নয়াদিল্লি, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১
নমস্কার!
‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর অত্যন্ত সুন্দর ছবি আজ এখানে দেখা যাচ্ছে। আজ এই কর্মসূচির স্বরূপ অত্যন্ত বিশাল এবং ঐতিহাসিক।
কেভাড়িয়াতে আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেবব্রতজি, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানিজি, প্রতাপনগরে উপস্থিত গুজরাট বিধানসভার অধ্যক্ষ শ্রী রাজেন্দ্র ত্রিবেদীজি, আমেদাবাদে উপস্থিত গুজরাটের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেলজি, দিল্লিতে উপস্থিত আমার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সহযোগী পীযূষ গোয়েলজি, বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করজি, ডঃ হর্ষ বর্ধনজি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ভাই অরবিন্দ কেজরিওয়ালজি, মধ্যপ্রদেশের রিওয়ায় উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানজি, মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী ভাই উদ্ধব ঠাকরেজি, বারাণসীতে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথজি, তাছাড়া তামিলনাড়ু সহ অন্যান্য রাজ্য সরকারের মাননীয় মন্ত্রীগণ, সাংসদগণ, বিধায়কগণ যাঁরা আমাদের এই বিশাল কর্মসূচিতে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন, আর সব থেকে বড় আনন্দের কথা হল, আজ আনন্দ-এ উপস্থিত রয়েছেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলজির বৃহৎ পরিবারের অনেক সদস্য, তাছাড়া কলা ও সংস্কৃতি জগতের অনেক বরিষ্ঠ শিল্পী, ক্রীড়া জগতের অনেক তারকা, বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্থলে আমাদের আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য উপস্থিত বিপুল সংখ্যক জনগণ, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তাছাড়া গোটা ভারত থেকে আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্বকারী যে বালক-বালিকারা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে তাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন।
রেলের ইতিহাসে সম্ভবত প্রথমবার এরকম হচ্ছে যে একসঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এক জায়গার জন্য এতগুলি ট্রেনকে সবুজ পতাকা দেখানো হল। আসলে কেভাড়িয়া জায়গাটাই এখন এরকম হয়ে উঠেছে। এর পরিচিতি দেশকে ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর মন্ত্র প্রদানকারী, দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার কৃতিত্ব যাঁর রয়েছে, সেই সর্দার প্যাটেলের বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি স্ট্যাচু অফ ইউনিটি-র সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আর যুক্ত হয়েছে সর্দার সরোবর বাঁধের সঙ্গে। আজকের এই আয়োজন প্রকৃত অর্থেই ভারতকে ঐক্যবদ্ধকারী ভারতীয় রেলের দূরদৃষ্টি এবং সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জীবনের উদ্দেশ্য এই দুটিকেই একসঙ্গে পরিভাষিত করছে। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এই কর্মসূচিতে ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের এত জনপ্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছেন। আমি আপনাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
