Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ


                                 নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

 

বন্ধুগণ,
আপনাদের নিশ্চয় স্মরণে আছে লাল কেল্লায় যে বিষয়ের আমি সবসময় উল্লেখ করি। আমি বলেছি যে ‘সবকা প্রয়াস’ (সকলের প্রচেষ্টা)-য় হল মূল। যে সমবেত প্রয়াসের মাধ্যমে আজকের ভারত দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে পারে। এই বিশ্বাসের উজ্জল দৃষ্টান্ত আজ। স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনের চূড়ান্ত পর্বের জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। আপনাদের মতো তরুণ উদ্ভাবকদের মধ্যে যখনই আমার থাকার সুযোগ হয়েছে, তা আমাকে নতুন কিছু শেখার, বোঝার এবং নতুন অন্তর্দৃষ্টি প্রাপ্তির সুযোগ করে দিয়েছে। আপনাদের কাছে আমার অসীম প্রত্যাশা। একবিংশ শতাব্দীর ভারতকে নিয়ে আপনাদের তরুণ উদ্ভাবকদের অনেক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ফলে আপনারা যেসব সমাধানের পথ দেখাচ্ছেন তাও এককথায় অনন্য। আপনারা যখনই নতুন কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, নতুন উদ্ভাবনী সমাধানসূত্র নিয়ে আপনারা এগিয়ে আসেন। ইতিপূর্বে অনেকগুলি হ্যাকাথনে আমার অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং আপনারা কখনই আমাকে নিরাশ করেন নি। যে সমস্ত দল ইতিপূর্বে অংশ নিয়েছেন এবং তাঁরা যে সমাধানের পথ দেখিয়েছেন, বিভিন্ন মন্ত্রকে তার কার্যকরী রূপায়ণ হয়েছে। এই হ্যাকাথনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দলগুলি কি বিষয়ে কাজ করছে তা নিয়ে আমি জানতে আগ্রহী। আপনাদের উদ্ভাবন বিষয়ে জানতে আমি উদগ্রীব। ফলে শুরু করা যাক ! আপনাদের মধ্যে কে প্রথমে বলবেন? 
প্রধানমন্ত্রী: আপনাদের নমস্কার!
অংশগ্রহণকারী: স্যার নমস্কার। টিম বিগ ব্রেনস থেকে আমি শাহিদা স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনে যোগ দিয়েছি। আমরা কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু থেকে এসেছি। স্যার এখন আমরা এনআইটি শ্রীনগরে নোডাল সেন্টারে রয়েছি। এখানে খুবই ঠান্ডা। ফলে বলতে গিয়ে আমার কোনো ভুল হলে, দয়া করে আমাকে ক্ষমা করবেন। 
প্রধানমন্ত্রী: না না, আপনারা সকলেই খুব সাহসী। ঠান্ডায় আপনাদের কিছু হবে না। একদম ভয় পাবেন না। 
অংশগ্রহণকারী: ধন্যবাদ স্যার। সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের দেওয়া একটি সমস্যার সমাধানে আমরা কাজ করছি। মেধা বন্ধাত্ব এবং অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার সংক্রান্ত শিশুদের জন্য আমরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ফ্রেন্ড গড়ে তুলছি। এই যন্ত্র দক্ষতা বর্ধক হিসেবে কাজ করবে। আমাদের দেশে প্রায় ৮ কোটি মানুষ অটিজম স্পেকট্রামের শিকার এবং প্রত্যেক ১০০ শিশুর মধ্যে একজন মেধা সমস্যার মুখোমুখি। এই সমস্যা সমাধানে আমরা এমন এক যন্ত্র তৈরি করছি, যা বন্ধু হিসেবে কাজ করবে। এই বন্ধুকে স্মার্টফোনে তারা ব্যবহার করতে পারবে। এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সমাধানের ব্যবহারে তাদের অন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রের প্রয়োজন হবে না। তাদের ফোন, ল্যাপটপ এবং অন্য যে কোনো যন্ত্রের তারা সাহায্য নিতে পারবে। তাদের প্রাত্যহিক কাজে এই বন্ধু তাদের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করবে। এটি কৃত্রিম মেধা নির্ভর ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সমাধান। উদাহরণ স্বরূপ প্রাত্যহিক কাজে যদি কোনো অসুবিধা হয়, নতুন কোনো ভাষা শিখতে হয়, অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়, অথবা সামাজিক বিনিময়ে দক্ষতা অর্জন করতে হয়, এই যন্ত্র অতি সহজে, ছোটো আকারে সমাধানের পথ দেখিয়ে দেবে। 
প্রধানমন্ত্রী: এটা অসাধারণ। আপনাদের এই কাজ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আপনারা কি আমাকে একটু বুঝিয়ে বলতে পারেন এইসব শিশুদের সামাজিক জীবনে এটার সদর্থক প্রভাব কতখানি?

অংশগ্রহণকারী: এই ভার্চুয়াল বন্ধুর সাহায্য তাদের সামাজিক বাক্যালাপে কোনটা ঠিক, কোনটা ঠিক নয় তা বলে দেবে। তারা কিভাবে লোকের সঙ্গে কথা বলবে তা বলে দেবে। নিরাপদ পরিবেশের মধ্যে তারা এই দক্ষতার প্রশিক্ষণ করতে পারে এবং পরবর্তীকালে বাস্তব ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ করতে পারে। এই যন্ত্র তাদের জীবন ধারণের মানোন্নয়নে সাহায্য করবে এবং বাস্তব জগতে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে কাজে আসবে। কোনো কিছু শেখার ক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এইসব শিশুদের কিছু অনন্য চাহিদা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হল, এই যন্ত্রের মাধ্যমে সেই ফাঁকের এক সেতুবন্ধ তৈরি করে দেওয়া। এরফলে বিশেষ চাহিদাপ্রাপ্ত হিসেবে তাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজের বিশেষ কোনো তারতম্য দেখা যাবে না, স্বাভাবিকভাবেই তারা কাজ করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী: আপনাদের দলে এখন কতজন সদস্য রয়েছেন?
অংশগ্রহণকারী: স্যার, আমরা ৬ জন রয়েছি এবং আমাদের দলটি বৈচিত্রপূর্ণ। আমাদের সদস্যরা বিভিন্ন কারিগরি এবং ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট থেকে এসেছেন এবং আমাদের মধ্যে একজন আছেন যিনি ভারতীয় নন।
প্রধানমন্ত্রী: আপনাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছেন যারা ইতিপূর্বে এইসব শিশুদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন? আপনারা কি তাদের সমস্যা বুঝে সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন?
