Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

স্বাধীনতার ৭০তম বর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

স্বাধীনতার  ৭০তম  বর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনী  অনুষ্ঠানে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

স্বাধীনতার  ৭০তম  বর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনী  অনুষ্ঠানে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ


আজ আগস্ট বিপ্লব দিবস। ১৯৪২ সালের ৮ আগস্টে মহাত্মা গান্ধী ‘ইংরেজ ভারত ছাড়ো’আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে তাঁর এই হুঙ্কার আসমুদ্রহিমাচল ভারতবর্ষের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। পরদিন ৯ আগস্টে গোটা দেশ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠলে ব্রিটিশ সরকার সারাভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জেলে পোরে এবং তাঁদের অত্যাচার করতে শুরু করে। আজ সেইঘটনার ৭৫ তম বর্ষ শুরু হল। আর আগামী ১৫ আগস্টে দেশের স্বাধীনতার ৭০তম বছর শুরুহবে। সেজন্যে আজ এই উপলক্ষে আমরা সেই সব স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করবো, যাঁরানিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, আত্মবলিদান করেছেন, যাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার ফলস্বরূপআমরা স্বাধীন দেশের মুক্ত হাওয়ায় শ্বাস নিচ্ছি। তাঁরা জীবন বাজি রেখে, নিজেরপরিবারকে উজাড় করে দিয়ে নিজেদের সবকিছু দেশের জন্যে সমর্পন করে দিয়েছিলেন। তাঁদেরবংশধরদের সম্মান জানানোর খাতিরে ১২৫ কোটি ভারতবাসীর উপর দায়িত্ব বর্তায় সে সবস্বাধীনতা সংগ্রামীকে স্মরণ করা। যে মহান উদ্দেশ্যগুলি নিয়ে তাঁরা ইংরেজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন আসুন আমরা সেইউদ্দেশ্যগুলি পূরণের শপথ নিই। যে ভারতের স্বপ্ন তাঁরা দেখেছিলেন, তাঁরা যেস্বপ্নপূরণের সংকল্প নিয়েছিলেন, সেই স্বপ্নপূরণের অভিযানকে আমরা আজও এগিয়ে নিয়েযেতে পারি নিজেদের কোনও সামাজিক দায়িত্বপালনের সঙ্গে যুক্ত রেখে। প্রত্যেক ভারতীয় দেশের জন্যে কিছু করার সংকল্প গ্রহণ করুন।

আমরা যখন তাঁতিয়া ভীল, ভীমা নায়ক, রাণা বক্তিয়ার সিংহের মতো লক্ষ লক্ষ উৎসর্গীকৃত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা ভাবি,যারা এক মুহূর্তও নিজের জন্যে বাঁচেন নি। সবাই যে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তা-ওনয়। কিন্তু স্বাধীনতা কাকে বলে তা তাঁরা ভালভাবে জানতেন, আর সেই লক্ষ্যপূরণেরস্বার্থে তাঁরা সবকিছু ত্যাগ করতেপ্রস্তুত ছিলেন।

আমার সৌভাগ্য, আজ চন্দ্রশেখর আজাদের জন্মভূমিতে আজাদ মন্দিরে এসে মাথা নত করার সুযোগ পেয়েছি, প্রণাম জানানোর সুযোগ পেয়েছি। এই মহান পুরুষদের স্মরণ করলে আমরা দেশের জন্যে কিছু করার প্রেরণাপাই। ভাই ও বোনেরা , আমাদের মধ্যে অনেকেরই জন্মস্বাধীনতার পর। ভারতের বর্তমান জনসংখ্যার অধিকাংশই পরাধীন দেশকে দেখেন নি। আমরাস্বাধীন ভারতে জন্মগ্রহণ করেছি। যারা স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছেন, তাঁরা দেশের জন্যেমৃত্যুবরণ করার সুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা অমরত্ব লাভ করেছেন। আমাদের সেই সৌভাগ্য হয়নি।কিন্তু আজ আগস্ট বিপ্লবের ৭৫তম বর্ষপালনের সূচনালগ্নে, স্বাধীনতার ৭০তম বর্ষপালনেরপ্রস্তুতিকালে আসুন আমরা সবাই সংকল্প গ্রহণ করি যে আমাদের চন্দ্রশেখর আজাদের মতো, তাঁতিয়া ভীল , ভীমা নায়ক , কিম্বা রাণা বক্তিয়ার সিংহের মতো দেশের জন্যে মৃত্যুবরণ করার সৌভাগ্য হয়নি । কিন্তু দেশের জন্যে বাঁচার সুযোগ আমরা পেয়েছি। দেশের হিতেআত্মবলিদান করলেই শুধু কেউ মহান হয় না। গ্রাম, গরিব, দলিত, পীড়িত, শোষিত,বঞ্চিতদের জীবনে উন্নয়ণের মাধ্যমে তাঁদের জীবনযাত্রায়উন্নতিসাধনের চেষ্টা করা, তাঁদের স্বপ্নগুলি সফল করার চেষ্টা করা।

