Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

সিলভাসায় বিবিধ উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

সিলভাসায় বিবিধ উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

সিলভাসায় বিবিধ উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

সিলভাসায় বিবিধ উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

 

আজ আরেকবার প্রধান সেবকরূপে আপনাদের মাঝখানে এসেছি। কিন্তু আগেও আমি দমন, দিউ কিংবা এখানকার গ্রামগুলিতে আমার অনেকবার আসার সৌভাগ্য হয়েছে। দাদরা নগর হাভেলি এবং দমন-দিউ-তে আমার স্কুটার চালি ঘোরার সুযোগ হয়েছে। এখানকার খাওয়া-দাওয়া, রীতি-রেওয়াজ, এখানকার নাগলি – যখনই আসি, পুরনো সব স্মৃতি তাজা হয়ে ওঠে। আপনাদের ভালোবাসা আমাকে অভিভূত করেছে।

 

বন্ধুগণ, ২০১৭-র এপ্রিলে আপনাদের মাঝে এসে অনেকগুলি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলাম। আমি আনন্দিত যে এত কম সময়ে সেগুলির মধ্যে অধিকাংশের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে এবং বেশ কয়েকটির আজ উদ্বোধন হচ্ছে। আজ আমি এখানে প্রায় ১,৪০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে নির্মিত বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন কিংবা শিলান্যাস করেছি। এই প্রকল্পগুলি এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পর্যটন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংশ্লিষ্ট। এখানকার শিল্পোদ্যোগগুলিকে উৎসাহ যোগাতে আজ এখানে নতুন শিল্পনীতি এবং নতুন তথ্যপ্রযুক্তি নীতিও চালু করা হল। নতুন বছরে এই সমস্ত উপহারের জন্য আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন।

 

ভাই ও বোনেরা, ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ মন্ত্র নিয়ে চলতে থাকা কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নের পঞ্চধারার প্রতি সমর্পিত। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, যুবসম্প্রদায়ের কর্মসংস্থান, বয়স্কদের ওষুধ, কৃষকদের সেচ আর প্রত্যেক মানুষের অভাব-অভিযোগ শোনা – এগুলিই আমাদের উন্নয়নের রাজপথ। আমি এটা দেখে খুব খুশি হয়েছি যে বিগত পাঁচ বছরে দমন, দিউ এবং দাদরা নগর হাভেলির উন্নয়ন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করেছে। এই দুই অঞ্চলের একটি নতুন পরিচয় গড়ে উঠেছে। অনেক বিষয়ে এই দুই অঞ্চল সমগ্র দেশ থেকে এগিয়ে। ইতিমধ্যেই এই দুই অঞ্চল নিজেদের উন্মুক্ত স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত ঘোষণা করেছে। উভয় অঞ্চলে প্রত্যেক নাগরিকের রান্নাঘরে এলপিজি সংযোগ আছে। ফলে উভয় অঞ্চল নিজেদের কেরোসিন মুক্ত ঘোষণা করেছে। প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে, পানীয় জলের সংযোগও আছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে এই দুই অঞ্চলে যত গৃহহীন গরিব পরিবার ছিল, সকলের জন্য গৃহনির্মাণ মঞ্জুর করা হয়েছে। আজ উভয় অঞ্চলের যাঁরা আয়ুষ্মান ভারত যোজনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য, প্রত্যেককে ‘গোল্ড কার্ড’ প্রদান করা হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, বিগত তিন বছরে এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উন্নয়নে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই টাকা দিয়ে অনেক প্রকল্প শুরু হয়েছে, অনেক অসম্পূর্ণ প্রকল্প সম্পূর্ণ করা হয়েছে। সেই শৃঙ্খলার অন্তর্গত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হয়েছে। আজ আপনাদের একটি পুরনো দাবি মেনে দেশ স্বাধীন হওয়ার সাত দশক পর আজ দাদরা, নগর হাভেলি, দমন ও দিউ প্রথম মেডিকেল কলেজ পেয়েছে। এতদিন পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যের মেডিকেল কলেজে এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য বরাদ্দ ছিল বছরে মাত্র পনেরটি আসন। আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এখন যে নতুন মেডিকেল কলেজ গড়ে তুলেছি, সেখানে শুরুতে প্রতি বছর ১৫০ জন পড়বেন। পরে এই আসন সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।

 