আজ কেভাড়িয়ার জন্য রওনা হওয়া সবক’টি ট্রেনের মধ্যে একটি ট্রেন পুরাৎচি থালাইভার ডঃ এম জি রামচন্দ্রন সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশন থেকেও আসছে। সংযোগবশতঃ এটা অত্যন্ত আনন্দের যে আজ ভারতরত্ন এমজিআর-এর জন্মজয়ন্তীও। এমজিআর ফিল্মি দুনিয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দুনিয়া পর্যন্ত জনগণের হৃদয়ে রাজত্ব করতেন। তাঁর জীবন, তাঁর গোটা রাজনৈতিক যাত্রা গরীবদের জন্য সমর্পিত ছিল। গরীবরা যাতে সম্মানজনক জীবন পান তা সুনিশ্চিত করতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। ভারতরত্ন এমজিআর-এর এই আদর্শগুলিকে বাস্তবায়িত করার জন্য আজ আমরা সবাই চেষ্টা করছি। কয়েক বছর আগেই দেশ তাঁর সম্মানে চেন্নাই সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনের নাম বদলে এমজিআর-এর নামে রেখেছে। আমি ভারতরত্ন এমজিআর-কে প্রণাম জানাই, তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ কেভাড়িয়াকে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগের মাধ্যমে যুক্ত করার এই মুহূর্তটি গোটা দেশের জন্য একটি অদ্ভূত মুহূর্ত, আমাদের প্রত্যেকের গর্বে ভরে ওঠার মুহূর্ত। কিছুক্ষণ আগে চেন্নাই ছাড়াও বারাণসী, রিওয়া, দাদর, দিল্লি থেকে কেভাড়িয়া এক্সপ্রেস রওনা দিয়েছে। আর আমেদাবাদ থেকে জনশতাব্দী এক্সপ্রেস কেভাড়িয়ার জন্য রওনা হয়েছে। এভাবে কেভাড়িয়া আর প্রতাপনগরের মধ্যে মেমু পরিষেবা শুরু হয়েছে। দভৈ-চান্দোর রেললাইন প্রশস্তিকরণ এবং চান্দোর-কেভাড়িয়ার মধ্যে নতুন রেললাইন এখন কেভাড়িয়ার উন্নয়ন যাত্রায় নতুন অধ্যয় লিখতে চলেছে। আর আজ এই ভারতীয় রেলের কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিছু পুরনো স্মৃতি মনে পড়ছে। খুব কম মানুষই জানেন যে বরোদা আর দভৈ-এর মাঝে আগে ন্যারোগেজ রেল চলত। আমি অনেকবার এ পথে যাতায়াত করেছি। মা নর্মদার প্রতি একটা সময়ে আমার খুব আকর্ষণ ছিল। আমি সুযোগ পেলেই আসতাম। জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত মা নর্মদার কোলে কাটিয়েছি এবং সেই সময় এই ন্যারোগেজ ট্রেনে কত যে চড়েছি। আর এই ন্যারোগেজ ট্রেনের একটা মজা ছিল যে এর গতি খুব কম ছিল। যে কোনও জায়গায় নেমে পড়ুন, আবার যে কোনও জায়গায় উঠে পড়ুন। কখনও এর সঙ্গে চলতে চলতে এরকম মনে হত যে ট্রেনের থেকে আমার গতি বেশি। এই ট্রেনের সঙ্গে কত যে মজা করেছি। কিন্তু আজ এই পথ ব্রডগেজে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে। এই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সব থেকে বড় লাভ হবে যাঁরা স্ট্যাচু অর ইউনিটি দেখতে আসবেন সেই পর্যটকদের। পাশাপাশি, এই যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন কেভাড়িয়ার আদিবাসী ভাই-বোনদের জীবনেও বদলাতে চলেছে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিষেবার পাশাপাশি কর্মসংস্থান এবং স্বরোজগারের নতুন নতুন সুযোগ নিয়ে আসবে। এই রেললাইন মা নর্মদার তটবর্তী করনালী, পোইচা এবং গরুড়েশম্বরের মতো আধ্যাত্মের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিকে যুক্ত করবে এবং একথা সত্যি যে গোটা অঞ্চল এক ধরনের আধ্যাত্মিক স্পন্দনে পরিপূর্ণ। আর এই ব্যবস্থার ফলে সাধারণত যারা আধ্যাত্মিক গতিবিধির জন্য এখানে আসেন, তাঁদের জন্য তো এক ধরনের বড় আশীর্বাদী উপহার।