অংশগ্রহণকারী: হ্যাঁ স্যার, আমাদের দলে এমন একজন সদস্য আছেন যার এক আত্মীয় অটিজিমের শিকার। এছাড়াও এখানে আসার আগে আমরা এই জাতীয় শিশুদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও সঠিক পথেই এদের সমাধান বুঝতে আমাদের সাহায্য করেছে। 
প্রধানমন্ত্রী: আপনারা এমন কিছু বলছেন, যাতে মনে হচ্ছে আপনাদের টিমের বন্ধু নতুন কিছু শোনাতে পারেন।
অংশগ্রহণকারী: হ্যাঁ স্যার, আমাদের দলে একজন সদস্য আছেন যিনি ভারতীয় নন। তিনি ভারতে পাঠরত বিদেশী ছাত্র। 
অংশগ্রহণকারী (মহম্মদ ঢালি): মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার নাম মহম্মদ ঢালি। আমি ইয়েমেন থেকে একজন আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে এখানে উপস্থিত। কম্পিউটার সায়েন্সে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক ডিগ্রি অর্জনে আমি ভারতে এসেছি। আমি বিগ ব্রেনস টিমের সদস্য। আমরা কৃত্রিম মেধা নির্ভর একটি যন্ত্র এইসব বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য তৈরি করছি।
প্রধানমন্ত্রী: দলের সদস্য হিসেবে এটাই কি আপনার প্রথম অভিজ্ঞতা?
অংশগ্রহণকারী(মহম্মদ ঢালি): বেঙ্গালুরুতে আঞ্চলিক বিভিন্ন হ্যাকাথনে আমি এর আগে যোগ দিয়েছি। তবে বড় কোনো উদ্যোগের ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা এটাই আমার প্রথম। এই বিরাট প্রয়াসে অংশ নিতে পেরে আমি নিজেকে কৃতজ্ঞ বোধ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ভারত সরকারকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য। এই মঞ্চ থেকে আমি আমার সমস্ত সহ ইয়েমেনি ছাত্রছাত্রী এবং আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবক হয়ে ওঠার এবং ভারতের উজ্জীবিত উদ্ভাবন পরিমণ্ডলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানাবো। আপনাকে ধন্যবাদ!
প্রধানমন্ত্রী: প্রত্যেক শিশুই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা বোঝার জন্য আপনাদের অভিনন্দন। প্রত্যেকেরই বেড়ে ওঠার সুযোগ পাওয়া উচিত। সমাজে যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে এবং কেউ যাতে নিজেকে অবহেলিত না ভাবে সে দিকটা দেখা দরকার। এই লক্ষ্য অর্জনের পথে আমাদের উদ্ভাবনী সমাধানসূত্র খুঁজতে হবে। আপনাদের দল যে সমাধানের পথ দেখাচ্ছে তা লক্ষ লক্ষ শিশুর জীবনকে সহজ করে তুলবে। আপনারা দেশের জন্য যে সমাধান গড়ে তুলছেন তা আঞ্চলিক চাহিদা নির্ভর হলেও এর প্রভাব হবে বিশ্বজনীন। ভারতের জন্য যা প্রয়োজনীয়, বিশ্বের যে কোনো দেশের জন্যই তা প্রয়োজনীয়। আমি আপনাদের এবং আপনাদের দলকে শুভেচ্ছা জানাই। এরপর কে বলবেন?
ধর্মেন্দ্র প্রধান: পরবর্তী দল হল ড্রিমার্স। এরা খড়গপুর থেকে টিম খড়গপুর। 
অংশগ্রহণকারী (লাবণ্য): ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমি লাবণ্য, ড্রিমার্সের দলনেতা। পশ্চিমবঙ্গের আইআইটি খড়গপুরে নোডাল সেন্টারে আমরা রয়েছি। আমরা তামিলনাড়ুর চেন্নাই ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে এসেছি। ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (এনটিআরও) আমাদের কাছে একটি সমস্যা তুলে ধরেছে। প্রতিদিন কারিগরি উদ্ভাবনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাইবার আক্রমনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতে ৭ কোটি ৩০ লক্ষ সাইবার আক্রমণ ঘটেছে বিশ্বে যা তৃতীয় বৃহত্তম। এই সমস্যার সমাধান সূত্রের পথ দেখাতে আমরা একটি উদ্ভাবনী অনন্য পথ খুঁজে বের করেছি। আমাদের দলের কুমারী কালপ্রিয়া এই সমাধানসূত্র ব্যাখ্যা করে শোনাবেন। 
অংশগ্রহণকারী (কালপ্রিয়া): মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নমস্কার ! 
প্রধানমন্ত্রী: আপনাকেও নমস্কার!
অংশগ্রহণকারী (কালপ্রিয়া): নমস্কার! আক্রান্ত ফাইল এবং এই সাইবার আক্রমণ থেকে আমাদের প্রতিরক্ষাকে মজবুত করতে আমরা নানা রকম অ্যান্টি ভাইরাস ইঞ্জিন নিয়ে কাজ করছি। সমাধানসূত্র হিসেবে আমরা তিনটি অ্যান্টি ভাইরাস ইঞ্জিনের ব্যবহার করেছি। মাইক্রোসফ্ট ডিফেন্ডার, ইএসইটি এবং ট্রেন্ড মাইক্রো ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি। আমাদের সমাধান সম্পূর্ণ অফলাইন। স্থাপত্য, নকশা এবং বিপদ নির্ণয় প্রক্রিয়া উভয়কেই তা সংযুক্ত করছে। কোনো অ্যান্টি ভাইরাস উপযুক্ত নয় বলে আমরা জানি- প্রত্যেক অ্যান্টি ভাইরাসের একটা নিজস্ব শক্তি ও দুর্বলতা রয়েছে। ফলে আমরা মাইক্রোসফ্ট ডিফেন্ডার, ইএসইটি এবং ট্রেন্ড মাইক্রো ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি ব্যবহার করছি এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায়। এই তিনটি অ্যান্টি ভাইরাস ইঞ্জিনের স্ক্যানিং-এর মাধ্যমে আমরা দক্ষতার সঙ্গে বিপদ নির্ণয়ের সাফল্য অর্জন করতে পারবো। সিস্টেমকে সুরক্ষিত মোডে রেখে যে কোনো সম্ভাব্য বিপদ এড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করতে তা আমাদের সাহায্য করবে। 
প্রধানমন্ত্রী : আমি আমার মন কি বাত-এ সাইবার জালিয়াতিতে সাধারণ মানুষ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তার বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এই সাইবার জালিয়াতি মানুষকে লুঠ করছে, তাই না? আপনারা সবাই এব্যাপারে অবগত?
অংশগ্রহণকারী(কালপ্রিয়া): না স্যার!
প্রধানমন্ত্রী : আপনাদের এব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত, তার কারণ যে সমাধান সূত্র নিয়ে আপনারা কাজ করছেন, তা এই বাস্তব সমস্যা নিয়েই। আমাদের সমাজের এক বিরাট অংশ এই সংকটের শিকার। এই যুবক সম্ভবত এব্যাপারে কিছু বলতে চান।
অংশগ্রহণকারী:  হ্যাঁ, স্যার! নমস্কার স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: আপনাকেও নমস্কার!
অংশগ্রহণকারী: হ্যাঁ, স্যার! প্রযুক্তির আধুনিক সংস্কারের সঙ্গে ক্রমাগত তার বিকাশও ঘটছে। ক্রমবর্ধমান সাইবার আক্রমণ সম্বন্ধে আমাদের আলোচনা করা দরকার। এই সমাধান সূত্রের লক্ষ্যে আমাদের কাজ আরও দক্ষতা সম্পন্ন হবে এবং প্রযুক্তিও আরও উন্নতমানের হবে। সমাধান সূত্রের পথ ধরে আমাদের বিশ্বাস বর্তমান ব্যবস্থা থেকে তা আরও কর্মক্ষম করে তোলা যাবে। 
প্রধানমন্ত্রী: আপনারা জানেন তো যে, যে কোনো সাইবার সুরক্ষার সমাধানের কার্যকালের মেয়াদ অত্যন্ত স্বল্প সময়ের? এব্যাপারে আপনাদের কোনো ধারণা আছে? 
