নয়াদিল্লি, ০৬ মার্চ, ২০২৫
নমস্কার!
আপনারা নিশ্চয়ই ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, অর্ণবের উঁচু গলার আওয়াজে আপনাদের কান ঝালাপালা হয়ে গেছে, বসুন অর্ণব, এখন নির্বাচনের সময় নয়। সবার আগে আমি রিপাবলিক টিভিকে তাদের এই অভিনব উদ্যোগের জন্য অভিনন্দন জানাই। উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার মধ্য দিয়ে আপনারা তৃণমূল স্তরের যুবসমাজকে আজ এখানে নিয়ে এসেছেন, এত বড় একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। দেশের যুবসমাজকে যখন জাতীয় কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন চিন্তাভাবনার মধ্যে নবীনতা আসে, সমগ্র পরিবেশে উৎসাহের সঞ্চার হয় এবং এই উৎসাহ আজ আমি এখানে অনুভব করছি। যেখানে যুবসমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকে, সেখানে যে কোনও প্রতিবন্ধকতা অগ্রাহ্য করা যায়, যে কোনও সীমা পেরিয়ে যাওয়া যায়, যে কোনও লক্ষ্য অর্জন করা যায়, যে কোনও উচ্চতা স্পর্শ করা যায়। রিপাবলিক টিভি এই সম্মেলনে এক নতুন ভাবনা নিয়ে কাজ করেছে। আমি আপনাদের সকলকে এই সম্মেলন সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানাই। এখানে আমার সামান্য একটু স্বার্থও রয়েছে। আমি কিছুদিন ধরে বলে আসছি যে, রাজনীতিতে ১ লক্ষ তরুণ-তরুণীকে আনতে হবে। এমন ১ লক্ষ তরুণ-তরুণী যাঁদের পরিবারে কেউ কখনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাই, একদিক থেকে দেখলে এই ধরনের সমাবেশ আমার অভীষ্ট লক্ষ্যের জন্যই পরিবেশ ও পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দ্বিতীয়ত, আমার একটা ব্যক্তিগত লাভ এখানে রয়েছে, সেটা হ’ল – ২০২৯ সালে যাঁরা ভোট দিতে যাবেন, তাঁরা জানেনও না যে, ২০১৪ সালে সংবাদ শিরোনামগুলি কেমন থাকতো। তাঁরা জানেন না যে, ১০-১২ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারি হ’ত। এরা যখন ২০২৯ সালে ভোট দিতে যাবেন, তখন এদের সামনে তুলনা করার মতো কিছু থাকবে না। তাই, আমাকে সেই মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হতে হবে। যে ধরনের ভিত্তিভূমি গড়ে উঠছে, তাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আমার কাজ সফল হবে।
বন্ধুগণ,
সারা বিশ্ব আজ বলছে যে, এই শতাব্দী হ’ল ভারতের শতাব্দী। ভারতের সাফল্য, ভারতের অর্জন আজ সারা বিশ্বে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। যে ভারত সম্পর্কে বলা হ’ত, ও নিজেও ডুববে আমাদেরও ডোবাবে, সেই ভারত আজ বিশ্বের বিকাশের চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে ভারতের ভবিষ্যতের দিশা কী হতে চলেছে, তা আমাদের আজকের কাজ ও লক্ষ্য অর্জনের ভিত্তিতে স্থির হবে। স্বাধীনতার ৬৫ বছর পরেও ভারতের অর্থনীতি বিশ্বের একাদশতম স্থানে ছিল। গত এক দশকে আমরা পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছি। এখন আমরা দ্রুতগতিতে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার দিকে এগোচ্ছি।
বন্ধুগণ,
