Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

‘সবুজ উন্নয়ন’ বিষয়ে বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

‘সবুজ উন্নয়ন’ বিষয়ে বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ‘সবুজ উন্নয়ন’ প্রসঙ্গে বাজেট পরবর্তী এক ওয়েবিনারে ভাষণ দেন। ভারত সরকার আয়োজিত বাজেট পরবর্তী ১২টি ওয়েবিনারের মধ্যে এটি ছিল প্রথম। ২০২৩-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে যেসব উদ্যোগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে তার কার্যকর রূপায়ণের জন্য পরামর্শ চাইতে সরকার এই ওয়েবিনারগুলির আয়োজন করেছে।

অনুষ্ঠানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সাল থেকে দেশে এখনও পর্যন্ত যে ক’টি বাজেট পেশ করা হয়েছে প্রতিটিতেই বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি ভবিষ্যতের সংস্কারের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে।

‘সবুজ উন্নয়ন’-এর জন্য প্রধানমন্ত্রী তিনটি মূল স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেন। প্রথমটি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, দ্বিতীয়টি জৈব জ্বালানির ব্যবহার কমানো এবং সর্বশেষ, দেশে যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতির দিকে পরিবর্তিত হওয়া।

এই প্রকল্পগুলি ইথানল ব্লেন্ডিং-এর মতো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ঘোষণা করা হয়েছে। ‘পিএম কুসুম’ যোজনা, সৌরক্ষেত্রে উৎপাদন, বাড়ির ছাদে সৌর প্রকল্প এবং ব্যাটারি সংরক্ষণের মতো বিষয়গুলি বিগত কয়েক বছর ধরে বাজেটে প্রাধান্য পাচ্ছে। বিগত বছরের বাজেটে অন্যতম বিশেষ ঘোষণার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের জন্য ‘পিএম প্রণাম’ যোজনা, শহরগুলির যানবাহন বাতিল নীতি, ‘গোবর্ধন’ যোজনা এবং সবুজ হাইড্রোজেন ও জলাজমি সংরক্ষণের বিষয়গুলি এবারের বাজেটেও বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিক্ষেত্রে বর্তমানে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের বিশেষ অবস্থান রয়েছে। “এবারের বাজেট আন্তর্জাতিক সবুজ শক্তি বাজারে ভারতকে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। সেজন্য আমি আজ শক্তিক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ভারতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই” – বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এবারের বাজেট প্রত্যেক সবুজ শক্তির বিনিয়োগকারীকে ভারতে বিনিয়োগের বিশেষ সুযোগ করে দিয়েছে যার ফলে, এই ক্ষেত্রের স্টার্ট-আপগুলিও বিশেষভাবে উপকৃত হবে।

“২০১৪-র পর থেকে মূল অর্থনীতিতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিক্ষেত্রে ভারত বিশেষ ভূমিকা পালন করছে” – বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন যে বিভিন্ন তথ্য সমীক্ষা করে দেখা যায় যে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিক্ষেত্রে ভারত নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারছে। শ্রী মোদী বলেন, ভারত অজীবাশ্ম জ্বালানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ অবদান রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে এবং তা সম্ভব হয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের ৯ বছর আগেই। ধার্য করা সময়ের পাঁচ মাস আগেই ভারত ১০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের লক্ষ্য পূরণেও সমর্থ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৫-২৬ সালের মধ্যেই ভারত পেট্রোলে ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণে সক্ষম হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন সম্ভব হবে। ই-২০ জ্বালানি চালুর কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জৈব জ্বালানি ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করছে। সৌর, বায়ু এবং বায়ো-গ্যাসের ব্যবহার ভারতে স্বর্ণ খনি বা তৈলক্ষেত্রের তুলনায় কোনও অংশেই কম নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সবুজ হাইড্রোজেন মিশনের আওতায় ভারত ৫ এমএমটি সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে চলেছে। এজন্য ১৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

গোবর থেকে ভারতের ১০ হাজার মিলিয়ন কিউবিক মিটার বায়ো-গ্যাস তৈরির ক্ষমতা রয়েছে বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেন। দেড় লক্ষ কিউবিক মিটার গ্যাস দেশে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে ৮ শতাংশ অবদান রাখতে পারে। “এই সম্ভাবনার দিকে নজর রেখেই বর্তমানে ভারতের জৈব জ্বালানি কৌশলে ‘গোবর্ধন’ যোজনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এবারের বাজেটে সরকার ‘গোবর্ধন’ যোজনার আওতায় ৫০০টি নতুন কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে। তবে এগুলি কোনটাই পুরনো ধাঁচের কারখানা নয়। সরকার এই আধুনিক কারখানাগুলি গড়ে তুলতে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে” – বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য এবং বাড়ি-ঘরের বর্জ্য থেকে সিবিজি উৎপাদনের জন্য বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে আকর্ষণীয় অর্থ দেওয়া হচ্ছে।

ভারতের যানবাহন বাতিল নীতির দিকে আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবুজ উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে সরকার ৩ লক্ষের বেশি যানবাহন বাতিল করার জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রেখেছে। এই যানবাহনগুলি পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স এবং বাস ছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের অধিকৃত এবং ১৫ বছরের পুরনো। যানবাহন বাতিলের বাজার ক্রমশ উন্নত হতে চলেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ৬-৭ বছরে ভারত ব্যাটারি সংরক্ষণ ক্ষমতা ঘন্টায় ১২৫ গিগাওয়াটে নিয়ে যাবে। ব্যাটারি প্রস্তুতকারকদের সাহায্য করতে সরকার এক বিশেষ প্রকল্প নিয়ে এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী জল-ভিত্তিক যানবাহন ভারতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অন্তর্দেশীয় জলপথের মাধ্যমে দেশের ২ শতাংশ পণ্য পরিবহণ করা হয়। ভারতের জলপথগুলির উন্নয়ন এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবুজ শক্তির ক্ষেত্রে ভারতের বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। “এবারের বাজেট কেবলমাত্র সম্ভাবনা নয়, ভবিষ্যতের নিরাপত্তার নিশ্চিতকরণও বটে” – বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। সবশেষে তিনি সকল অংশীদারদের বাজেটের সম্ভাব্য সব দিক যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়িত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সরকার আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। আপনারা আপনাদের পরামর্শ জানান।”

প্রেক্ষাপট

কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের আয়োজনে এই ওয়েবিনারটিতে সবুজ উন্নয়নের বিষয়ে ছ’টি অধিবেশন বসবে। বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি প্রতিনিধি, শিল্প, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্টজনেরা এই ওয়েবিনারে অংশ নেবেন।

২০২৩-২৪-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে যে সাতটি বিষয়কে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে সবুজ উন্নয়ন অন্যতম। এই ক্ষেত্রের উন্নয়ন হলে বিপুল সংখ্যায় কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও বাড়বে।

 

PG/PM/DM/