অংশগ্রহণকারী: হ্যাঁ, স্যার!
প্রধানমন্ত্রী: এব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কি? আপনাদের ধ্যান ধারণা কি খানিকটা ভাগ করে নিতে পারেন?
অংশগ্রহণকারী: প্রযুক্তির যেহেতু ক্রমবিকাশ ঘটছে, ফলে সমাধান সূত্রেরও আমাদের ক্রমাগত সংস্কার ঘটাতে হবে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আরও উন্নত সমাধান সূত্র নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। 
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। সাইবার আক্রমণকারীরা খুব বড় প্রকৌশলী, আপনি যদি আজ একটা সমাধান সূত্র বের করেন, কয়েক ঘন্টার মধ্যে আপনাকে আবার নতুন সমাধান সূত্রের পথ বের করতে হবে। সমসময়ই আপনাকে সময়ের উপযোগী হয়ে উঠতে হবে। দেখুন, বিশ্বে ডিজিটাল অর্থনীতিততে ভারত অন্যতম অগ্রণী দেশ। আমাদের দেশ নানা ক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার করছে। আপনি যা বললেন, সাইবার অপরাধ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। ফলে, ভারতের ভবিষ্যতের স্বার্থে আপনারা যে সমাধান সূত্র নিয়ে কাজ করছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, আমি যা বললাম, এই সমাধান কোনো এককালীন সমাধান হতে পারে না। ব্যাপারটা হল  বৃষ্টি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আপনাকে ছাতা খুলতে হবে। সবসময় আপনাকে সময়োপযোগী হয়ে উঠতে হবে। তবে, আপনাদের প্রতি আমার শুভেচ্ছা রইল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আপনারা কাজ করছেন এবং আপানাদের সমাধান সূত্র নিশ্চই পথ প্রদর্শক হবে। দেশের সরকারেরও তা কাজে লাগবে। আমি আপনাদের পুরো দলের মধ্যে প্রবল উৎসাহ দেখছি এবং প্রত্যেকেই তাদের মোবাইল ফোনে রেকর্ড করতে ব্যস্ত। ঠিক আছে, আমাদের এগিয়ে যাওয়া যাক। এরপর কোন দল?
ধর্মেন্দ্র প্রধান: আমরা এখন ব্রোকোড দলের সঙ্গে আলোচনা করবো। আমেদাবাদে গুজরাত টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা অপেক্ষারত। আমেদাবাদ যাওয়া যাক।
অংশগ্রহণকারী: নমস্কার, প্রধানমন্ত্রী! 
প্রধানমন্ত্রী: আপনাকেও নমস্কার! 
অংশগ্রহণকারী(হর্ষিত): হ্যাঁ, স্যার, আমি হর্ষিত। আমি টিম ব্রোকোড থেকে। আমরা ইসরোর দেওয়া একটি সমস্যার ওপর কাজ করছি। সমস্যাটি হল দক্ষিণ মেরুতে অবস্থিত সৌর প্যানেল এবং সৌর সেলের কৃষ্ণছবিকে বাড়ানোর বিষয়। আমরা যে সমাধান সূত্র বের করেছি, তার নাম হল চাঁদ বর্তনি। চাঁদ বর্তনি হল এমন এক সমাধান সূত্র, যা নিম্নমানের ব্যবস্থাকে উন্নত করে তুলবে এবং কৃষ্ণছবি উজ্জ্বল মানের ছায়ায় পরিণত করবে। তবে, এটি কেবলমাত্র ছবির গুণগত মান বর্ধনেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতারও প্রসার ঘটবে। ভূতাত্ত্বিক চন্দ্র গবেষণার দিকটি নির্ণীত হবে এবং সময় ধরে সমাধান সূত্র বের করা যাবে। 
প্রধানমন্ত্রী: মহাকাশ ক্ষেত্র নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সঙ্গে কি আপনাদের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনার সুযোগ হয়েছে, যেহেতু আপনারা আমেদাবাদে রয়েছেন এবং সেখানে এক বিরাট মহাকাশ কেন্দ্র রয়েছে? এব্যাপারে কি আপনারা কারোর সঙ্গে কথা বলেছেন, যাতে আপনাদের তৈরি সমাধান সূত্রের মান আরও উন্নত হতে পারে?
অংশগ্রহণকারী (হর্ষিত): আমি পরামর্শদাতাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং হায়দ্রাবাদে বিজ্ঞানীদের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। তবে, ওই জাতীয় মহাকাশ কেন্দ্রে যাওয়ার আমার সুযোগ হয়নি, যেহেতু আমরা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে অনেকটাই দূরে এবং আমাদের দল…
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, আমি বুঝতে পেরেছি। আপনাদের কি মনে হয়, এই প্রকল্পের ফলে ভূতাত্ত্বিক এবং চাঁদের পরিবেশগত পরিস্থিতিকে আমরা আরও ভালো করে বুঝতে পারবো?
অংশগ্রহণকারী (হর্ষিত): হ্যাঁ, স্যার অবশ্যই। আমরা ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করতে পারবো এবং চন্দ্র গবেষণায় অনেক অজানা দিক খুঁজে বের করতে পারবো। উদাহরণস্বরূপ আমরা জলের হিমায়িত স্বরূপ, বোল্ডার, বড় আকারের পাথর অথবা চন্দ্রপৃষ্ঠে বড় কণার সন্ধান করতে পারবো। অজানা এইসব বাধাগুলি সঠিকভাবে নির্ণয় করা গেলে রোভার অনেক স্বচ্ছন্দে চন্দ্রপৃষ্ঠে কাজ করতে পারবে। 
প্রধানমন্ত্রী: এই মুহূর্তে আপনাদের দলে কতজন রয়েছেন? 
অংশগ্রহণকারী (হর্ষিত): দলের সদস্য সংখ্যা ছয়।
প্রধানমন্ত্রী: আপনারা কি নানা জায়গা থেকে এসেছেন, নাকি একই জায়গার পড়াশুনা করছেন? 
অংশগ্রহণকারী (হর্ষিত): সমস্যার বিষয়টিকে আমরা আমাদের সদস্যদের মধ্যে আলাদা আলাদাভাবে ভাগ করে নিয়েছি। তিনজন সদস্য চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের মডেল নিয়ে কাজ করছেন। দুজন ছবিবর্ধক বিষয়ের ক্ষেত্রে ছবির ফিলটারের দিকটি দেখছেন। স্যার, এখন আমাদের সদস্য সুনীল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী: আপনারা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্বাচন করেছেন। আপনাদের মধ্যে কি তরুণ সদস্যরা আছেন, যারা মাইক্রোফোনে বলতে চান? 
অংশগ্রহণকারী (সুনীল রেড্ডি): স্যার, আমরা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে এসেছি। হিন্দী আমরা বিশেয জানি না।
প্রধানমন্ত্রী: অন্ধ্র গাড়ু
অংশগ্রহণকারী (সুনীল রেড্ডি): দুঃখিত এজন্য যে…
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, বলুন!