আমি আপনাদের ১৮ বছর আগেকার কথা মনে করাচ্ছি। ১৮ বছর বলার একটা বিশেষ কারণ আছে। কারণ, যাঁরা আজ ১৮ বছর বয়সে পৌঁছেছেন, তাঁরাই প্রথমবারের জন্য ভোট দিতে যাবেন। তাঁরা তো ১৮ বছর আগের কথা জানেন না। তাই, আমি ১৮ সংখ্যাটা নিয়েছি। ১৮ বছর আগে, অর্থাৎ ২০০৭ সালে, ভারতের বার্ষিক জিডিপি ১ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। সহজ কথায় বললে, সেই সময়ে ভারতে এক বছরে ১ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক কাজকর্ম হ’ত। আর দেখুন, আজ কী হচ্ছে! আজ প্রতি ত্রৈমাসিকেই ভারতে ১ লক্ষ কোটি ডলারের কাজকর্ম হয়। এর মানে কী? ১৮ বছর আগে ভারতে এক বছরে যে পরিমাণ অর্থনৈতিক কাজকর্ম হ’ত, আজ তা মাত্র তিন মাসের মধ্যেই হচ্ছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, আজকের ভারত কত দ্রুত বেগে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আমি আপনাদের কয়েকটি উদাহরণ দেব, যার থেকে বোঝা যাবে যে, গত এক দশকে কত বড় পরিবর্তন এসেছে এবং তার ফল কী হয়েছে। গত ১০ বছরে আমরা ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যের করাল গ্রাস থেকে বের করে আনতে পেরেছি। এই সংখ্যাটা বেশ কিছু দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। আপনি মনে করে দেখুন, যখন সরকার নিজেই স্বীকার করত, প্রধানমন্ত্রী নিজে বলতেন যে, ১ টাকা বরাদ্দ করলে মাত্র ১৫ পয়সা গরীব মানুষের কাছে পৌঁছয়। মানে, মাঝখানে ৮৫ পয়সা গায়েব হয়ে যেত। এর পাশাপাশি, আজকের দিনের কথা ভাবুন। গত এক দশকে সরাসরি সুবিধা হস্তান্তর পদ্ধতি ডিবিটি-র মাধ্যমে ৪২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সরাসরি গরীব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার আপনারা যদি হিসেব করেন, ঐ ১৫ পয়সার হিসেব, তা হলে ৪২ লক্ষ কোটি টাকা, কত টাকায় গিয়ে দাঁড়াবে? বন্ধুগণ, আজ দিল্লি থেকে ১ টাকা বরাদ্দ করা হলে, ১০০ পয়সাই শেষ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছয়।
বন্ধুগণ,
১০ বছর আগে সৌরশক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে ভারতকে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই আনতো না। কিন্তু, আজ সৌর ক্ষমতার দিক থেকে ভারত বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের অন্যতম। আমরা আমাদের সৌরশক্তি উৎপাদন ক্ষমতা ৩০ গুণ বাড়িয়েছি। ১০ বছর আগে তো আমরা দোলের পিচকারি, শিশুদের খেলনা – সবই বিদেশ থেকে আমদানি করতাম। আজ আমাদের খেলনার রপ্তানির পরিমাণ তিন গুণ বেড়েছে। ১০ বছর আগে আমরা আমাদের সেনাদের জন্য রাইফেলও বিদেশ থেকে আনাতাম। এই ১০ বছরে আমাদের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি ২০ গুণ বেড়েছে।
বন্ধুগণ,
এই ১০ বছরে আমরা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদক, দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন উৎপাদক হয়ে উঠেছি। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্টআপ পরিমণ্ডল আমাদের দেশে গড়ে উঠেছে। আমরা পরিকাঠামো ক্ষেত্রে মূলধনী ব্যয় ৫ গুণ বাড়িয়েছি। দেশে বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, এইমস্ – এর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। এই ১০ বছরে দেশে মেডিকেল কলেজ এবং মেডিকেল আসনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
বন্ধুগণ,
আজকের ভারতের মানসিকতাই অন্যরকম। আজকের ভারত বড় করে ভাবতে পারে, নিজের সামনে বড় লক্ষ্য রাখতে পারে, আর তা অর্জন করে দেখাতেও পারে। এর কারণ হ’ল – দেশের ভাবনাচিন্তা বদলে গেছে, ভারত উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আগে আমাদের চিন্তাভাবনায় একটা গয়ংগচ্ছ ভাব ছিল – হবে, চলবে, আরে যেতে দাও, যে করবে করবে – এইসব। আগে ভাবনাচিন্তা কতটা ক্ষুদ্র ছিল, তার একটা উদাহরণ আমি আপনাদের দিচ্ছি। আগে কংগ্রেসের শাসনকালে কোথাও খরা হলে, খরাগ্রস্ত এলাকা থাকলে গ্রামের লোকেরা মিলে