ভাই ও বোনেরা, চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে কোনরকম সময় নষ্ট না করে একটি বিকল্প ভবনে এ বছর থেকেই মেডিকেল কলেজ চালু করা যায়। আমাকে বলা হয়েছে যে সিলভাসায় ২৫০টি প্যারা-মেডিকেল আর ৫০টি নার্সিং আসনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই অঞ্চলের নবীন প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নততর হয়ে উঠবে।

 

বন্ধুগণ, ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মীয়মান এই কলেজ ছাড়াও এই অঞ্চলে ‘স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রে’র যে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে, সেগুলির মাধ্যমে সাধারণ অসুখ-বিসুখের উন্নত চিকিৎসা বাড়ির পাশেই পাওয়া যাবে। ‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনা’র মাধ্যমে আজ এখানে এমনই ১৮০টি ‘স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র‘ উদ্বোধন করা হয়েছে।

 

ভাই ও বোনেরা, একটু আগে এখানে আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার উপকৃতদের ‘গোল্ড কার্ড’ প্রদান করা হয়েছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ‘হেল্‌থ কেয়ার’ প্রকল্প। গোটা বিশ্বে উচ্চ প্রশংসিত এই প্রকল্পকে অনেকে ‘মোদী কেয়ার’ নাম দিয়েছে। কারণ, এর মাধ্যমে দেশে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার গরিব মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সুনিশ্চিত হয়েছে। ইতিমধ্যে মাত্র ১০০ দিন থেকে কিছুদিন বেশি সময়ের মধ্যেই এর মাধ্যমে প্রায় ৭ লক্ষ গরিব মানুষের হাসপাতালে চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, শিক্ষার বিস্তারে দিউতে ‘এডুকেশন হাব’ গড়ে তুলে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের উচ্চশিক্ষা ও বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করার চেষ্টা হচ্ছে।

 

ভাই ও বোনেরা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পাশাপাশি সরকার সচেষ্ট যাতে কোন গরিব মানুষ গৃহহীন না থাকেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে গ্রাম ও শহরের গরিবদের বিনামূল্যে পাকাবাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য সারা দেশে একটি ব্যাপক অভিযান চালানো হয়েছে। এই প্রকল্পের দরুণ দাদরা, নগর হাভেলি এবং দমন-দিউ-তে অনেক গৃহহীনের হাতে তাঁদের জন্য নির্মিত পাকাবাড়ির চাবি আজ তুলে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, এমনই আরও অসংখ্য মানুষের জন্য গৃহনির্মাণের কাজ চলছে। একটু আগে এমনই নতুন গৃহনির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে। এর মধ্যে দমনের শিল্পাঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য নির্মীয়মান ‘হাউজিং প্রোজেক্ট’ও রয়েছে। আজ যাঁদের বাড়ির স্বপ্ন সফল হয়েছে, আর যাঁদের গৃহনির্মাণ শুরু হয়েছে তাঁদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন।

 

বন্ধুগণ, বিগত সাড়ে চার বছরে দাদরা-নগর হাভেলির মতো ছোট অঞ্চলে এক হাজারেরও বেশি শহুরে আবাস গড়ে তোলা হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকার তার পাঁচ বছরে দেশে গৃহহীনদের জন্য মাত্র ২৫ লক্ষ গৃহনির্মাণ করাতে পেরেছিল। আর আমরা সাড়ে চার বছরে ১ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি গৃহনির্মাণ করিয়েছি। অর্থাৎ পাঁচগুণেরও বেশি।

 

ভাই ও বোনেরা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে যাঁরা বাড়ি পেয়েছেন, তাঁরা সঙ্গে পেয়েছেন শৌচালয়, পানীয় জলের সংযোগ এবং উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে বিনামূল্যে এলপিজি সংযোগও। এরকম অনেক পরিষেবা গরিবের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। বন্ধুগণ, সাধারণ মানুষের জীবনকে সরল এবং তাদের যাতায়াত ব্যবস্থাকে সুগম করতে সারা দেশে নানা স্মার্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। সিলভাসা ও দিউ শহরকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে। সড়কপথ, গলিপথ, নিকাশি ব্যবস্থা, পানীয় জলের ব্যবস্থা এবং সাফাই পরিষেবা – প্রতিটি স্তরে কাজ চলছে। কিছুক্ষণ আগে ‘স্মার্ট সিটি’ সম্পর্কিত অনেক প্রকল্প উদ্বোধন করা হল।

