশোধন করতে শুরু করেছেন।
বন্ধুগণ, ভারতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের জন্য একটি নতুন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রোড ম্যাপের প্রয়োজন রয়েছে। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা সম্প্রতি ‘মুখ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন পরামর্শদাতা পর্ষদ’ গঠন করেছি। এই পর্ষদ যথাযথ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হস্তক্ষেপ নিয়ে নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সহযোগিতায় বহুপক্ষীয় নীতি প্রণয়নকে বাস্তবায়িত করবে। সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দিয়ে গুণগত মান উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় হাত লাগিয়েছে। আমরা উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রকে অধিক স্বাধীনতা দিয়েছি। ইউজিসি ‘গ্রেডেড অটোনমি রেগুলেশন্স’ প্রণয়ন করে উন্নত দক্ষতাসম্পন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য কার্যকরী এবং আর্থিক স্বায়ত্তশাসন অনুমোদন করেছে। আমরা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষম এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চালু করেছি। এই প্রচেষ্টার ফলে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, বিনিয়োগ আসবে এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উৎকর্ষ বৃদ্ধি পাবে। আমরা ‘প্রাইম মিনিস্টার রিসার্চ ফেলো’ চালু করেছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলির শ্রেষ্ঠ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আইআইটি এবং আইআইএমসি-তে পিএইচডি-র জন্য সরাসরি নথিভুক্তির আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই প্রকল্প উন্নতমানের গবেষণা এবং প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষকের অভাব দূর করবে।
বন্ধুগণ, আমি আমাদের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধেয় ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের একটি উক্তি তুলে ধরতে চাই। বৈচিত্র্যময় কল্পনা এবং নিয়মিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিশ্বের শক্তিগুলিকে একটি অনুপ্রাণিত মনের জন্য কাজ করানো যেতে পারে। আমরা কিভাবে ভারতীয় যুবসম্প্রদায়ের মনে আগুনের ফুলকি জ্বালাতে পারি, যাঁরা গবেষণার ভিত্তি গঠন করেন এবং ভারতীয় বিজ্ঞানের নবজাগরণের সামিল হবেন তা দেখতে হবে।
ভারত এখন নতুন প্রজন্মের সৃষ্টিশীল, টগবগে এবং প্রত্যয়ী মনের মানুষে পূর্ণ হয়ে উঠেছে। সরকার তাঁদের বিজ্ঞানের জয়যাত্রার মাধ্যমে নতুন ভারত গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি করে দিতে দায়বদ্ধ। আমরা বর্তমান ও ভবিষ্যতের সমস্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে প্রস্তুত। এই ভারতে ভাবনা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও কর্মের সমাহার। এই ভারত শক্তিশালী, প্রত্যয়ী, সমৃদ্ধ এবং প্রাণশক্তিতে ভরপুর। এই ভারত সংবেদনশীল।
আমি আপনাদের সবাইকে সৃষ্টিশীল ও সমৃদ্ধ নতুন বছর ২০১৯-এর শুভেচ্ছা জানাই।
ধন্যবাদ। আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ।
CG/SB/DM/
The life and works of Indian Scientists are a compelling testament of integration of deep fundamental insights with technology development & nation-building.
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
It is through our modern temples of science that India is transforming its present & working to secure its future: PM
हमने कृषि विज्ञान में काफी प्रगति की है, हमारे यहां पैदावार, गुणवत्ता बढ़ी है लेकिन न्यू इंडिया की जरुरतों को पूरा के लिए विस्तार की ज़रूरत है।
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
Big Data, AI, Blockchain से जुड़ी तमाम टेक्नॉलॉजी का कम कीमत में कारगर इस्तेमाल खेती में कैसे हो इस पर हमारा फोकस होना चाहिए: PM
2018 was a good year for Indian science.
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
Among our achievements this year are:
Production of Aviation Grade Biofuel
Divya Nayan - a machine for visually impaired
Inexpensive devices for diagnosis of Cervical Cancer, TB, Dengue
A real-time landslide warning system: PM
We need strong path-ways to commercialisation, that leverage our Research & Development achievements, through industrial products.
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
The future is about convergence and connected technologies.
We should catalyse, harness and manage change for the nation’s prosperity: PM
उन्नत भारत बनाने के लिए आज भारत के विज्ञान को महत्वाकांक्षी बनना होगा।
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
हमें सिर्फ प्रतिस्पर्धा नहीं करनी, हमें श्रेष्ठता दिखानी होगी।
हमें सिर्फ रीसर्च करने के लिए रीसर्च नहीं करनी है बल्कि अपनी Findings को उस स्तर पर ले जाना है जिससे दुनिया उसके पीछे चले: PM
किसी भी देश की Intellectual Creativity और Identity उसके इतिहास, कला, भाषा और संस्कृति से बनती है।
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
ऐसे में हमें विधाओं के बंधन से मुक्त होकर शोध करना होगा।
अब ऐसी रीसर्च की जरुरत है जिसमें Arts और Humanities, सोशल साइंस, साइंस और टेक्नोल़ॉजी के Innovation का Fusion हो: PM
Our strengths in R&D are built on the backbone of our national laboratories, central universities, IIT, IISc, TIFR & IISER.
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
However, over 95% of our students go to state universities & colleges.
A strong research ecosystem must be developed in these Universities & Colleges: PM
I call upon the Prime Minister’s Science, Technology and Innovation Council, to discuss these issues in detail and formulate an action plan in consultation with the Ministry of Human Resource Development, to boost research in our colleges and state universities: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
Let us work for building a new India through science.
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2019
An India that is ready to meet the challenges & opportunities of present & future.
An India that is bubbling with ideas, knowledge, wisdom & action.
An India that is stronger, confident, prosperous & healthier: PM