স্মারকলিপি জমা দিতেন। তাতে তাঁরা কী দাবি করতেন? তাঁরা বলতেন, সাহেব, ত্রাণ দিন, মাটি খনন করে জলের ব্যবস্থা করুন। কেউ বলতেন, সাহেব, আমার এলাকায় একটা টিউবঅয়েল বসিয়ে দিন। কখনও কখনও সেখানকার সাংসদ সেখানে তাড়াতাড়ি গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার কথা বলতেন। তাঁরা ২৫টি কুপন পেতেন, আর সেগুলি তাঁদের এলাকায় বিতরণ করতেন। এটা ছিল ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়কার ছবি। সাংসদরা কী দাবি করতেন? তাঁরা বলতেন, অমুক ট্রেনের একটা স্টপেজ আমার এলাকায় করে দিন। এগুলি সব ২০১৪ সালের আগেকার কথা। কংগ্রেস দেশের মানুষের উচ্চকাঙ্ক্ষাকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছিল। সেজন্য দেশের মানুষের মনে কোনও আশা ছিল না। তাঁরা ভবতেন, কিছুই হবার নয়। লোকে বলতেন, এইটুকুই ঠিক আছে। তুমি এইটুকুই করতে পারো। আর আজকে আপনারা দেখুন, পরিস্থিতি ও চিন্তাভাবনা কতটা বদলে গেছে। আজ মানুষ জানেন, কে কাজ করতে পারবে। এটা শুধু সাধারণ নাগরিকদের কথাই নয়, আপনারা যদি সংসদে বিরোধীদের ভাষণ শোনেন, সেখানেও এটা পাবেন। তাঁরা বলেন, মোদীজি এটা করছেন না। তার মানে, তাঁরা জানেন, মোদীজিই এটা করতে পারেন।
বন্ধুগণ,
আজকের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন মানুষের বক্তব্যের মধ্যে পাওয়া যায়। তাঁদের বলার ভঙ্গিমা বদলে গেছে। এখন মানুষ কী দাবি করেন? আগে যাঁরা ট্রেনের স্টপেজ চাইতেন, তাঁরা আজ বলেন, আমার এখান থেকেও একটা বন্দে ভারত চালু করুন। আমি কয়েকদিন আগে কুয়েত গিয়েছিলাম। আমি সেখানে একটি শ্রমিক কলোনীতে যাই। আমি যখনই বিদেশ যাই, তখন আমার দেশের লোকেরা যেখানে কাজ করেন, সেখানে যাবার চেষ্টা করি। সেই শ্রমিক কলোনীতে কেউ ১০ বছর, কেউ ১৫ বছর ধরে রয়েছেন। আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। আমি বিহারের একজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলছিলাম, যিনি ৯ বছর ধরে কুয়েতে রয়েছেন। মাঝে মাঝে নিজের দেশে আসেন। তিনি আমাকে বললেন, স্যর, আমার জেলার সদর দপ্তর আমার গ্রামের কাছে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করে দিন। আমার এটা শুনে এত ভালো লেগেছিল! ৯ বছর ধরে কুয়েতে কাজ করা বিহারের একজন শ্রমিক, এখন তাঁর জেলায় একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চাইছেন। ভারতের সাধারণ নাগরিকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা আজ এই পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এটাই সারা দেশকে উন্নত ভারত গঠনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
কোনও সমাজ বা দেশের শক্তি তখনই বাড়ে, যখন নাগরিকদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞাগুলি সরিয়ে নেওয়া হয়, প্রতিবন্ধকতা দূর করা হয়, বাধার দেওয়ার ভেঙে ফেলা হয়। তখন নাগরিকদের শক্তি আকাশ স্পর্শ করে। সেজন্য আগেকার সরকারগুলি নাগরিকদের উপর যেসব বিধিনিষেধ চাপিয়ে রেখেছিল, আমরা ক্রমাগত তা অপসারণ করছি। আমি আপনাদের মহাকাশ ক্ষেত্রের একটি উদাহরণ দিই। আগে মহাকাশ ক্ষেত্রের যাবতীয় দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল ইসরো’র উপর। ইসরো অবশ্যই চমৎকার কাজ করেছে। কিন্তু, মহাকাশ বিজ্ঞান ও মহাকাশ সংক্রান্ত উদ্যোগের যে বিপুল সম্ভাবনা আমাদের দেশে ছিল, তার সদ্ব্যবহার করা হয়নি। সবকিছুই ইসরো-কেন্দ্রিক হয়ে থেকেছে। আমরা মহাকাশ ক্ষেত্রকে তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য