 

বন্ধুগণ, সিলভাসা এই পুরো অঞ্চলের আর্থিক গতিবিধির প্রাণকেন্দ্র। এখানে অনেক শিল্পোদ্যোগ রয়েছে, ভবিষ্যতেও এখানে অনেক শিল্পোদ্যোগ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। সিলভাসা নগর নিগমের কার্যালয় ভবন, নিকাশি ব্যবস্থা এবং ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মতো পরিষেবাগুলি দমনবাসীর জীবন অনেক উন্নত করবে। তেমনই মোটি দমনে নির্মিত সমুদ্র প্রাচীর এখন আপনাদের সাগরের ঢেউ থেকে নিরাপদ রাখবে। বন্ধুগণ, গতবার যখন এখানে এসেছিলাম তখন অনেক আদিবাসী পরিবারকে জমির পাট্টা বিতরণ করেছি, আজও কয়েকজন আদিবাসী বন্ধুকে জমির অধিকার অর্পণের সৌভাগ্য আমার হয়েছে।

 

ভাই ও বোনেরা, জমি হোক, অরণ্য-সম্পদ হোক, লেখাপড়া হোক, ক্রীড়া প্রতিভা হোক, প্রতিটি স্তরে আদিবাসীদের কল্যাণে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ‘বন্ধন যোজনা’র মাধ্যমে অরণ্যজাত সবকিছুতে মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে সেগুলির যথাসম্ভব প্রচার ও প্রসারের জন্য সারা দেশে কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। জঙ্গল থেকে আদিবাসী ভাই-বোনেরা যা যা কুড়িয়ে এনে একত্রিত করে, তাঁরা যেন সেগুলির সঠিক মূল্য পান তা সুনিশ্চিত করতে ন্যূনতম সমর্থন মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, আদিবাসীদের রোজগার বৃদ্ধির পাশাপাশি সংস্কৃতির সংরক্ষণের জন্যও সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আজও এখানে ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যযুক্ত অনেক প্রকল্প শুরু হয়েছে। সংস্কৃতিকেন্দ্র সমূহ, পুরনো দুর্গগুলির সংরক্ষণ, দিউতে আইএনএস খুখরী সম্পর্কিত স্মারক স্থল সংরক্ষণ – এগুলি নিশ্চিতভাবেই স্থানীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ এবং সেগুলির প্রচার ও প্রসারে সফলকাম হবে।

 

বন্ধুগণ, সংস্কৃতি এবং গৌরব, ইতিহাসের এই স্মারক আমাদের ভাবনার প্রহরী হওয়ার পাশাপাশি নবীনদের কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ গড়ে তোলে, পর্যটনকে শক্তি যোগায়। দাদরা ও নগর হাভেলিতে পর্যটন উন্নয়নের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার এই অঞ্চলকে পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরার জন্য সমস্তরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সিলভাসায় নির্মিত দমন গঙ্গা ‘রিভার ফ্রন্ট’-এর পেছনেও এই ভাবনা কাজ করেছে। এটি এখন নতুন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। তাছাড়া, এখানে ২০০ বর্গ কিলোমিটার সংরক্ষিত অরণ্য এলাকা রয়েছে। এই অরণ্য এলাকা এখানে পর্যটন শিল্পের জন্য বরদান। যেসব খাত থেকে বৃষ্টির জল এসে মধুবন বাঁধের জলাধার পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সেসব খাতে ‘ওয়াটার স্পোর্টস’-এর আয়োজন বৃদ্ধি করা যেতে পারে। দাদরা ও নগর হাভেলির ইন্টারনেট পরিষেবা উন্নত করতে এখানকার প্রধান পর্যটন কেন্দ্র সমূহ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াই-ফাই পরিষেবা প্রদানের প্রচেষ্টা চলছে।

 

বন্ধুগন, পর্যটনের সঙ্গে পারস্পরিক কর্মসংস্থানের উপায় এবং সম্পদ যোগানোকেও শক্তিশালী করা হচ্ছে। নীল বিপ্লব প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে। মৎস্যজীবী ভাই-বোনেদের মাছ ধরা এবং তা মৎস্য বাজারজাত করা সহজ করতে নানারকম প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। জেলেদের পারিবারিক নৌকো পালটে আধুনিক মোটরবোটের ব্যবস্থা করার কাজ চলছে। মৎস্য উৎপাদন থেকে বাণিজ্য পর্যন্ত ব্যবস্থাসমূহকে উন্নত করার জন্য জেলেদের সহজ ও সস্তা ঋণের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গড়ে তোলা হয়েছে। এই তহবিলের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

