প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি নিবিড় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে।
সৌদি আরব সফররত প্রধানমন্ত্রী সেদেশের সংবাদ মাধ্যম আরব নিউজ – এর সঙ্গে কথা বলছিলেন।
বিগত তিন বছরে প্রধানমন্ত্রীর এটি দ্বিতীয়বার সৌদি আরব সফর।
শ্রী মোদী বলেছেন, জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্য থেকে ভারত ও সৌদি আরব বৈষম্য দূর করতে এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের বিকাশে একযোগে কাজ করে আসছে।
তেলের মূল্য স্থিতিশীল থাকা বিশ্ব অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে শ্রী মোদী ভারতের শক্তি চাহিদার ক্ষেত্রে এক বিশ্বাসযোগ্য উৎস এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসাবে সৌদি আরবের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তাঁর সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের ব্যক্তিগত সক্ষতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০১৬’তে আমার প্রথম সৌদি সফরের সময় থেকে আমাদের দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আমি ব্যক্তিগতভাবে এক অভূতপূর্ব অগ্রগতি লক্ষ্য করেছি। যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে আমার পাঁচ বার সাক্ষাৎ হয়েছে। গতবার তাঁর সঙ্গে আমার কার্যকর ও ইতিবাচক বৈঠকের কথা মনে পড়ছে। এবারের সফরেও তাঁর সঙ্গে আমার বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস”।
“আমি বিশ্বাস করি যে, সম্রাট সলমন ও যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সুদক্ষ নেতৃত্বে ভারত ও সৌদি আরবের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত ও নিবিড় হবে”।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “‘প্রতিবেশীরাই প্রথম’ – আমার সরকারের এই বৈদেশিক নীতি অব্যাহত থাকবে। আমাদের ভৌগোলিক দিক থেকে দূরবর্তী প্রতিবেশীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সৌদি আরবের মতোই সমান অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে”।
প্রধানমন্ত্রীর এবারের সৌদি সফরে দু’দেশের মধ্যে যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব পরিষদ চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে চলেছে, সে প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেছেন, “এই চুক্তি সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের দু’দেশের সম্পর্ক আরও নিবিড় ও মজবুত হবে”।
“আমি বিশ্বাস করি, ভারত ও সৌদি আরবের মতো এশিয়ার শক্তিধর দেশগুলির কাছে প্রতিবেশীদের পক্ষ থেকে অভিন্ন নিরাপত্তাজনিত সমস্যা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমাদের দু’দেশের সহযোগিতা, বিশেষ করে সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তা ও কৌশলগত ক্ষেত্রগুলিতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হচ্ছে। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সদ্য রিয়াদ সফর করে গেছেন এবং তাঁর এই সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে” বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।
শ্রী মোদী বলেছেন, ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ক্ষেত্রে একটি যৌথ কমিটি রয়েছে। এই কমিটির নিয়মিত বৈঠক আয়োজিত হয়। এমনকি, এই দুই দেশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিহ্নিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিরক্ষা শিল্প ক্ষেত্রে সহযোগিতা তথা নিরাপত্তাগত ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, পারস্পরিক পর্যায়ে নিরাপত্তাগত ক্ষেত্রগুলিতে আলাপ-আলোচনামূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে অশান্তি ও বিক্ষোভ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী যাবতীয় দ্বন্দ্ব নিরসনে সামঞ্জস্যমূলক প্রয়াস গ্রহণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, প্রত্যেক দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে একে অপরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার পন্থা অবলম্বনের জন্য।
তিনি আরও বলেছেন, “এই অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে ভারতের দারুণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি, সমগ্র এই অঞ্চলে অনাবাসী ভারতীয়র সংখ্যা প্রায় ৮০ লক্ষ। এই অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এমন এক আলাপ-আলোচনামূলক বাতাবরণ গড়ে তোলা প্রয়োজন, যা সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করবে”।