খুলে দেওয়ার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি যখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তখন কোনও কাগজের শিরোনামে তা জায়গা পায়নি। কারণ, এর গুরুত্ব কেউ বোঝেননি। রিপাবলিক টিভির দর্শকরা জেনে খুশি হবেন যে, আজ দেশে ২৫০টিরও বেশি মহাকাশ সংক্রান্ত স্টার্টআপ রয়েছে। এটাই আমার দেশের যুবসমাজের শক্তি। এই স্টার্টআপ-গুলি আজ বিক্রম-এস এবং অগ্নিবাণের মতো রকেট তৈরি করছে। একই জিনিস ঘটেছে মানচিত্রের ক্ষেত্রেও। সেখানে এত রকমের বিধিনিষেধ ছিল যে, আপনি বিশ্বের একটি মানচিত্রও তৈরি করতে পারতেন না। আগে ভারতের একটি মানচিত্র তৈরি করতে গেলে আপনাকে বছরের পর বছর ধরে সরকারি দপ্তরগুলিতে ঘুরে বেড়াতে হ’ত। আমরা এইসব বাধা সরিয়ে দিয়েছি। আজ ভূ-স্থানিক মানচিত্র সংক্রান্ত তথ্য নতুন স্টার্টআপ – এর পথ সুগম করছে।
বন্ধুগণ,
পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রটিও আগে সরকারি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিল। নানাধরনের বিধিনিষেধ ও সীমাবদ্ধতার দেওয়াল তোলে হয়েছিল, এই ক্ষেত্রকে ঘিরে। এই বছরের বাজেটে সরকার এটিকে বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এর ফলে, ২০৪৭ সালের মধ্যে ১০০ গিগাওয়াট পরমাণু শক্তি উৎপাদনের যে লক্ষ্য আমরা নিয়েছি, তা অর্জন করার পথে এগোতে সুবিধা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, আমাদের দেশে ১০০ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সম্পদ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এর সিংহভাগই রয়েছে আমাদের গ্রামগুলিতে। আমি বিষয়টি সহজ করে আপনাদের বোঝাই। দিল্লির মতো একটি শহরে আপনার বাড়ির মূল্য ৫০ লক্ষ, ১ কোটি বা ২ কোটি টাকা। এর উপর ভিত্তি করে আপনি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে পারেন। এখন কথাটা হ’ল – বাড়ি তো শুধু দিল্লিতে নেই, গ্রামগুলিতেও রয়েছে। কিন্তু, গ্রামে থাকা বাড়িগুলির উপর ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়া যায় না। কারণ, সেখানকার সঠিক মানচিত্র নেই। এটা কেবল ভারতের সমস্যা নয়। বিশ্বের বড় বড় দেশগুলিতেও এই সমস্যা রয়েছে। বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বলছে, যে দেশ তার নাগরিকদের সম্পত্তির অধিকার দিতে পারে, তার জিডিপি বাড়ে।
বন্ধুগণ,
ভারতে গ্রামে থাকা বাড়িগুলির সম্পত্তির অধিকার দিতে আমরা স্বামিত্ব প্রকল্প চালু করেছি। এজন্য প্রতিটি গ্রামে ড্রোনের মাধ্যমে সমীক্ষা চালিয়ে প্রতিটি বাড়ির মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। দেশ জুড়ে গ্রামবাসীদের প্রপার্টি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২ কোটিরও বেশি প্রপার্টি কার্ড দেওয়া হয়েছে। এই কাজ এখনও চলছে। প্রপার্টি কার্ড না থাকায় আগে গ্রামগুলিতে নানা বিবাদের সৃষ্টি হ’ত, মানুষকে আদালতে ছুটতে হ’ত। সেসবের অবসান হয়েছে। এখন প্রপার্টি কার্ড দেখিয়ে গ্রামবাসীরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে পারেন। সেই টাকায় নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই সেদিনই আমি ভিডিও কনফারেন্সিং – এর মাধ্যমে স্বামিত্ব যোজনার সুবিধাপ্রাপকদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। রাজস্থানের এক বোনের সঙ্গে আমার কথা হ’ল। তিনি আমাকে জানালেন, তাঁর প্রপার্টি কার্ড দেখিয়ে তিনি ৯ লক্ষ টাকা ঋণ পেয়েছেন এবং সেই টাকায় ব্যবসা শুরু করেছেন। ঋণের অর্ধেক টাকা শোধ হয়ে গেছে। বাকি টাকা শোধ করতেও বেশি সময় লাগবে না। এই ঋণ শোধের পর তিনি আবার ঋণ নেবেন। ভেবে দেখুন, আত্মবিশ্বাস কোথায় পৌঁছেছে।