ভাই ও বোনেরা, আজ গরিবদের জন্য, আদিবাসীদের জন্য, মধ্যবিত্তদের জন্য যত প্রকল্প চলছে, সেগুলির মূলে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-ই আমাদের প্রেরণা। অথচ যে দল অনেক দশক ধরে দেশে সরকার পরিচালনা করেছে, তাঁরা প্রত্যেক কাজে নিজের অথবা পরিবারের স্বার্থ দেখত। সেজন্য সেখানে কাজের থেকে বেশি নামের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

 

বন্ধুগণ, এই পুরনো সরকারি অভ্যাসে আমরা পরিবর্তন এনেছি। আমরা নামের বদলে কাজকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আজ সরকারি প্রকল্পগুলির নাম কেমন হয়? আয়ুষ্মান ভারত যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা। কিন্তু কোথাও মোদীর নাম নেই। এটা থেকেই বোঝা যায় যে আমাদের উদ্দেশ্য জনগণের উন্নয়ন। আর আমার জন্য তো ১২৫ কোটি ভারতবাসীই আমার পরিবার, আর এই ১২৫ কোটি দেশবাসীর কল্যাণই আমার জন্য সত্যিকারের কল্যাণের পথ।

 

বন্ধুগণ, এই পরিচ্ছন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং স্পষ্ট নীতি তাঁরা সহ্য করতে পারেনা। তাদের সমস্যা হল দুর্নীতির বিরুদ্ধে এত কড়া পদক্ষেপ কেন? ক্ষমতার অলিগলিতে ঘুরে বেড়ানো দালালদের মোদী কেন বাইরে বের করে দিয়েছে? গরিবদের অধিকার হরণকারী, তাঁদের রেশন, তাঁদের পেনশন, তাঁদের ন্যায্য অধিকার হরণকারী দালালদের মোদী কেন বের করে দিয়েছে? এই রাগে এখন অনেক চিরশত্রু একসঙ্গে হাত মিলিয়ে মহাজোট গঠন করছে। আগে যাঁরা কংগ্রেসকে দু’চোখে দেখতে পারত না, তাঁরাও একমঞ্চে চলে এসেছে।

 

বন্ধুগণ, এই মহাজোট শুধু মোদীর বিরোধী নয়, এরা আসলে দেশের জনগণেরও বিরোধী। এখনও এরা সবাই ঠিকভাবে জোটে আসেনি, কিন্তু দরকষাকষি চলছে, লেনদেন চলছে – এটাও দেশের নবীন প্রজন্ম, কৃষক, মহিলারা, প্রথমবার যাঁরা ভোট দেবেন সেই নবীনরা ভালোভাবে দেখছে, আর কেউ এদের চোখে ধুলো দিতে পারবে না।

 

বন্ধুগণ, এদের দিন আজকাল মোদীর প্রতি ঘৃণা দিয়ে শুরু হয় আর মোদীকে গালি দিয়ে শেষ হয়। আমার বিশ্ব, আমার সকাল, ১২৫ কোটি জনগণের কল্যাণের সঙ্কল্প নিয়ে শুরু হয় আর সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যখন ঘুমোতে যাই তখন কতটা ভালো কাজ করতে পেরেছি সেগুলি ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ি। ওরা নিজেদের পরিবার, ভাই-ভাইপোকে এগিয়ে দেওয়ার চিন্তায় মশগুল থাকে আর বেশ গর্বের সঙ্গে নিজেদের ইচ্ছার কথা ঘোষণাও করেন, দেশের উন্নয়ন নিয়ে কোনও ভাবনা নেই। ভাই ও বোনেরা, আমার চিন্তা ১২৫ কোটি ভারতবাসীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভাবনায় সমাহিত, আমি ভারতকে একবিংশ শতাব্দীতে শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

 