বর্তমান বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থা নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী সম্পর্কে শ্রী মোদী বলেন, “ভারতের মতো বৃহৎ উন্নয়নশীল দেশগুলির পদক্ষেপের ওপরই বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থার কাঠামো গঠন নির্ভর করছে। গত সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে আমি বলেছিলাম, আমরা আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি যে, প্রত্যেকের আস্থা নিয়ে সকলের সমান অগ্রগতির জন্য আমাদের সমবেত প্রয়াস গ্রহণের প্রয়োজন”।
শ্রী মোদী আরও বলেন, “আর্থিক অনিশ্চয়তার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে থেকে ভারত ও সৌদি আরব অসামঞ্জস্যতা কমাতে এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের প্রসারে একযোগে কাজ করে এসেছে। আমি এটা জেনে অত্যন্ত আনন্দিত যে, আগামী বছর সৌদি আরব জি-২০ শিখর বৈঠক এবং ২০২২ সালে ভারত এই বৈঠক আয়োজন করতে চলেছে। ভারতে যখন এই শিখর বৈঠক আয়োজিত হবে, সেই সময় আমাদের দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করবে”।
পশ্চিমী অর্থনীতিতে বর্তমান মন্দা এবং এই আবহে ভারত ও সৌদি আরবের ভূমিকা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাণিজ্য-বান্ধব বাতাবরণ গড়ে তুলতে ভারত একাধিক সংস্কারমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিশ্ব অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার এক প্রধান চালিকাশক্তি হিসাবে নিজেদের প্রমাণ করার জন্যই এই পদক্ষেপ। সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলা এবং বিনিয়োগ-বান্ধব উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের সংস্কারমূলক প্রয়াসগুলির দরুণ বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহজে বাণিজ্য করার সুযোগ-সুবিধার ক্রমতালিকায় ভারত ২০১৪’র ১৪২তম স্থান থেকে ২০১৯ – এ ৬৩তম স্থানে পৌঁছেছে”।
সর্ববৃহৎ তেল সরবরাহকারী দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের শক্তি ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, “ভারত এই দেশটি থেকে প্রায় ১৮ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে থাকে। এজন্য এই দেশটি আমাদের কাছে অপরিশোধিত তেল যোগানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম হয়ে উঠেছে। এক সময়ের ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক থেকে আমরা এখন এক ঘনিষ্ঠ কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি। এই অংশীদারিত্বের মধ্যে তেল ও গ্যাস প্রকল্পগুলিতে সৌদি আরবের বিনিয়োগের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে”।
“আমাদের শক্তি চাহিদার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য উৎস হিসাবে আমরা সৌদি আরবের কার্যকর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে থাকি। আমরা বিশ্বাস করি যে, বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থার বিকাশে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বার্থে তেলের মূল্য স্থিতিশীল থাকা অত্যন্ত জরুরি। ভারতের পশ্চিম উপকূলে এক গুরুত্বপূর্ণ শোধনাগার ও পেট্রো রসায়ন প্রকল্পে সৌদি আরামকো সংস্থা অংশগ্রহণ করছে। ভারতের কৌশলগত পেট্রোলিয়াম মজুত ভাণ্ডারগুলিতেও আরামকো সংস্থার অংশগ্রহণের ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী” বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
স্মার্ট সিটি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারতের ব্যাপক কর্মযজ্ঞে সৌদি আরবের অংশগ্রহণ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, “ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে সহযোগিতার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হ’ল আমাদের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে সেদেশের বিনিয়োগ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত সফরের সময় সৌদি যুবরাজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন”।
“স্মার্ট সিটি কর্মসূচি সহ আমাদের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে আরও বেশি পরিমাণ সৌদি বিনিয়োগকে আমরা স্বাগত জানাই। আমাদের জাতীয় বিনিয়োগ ও পরিকাঠামো তহবিলের ক্ষেত্রে সৌদি আরব যে অগ্রহ প্রকাশ করেছে, আমরা সেটিকেও স্বাগত জানাই” বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।
শক্তি ক্ষেত্র বাদ দিয়ে অন্যান্য যে সকল বিষয়ে ভারত ও সৌদি আরব সহযোগিতা করতে পারে, সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি আপনাদের একথা জানাতে চাই যে, এবারের সফরে ভারত ও সৌদি আরব প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সহ একাধিক ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা নিয়েছে”।
সৌদি আরবে রুপে কার্ড চালুর প্রস্তাব সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনাগুলির মধ্যে রয়েছে : ই-মাইগ্রেট এবং ই-থথিক পোর্টাল একত্রীকরণ এবং ভারতের নির্দিষ্ট কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সৌদি কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ। সৌদি আরবে রুপে কার্ড চালু হলে অনাবাসী ভারতীয়দের লেনদেনে সুবিধা হবে এবং ঐ দুটি পোর্টাল একত্রীকরণ হলে ভারতীয় শ্রমিকদের সেদেশে অভিবাসনে সুবিধা মিলবে।