বন্ধুগণ,
আমি যেসব উদাহরণ দিলাম, সেগুলি থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন আমার দেশের যুবক-যুবতীরা। এই যুবসমাজই উন্নত ভারতের সবচেয়ে বড় অংশীদার। যুবসমাজ হ’ল আজকের ভারতের এক্স ফ্যাক্টর। এই এক্স মানে এক্সপেরিমেন্টেশন, এক্সেলেন্স এবং এক্সপ্যানশন। এক্সপেরিমেন্টেশন অর্থাৎ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার অর্থ হ’ল – আমাদের যুবক-যুবতীরা পুরনো পথ ছেড়ে নতুন পথ তৈরি করছেন। এক্সেলেন্স অর্থাৎ – তাঁরা বিশ্ব স্তরে নতুন মান সৃষ্টি করছেন। আর এক্সপেনশনের অর্থ হ’ল – উদ্ভাবনকে তাঁরা ১৪০ কোটি দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। আমাদের যুবসমাজ দেশের অনেক বড় বড় সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা রাখে। কিন্তু, আগে তাঁদের এই ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করা হয়নি। আগের সরকারগুলি ভাবতেই পারতো না যে, যুবসমাজ হ্যাকাথন – এর মাধ্যমে দেশের সমস্যার সমাধান করতে পারে। আজ আমরা প্রতি বছর স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন – এর আয়োজন করি। এ পর্যন্ত ১০ লক্ষ যুবক-যুবতী এতে অংশগ্রহণ করেছেন। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক ও দপ্তর শাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা তাঁদের সামনে রেখেছে। এইসব হ্যাকাথন – এর মাধ্যমে প্রায় আড়াই হাজার সমাধান বেড়িয়ে এসেছে। আপনারা হ্যাকাথনের এই সংস্কৃতি গ্রহণ করেছেন দেখে আমার ভালো লাগছে। যে তরুণ-তরুণীরা এতে জয়ী হয়েছেন, তাঁদের আমি অভিনন্দন জানাই। তাঁদের সঙ্গে এখানে দেখা করার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।
বন্ধুগণ,
গত ১০ বছরে দেশ শাসনের এক নতুন যুগ প্রত্যক্ষ করেছে। গত এক দশকে আমরা প্রভাবহীন প্রশাসনকে প্রভাবপূর্ণ শাসনে রূপান্তরিত করেছি। আপনি দেখবেন, এখন বহু মানুষ বলেন, তাঁরা এই প্রথম কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেলেন। অথচ, এমন নয় যে, সেই সরকারি প্রকল্প আগে ছিল না। প্রকল্প আগেও ছিল। কিন্তু, শেষ মানুষটির কাছে তার সুফল এই প্রথম পৌঁছচ্ছে। আপনারা প্রায়ই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধাপ্রাপকদের সাক্ষাৎকার নেন। আগে গরীবদের জন্য কাগজে-কলমে বাড়ি বরাদ্দ হ’ত। আজ তা বাস্তবে হয়। আগে বাড়ি নির্মাণের গোটা প্রক্রিয়াটাই সরকার চালাতো। কী ধরনের বাড়ি তৈরি করা হবে, কী ধরনের কাঁচামাল ব্যবহার করা হবে – সবকিছুই সরকার ঠিক করতো। আমরা এটা বদলে দায়িত্বটা বাড়ির মালিকের উপর দিয়েছি। সরকার সুবিধাপ্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। সুবিধাপ্রাপক নিজেই ঠিক করেন, কোন ধরনের বাড়ি নির্মাণ হবে। আমরা দেশ জুড়ে বাড়ির নকশার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি, বাড়ির বিভিন্ন মডেল সামনে রেখেছি এবং সবকিছুই সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঠিক করা হয়েছে। এজন্য বাড়ির গুণমান উন্নত হয়েছে এবং অনেক দ্রুত বাড়ি নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে। আগে ইঁট, পাথর জুড়ে একটি বাড়ি অর্ধেক তৈরি করে রাখা হ’ত। এখন গরীব মানুষের স্বপ্নের বাড়ি গড়ে উঠছে। এইসব বাড়িতে নলবাহিত জল থাকছে, উজ্জ্বলা প্রকল্পের আওতায় রান্নার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে, সৌভাগ্য প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎ সংযোগও পাওয়া যাচ্ছে। আমরা শুধু ৪টি দেওয়াল তৈরি করিনি। এর মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করেছি।