ভাই ও বোনেরা, নিজেদের পরিবার ও বিপুল ঐশ্বর্য রক্ষা করতে ওরা যতই মহাজোট গড়ে তুলুক না কেন, নিজেদের কৃতকর্ম থেকে কু-কর্ম থেকে পালাতে পারবে না! মোদী বিরোধী সংবাদমাধ্যম, ওদের সঙ্গে স্বার্থ জড়িত সংবাদমাধ্যমে তাদের মহিমা কীর্তন চলছে। কিন্তু যুগ যুগ ধরে যারা দেশের ক্ষতি করে আসছেন তাদের জন্য জনগণের মনে কোন স্থান নেই। যারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, জনগণ তাদের ক্ষমা করে না, ক্ষমতালোভীদের পায়ের তলার মাটি সরে যেতে থাকে। সম্প্রতি কলকাতায় তাদের সভা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপি-র একজন মাত্র বিধায়ক। কিন্তু সেখানেও বিজেপি-র ভয়ে সারা ভারতের বিরোধী নেতারা একত্রিত হয়েছেন। এক বিধায়কের দল তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সেজন্য আমি পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে অভিনন্দন জানাই।

 

ভাই ও বোনেরা, এরা শুধু তানাশাহী নয়, পশ্চিমবঙ্গে, কেরলে এদের শাসনাধীন সর্বত্র অন্যায় ও অত্যাচার চলছে। যে পশ্চিমবঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে সভা-সমিতি করতে বাধা দেওয়া হয়, গণতন্ত্রের টুটি টিপে ধরা হয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থী হলে খুন করে দেওয়া হয়, সেই রাজ্যে সমস্ত দুর্নীতিবাজ বিরোধীরা একত্রিত হয়ে গণতন্ত্র বাঁচানোর জন্য ভাষণ দিচ্ছেন। এটা সত্যিই দেখার মতো দৃশ্য!

 

বন্ধুগণ, এই লড়াই ইতিবাচক আর নেতিবাচক ভাবনার লড়াই। এই লড়াই উন্নয়নের সঙ্গে দুর্নীতির লড়াই, জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে মহাজোটের লড়াই। ভাই ও বোনেরা, ইতিবাচক ভাবনার সঙ্গে সঠিক প্রচেষ্টাই ‘নতুন ভারত’ নির্মাণের উপায়। এই পথে আমাদের প্রত্যেককে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে হবে। এই ইতিবাচকতা নতুন বছরে দেশের কোণায় কোণায় প্রত্যেকের মন ও মস্তিষ্কে উৎসাহ ও উদ্দীপনা যোগাচ্ছে। দেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার সঙ্কল্প নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। ভারতীয় সেনা যেন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মাধ্যমে উপকৃত হয়, দেশে নির্মিত শক্তিশালী ট্যাঙ্ক পায় তা সুনিশ্চিত করার কথা ভাবি, দিউ-দমনে এসে এখানকার জন-সুরক্ষার চিন্তা করি, এখানকার নবীন প্রজন্ম যাতে মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পায় সেই লক্ষ্যে কাজ করি।

 

ভাই ও বোনেরা, ওদিকে কলকাতায় বিরোধীরা একত্রিত হয়ে দলকে বাঁচানোর জন্য দেশের শাসন ক্ষমতা দখলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। আর আমি আপনাদের মাঝে এসে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এটাই পার্থক্য বন্ধুগণ! আজ এই ছোট্ট দিউ-দমনের লক্ষ লক্ষ মানুষ এসে আমাকে যেভাবে আশীর্বাদ দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন – এটাই ভারতের মেজাজ। এই দিউ-দমনকে সবাই ‘মিনি ভারত’ বলে। ভারতের প্রত্যেক প্রান্তের মানুষ এখানে কর্মসূত্রে এসে বসবাস করছেন। এখানে আসার পথে দু’পাশে ভারতের প্রত্যেক প্রান্তের পোশাক পরিহিত মানুষকে দলে দলে আসতে দেখেছি, তাঁদেরকে প্রণাম প্রণাম জানাতে জানাতে এখানে এসে পৌঁছেছি।

 

ভাই ও বোনেরা, দলের জন্য আত্মবলিদানকারী অনেকেই আছেন, কিন্তু আমরা দেশের জন্য উৎসর্গীকৃত, আপনাদের স্বপ্ন সফল করতে সমর্পিত। এভাবে বিপুল সংখ্যায় এসে আমাকে আশীর্বাদ প্রদানের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার সঙ্গে পূর্ণশক্তি দিয়ে বলুন – ভারত মাতার জয়।

 

ভারত মাতার জয়।

ভারত মাতার জয়।

ভারত মাতার জয়।

 

CG/SB/DM/