বিশ্ব মানের দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জন্য ভারত অত্যন্ত সুবিদিত। সৌদি যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়ার একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এমনকি, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য আমরা আলোচনা করছি বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
সৌদি আরবে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রায় ২৬ লক্ষ ভারতীয় সৌদি আরবকে নিজেদের দ্বিতীয় বাড়ি হিসাবে বেছে নিয়েছেন। এরা সকলেই সেদেশের অগ্রগতি ও বিকাশে অবদান রেখে চলেছেন। এছাড়াও, বহু ভারতীয় প্রতি বছর হজ ও উমরাহ উৎসবে যোগ দিতে, এমনকি বাণিজ্যিক উদ্দেশে সৌদি আরবে যাতায়াত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সৌদি আরবে আপনারা নিজেদের নামের প্রতি যে সুবিচার করেছেন, তার জন্য ভারত গর্বিত। সেদেশে বসবাসকারী আমার সহ-নাগরিকদের প্রতি এটাই আমার বার্তা। আপনাদের কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিকতার ফলেই সার্বিক দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে এক সৌজন্যের পরিবেশ গড়ে উঠেছে।
“আমি অত্যন্ত আশাবাদী যে, সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে অটুট রাখতে আপনারা দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের বাঁধনকে অক্ষুণ্ণ রাখবেন। দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আরও নিবিড়তর করতে আপনাদের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। এই সম্পর্ক বহু দশক ধরে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে” বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।
এই সফরে শ্রী মোদী সম্রাট সলমনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনায় মিলিত হবেন এবং সৌদি যুবরাজের সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক করবেন। দ্বিপাক্ষিক স্তরে আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি, শ্রী মোদী তৃতীয় ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ উদ্যোগ ফোরামে মূল ভাষণ দেবেন। মধ্যপ্রাচ্যে এই ফোরামকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক মঞ্চ হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের ফলে, সেদেশের সঙ্গে নিরাপত্তা ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব, প্রতিরক্ষা, শক্তি নিরাপত্তা, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ, কৃষি, অসামরিক বিমান চলাচল, পরিকাঠামো, আবাসন, আর্থিক পরিষেবা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধি, সংস্কৃতি তথা মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে বর্তমান সম্পর্ক আরও মজবুত ও সম্প্রসারিত হবে। সরকারই পর্যায়ে প্রায় এক ডজন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও, সরকারি ও বাণিজ্যিক স্তরে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে চলেছে দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে চুক্তি। সৌদি আরবের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরকারী ভারত চতুর্থ দেশ হতে চলেছে। এর আগে গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স ও চীনের সঙ্গে সৌদি আরবের এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। কৌশলগত অংশীদারিত্ব পরিষদের দুটি সমান্তরাল শাখা থাকছে। এর একটি হ’ল – রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, সংস্কৃতি ও সামাজিক ক্ষেত্র। এর দায়িত্বে থাকছেন দু’দেশের বিদেশ মন্ত্রীরা। দ্বিতীয় শাখাটি হ’ল – অর্থনীতি ও বিনিয়োগ। এই শাখার দায়িত্বে থাকছেন ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী এবং সৌদি আরবের শক্তি মন্ত্রী।
সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হ’ল – শক্তি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা। ভারতের দীর্ঘমেয়াদী এক বিশ্বাসযোগ্য শক্তি সরবরাহকারী উৎস হিসাবে সৌদি আরবের ভূমিকাকে নতুন দিল্লি প্রশংসা জানিয়ে থাকে। ভারতের অশোধিত তেল চাহিদার ১৮ শতাংশই সৌদি আরব যোগান দিয়ে থাকে। এমনকি, ৩০ শতাংশ তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি-ও আসে সেদেশ থেকে। উভয় দেশই ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্কের ঊর্ধ্বে উঠে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র ও একে অপরের নির্ভরশীলতার ওপর ভিত্তি করে এক বৃহত্তর কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে গভীর আগ্রহী।
CG/BD/SB