অংশগ্রহণকারী (সুনীল রেড্ডি): প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার, আমি অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে সুনীল রেড্ডি। আমরা একটি মিশন লার্নিং মডেল নিয়ে কাজ করছি, যাতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ছায়াকে বর্ধিত আকারে দেখা যায়। এই ছায়াকে মিশন লার্নিং মডেলের ব্যবহার করে বাড়ানো সম্ভব। আমরা এখানে দুটি স্থাপত্ত্বকে যুক্ত করেছি, একটি ডার্কনেট, অপরটি ফোটোনেট। ডার্কনেটের মাধ্যমে চিত্রের ছায়া পরিস্কার করা যাবে। ফোটোনেটের মাধ্যমে শব্দকে কমানো যাবে। যেহেতু, ছবিগুলি চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে নেওয়া, ফলে কম আলোয় সেগুলি ধরা পড়েছে এবং উচ্চ শব্দের প্রবণতা রয়েছে কম প্রোটনের কারণে। আমরা নিরপেক্ষ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ছবিটাকে বাড়াবো। এই নেটওয়ার্কের প্রত্যেকটিতে ১০২৪ নিউরন রয়েছে। হর্ষিত আগে যা বলল যে, এটাই সবথেকে ভালো উপায় যাতে চাঁদের হিমায়িত স্বরূপ নির্ণয় করা সম্ভব। স্যার, আপনার সঙ্গে কথা বলতে পেরে আমি খুবই খুশি। আপনার সঙ্গে কথা বলা আমার স্বপ্নের মতো ছিল। আমার মনে আছে, আপনি যখন নেল্লোর সফরে গিয়েছিলেন, ভীড়ের মধ্যে অনেক দূরে আমি দাঁড়িয়েছিলাম। তখন গলা ফাটিয়ে আমি হর্ষধ্বনি দিয়েছিলাম। আমি আপনার গুণমুগ্ধ। স্যার, আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রী: দেখুন, বন্ধুরা মহাকাশ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের যাত্রা নিয়ে সারা বিশ্বের প্রত্যাশা অনেক। আপনাদের মতো তরুণ প্রতিভারা যখন এই কাজে যুক্ত হয়েছেন, তখন সেই প্রত্যাশা আরও বাড়াই সমুচিত। আপনার মতো তরুণ উদ্ভাবককে দেখে এটা পরিষ্কার যে, ভারত অতি দ্রুততার সঙ্গে বিশ্ব মহাকাশ শক্তি ক্ষেত্রে প্রসার ঘটাচ্ছে। আপনাদের অনেক শুভেচ্ছা। এখন অন্য দলের সঙ্গে কথা বলা যাক।
ধর্মেন্দ্র প্রধান: পরবর্তী দল মুম্বাই-এর ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ থেকে মিস্টিক অরিজিন্যালস। মুম্বাই থেকে আমার বন্ধুরা, আপনারা দয়া করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুন।
অংশগ্রহণকারী : প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার!
প্রধানমন্ত্রী: আপনাকেও নমস্কার!
অংশগ্রহণকারী (মহাক ভার্মা): আমার নাম মহাক ভার্মা। আমি মিস্টিক অরিজিন্যালস-এর দলনেতা। আমরা কোটার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি থেকে এসেছি। স্মার্ট ইন্ডিয়া হেকাথন ২০২৪-এ অংশ নিতে পারা বিরাট সম্মানের। আমাদের এই দলে রয়েছেন অক্ষিত জাংরা, কর্তন আগারওয়াল, সুমিত কুমার, অবিনাশ রাঠোর, তুষার জৈন এবং আমাদের পরামর্শদাতা অনন্য শ্রীবাস্তব। আমরা ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের দেওয়া সুরক্ষা সম্বন্ধীয় একটি সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। এটি লক্ষ্য নির্ণয় ভিত্তিক মাইক্রো ডপলার। চ্যালেঞ্জের দিকটি হল যে জিনিসটা আমাদের দেওয়া হয়েছে, তা ড্রোণ না পাখি, তা নির্ণয় করা। কারণ ড্রোণ এবং পাখি উভয়েই রাডারে অনুরূপ দেখায়। এতে করে মিথ্যে বিপদ সংকেত বেজে ওঠে। নিরাপত্তা সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষত সামরিক এলাকায়, বিমানবন্দরে এবং জটিল পরিকাঠামোর মতো সংবেদনশীল এলাকায় সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে যায়। আমাদের লক্ষ্য হলো, এমন সমাধান সূত্র বের করা যা, মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম-এর ব্যবহারে উন্নত পরিসংখ্যান মিলবে, যা থেকে স্পষ্টভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হবে তা ড্রোণ না পাখি। এই সমাধান সূত্রের বিষয়ে আরো বিস্তারিত বলতে আমি আমার দলের সদস্য অক্ষিতের হাতে মাইক্রোফেন তুলে দিচ্ছি।
অংশগ্রহণকারী (অক্ষিত): নমস্কার, প্রধানমন্ত্রী!
প্রধানমন্ত্রী: আপনাকেও নমস্কার!
অংশগ্রহনকারী অক্ষিত: আমার নাম অক্ষিত। আমি টিম মিস্টিক অরিজিন্যালের সদস্য। মাইক্রো ডপলার সিগনেচারের ব্যবহার করে আমরা সমাধান সূত্র খুঁজছি। বিভিন্ন জিনিসের অনন্য নমুনা এর থেকে তৈরি হয়। পাখির ডানা ঝাপটানো অথবা ড্রোণের রটার প্লেটের নড়াচড়া এই ছবিতে ধরা পড়ে। এইগুলি ক্যামেরায় অনেকটা ফিঙ্গার প্রিন্টের মতো নমুনা হিসেবে দেখতে পারি। প্রত্যেক মানুষের অনন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট রয়েছে। ঠিক তেমনি প্রত্যেকটি জিনিসেরই অনন্য নমুনা মাইক্রো ডপলার সিগনেচারে ধরা পড়ে। এটার ব্যবহার করে আমরা সহজেই নির্ণয় করতে পারি, বস্তুটি ড্রোণ না পাখি। এই নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণ বিমানবন্দর, সীমান্ত এলাকা অথবা সামরিক এলাকা অর্থাৎ যেসব জায়গায় সুরক্ষা সম্বন্ধীয় বিষয় জ়ড়িত সেখানে কাজে কোনো বিঘ্ন এড়াতে এই সমাধান সূত্র কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী: আপনি আলাদা করতে পারবেন যে, এটা পাখি নয়, তবে ড্রোণ। তার সঙ্গে সঙ্গে আপনারা কি আরও নির্ণয় করতে পারবেন এটি কত দূরে রয়েছে, কোন দিকে যাচ্ছে, এর গতিবেগ কি? এইসব নানা দিক কি ওই নকশায় ধরা পড়বে?
অংশগ্রহনকারী অক্ষিত : হ্যাঁ, স্যার এই নিয়েই আমরা কাজ করছি। খুবই শীঘ্রই আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী: আপনারা সকলে ড্রোণ নির্ণয় ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছেন। ড্রোণের অনেক সদর্থক দিক রয়েছে। তবে, কিছু বিরুদ্ধ শক্তির এর অপব্যবহার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকি হয়ে দেখা দিতে পারে । আপনাদের দল এই চ্যালেঞ্জটিকে কিভাবে দেখছেন?