ভাই ও বোনেরা,৭০ বছর কম সময় নয়। কিন্তু আজও আমাদের দেশের হাজার হাজার গ্রামেএকটি বিদ্যুতের খুঁটিও বসেনি। সেসব গ্রামের মানুষ আজও অষ্টাদশ শতাব্দীর মতো জীবনঅতিবাহিত করেন। একবিংশ শতাব্দীতেও তাঁরা এমনভাবে জীবন অতিবাহিত করতে বাধ্য হন।

ভাই ও বোনেরা , আমরা সরকার গঠনের পর হিসেব নিয়ে দেখি স্বাধীনতার ৬৮তম বর্ষপূর্তির প্রাক্কালেও দেশের ১৮হাজার গ্রামে বিদ্যুৎপৌঁছয় নি । আমি তাই অভিজ্ঞ আধিকারিকদের ডেকে জিজ্ঞেস করি কত দিনেরমধ্যে ওই গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছনো যাবে? তাঁরা বলেন দ্রুততার সঙ্গে করলে বছরছয়েক লাগবে। আমি আরও চাপ সৃষ্টি করতে গতবছর ১৫ আগস্টে লালকেল্লার প্রাকার থেকেঘোষণা করি যে আগামী এক হাজার দিনের মধ্যে ওই ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেব।আমি জানি এটি অত্যন্ত কঠিন কাজ । তবু আমরা প্রায় ৭০ বছরে যা করা সম্ভব হয়নি তা মাত্র এক হাজার দিনে করার চেষ্টাকরবো। ভাই ও বোনেরা , তারপর তো একবছর পুরো হয়নি , কিন্তু ইতিমধ্যেই অর্ধেকের বেশি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে । খুঁটি পোতা হয়েছে , তার টানা হয়েছে ,বাড়ি বাড়িতে আলো জ্বলছে , বাচ্চারা পড়াশোনা শুরুকরেছে । আমি একথা বলছি না যে , পূর্বতন সরকারগুলি কোন উন্নয়নের কাজ করেনি । প্রত্যেক সরকার কাজ করেছে । কিন্তু প্রায় ৭০ বছরে যত কাজ হয়াউচিত ছিল তা হয়নি । আমরা তার কুফল ভোগ করছি । আমি দেশকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনতে চাই ।

আজও আমাদের মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকে গেলে , গ্রামে বিদ্যালয় রয়েছে , মাস্টারমশাই রয়েছেন , পড়ার জন্য ছাত্রছাত্রী রয়েছে ,তবুও যদি পড়াশোনা না হয় এর থেকে বেশি দুঃখের কী থাকতে পারে ? আমি স্বাধীনতার ৭০ তম বর্ষ পালনের সূচনা লগ্নে দেশবাসীকে আহ্বান জানাই ,আসুন আমরা সংকল্প নিই যে আমার গ্রামের একটি শিশুকেও স্কুলছুট হতে দেবনা । গ্রামে বিদ্যালয় রয়েছে , মাস্টারমশাই রয়েছেন , সরকার তাঁদেরনিয়মিত মাইনে দেয়; তারপরও যদি আমরা গ্রামের সকল ছেলেমেয়ের বিদ্যালয় শিক্ষা সমাপনসুনিশ্চিত না করতে পারি, প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকদের প্রেরণা নাজোগাই তাহলে আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশ পিছিয়ে পড়বে। দেশকে এগিয়ে নিয়েযাওয়ার সবচাইতে বড় শক্তি হল দেশের জনশক্তি। টাকা পয়সা দিয়ে উন্নয়নের কাজ করা যায়।কিন্তু দেশকে এগিয়ে যেতে হলে জনশক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জনশক্তির সংকল্প,কর্মদক্ষতা, স্বপ্ন ও আত্মবলিদানের মাধ্যমে কোনও দেশ এগিয়ে যায়। আর সেজন্যেই ১২৫কোটি দেশবাসীকে টিম ইন্ডিয়া রূপ নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প গ্রহণেরআহ্বান জানাচ্ছি।

