Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ২০২২-এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ২০২২-এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ


 

নয়াদিল্লি, ২৫ অগাস্ট, ২০২২

যুব বন্ধুগণ,

আমি সত্যিই আপনাদের মতো উদ্ভাবকদের সাথে দেখা করার ও আলোচনার সৌভাগ্যকে উপভোগ করেছি। আপনারা যে নতুন বিষয়গুলি স্পর্শ করেন, আপনাদের উদ্ভাবন এবং যে আত্মবিশ্বাসের সাথে আপনারা আপনাদের কাজ করেন, তা আমার মতো অনেকেরই কাছে নতুন কিছু করার অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে। একইভাবে, আপনারাও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠুন। তাই, আমি আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আপনাদের অভিনন্দন জানাতে চাই!

স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন জনগণের অংশগ্রহণের একটি দুর্দান্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছে এবং বন্ধুরা, এই বছরের স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন অনেক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছুদিন আগে আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করেছি। স্বাধীনতার ১০০ বছর পরে আমাদের দেশ কেমন হবে, তা নিয়ে দেশ বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করছে। এই সংকল্পগুলি সম্পাদনের জন্য, আপনারা অর্থাৎ উদ্ভাবকরা ‘জয় অনুসন্ধান’ স্লোগানের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠবেন।

অমৃত কালের এই ২৫ বছর আপনাদের সামনে সম্ভাবনার অভূতপূর্ব দিগন্ত খুলে দিয়েছে। এই সম্ভাবনা আপনাদের ভবিষ্যৎ উন্নতির সঙ্গেও সরাসরি যুক্ত। আগামী ২৫ বছরে আপনাদের মতো তরুণদের সাফল্যই দেশের সাফল্য নির্ধারণ করবে। তাই, আমি আপনাদের উপর অত্যন্ত আস্থাবান। ভারত আপনাদের উপর গর্বিত। আপনাদের উদ্ভাবনমূলক মানসিকতা আগামী ২৫ বছরে দেশকে শীর্ষ স্থানে নিয়ে যাবে। আপনাদের প্রতি আমার আস্থা বজায় রাখার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

বন্ধুগণ,

এ বছর ১৫ অগাস্ট লালকেল্লার প্রাকার থেকে আমি বলেছি যে, দেশের উন্নয়নের জন্য চাহিদাসম্পন্ন সমাজের প্রয়োজন। অমৃত কালে এই সমাজই হয়ে উঠবে অন্যতম চালিকাশক্তি। এই আশা-আকাঙ্খা এবং এর সঙ্গে যুক্ত চ্যালেঞ্জগুলি আপনাদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দেবে।

বন্ধুগণ,

আপনারা আপনাদের পড়াশুনার শুরুর দিকে ষাট-সত্তর দশকে সবুজ বিপ্লবের কথা পড়েছেন। দেশের কৃষকরা তাঁদের ক্ষমতা দেখিয়ে খাদ্য ভান্ডারের ক্ষেত্রে আপনাদের আত্মনির্ভর করে তোলেন। কিন্তু, গত ৭-৮ বছরে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, দেশে একের পর এক বিপ্লব ঘটছে দ্রুতগতিতে।

বর্তমানে ভারতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটছে; স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও বিপ্লব ঘটছে। ডিজিটাল ক্ষেত্রে বিপ্লব দেখা যাচ্ছে। এমনকি, দেশে প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও বিপ্লব ঘটছে। একইভাবে, দেশে বর্তমানে প্রতিভার বিপ্লব ঘটছে। কৃষি, শিক্ষা অথবা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমানে আধুনিকীকরণ ও আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। এই কারণে দেশে প্রতিদিন আপনাদের মতো তরুণদের জন্য নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হচ্ছে।

ড্রোন প্রযুক্তি, টেলিআলোচনা, ডিজিটাল প্রতিষ্ঠান এবং ভার্চ্যুয়াল সমাধানের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, উৎপাদন ক্ষেত্রে পরিষেবার জন্যও আপনাদের সামনে বিশেশ সুযোগ রয়েছে। আপনাদের মতো তরুণরা কৃষি ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে উদ্ভাবনমূলক সমাধানের জন্য কাজ করতে পারেন। একইভাবে, আপনারা সেচের যন্ত্রপাতি আরও আধুনিক করে তোলার ক্ষেত্রেও কাজ করতে পারেন।

বন্ধুগণ,

দেশে বর্তমানে দ্রুতগতিতে প্রতিটি গ্রামে অপ্টিকাল ফাইবার বিছানোর কাজ চলছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, ফাইভ-জি ব্যবস্থাও চালু হচ্ছে। এই দশকের শেষ পর্যন্ত আমরা সিক্স-জি পরিষেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকার গেমিং ও বিনোদনমূলক বযবস্থায় ভারতীয় সমাধানকে বিশেষ উৎসাহ দিচ্ছে। যেভাবে সরকার এইসব নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে ও সেগুলিকে উৎসাহ দিচ্ছে, আপনাদের মতো তরুণদের অবশ্যই উচিৎ এর সুযোগ গ্রহণ করা।