অংশগ্রহনকারী অক্ষিত: স্যার, আমাদের এই ব্যবস্থা কিভাবে কাজ করবে, তা আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে শোনাচ্ছি। প্রথমে রাডার মারফৎ আমরা তথ্য পাই। এরপর, সেখানকার শব্দগুলোকে সরিয়ে  দেওয়ার পর একেবারে পরিস্কার, নিখুঁত তথ্য ধরা পড়ে। এরপর, আমরা সময়ের ফ্রিকোয়েন্সি ধরে মাইক্রো ডপলার প্যাটার্নে তাকে রূপান্তরিত করি। এইসব প্যাটার্নগুলি এরপর মেশিন লার্নিং মডেলের মধ্যে দিলে তা আমাদের বলে দিতে পারে, বস্তুটি ড্রোণ না কোনো পাখি। এই ব্যবস্থাকে আমরা অনেক সংঘবদ্ধভাবে মূল্য সাশ্রয়ী যন্ত্রের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে এটি কাজ করতে সক্ষম ফলে, বিমানবন্দর বা সীমান্ত এলাকায় তা ব্যবহারের উপযুক্ত। আমরা কেন এই সমস্যাটিকে বেছে নিলাম, তা নিয়ে বলতে আমি দলের সদস্য সুমিতের হাতে মাইক্রোফোন তুলে দিচ্ছি। 
অংশগ্রহনকারী সুমিত : প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে নমস্কার।
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, নমস্কার।
অংশগ্রহনকারী (সুমিত): আমরা এই সমস্যাটি বেছে নিয়েছি, কারণ আমি রাজস্থানের গঙ্গানগর থেকে আসছি। তা সীমান্তের অত্যন্ত কাছে। ড্রোণ প্রায়শই এই এলাকা অতিক্রম করে। পুলওয়ামা আক্রমণের পর ড্রোণের চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোর ৪-টে অথবা মধ্যরাতে অ্যান্টি ড্রোণ ব্যবস্থা কাজ করতে শুরু করে এবং গোলাগুলি চলতে থাকে। ঠিক সেই সময় পড়াশুনা এথবা ঘুমানো এলাকার মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। নানান রকম সমস্যা রয়েছে। সেই সময় আমার মনে হয়েছে এই নিয়ে কিছু একটি করা দরকার। এবছর আমরা যখন সমস্যার বিষয়ে চিন্তা করছিলাম, তখন এই সমস্যাটির সমাধানের দায়িত্ব আমাদের কাছে এল। আমি আমার দলের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বললাম এবং ঠিক করলাম আমরা এই সমাধান সূত্র নিয়ে কাজ করবো। আমরা এর সমাধান নির্ণয় করব এবং মানুষের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনবো । এরপর, এই নিয়ে কাজ করে আমরা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছেছি। স্যার, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!
প্রধানমন্ত্রী: বন্ধুগণ, দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ড্রোণের এখন ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। আপনারা নিশ্চয়ই নমো ড্রোণ দিদি যোজনার কথা শুনেছেন। প্রত্যন্ত এলাকায় অত্যাবশ্যক সামগ্রী, ওষুধপত্র পৌঁছে দিতে ড্রোণের ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে, আমাদের শত্রুরাও ভারতে চোরাই অস্ত্র এবং ড্রাগ পাচারে ড্রোণের ব্যবহার করছে। আমি অত্যন্ত খুশি যে, আপনারা এই জাতীয় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করছেন। এই বিষয়কে ভিত্তি করে আপনাদের প্রয়াস প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি রফতানি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। ফলে, আপনাদের সকলকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের একজন দলকর্মী সীমান্ত এলাকার কাছে বসবাস করেন। ফলে, সমস্যাটির গভীরতা এবং তার সমাধান কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেব্যাপারে তিনি সম্যক অবগত। আপনারা এই কাজে যত এগিয়ে যাবেন, ততই এর নানা দিক আপনারা বুঝতে পারবেন। ফলে, ধ্বংসাত্মক কাজে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে ড্রোণের অপব্যবহার রুখতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্রমশই দেখা দেবে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ। তবে, আপনাদের এই প্রয়াসের জন্য আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আচ্ছা দেখা যাক দেশের অন্য কোন প্রান্ত এবার আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে!
ধর্মেন্দ্র প্রধান: এখন আমরা নির্বানা ওয়ান-এর এর সঙ্গে যুক্ত হবো। তারা বেঙ্গালুরুতে নিউ হরাইজন কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ রয়েছে। আমরা এবার বেঙ্গালুরুর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী: আপনার কন্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে না। আমি আপনার কথা শুনতে পাচ্ছি না। 
অংশগ্রহনকারী : স্যার, এবার শুনতে পারছেন?
প্রধানমন্ত্রী: হ্যাঁ, এখন শোনা যাচ্ছে।
অংশগ্রহনকারী : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার!
প্রধানমন্ত্রী : নমস্কার! 
অংশগ্রহনকারী (দেব পোর্নে) : আমার নাম দেব পোর্নে। আমি টিম নির্বানা ওয়ানকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমার দলে রয়েছেন আদিত্য চৌধুরী, আশের আয়াজ, তানভি বনসাল, নমন জৈন এবং সান্নিধ্য মালুমিয়া। স্যার, বেঙ্গালুরুর জয়পুর গ্রামীন থেকে আমরা এখানে এসেছি। জলশক্তি মন্ত্রকের দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে কাজ করতে। আমাদের গবেষণায় জানতে পেরেছি যে, ভারত সরকার নদীর দূষণ এবং জল পুনরুজ্জীবনের কাজে সাম্প্রতিক অনেক উন্নত পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ফলে, আমরা চিন্তা করে দেখেছি এমন এক সর্বাত্মক ব্যবস্থা তৈরি করা, যা নদীর দূষণ পর্যবেক্ষণ তত্ত্বাবধানের কাজকে বাড়াবে। তাকে আরও দক্ষ এবং নদীর পরিমণ্ডলের সার্বিক স্বাস্থ্যবিধির পথ দেখাবে। এর মাধ্যমে আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটা সমাধান সূত্রের পথ দেখাতে চাইছি। 
অংশগ্রহণকারী : স্যার, নমস্কার!
