Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

সাত মাস আগেই উজ্জ্বলা যোজনায় ৮ কোটি রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ


 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ঔরঙ্গাবাদে মহারাষ্ট্র রাজ্য গ্রামীণ জীবনজীবিকা মিশন আয়োজিত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির আর্থিক দিক থেকে স্বাবলম্বী মহিলাদের অনুষ্ঠান ‘মহিলা সক্ষম মেলা’য় ভাষণ দেন।

 

জনসভায় ভাষণে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে নিজেদেরকে আর্থিক দিক থেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে মহিলারা যেসব উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঔরঙ্গাবাদ ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি ঔরঙ্গাবাদ শহরের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে। অদূর ভবিষ্যতে এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি ভারতের অন্যতম শিল্পকেন্দ্রের রূপ নেবে। দিল্লি-মুম্বাই শিল্প করিডরের এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে ঔরঙ্গাবাদ। এই শিল্প শহরে যে সংস্থাগুলি বিনিয়োগ করছে, তার ফলে প্রচুর কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ৮ কোটি রান্নার গ্যাসের সংযোগদানের ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন এবং পাঁচজন সুফলভোগীর হাতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ সংক্রান্ত নথিপত্র তুলে দেন শ্রী মোদী। নির্দিষ্ট সময়ের সাত মাস আগেই এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল মহারাষ্ট্রেই ৪৪ লক্ষ উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সাফল্য অর্জনে সহকর্মীদের অবদানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রান্না ঘরের চুল্লী থেকে নির্গত ধোঁয়ায় মহিলাদের স্বাস্থ্যগত উদ্বেগের বিষয়গুলিকে বিবেচনায় রেখেই আমরা এই সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছি।”

 

প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, যোজনার আওতায় কেবল গ্যাস সংযোগই দেওয়া হয়নি, সেইসঙ্গে গ্রামাঞ্চলে ১০ হাজার নতুন এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটারও নিয়োগ করা হয়েছে। নতুন বটলিং প্ল্যান্ট বা রান্নার গ্যাস ভরার ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। বন্দরগুলির কাছে গ্যাস টার্মিনালগুলির ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। পাইপলাইন নেটওয়ার্কের পরিধিও বাড়ানো হয়েছে। ৫ কেজি ওজনবিশিষ্ট গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। পাইপবাহিত গ্যাস সরবরাহও শুরু হয়েছে। “আমরা চাই একটি পরিবারও যাতে রান্নার গ্যাস সংযোগের সুবিধা থেকে বাদ না পড়ে।”

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূরবর্তী স্থান থেকে জল সংগ্রহ করে নিয়ে আসার সময় মহিলাদের নিদারুণ কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে ‘জল জীবন মিশন’ শুরু হয়েছে। এই মিশনে জল সঞ্চয়ের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে জল সরবরাহ করার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরকার আগামী পাঁচ বছরে এই কর্মসূচি খাতে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে।

 

রামমনোহর লোহিয়া এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ভারতীয় মহিলারা শৌচালয় এবং জল – এই দুটি ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হন। শ্রী লোহিয়ার এই কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমস্যা দুটির যদি সমাধান করা যায়, তাহলে মহিলারা দেশের অগ্রগতিতে নেতৃত্ব দিতে পারেন। “মারাঠাওয়াড়া অঞ্চল ‘জল জীবন মিশন’ থেকে ব্যাপক লাভবান হতে চলেছে। দেশের প্রথম গ্রিড সংযুক্ত জল পরিবহণ ব্যবস্থা মারাঠাওয়াড়া অঞ্চলেই গড়ে উঠতে চলেছে। এর ফলে, মারাঠাওয়াড়া অঞ্চলে জলের যোগান লক্ষ্যণীয়ভাবে বাড়বে।”

 

সরকারি প্রকল্প ও কর্মসূচিগুলিতে গণ-অংশগ্রহণের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ৬০ বছর বয়সী প্রত্যেক কৃষককে পেনশন প্রদান করছে। গবাদি পশুর টিকাকরণের লক্ষ্যেও একইরকম প্রয়াস গ্রহণ করা হচ্ছে।