বন্ধুরা, আপনাদের আরও একটি বিষয় মনে রাখতে হবে। ভারতের মতো একই সমস্যায় জর্জরিত বিশ্বের বিপুল সংখ্যক মানুষ। কিন্তু, তাঁদের এই সমস্যা মোকাবিলার জন্য স্টার্টআপ ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে সম্ভাবনা খুব সীমিত। ভারতের উদ্ভাবনমূলক ব্যবস্থাপনা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতামূলক, ব্যয় সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও বৃহত্তর মাপের সমাধান দিতে পারে। তাই, ভারতের বিশেষ করে, আপনাদের মতো যুবকদের উপর অনেক আশা সারা বিশ্বের।

বন্ধুগণ,

আজকের অনুষ্ঠানে শিক্ষা ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ ও নীতি নির্ধারকরা আমাদের সামনে উপস্থিত রয়েছেন। দেশে উদ্ভাবন সংস্কৃতিকে আরও সম্প্রসারিত করতে আমরা অবিরাম দুটি বিষয়ের উপর মনোযোগ দিচ্ছি – সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা। বর্তমানে উদ্ভাবন ও উদ্যোগের ক্ষেত্রে সমাজের পরিবর্তন স্পষ্টতই দৃশ্যমান। চিরাচরিত পদ্ধতিতে ভবিষ্যৎ গড়ার বাইরে এসেও অনেক নতুন ক্ষেত্রে নিজেদের দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। এভাবেই সমাজে পেশা হিসাবে উদ্ভাবন ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নতুন নতুন চিন্তাভাবনাকে গ্রহণ করতে হবে। গবেষণা ও উদ্ভাবনকে কাজের জন্য ও জীবনযাত্রার জন্য সম্পন্ন করতে হবে।

বন্ধুগণ,

সরকার গবেষণা ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা বাড়াতে অবিরাম কাজ করে চলেছে। নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি উদ্ভাবন ক্ষেত্রে দিশা-নির্দেশ তৈরির জন্য শক্ত ভিত। অটল টিঙ্কারিং ল্যাব চালু হয়েছে বিদ্যালয়গুলিতে নতুন প্রজন্মকে উদ্ভাবনে আগ্রহী করে তুলতে।

বন্ধুগণ,

একুশ শতকে দেশ তরুণদের উপর সম্পূর্ণ আস্থা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। ফলস্বরূপ, আজকের ভারত ইনোভেশন ইনডেক্স তালিকায় বেশ খানিকটা উপরে উঠে এসেছে। গত আট বছরে পেটেন্টের সংখ্যা বেড়েছে সাত গুণ। ইউনিকর্নের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। আমরা এটা বিশ্বাস করি না যে, কেবল কাছে সরকারের কাছেই সমস্যার সমাধান রয়েছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, আমি সরকারকে আপনাদের কাছে নিয়ে এসেছি। আপনাদের মতো তরুণরাই সরকারের এইসব সমস্যার সমাধান করবেন। আমি সম্পূর্ণভাবে আপনাদের উপর আস্থাবান। আজকের যুবসম্প্রদায় দ্রুত ও আধুনিক সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসছেন।

এই হ্যাকাথন আয়োজনের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হ’ল – সারা ভারত থেকে আমার যে তরুণ বন্ধুরা এখানে এসেছেন, তাঁরা যেন সমস্যাগুলি বুঝতে পারেন এবং এর কারণ বুঝতে পেরে তা সমাধানের চেষ্টা করেন। সরকার সমস্যার সমাধান চায়। উন্নত ভারত গঠনের জন্য পড়ুয়া, সরকার ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে এই সমন্বয় গড়ে তোলা জরুরি।

বন্ধুগণ,

আপনারা সকলেই একথা মাথায় রাখবেন ও উদ্ভাবনের আলো এভাবেই প্রজ্জ্বলিত করবেন। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে, সরকারের তরফে আপনাদের এই কঠোর পরিশ্রমে সবরকম সাহায্য করা হবে। প্রতি পদক্ষেপেই সরকার আপনাদের সঙ্গে রয়েছে।

আপনাদেরও অনেক কিছু বলার আছে। আপনারা চিন্তাভাবনার জন্য অনেক সময় ব্যয় করেছেন। আপনাদের কাছ থেকে এগুলি জানতে পেরে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আপনাদের অনেকেরই নানা চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিন্তু, আমি সকলের কথা শুনতে পারলাম না। কেবলমাত্র কয়েকজন প্রতিনিধির কথাই শুনেছি। যাঁরা আজ কথা বলতে পারেননি, তাঁদের কাজ বা চেষ্টা কিন্তু কোনোভাবেই কম নয়। আমি আশ্বস্ত করছি যে, আপনাদের নিজ নিজ বিভাগের মাধ্যমে আমি এর সারবত্তা সংগ্রহ করে নেব এবং আপনারা যা করেছেন, তা বোঝার চেষ্টা করবো। আপনাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আরও কিছুটা সময় পেলে ভালো হ’ত। আমি আবারও বলছি, আপানারা আজ যারা কথা বলতে পারেননি, তাঁদের কাজও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

আমি আরও একবার আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে আপনারা জনগণের উন্নতি নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাবেন বলেই আমার আশা। আপনাদের সকলকে আমার শুভেচ্ছা।

অনেক ধন্যবাদ!

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল।

PG/PM/SB