প্রধানমন্ত্রী : নমস্কার, আমরা দেখেছি যে, আমাদের দেশে বহু মানুষের জীবন নদীর সঙ্গে যুক্ত। আমরা তাদের জীবন ধারার উন্নতি বিধান করে সদর্থক পরিবর্তন নিয়ে আসতে চাইছি। এই প্রকল্পে আমরা গঙ্গা নদীকে বেছে নিয়েছি। তার কারণ, আমাদের ইতিহাসে গঙ্গা নদীর গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ভূমিকা রয়েছে এবং তা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হৃদয় জুড়ে রয়েছে। নমামি গঙ্গে কর্মসূচি এবং গঙ্গা শোধন নিয়ে জাতীয় মিশনে(এনএমসিজি) নিয়ে পড়াশোনা এবং গবেষণার পর আমরা এই প্রকল্পের কাজে হাত লাগিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা দেখেছি যে, এনএমসিজি-র পরিষ্কার দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত, দূষণ হ্রাস অর্থাৎ গঙ্গা নদীর দূষণ কমানো এবং দ্বিতীয়ত গঙ্গা নদী সংরক্ষণ এবং তার পুনরুজ্জীবন- যা কিনা গঙ্গাকে মূল চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়া।
আমরা জানতে পেরেছি, গঙ্গাকে নিয়ে বিপুল পরিমাণ তথ্য জনসমক্ষে রয়েছে। এই সমস্ত তথ্যে আমরা গভীরভাবে অনুপ্রাণিত এবং এই তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত সহায়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী। এতে গঙ্গা তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষদের জীবন জীবিকা অর্জনে এবং তাদের জীবনধারণের মানোন্নয়নে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করবে। তাদের জীবন গভীরভাবে প্রভাবিত হবে এবং সদর্থক রূপান্তরকারী পরিবর্তন নিয়ে আসবে। 
অংশগ্রহণকারী : স্যার, গঙ্গা একটি বিরাট নদী। ফলে, এমন কোনো ব্যবস্থা নির্ণয় করতে হবে, যা প্রকৃত পক্ষে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধির সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। আমরা ফেডারেটেড লার্নিং নামে এক উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করেছি। আমরা তথ্য বিশ্লেষণ করে ৩৮টি মূল স্থানকে চিহ্নিত করেছি। ফেডারেটেড লার্নিং ব্যবহার করে আমরা এইসব স্থানে একটি স্থানীয় মডেল নির্মাণ করেছি, যা স্থানীয় তথ্য ভিত্তিত নির্মিত। এই স্থানীয় মডেলগুলি মূল মডেলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এবং তথ্য বিনিময় করছে। এই ব্যবস্থার মধ্যে  আরও নতুন নতুন মডেলকেও যুক্ত করা সম্ভব, যাতে তার কার্যকারিতা আরও বাড়বে এবং নিখুঁত হয়ে উঠতে পারে। কারিগরি দিকটি সরিয়ে রেখে নমোমি গঙ্গে আমাদের দেখিয়েছে, গঙ্গা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মূল বিষয় হচ্ছে মানুষ। অংশীদার এবং তথ্যের সঙ্গে সেতুবন্ধ রচনা করতে আমরা উন্নতমানের ড্যাসবোর্ড তৈরি করেছি। বিভিন্ন ধরণের অংশীদারদের চাহিদা মেটাতে এই ড্যাসবোর্ড সক্ষম।
প্রধানমন্ত্রী : বিরাট কুম্ভমেলা হতে চলেছে। গঙ্গা তীরে ৪০ থেকে ৪৫ কোটি মানুষ ভীড় জমাবেন। আপনাদের এই উদ্ভাবন কুম্ভমেলার কাজে কিভাবে লাগতে পারে?
অংশগ্রহনকারী : স্যার, জলের উন্নত প্যারামিটারগুলি আমরা বিশ্লেষণ করলে মানুষকে জানাতে পারবো, কিভাবে জীবানুমুক্ত করে তার স্বাস্থ্যবিধির উন্নতি ঘটাতে পারে। সেইসঙ্গে অন্যেরও স্বাস্থ্যের উন্নতির কাজে লাগে। এই কাজে আমরা একটি পোর্টাল দেব, যাতে বিভিন্ন দিক নিয়ে নির্দেশিকা দেওয়া থাকবে। উদাহরণস্বরূপ শিল্পসংস্থাগুলির বর্জ্য তদারকি পরিষেবার দিকটি থাকছে। বর্জ্য শোধন পরিকাঠামো এবং জৈব বৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনার দিকটিও তুলে ধরা হবে। আমরা কৃষক, মৎস্যজীবীদের তা জানাবো, এমনকি পর্যটকরা তাদের ভ্রমণসূচি কিভাবে তৈরি করবেন এবং কোন কোন এলাকায় তাঁরা ভ্রমণ করবেন, কোন জায়গায় তাঁরা যাবেন না তাও বলে দেব। নির্দিষ্ট এলাকা ভিত্তিক কাজের অগ্রগতি কিভাবে এগোচ্ছে, তা নির্ণয় করা যাবে।
প্রধানমন্ত্রী : আপনাদের কাজ তো তাহলে অনায়াসেই শহরগুলিতে পাণীয় জল সরবরাহ শৃঙ্খলের ক্ষেত্রেও ব্যবহারযোগ্য? 
অংশগ্রহণকারী : হ্যাঁ, স্যার। তবে, আমরা যা করেছি, তা হল গঙ্গা বা অন্যান্য নদীকে ঘিরে শহরগুলির অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশকে যুক্ত করা। আমরা  সেইসব এলাকাকে কোন কোন শিল্প ঘিরে রয়েছে তাও ঠিক করতে পারবো। যেমন রাসায়নিক, কাগজ, বস্ত্র, চামড়া, কসাইখানা প্রভৃতি জায়গা থেকে কী জাতীয় বর্জ্য প্রবাহিত হচ্ছে,  অ্যালগরিদম আমাদের সেসব থেকে মুক্তির উপায় বলে দেবে। জলে কী জাতীয় দূষণ ঘটছে, তা নির্ণয় করতে পারলে, কোন শিল্প কারখানা তা ঘটাচ্ছে, তা আমরা নির্দিষ্ট করতে পারবো। আমরা তখনই নদীর স্বাস্থ্য উদ্ধারে ব্যবস্থাপক সংস্থা বা কর্তৃপক্ষকে একেবারে তথ্য ভিত্তিক বিষয়টি জানাতে পারবো। যাতে, তারা সত্ত্বর এলাকা পর্যবেক্ষণ করে দূষণ বর্ধক সেই শিল্পকে আলাদা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী : আজকের এই বৈঠকের পর আপনাদের কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও কত ঘন্টা লাগবে? 
অংশগ্রহণকারী: স্যার, কমপক্ষে আরও ২০ ঘন্টা।
প্রধানমন্ত্রী : ঠিক আছে, মা গঙ্গা বা দেশের অন্য যে কোনো নদীই হোক আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপট থেকেই কেবল গুরুত্বপূর্ণই নয়, পরিবেশগত দিক থেকেও তা গুরুত্বপূর্ণ। আমি খুশি যে, আপনারা এই বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। আপনাদের আমি সার্বিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। জয়পুরের মানুষরা প্রকৃতপক্ষে জলের গুরুত্ব এবং মূল্য বোঝেন। আপনাদের সার্বিক শুভেচ্ছা। 
অংশগ্রহণকারী : স্যার, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রী!
