নয়াদিল্লি, ১১ অক্টোবর ২০২২
আন্তর্জাতিক অভ্যাগতবৃন্দ, বিশ্ব ভূ-স্থানিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা, সম্মানীয় অংশগ্রহণকারী এবং বন্ধুগণ। ভারতে স্বাগত!
রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশ্ব ভূ-স্থানিক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে আপনাদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ পেয়ে আমি খুশি। এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে ভারতের মানুষ খুশি তার কারণ আমরা একসাথেই ভবিষ্যৎ গড়তে চাই। হায়দরাবাদে যে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে তা খুবই সুন্দর। এই শহর সংস্কৃতি, ভালো খাবার, আতিথেয়তা এবং উন্নত প্রযুক্তির দিশার জন্য পরিচিত।
বন্ধুগণ,
এই সম্মেলনের মূল ভাবনা – ‘ভূ-সমন্বিত আন্তর্জাতিক গ্রাম : কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে’। বিগত কয়েক বছর ধরে ভারত যে পথের দিশারী, এখানে সেটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। অন্ত্যোদয়-এর লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে চলেছি যার অর্থ হচ্ছে শেষ সীমায় শেষ ব্যক্তিটির সশক্তিকরণ। এই দিশাই বৃহত্তর পর্যায়ে শেষ সীমা পর্যন্ত সশক্তিকরণের পথে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ৪৫ কোটি মানুষ ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বাইরে, যে সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার থেকেও বেশি, তাঁদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবার মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে এবং ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ, যা ফ্রান্সের জনসংখ্যার দ্বিগুণ, তাঁদের বিমার আওতায় আনা হয়েছে। ১১ কোটি পরিবারের মধ্যে স্বচ্ছতার সুবিধা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং ৬ কোটিরও বেশি পরিবারকে পাইপবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
ভারতের এই অগ্রগতির যাত্রাপথে প্রযুক্তি এবং মেধা হল দুটি স্তম্ভ। প্রথমে আমরা প্রথম স্তম্ভ হিসেবে প্রযুক্তির দিকে আলোকপাত করি। প্রযুক্তি রূপান্তর নিয়ে আসে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো শুনেছেন যে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের এক নম্বর স্থান দখল করে আছে। আপনি যদি বাইরে গিয়ে দেখেন তাহলে দেখবেন যে ছোট ব্যবসায়ীরাও ডিজিটাল লেনদেন পছন্দ করছেন এবং তা গ্রহণ করছেন। এই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই আমরা কোভিড-১৯ অতিমারী সময়কালে দরিদ্রদের সাহায্য করতে পেরেছি। আমাদের প্রযুক্তি-ভিত্তিক জ্যাম-এর মতো ত্রয়ী নিরলসভাবে ৮০ কোটি মানুষকে সরকারের জনকল্যাণমুখী সুবিধার সুযোগ দিয়ে আসছে। প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাকরণ কর্মসূচি সম্পাদন করা হয়েছে। ভারতে প্রযুক্তি বর্জনের বাহক নয়। এটা অন্তর্ভুক্তির বাহক। আপনারা সকলেই ভূ-স্থানিক ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত। আপনারা জেনে খুবই খুশি হবেন যে ভূ-স্থানিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্তি এবং অগ্রগতির ক্ষেত্রে পরিচালকের ভূমিকা নিয়েছে। ধরা যাক আমাদের ‘স্বামীত্ব’ যোজনা। গ্রামের সম্পত্তি মানচিত্রকরণের ক্ষেত্রে আমরা ড্রোনকে ব্যবহার করছি। এই ডেটাকে কাজে লাগিয়ে গ্রামবাসীরা তাঁদের সম্পত্তি কার্ড পাচ্ছেন। দশকে এই প্রথম গ্রামের মানুষদের তাঁদের সম্পত্তির স্বচ্ছ নথিপত্র রয়েছে। আপনারা অনেকেই জানেন যে বিশ্বে সম্পত্তির অধিকার সমৃদ্ধি অর্জনের পথকে প্রশস্ত করে দেয়, আর এই সমৃদ্ধি আরও গতিশীল হতে পারে যদি মহিলারা সম্পত্তির মূল সুবিধাভোগী হতে পারেন।
ভারতে আমরা এই কাজটিই করছি। আমাদের জন-আবাসন প্রকল্প ২ কোটি ৪০ লক্ষ দরিদ্র পরিবারকে বাসস্থান যুগিয়েছে। এই সমস্ত গৃহের প্রায় ৭০ শতাংশই মহিলারা হয় এককভাবে অথবা যৌথ সত্ত্বাধিকারী। দারিদ্র্য এবং লিঙ্গ বৈষম্য ঘোচাতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে এই পদক্ষেপগুলির প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষী ‘প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যান’ বহুস্তরীয় পরিকাঠামো নির্মাণ করছে। ভূ-স্থানিক প্রযুক্তি একে শক্তি যোগাচ্ছে। আমাদের ‘ডিজিটাল ওশন প্ল্যাটফর্ম’ সমুদ্র ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ভূ-স্থানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সামুদ্রিক ইকো-সিস্টেম এবং পরিবেশের ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ইতিমধ্যেই ভূ-স্থানিক প্রযুক্তির সুবিধা ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমাদের দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহ প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আমি আপনাদের বলেছি যে ভারতের যাত্রাপথ প্রযুক্তি এবং মেধা-নির্ভর। এবারে আমরা দ্বিতীয় স্তম্ভ হিসেবে মেধার আলোচনা করি। মহৎ উদ্ভাবনী প্রাণশক্তি নিয়ে ভারত এক তরুণ জাতি। বিশ্বে স্টার্ট-আপ হাবের ক্ষেত্রে ভারত শীর্ষ স্থান অধিকার করে আছে। ইউনিকর্ন স্টার্ট-আপ-এর সংখ্যা ২০২১ থেকে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এটা ভারতের তরুণ মেধার ফলেই সম্ভব হয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস ভারত উদযাপন করছে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ স্বাধীনতা হল উদ্ভাবনী স্বাধীনতা। ভূ-স্থানিক ক্ষেত্রের জন্য এটা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। তরুণ ও মেধাবী যুব সম্প্রদায়ের জন্য আমরা এই ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। গত দু’শতকের বেশি সময় ধরে যে ডেটা সংগৃহীত হয়েছিল, হঠাৎ করে তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এবং সকলেই তার সুবিধা পাচ্ছে। ডেটা সংগ্রহ, সৃষ্টি এবং ডিজিটাইজেশনকে গণতান্ত্রিকরণ করা হয়েছে। এই সংস্কার বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। ভূ-স্থানিক ক্ষেত্রের সঙ্গে আমরা ড্রোন ক্ষেত্রকেও শক্তিশালী করেছি। মহাকাশ ক্ষেত্রকে বেসরকারি অংশগ্রহণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ভারতে ৫জি পরিষেবা চালু হয়েছে। সংগৃহীত ডেটাগুলির পাশাপাশি ড্রোন প্রযুক্তি নতুন ডেটা সংগ্রহ করছে, মহাকাশ ক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জনের প্ল্যাটফর্ম এবং উচ্চ গতিশীল সংযোগ তরুণ ভারত এবং সারা বিশ্বের জন্যই আগামীদিনে নির্ণায়ক হয়ে দেখা দেবে।
বন্ধুগণ,
আমরা যখন বলছি কাউকেই বাদ দেওয়া হবে না’, এর অর্থ সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কোভিড-১৯ অতিমারী সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার প্রয়োজনীয়তার পথ আমাদের দেখিয়েছে। উন্নয়নশীল বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের রোগ নির্ণয়, ওষুধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি, টিকা এবং আরও অনেক কিছুর প্রয়োজন রয়েছে। তাঁদেরকে তাঁদের ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সঙ্কটের মুহূর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যেককে একে অন্যের জন্য এগিয়ে আসতে একটা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংগঠন হিসেবে প্রত্যেক এলাকার শেষ সীমায় সম্পদ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার ক্ষেত্রে হাতে হাত মেলানো এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একই ধরিত্রীর বাসিন্দা। আমি নিশ্চিত যে আমাদের এই ধরিত্রীকে রক্ষা করতে আপনারা সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহারিক সুবিধা বিনিময় করবেন। ভূ-স্থানিক প্রযুক্তির সম্ভাবনা অপরিসীম। সুস্থায়ী নগরোন্নয়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব চিহ্নিতকরণ, অরণ্য ব্যবস্থাপনা, জল ব্যবস্থাপনা, মরু প্রসার রোধ এবং খাদ্য সুরক্ষা। এছাড়াও, ভূ-স্থানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের ধরিত্রীর জন্য আমরা অনেক কিছু করতে পারি। আমি আশা করব, এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার জন্য এই সম্মেলন একটি মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে।
বন্ধুগণ,
রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশ্ব ভূ-স্থানিক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন আমাকে আশাবাদী করে তুলেছে। সারা বিশ্বের ভূ-স্থানিক শিল্পের অংশীদাররা একত্র হয়েছে। তা৬দের সঙ্গে রয়েছেন নীতি-নির্ধারক এবং শিক্ষাক্ষেত্রের মানুষজন যাঁরা একে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আমি স্থির নিশ্চিত যে সারা বিশ্বকে এক ছাতার তলায় এনে নতুন ভবিষ্যতের দিশারী হতে এই সম্মেলন আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।
ধন্যবাদ!
PG/AB/DM
My remarks at the UN World Geospatial International Congress. https://t.co/d0WyJWlJBP
— Narendra Modi (@narendramodi) October 11, 2022
India is working on a vision of 'Antyodaya'. pic.twitter.com/e77tEeRTpM
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
India's development journey has two key pillars:
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
1) Technology
2) Talent pic.twitter.com/NRKefxcWlz
Technology brings transformation.
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
It is an agent of inclusion. pic.twitter.com/NqpfoBIN8G
PM-SVAMITVA Yojana is an example of how digitisation benefits the people. pic.twitter.com/d7qVyKLsgY
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
There is a need for an institutional approach by the international community to help each other during a crisis. pic.twitter.com/Put6mqJaV8
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022
India is a young nation with great innovative spirit. pic.twitter.com/MsuSS0kIuz
— PMO India (@PMOIndia) October 11, 2022