ভাই ও বোনেরা,
আজ কেভাড়িয়া গুজরাটের প্রান্তিক অঞ্চলের একটি ছোট ব্লক হয়ে থেকে যায়নি। এখন কেভাড়িয়া বিশ্বের সবচাইতে বড় পর্যটক গন্তব্য রূপে উঠে আসছে। স্ট্যাচু অফ ইউনিটি দেখার জন্য এখন স্ট্যাচু অফ লিবার্টির থেকেও বেশি পর্যটক আসছেন। উদ্বোধনের পর থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ স্ট্যাচু অফ ইউনিটি দেখতে এসেছেন। করোনার মাসগুলিতে সবকিছু বন্ধ থাকার পর আবার যখন খুলেছে, কেভাড়িয়াতে পর্যটকের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে যে যেভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে, ভবিষ্যতে প্রতিদিন ১ লক্ষ মানুষ কেভাড়িয়া আসতে শুরু করবেন।
বন্ধুগণ,
ছোট্ট সুন্দরী কেভাড়িয়া একথা প্রমাণ করে যে সুপরিকল্পিতভাবে পরিবেশ রক্ষা করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা যেতে পারে। এখানে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক গণ্যমান্য মানুষ হয়তো কখনও কেভাড়িয়া আসেননি। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, একবার কেভাড়িয়ার উন্নয়ন যাত্রা দেখার পর আপনারাও দেশের এই ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা নতুন স্থানটি দেখে গর্বিত হবেন।
বন্ধুগণ,
আমার মনে আছে, যখন শুরুতে কেভাড়িয়াকে বিশ্বের উন্নত পারিবারিক পর্যটক গন্তব্য হিসেবে গড়ে তোলার কথা উঠত, তখন অনেকের মনে হত, এই ভাবনাটা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেকে বলতেন, এটা সম্ভবই নয়, হতেই পারে না। একাজ করতে অনেক দশক লেগে যাবে। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তাঁদের কথায় অনেক যুক্তি ছিল। কেভাড়িয়া আসা-যাওয়ার জন্য কোনও প্রশস্ত সড়কপথ ছিল না। যে পথ ছিল সে পথে তেমন স্ট্রিটলাইট ছিল না, রেল ছিল না, পর্যটকদের থাকার জন্য উন্নত ব্যবস্থা ছিল না। নিজের গ্রামীণ প্রেক্ষিত নিয়ে কেভাড়িয়া দেশের অন্য যে কোনও ছোট গ্রামের মতোই ছিল। কিন্তু আজ কয়েক বছরে কেভাড়িয়ার গোটা চিত্রটাই বদলে গেছে। এখন কেভাড়িয়া পৌঁছনোর জন্য প্রশস্ত সড়কপথ আছে, থাকার জন্য গোটা টেন্ট সিটি আছে, অন্যান্য সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে, খুব ভালো মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে, খুব ভালো হাসপাতাল আছে। কিছুদিন আগে তো বিমান পরিষেবাও চালু হয়েছে। আর আজ একসঙ্গে দেশের এতগুলি শহর থেকে এতগুলি রেল রুট কেভাড়িয়ার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এই শহর এখন একরকম ‘কমপ্লিট ফ্যামিলি প্যাকেজ’ রূপে পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। স্ট্যাচু অফ ইউনিটি এবং সর্দার সরোবর বাঁধের অনুপম দৃশ্য, তার বিশালতার অনুভব, আপনারা কেভাড়িয়া পৌঁছলেই টের পাবেন। এখন এখানে কয়েকশ’ একর বিস্তৃত সর্দার প্যাটেল জুলজিক্যাল পার্ক আছে, জঙ্গল সাফারি আছে। একদিকে আয়ুর্বেদ আর যোগের মাধ্যমে আরোগ্যসাধন হতে পারে, আর আরেকদিকে পুষ্টি পার্ক আছে। রাতে আলোয় ঝলমলে বাগান আছে, দিনে দেখার জন্য ক্যাকটাস বাগান এবং প্রজাপতি বাগান আছে। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য ‘একতা ক্রুজ’ আছে, অন্যদিকে নবীন অভিযানকারীদের সাহস প্রদর্শনের জন্য র্যাফটিং-এর ব্যবস্থাও আছে। অর্থাৎ, শিশু থেকে শুরু করে যুবক কিংবা বৃদ্ধ – সকলের জন্য এখানে অনেক কিছু আছে। ক্রমে উন্নত থেকে উন্নততর হয়ে ওঠা পর্যটন ব্যবস্থার ফলে স্থানীয় আদিবাসী যুবক-যুবতীরা কর্মসংস্থান পাচ্ছেন। এখানকার সাধারণ মানুষের জীবনে দ্রুতগতিতে আধুনিক পরিষেবা পৌঁছচ্ছে। কেউ ম্যানেজার হয়েছেন, কেউ ক্যাফের মালিক, আর অনেকে গাইডের কাজ করছেন। আমার মনে পড়ে যখন আমি জুলজিক্যাল পার্কে পাখিদের জন্য তৈরি বিশেষ ‘অ্যাভিয়ারি ডোম’ দেখতে গিয়েছিলাম, তখন সেখানে এক স্থানীয় মহিলা গাইড এত বিস্তারিতভাবে পাখিগুলি নিয়ে আমাকে বলেছিলেন যে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তাছাড়া, কেভাড়িয়ার স্থানীয় মহিলারা তাঁদের হস্তশিল্প বিক্রির জন্য তৈরি বিশেষ ‘একতা মল’-এ নিজেরা সরাসরি পর্যটকদের কাছে বিক্রি করতে পারছেন। আমাকে বলা হয়েছে যে কেভাড়িয়ার আদিবাসী গ্রামগুলিতে ২০০টিরও বেশি ঘর চিহ্নিত করে সেগুলিকে পর্যটকদের জন্য হোম-স্টে রূপে বিকশিত করা হচ্ছে।
ভাই ও বোনেরা,
কেভাড়িয়াতে যে রেল স্টেশন গড়ে তোলা হয়েছে, সেখানেও পরিষেবার পাশাপাশি পর্যটনের কথা মাথায় রাখা হয়েছে। সেখানে একটি ট্রাইবাল আর্ট গ্যালারি, আর একটি ভিউয়িং গ্যালারিও তৈরি করা হচ্ছে। এই ভিউয়িং গ্যালারি থেকে পর্যটকরা স্ট্যাচু অফ ইউনিটি দেখতে পাবেন।
বন্ধুগণ,
এভাবে লক্ষ্য-নির্দিষ্ট প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভারতীয় রেল যে পরিবর্তিত হচ্ছে তারও প্রমাণ এখানে পাবেন। ভারতীয় রেলের পারম্পরিক যাত্রী এবং মালগাড়ি চালনার ভূমিকা পালনের পাশাপাশি, এখন আমাদের প্রধান পর্যটন এবং আধ্যাত্মের সঙ্গে যুক্ত সার্কিটগুলিকে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রদান করছে। এখন তো অনেক রুটে ‘ভিস্টা-ডোম’ সম্পন্ন কোচ ভারতীয় রেলের যাত্রাপথকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে। আমেদাবাদ-কেভাড়িয়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেসও সেই ট্রেনগুলির অন্যতম যেগুলিতে ‘ভিস্টা-ডোম’ কোচের পরিষেবা পাওয়া যাবে।
বন্ধুগণ,
বিগত বছরগুলিতে দেশে রেল পরিকাঠামোকে আধুনিকতর করে তোলার জন্য যত কাজ হয়েছে তা অভূতপূর্ব। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের অধিকাংশ উদ্যোগ পূর্ববর্তী রেল ব্যবস্থাকে ঠিকঠাক করতে কিংবা সংস্কার করতেই লেগে গেছে। এই সময়ে নতুন ভাবনা ও নতুন প্রযুক্তিকে তেমন অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। এই দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করার খুব প্রয়োজন ছিল। আর সেজন্যই বিগত বছরগুলিতে দেশে রেলের গোটা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তনের কাজ করা হয়েছে। এ কাজ নিছকই বাজেট কমিয়ে-বাড়িয়ে, নতুন ট্রেন ঘোষণা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এই পরিবর্তন একসঙ্গে অনেকভাবে করা হয়েছে। এখন যেমন কেভাড়িয়াকে রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য এই অভিনব প্রকল্পের উদাহরণ যদি তুলে ধরি, একটু আগেই আপনারা একটি ভিডিও-র মাধ্যমে দেখেছেন যে বিভিন্ন ঋতু পরিবর্তনের সময় বা করোনা মহামারীর ফলে অনেক ধরনের বাধা এসেছিল। কিন্তু রেকর্ড সময়ে এ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং যে নতুন নির্মাণ প্রযুক্তি এখন রেল ব্যবহার করছে সেটাও এক্ষেত্রে খুব সাহায্য করেছে। এই সময়ের মধ্যে নতুন নতুন রেলপথ থেকে শুরু করে অনেক সেতু তৈরিতে নতুন প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় স্তরে পাওয়া যায় এরকম কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়েছে। সিগন্যালিং-এর কাজ দ্রুত করার জন্য ভার্চ্যুয়াল মোডের মাধ্যমে টেস্ট করা হয়েছে। পূর্ববর্তী পরিস্থিতিতে এ ধরনের প্রতিকূলতা এলে প্রায়ই বিভিন্ন প্রকল্প ঝুলে যেত।
বন্ধুগণ,
ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর-এর প্রকল্প আমাদের দেশে আগে যে নিয়ম-নীতি অনুসারে চলত, তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। একটি উদাহরণ দিচ্ছি, পূর্ব এবং পশ্চিম ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের একটি বড় সেকশনের উদ্বোধন করার সুযোগ আমি কয়েকদিন আগে পেয়েছি। দেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়ে এই প্রকল্পটি ২০০৬-১৪ পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রায় ৮ বছর ধরে শুধু ফাইল চালাচালি হয়েছে। ২০১৪ পর্যন্ত ১ কিলোমিটার রেললাইনও পাতা হয়নি। তারপর থেকে কাজ শুরু করে এখন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই ফ্রেট করিডরের প্রায় ১,১০০ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
দেশে রেল নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণের পাশাপাশি আজ দেশের সেই অঞ্চলগুলিকে রেলের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে যেগুলি এতদিন যুক্ত ছিল না। আজ আগের থেকে অনেক বেশি গতিতে পুরনো রেল রুটগুলির প্রশস্তিকরণ এবং বৈদ্যুতিকীকরণ করা হচ্ছে। রেল ট্র্যাকগুলিকে দ্রুত গতিসম্পন্ন ট্রেন যাওয়ার উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। সেজন্য আজ দেশে সেমি-হাইস্পিড ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে। আর আমরা হাইস্পিড ট্র্যাক এবং প্রযুক্তি বাস্তবায়নের দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছি। এ কাজের জন্য বাজেট অনেকগুণ বাড়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, রেলকে পরিবেশ-বান্ধব করার জন্য অনেক কাজ করা হচ্ছে। কেভাড়িয়া রেল স্টেশন ভারতের প্রথম এমন স্টেশন যা জন্মলগ্নেই গ্রিন বিল্ডিং রূপে শংসাপত্র পেয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
রেলকে দ্রুতগতিতে আধুনিকীকরণের একটা বড় কারণ রেলওয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং আর রেল প্রযুক্তিতে আত্মনির্ভরতার দিকে আমাদের অগ্রাধিকার। বিগত বছরগুলিতে এই লক্ষ্যে যত কাজ হয়েছে তার পরিণাম এখন ধীরে ধীরে আমাদের সামনে দেখতে পাচ্ছি। এখন ভাবুন, আমরা যদি ভারতে হাই হর্স পাওয়ারের ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ তৈরি না করতাম, তাহলে কি বিশ্বের প্রথম ডবল স্ট্যাক লং হল কন্টেনার ভারতে চালাতে পারতাম। আজ ভারতেই প্রস্তুত একটার থেকে আরেকটা বেশি সুবিধাসম্পন্ন আধুনিক ট্রেন ভারতীয় রেলের গর্ব বৃদ্ধি করছে।
ভাই ও বোনেরা,