বন্ধুগণ,
এখানে আপনাদের সকলের সঙ্গে কথা বলতে পারা খুবই আনন্দের। আপনাদের দলগুলিকে দেখে আমি বুঝলাম যে, তারা যথেষ্ট তথ্যাভিজ্ঞ। এটা এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের এক প্রকৃত নমুনাকে তুলে ধরে। দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিমের নানা প্রান্তে ছাত্ররা সমবেত হয়েছেন। আমার ধারণা যে, আপনাদের কাছেও এটা অত্যন্ত শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। আমাদের দেশের অপার বৈচিত্র্য এতে ধরা পড়ে। বৈঠকের বাইরেও এমনকি হ্যাকাথনের বাইরেও অনেককিছু শেখার আপনাদের সুযোগ রয়েছে।
বন্ধুগণ,
আপনারা সকলেই জানেন, বিশ্বের আগামী ভবিষ্যৎ জ্ঞান এবং উদ্ভাবন দ্বারা পরিচালিত হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আপনারাই ভারতের আশা এবং ভরসা। আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনন্য। আপনাদের চিন্তাধারা ভিন্ন এবং আপনাদের উদ্যম এককথায় অতুলনীয়। তবে, আসল লক্ষ্য একই। ভারত বিশ্বের মধ্যে সবথেকে উদ্ভাবনী, প্রগতিশীল এবং সমৃদ্ধ দেশ হয়ে উঠুক। আজ বিশ্ব ভারতের শক্তিকে স্বীকৃতি দেয়। এই শক্তি লুকিয়ে রয়েছে যুবশক্তিতে। উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় এবং প্রযুক্তিগত শক্তিতে। ভারতের এই শক্তি স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনে অংশ নেওয়া আপনাদের মধ্যে প্রত্যক্ষ করা যায়। আমি খুশি স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ভারতের যুব শক্তিকে বিশ্বে প্রতিযোগী করে তুলতে এক অনন্য মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছে। স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন শুরুর পর থেকে এ’পর্যন্ত প্রায় ১৪ লক্ষ ছাত্রছাত্রী এতে যোগ দিয়েছেন। এদের নিয়ে ২ লক্ষ দল তৈরি হয়েছে। প্রায় তিন হাজার সমস্যা নিয়ে তারা কাজ করেছেন। ৬,৪০০-র বেশি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ হাজার জন যুক্ত হয়েছেন। হ্যাকাথনকে ধন্যবাদ। কয়েকশো নতুন স্টার্টআপ গড়ে উঠেছে। ২০১৭-তে ৭ হাজারেরও বেশি নতুন ধারণা জমা পড়েছে। আর এখন এই ধারণার সংখ্যা ৫৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ৭ থেকে ৫৭ হাজার এই চিত্রই বলে দেয় দেশের সমস্যার সমাধানে ভারতের যুবশক্তি কতটা অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে।
বন্ধুগণ, 
গত ৭ বছরে হ্যাকাথন থেকে পাওয়া সমাধান সূত্র দেশের মানুষের কাজে লেগেছে। এই সমস্ত হ্যাকাথনগুলি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান সূত্র বলে দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ ২০২২-এর হ্যাকাথনে একটি তরুণদল ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাপকতা নির্ণয়ের পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে। হ্যাকাথন চলাকালীন তারা এই ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। এখন তাদের এই ধারণার প্রযুক্তিগত বিন্যাস ঘটিয়েছে ইসরো। এর থেকে আপনারা নিশ্চয়ই গর্বিতবোধ করছেন। ৪-৫ বছর আগে হ্যাকাথনের আর একটি দল একটি ভিডিও জিওট্যাগিং অ্যাপ তৈরি করে। এতে তথ্য সংগ্রহ অনেক সহজ হয়ে গেছে। মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণায় এখন তার ব্যবহার হচ্ছে। হ্যাকাথনের আর একটি দল একেবারে সময় বেঁধে রক্ত ব্যবস্থাপণা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে। এই ব্যবস্থা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্ল্যাড ব্যাঙ্কগুলির বিস্তারিত তথ্য যোগায়, যা এনডিআরএফ-এর মতো বিপর্যয় ব্যবস্থাপক সংস্থাগুলির দ্রুত কাজে লাগে। কয়েক বছর আগে আর একটি দল অন্যভাবে সক্ষম মানুষদের স্বার্থে একটি জিনিস তৈরি করে। এটি তাদের জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে। এগুলি কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। হ্যাকাথন থেকে এরকম আরও অনেক উজ্জ্বল সাফল্যের নিদর্শন ফুটে উঠেছে, যা আজ এতে অংশ নেওয়া অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার কারণ হতে পারে। এই উদাহরণ থেকে বোঝা যায়, ভারতের যুব সম্প্রদায় সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে দেশের উন্নয়ন যজ্ঞে হাত মিলিয়েছে এবং নানান সমস্যার নিরসন হচ্ছে। এর মাধ্যমে জাতীয় সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে অংশীদারি মনোভাব ফুটে ওঠে এবং দেশের অগ্রগতিতে তা সদর্থক বার্তা বহন করে। আজ আপনাদের সঙ্গে কথা বলার পর আমার মধ্যেও আস্থার বোধ বেড়ে গেছে এবং মনে হচ্ছে যে, ভারত প্রকৃত পক্ষেই বিকশিত ভারত(উন্নত ভারত) হয়ে ওঠার সঠিক পথ ধরে এগিয়ে চলেছে। ভারতের নানান সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান সূত্র দেখাতে যে উদ্যম এবং নিষ্ঠার সঙ্গে আপনারা কাজ করছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংশনীয়।
বন্ধুগণ,
আজ আমাদের দেশের প্রত্যাশা হল প্রাত্যহিক জীবনের সমস্যাকে প্রথাগত ভাবনার বাইরে ভাবতে চেষ্টা করা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই উদ্ভাবনী ভাবনাকে যুক্ত করতে হবে। হ্যাকাথনের এটিই হল আবশ্যকীয় দিক। এই প্রক্রিয়া এবং তার নির্যাস দুইই গুরুত্বপূর্ণ। একটা সময় ছিল. যখন সরকার দেশের সমস্যার সমাধান সূত্র একাই বের করবে বলে মনে করত। কিন্তু, সময় বদলে গেছে। আজ হ্যাকাথনের মাধ্যমে ছাত্র, শিক্ষক, পরামর্শদাতা সকলেই সমাধান সূত্র নির্ণয়ের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন. এটাই ভারতের নতুন পরিচালন মডেল এবং সব কা প্রয়াস অর্থাৎ সকলের প্রচেষ্টাই এই মডেলের জীবনী শক্তি।
বন্ধুগণ,
আগামী ২৫ বছরের প্রজন্ম ভারতের অমৃত প্রজন্ম। বিকশিত ভারত গড়ে তোলার দায়বদ্ধতা আপনাদের সকলের। আমাদের সরকার এই প্রজন্মকে সম্ভাব্য সমস্ত রকমের সুবিধা সঠিক সময়ে পৌঁছে দিতে দায়বদ্ধ। আমরা বিভিন্ন বয়সের নানা গোষ্ঠীর সঙ্গে বিভিন্ন স্তরে কাজ করছি। ছাত্রদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক মানসিকতা গড়ে তুলতে আমরা নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। আগামী প্রজন্মকে বিদ্যালয় স্তরেই উদ্ভাবনী নানা বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত করতে আমরা ১০,০০০ বেশি অটল টিঙ্কারিং পরীক্ষাগার গড়ে তুলেছি। আজ আমাদের এই পরীক্ষাগারগুলি ১ কোটি ছাত্র-ছাত্রীর গবেষণা ও পরীক্ষার জায়গা হয়ে উঠেছে। এর অতিরিক্ত ১৪,০০০ বেশি প্রধানমন্ত্রী শ্রী বিদ্যালয়গুলি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একবিংশ শতাব্দীর দক্ষতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তার প্রসার ঘটাতে কলেজ স্তরে আমরা ইনকিউবেশন সেন্টার গড়ে তুলেছি। আমরা উন্নতমানের রোবোটিক এবং কৃত্রিম মেধা নির্ভর পরীক্ষাগারের সুযোগ গড়ে দিচ্ছি। আমরা তরুণ মনের নানা জিজ্ঞাসার সমাধানে জিজ্ঞাসা মঞ্চ তৈরি করেছি। এই মঞ্চের মাধ্যমে যুবক-যুবতীরা বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে সরাসরি মত বিনিময় করতে পারবেন। 