এখন সংসদের অধিবেশন চালু রয়েছে। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেনযে সেখানে কিভাবে সর্বসম্মতিক্রমে একের পর এক জনহিতকর আইন পাস করা হচ্ছে। এইআইনগুলিকে বাস্তবায়িত করতে সরকারি প্রশাসনকে জনসাধারণের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতেহবে। তবেই সাফল্য আসবে।

ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যে দেশেরস্বপ্ন দেখে আত্মবলিদান দিয়েছেন, দেশকে সুজলাং সুফলাং করে তোলার জন্যে তাঁদের এইআত্মোৎসর্গ যেন বৃথা না যায়! আমাদের কাশ্মীর দেশবাসীর কাছে স্বর্গভূমি। প্রত্যেকভারতীয় স্বপ্ন দেখেন যে একদিন না একদিন তিনি কাশ্মীর বেড়াতে যাবেন। গোটা দেশকাশ্মীরকে এত ভালবাসে। কিন্তু আমরা দেখছি যে কিছু পথ ভ্রষ্ট মানুষ, সামান্য কয়েকজনস্বার্থান্বেষী মানুষ কাশ্মীরের মহান পরম্পরাকে কালিমালিপ্ত করছে। শ্রদ্ধেয় অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি ইন্সানিয়ত, কাশ্মীরিয়ত আরজম্মুরিয়ত অর্থাৎ মানবতা, কাশ্মীরি সহবত ও দেশাত্মবোধের পথকে আপন করে নিয়েছিলেন।তার প্রদর্শিত পথেই আমরা এগিয়ে যাব। আমার কাশ্মীরের ভাই ও বোনেরা, আজ চন্দ্রশেখরআজাদের এই পবিত্র জন্মভূমি থেকে বলতে চাই যে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যে শক্তিভারতকে দিয়েছেন, দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ কাশ্মীরও সেই শক্তিতে বলীয়ান। কাশ্মীর থেকেকন্যাকুমারিকা আমরা গোটা দেশের মানুষ এই স্বাধীনতার শক্তিকে অনুভব করি। আমরা গোটাদেশের সঙ্গে কাশ্মীরকেও উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। কাশ্মীরের প্রতিটিগ্রাম পঞ্চায়েতকে সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছে দিতে চাই। কাশ্মীরের নবীন প্রজন্মের যুবকযুবতিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে দিতে চাই। আমি জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য সরকারেরপ্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী মানুষের নানা অপচেষ্টাকে উপেক্ষা করেসম্পূর্ণ মর্যাদার সঙ্গে অমরনাথ যাত্রা চালু রয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ নিরাপদেঅমরনাথ তীর্থে যাচ্ছেন। লাদাখের মাটিতে সৌরশক্তির নতুন অভিযান চলছে। কাশ্মীরেশান্তি, একতা, সদ্ভাবনার এই পরিবেশে আমি কাশ্মীরের নবীন প্রজন্মকে, কাশ্মীরবাসীদের আহ্বান জানাই, আসুন,আমরা সকলে মিলে কাশ্মীরকে এমনই ভূস্বর্গবানিয়ে রাখি।