আজ যখন ভারতীয় রেলের রূপান্তরণের মাধ্যমে আমরা এগিয়ে চলেছি, তখন অতি দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ মানবসম্পদ এবং পেশাদারদের অনেক প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে। ভদোদরায় ভারতের প্রথম ডিমড রেলওয়ে ইউনিভার্সিটি স্থাপনের পেছনেও এটাই উদ্দেশ্য। রেলের জন্য এ ধরনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের অগ্রণী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম স্থান দখল করেছে। রেল পরিবহণ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি রিসার্চ, প্রশিক্ষণ, সকল প্রকার আধুনিক পরিষেবা এসব কিছু এখানে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০টি রাজ্যের কয়েকশ’ মেধাবী যুবক ভারতীয় রেলের বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে উন্নত করে তুলতে এখানে নিজেদের প্রশিক্ষিত করছেন। এখানে সংশ্লিষ্ট নানারকম উদ্ভাবন এবং গবেষণার মাধ্যমে ভারতীয় রেলকে অত্যাধুনিক করে তোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভারতীয় রেল ভারতের উন্নয়নের ট্র্যাককে যাতে গতি প্রদান করতে থাকে এই কামনা নিয়ে আরেকবার গুজরাট সহ গোটা দেশকে এই নতুন রেল পরিষেবার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আর সর্দার সাহেবকে পড়নাম, ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, যখন ভারতের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এসে এই স্ট্যাচু অফ ইউনিটি-র পবিত্র ভূমিতে দেশের নানা ভাষা, নানা পরিধানের মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে, তখন দেশের ঐক্যের সেই দৃশ্য এক প্রকার এই মিনি ভারতে আমরা দেখতে পাব।
আজ কেভাড়িয়ার জন্য একটি বড় বিশেষ দিন। দেশের ঐক্য এবং অখণ্ডতাকে উন্নত করার যে প্রচেষ্টা নিয়মিত চলছে, এর মাধ্যমে তার একটি নতুন অধ্যায় সংযোজিত হচ্ছে। আমি আরেকবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই!
অনেক অনেক ধন্যবাদ!
***
CG/SB/DM
Watch Live! https://t.co/adcXkQ7aKE
— PMO India (@PMOIndia) January 17, 2021
A historic day! Inaugurating various projects relating to Railways in Gujarat. #StatueOfUnityByRail https://t.co/IxiVdLfFdQ
— Narendra Modi (@narendramodi) January 17, 2021
स्टैच्यू ऑफ यूनिटी तक डायरेक्ट रेल कनेक्टिविटी तैयार करने के लिए भारतीय रेल ने जिस बुलंद हौसले का परिचय दिया है, वह प्रशंसनीय है। भारी वर्षा और कोरोना जैसी महामारी भी विकास की इस तेज रफ्तार के आड़े नहीं आ पाई। pic.twitter.com/MZW5ZebEQi
— Narendra Modi (@narendramodi) January 17, 2021
आज जब रेल के इस कार्यक्रम से जुड़ा हूं तो कुछ पुरानी स्मृतियां भी ताजा हो रही हैं।
— Narendra Modi (@narendramodi) January 17, 2021
केवड़िया का देश की हर दिशा से सीधी रेल कनेक्टिविटी से जुड़ना पूरे देश के लिए अद्भुत क्षण है, गर्व से भरने वाला पल है। pic.twitter.com/kkJsv9juZz
खूबसूरत केवड़िया इस बात का बेहतरीन उदाहरण है कि कैसे Planned तरीके से पर्यावरण की रक्षा करते हुए Economy और Ecology, दोनों का तेजी से विकास किया जा सकता है। pic.twitter.com/VR6DThmJDk
— Narendra Modi (@narendramodi) January 17, 2021
बीते वर्षों में देश के रेल इंफ्रास्ट्रक्चर को आधुनिक बनाने के लिए जितना काम हुआ है, वह अभूतपूर्व है। pic.twitter.com/EXSjxlESQk
— Narendra Modi (@narendramodi) January 17, 2021