বন্ধুগণ,
আজ প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকে স্টার্টআপ ইন্ডিয়া অভিযানের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তাদের আয়করের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এমনও ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে তরুণ উদ্যোগপতিরা ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। উদ্ভূত কোম্পানীগুলির জন্য দেশ জুড়ে নতুন প্রযুক্তি পার্ক এবং আইটি হাব গড়ে তোলা হচ্ছে। সরকার ১ লক্ষ কোটি টাকার গবেষণা তহবিল তৈরি করেছে। এর অর্থ হল পেশাগত ক্ষেত্রের প্রত্যেকটি পর্বে তরুণ প্রজন্ম সরকারকে তাদের পাশে পাবেন এবং তাদের প্রয়োজন মেটাতে সরকার কাজ করবে। এই জাতীয় হ্যাকাথন তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে। এগুলি কেবলমাত্র প্রচলিত ঘটনাই নয়, একটা স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার এটি এক প্রক্রিয়া বিশেষ। এটা আমাদের জনসম্পর্কিত পরিচালন মডেলের এক অঙ্গাঙ্গী অংশ।
বন্ধুগণ,
আমাদের অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার হয়ে উঠেতে অর্থনীতির নতুন নতুন ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। ভারত আজ ডিজিটাল কনটেন্ট সৃষ্টি এবং গেমিং-এর মতো ক্ষেত্রেও এগিয়ে চলেছে। এক দশক আগে যার বিকাশ ঘটেনি। ভারত নতুন পথ নির্ণয় করছে এবং তরুণ প্রজন্মকে এইসব পথকে পরীক্ষা করে দেখার জন্য অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মের উৎসাহ এবং আত্ম প্রত্যয়ের দিকে তাকিয়ে সরকার তাদের উৎসাহে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। সংস্কার রূপায়নের মাধ্যমে তাদের চলার পথের বাধাকে দূর করা হচ্ছে। কনটেন্ট নির্মাতাদের সৃষ্টিশীলতা এবং কঠোর পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দিতে সম্প্রতি প্রথম জাতীয় ক্রিয়াটার্স পুরস্কারের আয়োজন করা হয়। ক্রীড়াক্ষেত্রকেও পছন্দের পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। গ্রামস্তরে টুর্নামেন্টের মাধ্যমে আমরা অলিম্পিকের জন্য ক্রীড়াবিদ তৈরি করছি। খেলো ইন্ডিয়া এবং টপস-এর মতো উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অ্যানিমেশন, ভিস্যুয়াল এফেক্ট, গেমিং, কমিক্স প্রভৃতি ক্ষেত্রে জাতীয় কেন্দ্রের প্রভাব লক্ষণীয়। ফলে, গেমিং এখন সম্ভাবনাময় পছন্দের ক্যারিয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্র হিসেবে উঠে এসেছে। 
বন্ধুগণ,
সাম্প্রতিক সরকারের সিদ্ধান্ত বিশ্ব জুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। যা হলো ভারতের যুব, গবেষক এবং উদ্ভাবকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের সাময়িক পত্র পড়ার সুযোগ করে দেওয়া। এক দেশ এক সদস্যতা এই প্রকল্প বিশ্ব জুড়ে অনন্য। এই প্রকল্পের আওতায় সরকার খ্যাতনামা বিভিন্ন সাময়িক পত্রের  জন্য চাঁদা দিচ্ছে, যাতে  ভারতের তরুণ সম্প্রদায় কোনো তথ্য থেকে বঞ্চিত না হন। এই উদ্যোগ হ্যাকাথনে অংশগ্রহনকারীদেরও নানা উপকারে লাগবে। প্রত্যেক সরকারেরই লক্ষ্য হল তরুণ সম্প্রদায়কে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মেধার সঙ্গে প্রতিযোগিতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করা। আমাদের তরুণ প্রজন্ম পরিকাঠামোগত বা অন্য কোনোরকম সাহায্যের কখনও অভাববোধ করবেন না । আমার কাছে তরুণের স্বপ্নই হলো সরকারের দিশা। ফলে, সরকার হিসেবে তরুণ প্রজন্মের যাবতীয় চাহিদা পূরণ করতে আমরা নিরলস কাজ করে চলেছি।
বন্ধুগণ, 
হাজার হাজার তরুণ হ্যাকাথনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে, আমি আপনাদের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চাইছি। আপনারা সকলেই জানেন, লালকেল্লা থেকে আমি ঘোষণা করেছি, যাদের পরিবারে কেউ কখনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, এমন এক লক্ষ তরুণ-তরুণীকে দেশের রাজনীতির আঙিনায় নিয়ে আসতে চাই। দেশের ভবিষ্যতের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্য সম্পাদনে নানান উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরকমই একটি উদ্যোগ আগামী মাসের জন্য নির্বাচিত, তা হলো ‘বিকশিত ভারত-ইয়াং লিডার্স ডায়ালগ’। দেশের নানা প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরুণী এতে অংশ নেবেন এবং বিকশিত ভারত নিয়ে তাদের চিন্তা-ভাবনা ভাগ করে নেবেন। মৌলিক চিন্তাক্ষেত্রে নির্বাচিত তরুণ-তরুণীরা বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ১১ এবং ১২ জানুয়ারী দিল্লিতে ইয়াং লিডার্স ডায়ালগে যোগ দিতে আমন্ত্রিত হবেন। ভারত এবং বিদেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সঙ্গে মতামত বিনিময়ের সুযোগ থাকবে সেখানে। আমি সেখানে উপস্থিত থেকে আপনাদের কথা শুনবো। এই হ্যাকাথনে আপনারা যারা অংশ নিয়েছেন, বিকশিত ভারত ইয়াং লিডার্স ডায়ালগে যোগ দিতে আপনাদের আমি আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। দেশ গঠনের কাজে আপনিও যে পথ দেখাতে পারেন, তা তুলে ধরার এ এক অনন্য সুযোগ।
বন্ধুগণ,
আগামী দিনগুলি আপনাদের সকলের কাছে সুযোগ এবং দায়িত্ব সম্পাদনের।
আমি দেখতে চাই স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন থেকে দলগুলি কেবলমাত্র ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জগুলি নিয়েই কাজ করছে না, বিশ্বের সমস্যা নিরসনেও উন্নত পথ দেখাচ্ছে। আগামী বছর আমরা যখন এই হ্যাকাথনে সমবেত হবো, তখন সেখানে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হোক, বিশ্ব সংকট নিরসেনর ক্ষেত্রেও তা সমাধানের পথ নির্ণয় করতে পারে। আপনাদের দক্ষতা, উদ্ভাবনী মানসিকতা এবং সমস্যা নিরসনের মনোবৃত্তির প্রতি দেশের বিশ্বাস রয়েছে এবং আপনাদের সেই সক্ষমতা নিয়ে দেশ গর্বিত। আপনাদের সকলকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ… সার্বিক শুভেচ্ছা রইল!

 

PG/AB/CS/NS