Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশ্ব ভূ-স্থানিক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশ্ব ভূ-স্থানিক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ১১ অক্টোবর ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশ্ব ভূ-স্থানিক আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে ভাষণ দেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে ভারত আপনাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে পেরে খুশি যেহেতু আমরা একত্রে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করব।” হায়দরাবাদে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শহর সংস্কৃতি, সুস্বাদু খাবার, আতিথেয়তা এবং উন্নত প্রযুক্তির দিশার জন্য পরিচিত।

‘ভূ-সমন্বিত আন্তর্জাতিক গ্রাম : কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী  বলেন যে এই সম্মেলনের বিষয়ের মধ্য দিয়ে ভারত বিগত কয়েক বছরে যে পথের দিশারী সেটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি বলেন, “অন্ত্যোদয়-এর লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে চলেছি তার অভিষ্ট হচ্ছে শেষ সীমার শেষ ব্যক্তিটির সশক্তিকরণ।” শ্রী মোদী বলেন, ৪৫ কোটি মানুষ ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বাইরে, যে সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার থেকেও বেশি, তাঁদের ব্যাঙ্কিং পরিষেবার মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে এবং ১৩ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ, যা ফ্রান্সের জনসংখ্যার দ্বিগুণ, তাঁদের বিমার আওতায় আনা হয়েছে। ১১ কোটি পরিবারের মধ্যে স্বচ্ছতার সুবিধা সম্প্রসারিত হয়েছে এবং ৬ কোটিরও বেশি পরিবারকে পাইপবাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে ভারত তা নিশ্চিত করতে চায়।”

ভারতের এই উন্নয়ন পথে প্রযুক্তি এবং মেধা হল দুটি স্তম্ভ। প্রযুক্তি রূপান্তর নিয়ে আসে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। জ্যাম-এর মতো ত্রয়ীর উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ৮০ কোটি মানুষ সরকারের জনকল্যাণমুখী সুবিধার সুযোগ অবিচ্ছিন্নভাবে পেয়েছেন এবং প্রযুক্তি মঞ্চ বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাকরণ কর্মসূচি সফল করতে সাহায্য করেছে। শ্রী মোদী বলেন, “ভারতে প্রযুক্তি বর্জনের বাহন নয়, অন্তর্ভুক্তির বাহক।”

অন্তর্ভুক্তি এবং অগ্রগতির ক্ষেত্রে ভূ-স্থানিক প্রযুক্তির উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘স্বামীত্ব’, আবাসন, সম্পত্তির অধিকার এবং মহিলা সশক্তিকরণ প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দারিদ্র্য এবং লিঙ্গ সাম্যের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যের পথে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী গতি শক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যান’ এবং ‘ডিজিটাল ওশন প্ল্যাটফর্ম’-এর ক্ষেত্রে ভূ-স্থানিক প্রযুক্তি চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে। শ্রী মোদী বলেন, ভারত ইতিমধ্যেই ভূ-স্থানিক প্রযুক্তি বিনিময় করে দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহ ব্যবহারে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির যোগাযোগ সম্প্রসারণে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহৎ উদ্ভাবনী প্রাণশক্তি নিয়ে ভারত এক তরুণ জাতি।” ভারতের এই যাত্রাপথে মেধার ভূমিকাকে দ্বিতীয় স্তম্ভ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বিশ্বে স্টার্ট-আপ হাবের ক্ষেত্রে ভারত শীর্ষ স্থান অধিকার করে আছে। ইউনিকর্ন স্টার্ট-আপ-এর সংখ্যা ২০২১ থেকে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ভারতের তরুণ প্রাণশক্তির এ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেন।

সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ স্বাধীনতা হল উদ্ভাবনী স্বাধীনতা বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূ-স্থানিক ক্ষেত্রে তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ভূ-স্থানিক ডেটার সংগ্রহ, সৃষ্টি এবং ডিজিটাইজেশনকে গণতান্ত্রিকরণ করা হয়েছে। ড্রোন ক্ষেত্রকে আরও বেশি উজ্জীবিত করে এই সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। মহাকাশ ক্ষেত্রকে বেসরকারি অংশগ্রহণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ভারতে ৫জি পরিষেবা আত্মপ্রকাশ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর মতে, প্রত্যেককে সঙ্গে নিয়ে চলা যে কতটা জরুরি, কোভিড-১৯ অতিমারী আমাদের সেটা দেখিয়ে দিয়েছে। সঙ্কটকালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একে অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে আসার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণের প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রসঙ্ঘের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান প্রত্যেক এলাকার শেষ সীমায় সম্পদ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে।” জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার ক্ষেত্রে হাতে হাত মেলানো এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ধরিত্রীকে রক্ষা করতে সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহারিক সুবিধা বিনিময় করা দরকার।

ভূ-স্থানিক প্রযুক্তি যে অনন্ত সম্ভাবনার পথ খুলে দিতে পারে তার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে – সুস্থায়ী নগরোন্নয়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবিলা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব চিহ্নিতকরণ, অরণ্য ব্যবস্থাপনা, জল ব্যবস্থাপনা, মরু প্রসার রোধ এবং খাদ্য সুরক্ষা। এই বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আলোকপাত করার জন্য এই সম্মেলন একটি মঞ্চ হিসেবে কাজ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন যে, “বিশ্ব ভূ-সমলয় ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ একত্রিত হচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন নীতি-নির্ধারক এবং শিক্ষাক্ষেত্রের মানুষজন যাঁরা একে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আমি স্থির নিশ্চিত যে সারা বিশ্বকে এক ছাতার তলায় এনে নতুন ভবিষ্যতের দিশারী হতে এই সম্মেলন আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।”

 
PG/AB/DM