বন্ধুগণ,
যে কোনও দেশের উন্নয়নে জাতীয় সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গত এক দশকে এই ক্ষেত্রে আমরা অনেক কাজ করেছি। আপনাদের মনে থাকবে যে, আগে টিভিতে ধারবাহিক বোমা বিস্ফোরণের একের পর এক ব্রেকিং নিউজ দেখা যেত, স্নিপার সেলগুলির নেটওয়ার্ক নিয়ে আলোচনার জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান হ’ত। আজ টিভির পর্দা এবং দেশের মাটি থেকে এসব দূর হয়েছে। আগে যখন আপনি ট্রেনে সফর করতেন বা বিমানবন্দরে যেতেন, আপনি সতর্কবার্তা শুনতে পেতেন যে, কোনও ব্যাগ কোথাও পড়ে থাকলে, তাতে হাত দেবেন না। আজকের ১৮-২০ বছরের তরুণ-তরুণীরা এসব তো শোনেই নি। আজ দেশ থেকে নকশালবাদও নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে। আগে দেশের ১০০টিরও বেশি জেলা নকশাল প্রভাবিত ছিল। তা আজ দু’ডজনেরও কম জেলায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা ‘দেশ সর্বাগ্রে’ – এর চেতনা নিয়ে কাজ করেছি বলেই এটা হয়েছে। ঐসব এলাকায় শাসনকে আমরা তৃণমূল স্তরে নিয়ে গেছি। অতিদ্রুত হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তা, স্কুল, হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। ফোর-জি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফল আজ সকলে দেখতে পাচ্ছেন।
বন্ধুগণ,
সরকারের নির্ণায়ক সিদ্ধান্তের জন্য আজ অরণ্য থেকে নকশালবাদ মুছে গেলেও, শহুরে কেন্দ্রগুলিতে এর ডালপালা এখনও রয়েছে। আর্বান নকশালরা এত দ্রুত তাদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়েছে যে, যেসব রাজনৈতিক দল তাদের বিরুদ্ধে ছিল, এক সময় যারা গান্ধীজিকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল, আজ সেইসব রাজনৈতিক দলের মধ্যেও এই নকশালরা ঢুকে পড়ছে। তাদের মধ্যে আর্বান নকশালদের কন্ঠস্বর ও ভাষা শোনা যাচ্ছে। এর থেকেই বোঝা যায় যে, এই আর্বান নকশালদের শিকড় কতটা গভীর। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ভারতের উন্নয়ন ও আমাদের ঐতিহ্য – এই দুইয়ের পক্ষেই আর্বান নকশালরা অত্যন্ত বিপজ্জনক। অবশ্য, অর্ণব এই আর্বান নকশালদের মুখোশ খুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে। উন্নত ভারত গঠনের জন্য দেশের উন্নয়ন ও ঐতিহ্য দুই-ই জরুরি। সেজন্যই আমাদের এই আর্বান নকশালদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
বন্ধুগণ,
আজকের ভারত প্রতিটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় নতুন উচ্চতা স্পর্শ করছে। রিপাবলিক টিভি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আপনারা যাঁরা জড়িত রয়েছেন, তাঁরা যে সর্বদাই ‘দেশ সর্বাগ্রে’ চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাংবাদিকতার এক নতুন মাত্রা দিচ্ছেন, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আপনাদের সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে আপনারা উন্নত ভারতের আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরবেন – এই বিশ্বাসের সঙ্গে আমি আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই। ধন্যবাদ!