ভাই ও বোনেরা, কখনও কখনও মনে খুব কষ্ট হয়। যে বালকদের হাতেল্যাপটপ থাকা উচিত ছিল, ভলিবল-এর বল কিম্বা ক্রিকেটের ব্যাট থাকা উচিত ছিল, উদ্যানগুলিতে যাদের আনন্দে খেলাধুলো করার কথা ছিল, হাতে বই আর মনে বড় হওয়ার স্বপ্ন থাকাউচিত ছিল, তাদের মনে হিংসার বিষ ভরে হাতে পাথরের টুকরো তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে কিছুমানুষের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি হলেও হতে পারে, কিন্তু এই নিষ্পাপ বালকদের কী হবে?আর সেজন্যেই আমরা ইন্সানিয়ত , কাশ্মীরিয়ত আর জম্মুরিয়ত এর গায়ে বিচ্ছিন্নতাবাদের মলিন দাগ লাগতে দেব না । আলাপ আলোচনার রাস্তা খোলা আছে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেসকল সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা প্রস্তুত।

আগামী স্বাধীনতা উৎসব উদযাপনের প্রাক্কালে আমি দেশের নানাস্থানে মাওবাদের নামে, উগ্রবাদের নামে যে নবযুবকরা কাঁধে বন্দুক নিয়ে বনে-জঙ্গলে ঘুরেবেড়াচ্ছেন তাদেরকেও আলোচনার পথে, গণতান্ত্রিক পথে তাঁদের সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজেবের করার আহ্বান জানাই। অনেক রক্তক্ষয় হয়েছে, অনেক নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন,কিন্তু আপনাদের কারও কোন লাভ হয়েছে কি? আসুন, আপনারা অস্ত্রসমর্পন করুন, ক্ষেতেকাজ করা এই লাল মাটিকে সবুজ ও সোনালি ফসলে ঢেকে দিন। এই দেশ সুজলা সুফলা হয়ে উঠবে।

ভাই ও বোনেরা, কাশ্মীর উপত্যকায় আমরা শ্রদ্ধেয়া মেহবুবাজীরনেতৃত্বে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে চাই,অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আপনাদের শুধুই বিনাশের পথে টেনে নিয়ে যেতে চায়। আমিদেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, বিশেষ করে কংগ্রেস ও অন্যান্যবিরোধী দলগুলিকে ধন্যবাদ জানাই, তাঁরা কাশ্মীরের উন্নয়নের কথা ভেবে রাজনৈতিকভেদবুদ্ধির উর্দ্ধে উঠে দেশভক্তির পরিবেশ গড়ে তুলে এই সমস্যার সমাধানে রাজ্য ওকেন্দ্রীয় সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন, রাজনৈতিক পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছেন। আজ ভারতেরসকল রাজনৈতিক দলের মানুষ কাশ্মীরের সকল সমস্যা সমাধানে দৃঢ়সংকল্প। এটাই ভারতেরশক্তি, এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের সামর্থ্য। এই সামর্থ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।কাশ্মীর শান্তি চায়। কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ পর্যটন শিল্প থেকে রোজগার করেন। যারাঅমরনাথ যাত্রায় যান তাঁরা তাও শ্রীনগর বেড়াতেও যান। এতে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষেররোজগার বাড়ে। কদিন পরই আপেলের ঋতু শুরু হবে। গোটা ভারত কাশ্মীরের আপেল খাওয়ারঅপেক্ষায় থাকে। আমার কাশ্মীরের ভাই ও বোনেরা, আপনারা পরিশ্রম করে যে আপেল উৎপাদনকরেন, তা সারা দেশে পাঠাতে পারলে তবেই তো আপনারা এর উপযুক্ত মূল্য পাবেন। আপনাদেরবাজার চাঙ্গা হবে, সংসার সম্পন্ন হবে, সন্তান-সন্ততিদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হবে।আপনাদের পাশে আপনাদের ধনীভোটে নির্বাচিতরাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও রয়েছে। কাশ্মীরের ডাক্তার, উকিল,ইঞ্জিনীয়ার, প্রফেসর, কৃষক, ফলবাগিচার মালিক ও শ্রমিক, ব্যবসায়ী – আপনাদের সকলেররোজগার সুনিশ্চিত করতে হবে।

জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার, দেশের সকলরাজনৈতিক দল, ১২৫ কোটি ভারতবাসী আপনাদের মংল চান, আপনাদের উন্নতি চান, আপনাদেরসুখে দুঃখে পাশে থাকতে চান। আমরা উন্নয়নের মন্ত্র নিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদেরস্মরণে রেখে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ দেশের সার্বিক উন্নয়নেরস্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছি। এটাই সময়ের দাবি। এই ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই আমরাদেশকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে পারবো।

আগামী দিন গুলিতে সারা দেশে ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকানিয়ে জনগণের শোভাযাত্রা চলবে। এই ত্রিবর্ণরঞ্জিতজাতীয় পতাকা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মবলিদানের স্মারক । এই ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা ভারতের ভাগ্য বদলের প্রেরণা জোগায়। এই ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকার চেয়ে বড় আমাদের জীবনে আর কী আছে ? এই ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে দেশেরপ্রতিটি গ্রাম ও শহরের প্রত্যেক পাড়ায় স্বাধীনতার ৭০তম বর্ষ পালনের উদযাপনে আমরা নিজেদের মনে দেশভক্তির জোয়ার অনুভব করবো।দেশের জন্যে আত্মবলিদান নয়, এখন দেশের জন্যে কিছু করা, উন্নয়নযজ্ঞে সামিল হওয়ারবাতাবরণ গড়ে তুলতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমার প্রিয় দেশবাসী দেশের স্বাধীনতার ৭০তমবর্ষ পালনের উদযাপনে এক নতুন উৎসাহ – উদ্দীপনা নিয়ে পূর্ণ শক্তি নিয়ে এগিয়েআসবেন । আজ এখানে আসার সুযোগ করে দেওয়ারজন্যে মধ্যপ্রদেশ সরকারকে , এই জেলার আধিকারিকদের ,প্রত্যেক সরকারি কর্মচারিকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই । নামারসময় দেখেছি চারপাশে জল থইথই । এই কঠিন পরিস্থিতিতে আপনারা না জানি কত কষ্ট করে এই আয়োজন করেছেন!আমার চিন্তা হচ্ছিল, আপনাদের মধ্যে কেউ আবার অসুস্থ না হয়ে পড়েন! কারণএই প্রতিকূলপরিস্থিতিতে রাতের পর রাত পরিশ্রম করে তবেই এত সুন্দর আয়োজন সম্ভব হয়েছে। অবশ্যচন্দ্রশেখর আজাদ নামটাই এত প্রেরণাদায়ক, যা হয়তো আপনাদের রাতের ঘুম ত্যাগ করেখাওয়া দাওয়া ভুলে কাজ করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। এটাকেই দেশাত্মবোধ বলে।

আমি আজ চন্দ্রশেখর আজাদের জন্মস্থানে দাঁড়িয়ে দেশের জন্যেএই ধরনের পরিশ্রম করতে থাকা টিম ইন্ডিয়াকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। অনেক ধন্যবাদজানাই। চারিদিকে জল থইথই, মাটি দেখা যাচ্ছে না, এর মধ্যে দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানাতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসার ইচ্ছাশক্তিকে আমি শ্রদ্ধা জানাই।চন্দ্রশেখর আজাদ এবং অন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি এর থেকে বড় শ্রদ্ধাপ্রদর্শনের নিদর্শন আর কিছু হতে পারে না। যারা দেশের স্বাধীনতার জন্যে আন্দামান এরকারান্তরালে জীবন কাটিয়েছেন, যারা হাসতে হাসতে ফাঁসির দড়িকে গলায় পরে নিয়েছেন,যারা সারা জীবন সমাজের ভালর কথা ভেবে সমস্ত রকম আত্মত্যাগ করেছেন, যারা অহিংসারপূজারী ছিলেন, কিম্বা যারা সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নিয়েছিলেন, যাদের মিলিত প্রয়াসেএই দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই সকল মহামানবদের শ্রদ্ধা জানাতে আজ আপনারা সমস্তপ্রতিকূলতা উপেক্ষা করে এখানে সমবেত হয়েছেন। আপনাদের সকলকে আমি প্রণাম জানাই,অভিনন্দন জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

PG/SB/SB