Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

শক্তি ও জ্বালানি ক্ষেত্রে ভারত-ভুটান সহযোগিতা সম্পর্কে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গী ও যৌথ বিবৃতি


নয়াদিল্লি, ২২ মার্চ, ২০২৪ 

পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, শুভেচ্ছা এবং সর্বতোভাবে সমঝোতা ও বোঝাপড়ার বাতাবরণের মধ্য দিয়ে এক বিশেষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ভারত ও ভুটানের মধ্যে। এই সম্পর্কে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে মৈত্রীর অটুট বন্ধন এবং দু’দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আন্তরিক সংযোগ ও যোগাযোগ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড্যাশো শেরিং টোবগের মধ্যে থিম্পুতে আয়োজিত দ্বিপাক্ষিক এক বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সহযোগিতা সম্পর্কিত এক ফলপ্রসূ আলোচনাও হয়েছে। ভবিষ্যতের লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক এই বিশেষ অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সপক্ষে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেছেন দুই প্রধানমন্ত্রীই। 

ভুটানের জলবিদ্যুৎ শক্তির প্রসার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে দূষণমুক্ত জ্বালানি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে জ্বালানি নিরাপত্তার মতো এক বিশেষ পরিবেশ ও পরিস্থিতিও সৃষ্টি করেছে। জ্বালানি তথা শক্তি প্রকল্পগুলির রূপায়ণে ভুটানের নিজস্ব সংস্থাগুলি ও প্রযুক্তি কর্মীরা যেভাবে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ভারত পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং শ্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারত যেভাবে আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা এবং জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তার কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। 

ভারত ও ভুটান – উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী জ্বালানি সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে এই মর্মে সন্তোষ প্রকাশ করেন যে দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতায় রূপায়িত প্রকল্পগুলির কাজ বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে চলেছে এবং তার সুবাদে ভুটানের অর্থনৈতিক বিকাশও ক্রমশ গতি লাভ করছে। ৭২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন মাংদেছু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সাফল্যের পথ অনুসরণ করে এ বছর ১,০২০ মেগাওয়াট শক্তিবিশিষ্ট পুনাতসাংছু – ২ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পুনাতসাংছু – ১ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটির কাজ আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে ইতিবাচক আলোচনার ফলশ্রুতিকে স্বাগত জানান দুই প্রধানমন্ত্রীই। 

ভারত ও ভুটান – উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীই এই মর্মে সহমত প্রকাশ করেন যে :

১) জ্বালানি নিরাপত্তার পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে আরও উন্নত করে তোলা, দু’দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলা, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, রপ্তানি খাতে আয়ের মাত্রা বৃদ্ধি এবং শিল্প তথা আর্থিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো ক্ষমতা ও সম্ভাবনা রয়েছে ভারত-ভুটান – এই দুটি দেশেরই। জ্বালানি শক্তি সম্পর্কিত অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করে তোলার মাধ্যমে এই উদ্যোগ সফল হতে পারে। 

২) দু’দেশের পারস্পরিক কল্যাণে বিশুদ্ধ জ্বালানি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তোলার মতো অভূতপূর্ব সুযোগ ও সম্ভাবনা এখন উপস্থিত। নতুন নতুন শক্তি প্রকল্প গড়ে তোলা এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রসারের মাধ্যমে এই বিষয়টিতে আরও উৎসাহদান প্রয়োজন। 

৩) জলবিদ্যুৎ, সৌরশক্তি এবং গ্রিন হাইড্রোজেন ক্ষেত্রে নতুন নতুন শক্তি প্রকল্প স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দু’দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। 

৪) দু’দেশের সরকারি পর্যায়ে প্রকল্প-ভিত্তিক নানা দিক খতিয়ে দেখে নতুন নতুন প্রকল্প স্থাপনের মতো বিষয়গুলির পর্যালোচনা এবং তা চূড়ান্ত করার মতো পরিবেশ ও পরিস্থিতিও এখন সৃষ্টি হয়েছে।

৫) ভারতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ভারত সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং সেইসঙ্গে ভুটানের নতুন এবং ভবিষ্যতের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের বিপণন প্রচেষ্টাতেও ভারত সহযোগিতার ভূমিকা পালন করে যাবে। 

৬) সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জ্বালানি নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করতে দুটি দেশের মধ্যে শক্তি ও জ্বালানি বিনিময় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে ভুটানের বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলিকে ভারতের পক্ষ থেকে নানাভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করা হবে।

৭) শক্তি তথা বিদ্যুতের বিপণন প্রচেষ্টা উজ্জ্বল হয়ে ওঠায় ভুটানের শক্তি ও জ্বালানি প্রকল্পগুলিতে যাতে বিনিয়োগের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, সেজন্য দু’দেশের পক্ষ থেকে নিয়মিত পর্যালোচনার মাধ্যমে উৎসাহ ও পরামর্শদানের মতো পরিবেশকে অক্ষুণ্ণ রাখা হবে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত পর্যায়ে বাণিজ্যিক লেনদেনের বিষয়টিকেও আরও মসৃণ করে তোলা হবে। 

৮) আবার, উপ-আঞ্চলিক পর্যায়ে জ্বালানি সহযোগিতা প্রসারের মাধ্যমে দু’দেশের সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের মধ্যে অর্থনৈতিক তথা পারস্পরিক কল্যাণকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো ইতিবাচক মানসিকতাও তৈরি করা প্রয়োজন। 

৯) জ্বালানি সাশ্রয় এবং জ্বালানি সংরক্ষণের লক্ষ্যে দু’দেশের এ সম্পর্কিত সহযোগিতার বাতাবরণকেও আরও নিবিড় করে তোলা প্রয়োজন। উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, নীতি ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তথ্য বিনিময় এবং জ্বালানি সাশ্রয়কারী প্রযুক্তি সম্পর্কে গবেষণা এক্ষেত্রে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।

দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতায় যে সমস্ত প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে তা দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সপক্ষেও মত প্রকাশ করেন ভারত ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয়। 

PG/SKD/DM