 

জাতীয় গ্রামীণ জীবনজীবিকা মিশন ‘আজীবিকা’-র মাধ্যমে মহিলাদের কাছে উপার্জনের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৯-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সুদ ছাড় প্রদানে বিশেষ সংস্থান করা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর জন ধন অ্যাকাউন্টধারী সদস্যারা ৫ হাজার টাকার ওভারড্রাফ্‌টের সুবিধাও পাবেন। এর ফলে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের অর্থ সাহায্যের জন্য মহাজনদের কাছে যেতে হবে না।

 

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ক্ষমতায়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর একজন মহিলা ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা পাবেন। এই অর্থ সহায়তা তাঁদের নতুন উদ্যোগ গড়ে তুলতে বা ব্যবসার সম্প্রসারণে সাহায্য করবে। যোজনার আওতায় এখনও পর্যন্ত ২০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ কোটি টাকাই পেয়েছেন মহিলারা। যোজনার মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের সুফলভোগীদের ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকাই পেয়েছেন মহিলারা।”

 

সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসার ক্ষেত্রে মহিলাদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা সামাজিক পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। শিশুকন্যাদের সুরক্ষার পাশাপাশি তাদের শিক্ষিত করে তোলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এখন আমাদের প্রয়োজন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনা। এক্ষেত্রে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিন তালাকের কুপ্রথা থেকে মুসলিম মহিলাদের রক্ষা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সচেতনতা প্রচারের কাজে আপনাদের আরও উদ্যোগী হতে হবে।”

 

ভারতের চন্দ্রযান ২ মিশন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বিজ্ঞানীরা এক বড় মাইলফলক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। আমি আজ এই বিজ্ঞানীদের মাঝে ছিলাম। তাঁরা প্রচণ্ড আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ছিল এক অদম্য মানসিকতা। ভুল-ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা এগিয়ে যেতে আগ্রহী।”

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতকে শীঘ্রই প্রকাশ্য স্থানে শৌচকর্ম মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে।

 

‘প্রত্যেকের জন্য গৃহ’ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা আপনাদের স্বপ্নের বাড়ি গড়ে দিতে চাই। এই বাড়ি কেবল চার দেওয়ালের কাঠামো নয়। এমন এক বাড়ি দিতে চাই যেখানে থাকবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। আমরা কোন নির্দিষ্ট পন্থা-পদ্ধতি স্থির করে কাজ করছি না, স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। আমরা চেয়েছি সুফলভোগীদের স্বার্থে চালু বিভিন্ন প্রকল্পগুলিকে একত্রিত করে মৌলিক সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে। ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৮০ লক্ষ বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে ২০২২-এ আমরা যখন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করব তখন প্রত্যেককে পাকা বাড়ি প্রদানে আমরা সমর্থ হব।”

 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের যাতে নিজের বাড়ি থাকে তার জন্য গৃহ ঋণে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সুদ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে এবং তহবিল অপচয় রুখতে নির্মীয়মান বাড়ির বিভিন্ন পর্যায়ের ছবি ওয়েবসাইটে দেওয়া হচ্ছে। রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ‘রেরা’ আইন কার্যকর করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে এই আইন ইতিমধ্যেই বলবৎ হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী লক্ষ লক্ষ আবাসন তৈরি হচ্ছে।”

 

সার্বিক উন্নয়নের জন্য সমস্ত প্রকল্পকে একত্রিত করার লক্ষ্যে সরকার সচেষ্ট রয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন সরকারের যাবতীয় প্রকল্পে সাধারণ মানুষ অবদান রাখবেন।

 

শ্রী উমাজি নায়েককে আজ তাঁর জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ছিলেন এক মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী।

 

এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ‘ট্রান্সফর্মিং রুরাল মহারাষ্ট্র’ শীর্ষক একটি বই প্রকাশ করেন।

 

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী ভগৎ সিং কোশিয়ারি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, রেল মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল উপস্থিত ছিলেন।

 

 

CG/BD/DM