(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল)
SC/SD/SB
Speaking at the Republic Plenary Summit. @republic https://t.co/FoMvM7NHJr
— Narendra Modi (@narendramodi) March 6, 2025
India's achievements and successes have sparked a new wave of hope across the globe. pic.twitter.com/5BQP1f1Yd7
— PMO India (@PMOIndia) March 6, 2025
India is driving global growth today. pic.twitter.com/nTbUOlGD7J
— PMO India (@PMOIndia) March 6, 2025
Today's India thinks big, sets ambitious targets and delivers remarkable results. pic.twitter.com/bj4bhelbGb
— PMO India (@PMOIndia) March 6, 2025
We launched the SVAMITVA Scheme to grant property rights to rural households in India. pic.twitter.com/fvFXbJ8RBL
— PMO India (@PMOIndia) March 6, 2025
Youth is the X-Factor of today's India.
— PMO India (@PMOIndia) March 6, 2025
Here, X stands for Experimentation, Excellence, and Expansion. pic.twitter.com/yZnj76ms8F
In the past decade, we have transformed impact-less administration into impactful governance. pic.twitter.com/Xq3UrYVIGE
— PMO India (@PMOIndia) March 6, 2025
Earlier, construction of houses was government-driven, but we have transformed it into an owner-driven approach. pic.twitter.com/CpfTX9YZqi
— PMO India (@PMOIndia) March 6, 2025
बीते 10 वर्षों में अलग-अलग सेक्टर की बड़ी उपलब्धियां बताती हैं कि भारत आज दुनिया की ग्रोथ को ड्राइव कर रहा है। pic.twitter.com/OkV5VRYx8r
— Narendra Modi (@narendramodi) March 7, 2025
यह मेरे देशवासियों की सोच बदलने का ही परिणाम है कि आज भारत ना केवल बड़े टारगेट तय कर रहा है, बल्कि बड़े नतीजे लाकर भी दिखा रहा है। pic.twitter.com/eNyuX2m5js
— Narendra Modi (@narendramodi) March 7, 2025
हमने विकास के रास्ते की कई रुकावटों को दूर किया है, जिससे देश का पूरा सामर्थ्य देशवासियों के काम आ रहा है। pic.twitter.com/YsBZWSAt2Y
— Narendra Modi (@narendramodi) March 7, 2025
बीते एक दशक में हमारे प्रयासों से किस प्रकार Last mile delivery सुनिश्चित हो रही है, इसके एक नहीं अनेक उदाहरण हैं। pic.twitter.com/csNT5b9iQq
— Narendra Modi (@narendramodi) March 7, 2025
‘विकसित भारत’ के लिए विकास के साथ-साथ विरासत को मजबूत करना भी जरूरी है, इसलिए हमें अर्बन नक्सलियों से सावधान रहना है। pic.twitter.com/Bm3fq4pSHb
— Narendra Modi (@narendramodi) March 7, 2025