প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভারপ্রথমউচ্চস্তরীয় বৈঠকে সোমবার ভাষণ দেন।
সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার উদ্দেশ্যগুলি পূরণে ভারত যে সমস্ত দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে প্রধানমন্ত্রী সে কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘স্বাস্থ্য’ মানে অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্তি নয়, এক স্বাস্থ্যকর জীবন প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকার। তাই, স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা সরকারের দায়িত্ব।
তিনি জানান, সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান সুনিশ্চিত করতে সরকার সুসংবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য পরিচর্যার মূল চারটি স্তম্ভ নিয়ে সরকার কাজ করছে। এগুলি হল – প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, সুলভ স্বাস্থ্য পরিচর্যা, স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়ন এবং ‘মিশন মোড’ ভিত্তিতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কর্মসূচিগুলি রূপায়ণ।
যোগচর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখতে, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রদানে ও জীবনশৈলীজনিত রোগ-ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে দেশে ১ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি রোগী কল্যাণ কেন্দ্রচালু করা হয়েছে। এছাড়াও, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে ও পরিচ্ছন্ন ভারত অভিযানের মাধ্যমে জনসচেতনতা গড়ে তোলার কাজ চলছে। সুস্বাস্থ্যের প্রসারে টিকাকরণ অভিযানেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
“সুলভে স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রদানে ভারতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য বিমা কর্মসূচি ‘আয়ুষ্মান ভারত’ চালু হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় ৫০ কোটি দরিদ্র মানুষ নিখরচায় বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়াও, ৫ হাজারেরও বেশি এমন ওষুধের দোকান রয়েছে যেখান থেকে সুলভ মূল্যে ৮০০-টিরও বেশি বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের ওষুধ মিলছে” বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
ভারতে গুণগতমানের চিকিৎসা-শিক্ষা এবং চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়নে একাধিক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ‘মিশন মোড’ পদ্ধতিতে জাতীয় পুষ্টি মিশন রূপায়ণ করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য, মা ও শিশুর পৌষ্টিক চাহিদা মেটানো। ২০২৫ নাগাদ যক্ষ্মা রোগ দূরীকরণে ভারতের অঙ্গীকারের কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিশ্ব থেকে ২০৩০-এর মধ্যে এই রোগ নির্মূল করার যে লক্ষ্য স্থির হয়েছে, তার পাঁচ বছর আগেই ভারত ঐ লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে। বায়ুদূষণ এবং পশু-পাখির মাধ্যমে যে ধরনের অসুখ ছড়িয়ে পড়ে তা নিয়ন্ত্রণে অভিযান গ্রহণের গুরুত্বের কথা প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ভারতের প্রচেষ্টা কেবল তার ভৌগোলিক সীমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, ভারত বহু দেশে, বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলিতে টেলি-মেডিসিন পদ্ধতির মাধ্যমে সুলভে স্বাস্থ্য পরিচর্যা পৌঁছে দিয়েছে।
‘সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা : এক স্বাস্থ্যকরবিশ্ব গড়ে তুলতে একযোগে অগ্রসর হওয়া’ শীর্ষক বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠক আয়োজিত হয়। উদ্দেশ্য ছিল, সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করা। ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার উদ্দেশ্য পূরণে সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার গ্রহণে বিশ্ববাসীকে সচেতন করে তোলা।
এই বৈঠকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রায় ১৬০টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখবেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৫ সালে সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার উদ্দেশ্যগুলি পূরণে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন।
CG/BD/DM
At the @UN, PM @narendramodi also addressed a session on Universal Health Coverage. pic.twitter.com/pn6iI4erjK
— PMO India (@PMOIndia) September 23, 2019
My remarks on health sector and ensuring good quality healthcare to all. https://t.co/KVF24n9rum
— Narendra Modi (@narendramodi) September 23, 2019