Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘‘মন কি বাত’’, (১১১ তম পর্ব) অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ


আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। আজ চলেই এল সেই দিন যার অপেক্ষা আমরা সবাই করছিলাম সেই ফেব্রুয়ারি থেকে। আমি ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে আবার আপনার মাঝে, নিজের পরিবারের মানুষদের মধ্যে এলাম। খুব সুন্দর একটা উক্তি – ‘ইতি বিদা পুনর্মিলনায়’, এর অর্থও ততটাই সুন্দর, আমি বিদায় নিচ্ছি আবার মিলিত হওয়ার জন্য। এই ভাবনা নিয়েই ফেব্রুয়ারিতে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে নির্বাচনের ফলাফল বেরনোর পর আবার মিলিত হব, আর আজ, ‘মন কি বাত’ নিয়ে, আমি, আবার আপনাদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছি। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন, বাড়িতে সবার স্বাস্থ্য ভালো আছে আর এখন তো বর্ষাও এসে গিয়েছে, আর যখন বর্ষা আসে, তখন মনও খুশি হয়ে ওঠে। আজ থেকে আবার, এক বার, মন কি বাতে এমন সব দেশবাসীদের নিয়ে আলোচনা করব যাঁরা নিজেদের কাজের মাধ্যমে সমাজে, দেশে পরিবর্তন আনছেন। আমরা আলোচনা করব আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি নিয়ে, গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে, আর, বিকশিত ভারত গঠনের প্রয়াস নিয়ে।

বন্ধুরা, ফেব্রুয়ারি থেকে আজ অবধি, যখনই, মাসের শেষ রবিবার এগিয়ে আসত, তখন আপনাদের সঙ্গে এই আলাপ-আলোচনার অভাব বোধ হত আমার। কিন্তু আমার এটা দেখে খুব ভালোও লেগেছে যে এই মাসগুলোতে আপনারা আমাকে লক্ষ লক্ষ বার্তা পাঠিয়েছেন। ‘মন কি বাত’ বেতার অনুষ্ঠান হয়ত বন্ধ ছিল কয়েক মাস, কিন্তু, মন কি বাতের যে স্পিরিট ছড়িয়ে রয়েছে দেশে, সমাজে, প্রত্যেক দিন ভালো কাজ, নিঃস্বার্থ ভাবনা থেকে করা কাজ, সমাজের উপর সদর্থক প্রভাব ফেলা কাজ – নিরন্তর ঘটে চলেছে। নির্বাচনের খবরের মাঝে নিশ্চিতভাবে মন ছুঁয়ে যাওয়া এমন খবর পেয়েছেন আপনারা।

বন্ধুরা, আমি আজ সমগ্র দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই কারণ তারা আমাদের সংবিধান এবং দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি নিজেদের অটুট বিশ্বাস পুনরায় বজায় রেখেছেন। ২০২৪ এর নির্বাচন বিশ্বের সর্ববৃহৎ নির্বাচন ছিল। পৃথিবীর কোন দেশে এত বড় নির্বাচন কখনো হয়নি যেখানে ৬৫ কোটি মানুষ ভোট দিয়েছেন। আমি নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি ব্যক্তিকে এর জন্য অভিনন্দন জানাই।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ ৩০শে জুনের এই দিন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনটিকে আমাদের জনজাতি ভাই বোনেরা “হুল দিবস” রূপে উদযাপন করেন। এই দিনটি বীর সিধু-কানুর অদম্য সাহসের সঙ্গে জড়িত, যারা দৃঢ়ভাবে বিদেশী শাসকদের অত্যাচারের বিরোধিতা করেছিলেন। বীর সিধু কানু হাজার হাজার সাঁওতালি সাথীদের একত্রিত করে ইংরেজদের সঙ্গে মরণপণ লড়াই করেছিলেন। আপনারা জানেন এটি কবে ঘটেছিল? ১৮৫৫ সালে, অর্থাৎ ১৮৫৭ সালের ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামেরও দু বছর আগে এটি সংঘটিত হয়। তখন ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনায় আমাদের জনজাতি ভাইবোনেরা বিদেশি শাসকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। ইংরেজরা আমাদের সাঁওতালি ভাই-বোনদের ওপর প্রভূত অত্যাচার করত। তাদের ওপর বহু নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছিল। এই লড়াইতে অবিস্মরণীয় বীরত্ব প্রদর্শন করে বীর সিধু ও কানু শহীদ হয়েছিলেন। ঝাড়খণ্ডের এই অমর ভূমিপুত্রদের আত্মবলিদান আজও দেশবাসীকে প্রেরণা যোগায়। আসুন, শোনা যাক সাঁওতালি ভাষায় এদের প্রতি সমর্পিত এক গানের অংশ –

 

(Audio Clip)

 

আমার প্রিয় বন্ধুরা যদি আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করি পৃথিবীতে সবচেয়ে অমূল্য সম্পর্ক কোনটি আপনারা নিশ্চয়ই বলবেন – মা। আমাদের সবার জীবনে মায়ের অবস্থান সবার উপরে। মা সব দুঃখ সহ্য করেও নিজ সন্তানদের লালন পালন করেন। প্রতিটি মা নিজের সন্তানদের ওপর সব রকম স্নেহ বর্ষণ করেন। জন্মদাত্রী মায়ের এই স্নেহ আমাদের সবার কাছে এক ঋণের মত যা কেউ পরিশোধ করতে পারে না। আমি ভাবছিলাম, আমরা মাকে কিছু দিতে তো পারি না, কিন্তু অন্য কিছু করতে পারি কি? এই ভাবনা থেকেই এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এক বিশেষ কর্মসূচী শুরু করা হয়েছে, যার নাম “এক পেড় মা-কে নাম” (একটি বৃক্ষ মায়ের নামে)। আমিও একটি বৃক্ষ আমার মায়ের নামে রোপণ করেছি। আমি সব দেশবাসীর কাছে, পৃথিবীর সমস্ত দেশের সব মানুষের কাছে এই আবেদন রাখছি যে, নিজের মায়ের সঙ্গে বা মায়ের নামে একটি গাছ অবশ্যই লাগান। আর আমি অত্যন্ত আনন্দিত এই দেখে যে, মায়ের স্মৃতিতে বা তাঁকে সম্মান জানিয়ে গাছ লাগানোর এই কর্মসূচি দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। মানুষ নিজেদের মায়ের সঙ্গে বা তার ছবির সঙ্গে গাছ লাগানোর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন। প্রত্যেকে নিজের মায়ের জন্য গাছ লাগাচ্ছেন তা তিনি ধনী হোন বা দরিদ্র, কর্মরতা মহিলা হোন বা গৃহবধূ – এই কর্মসূচি সবাইকে নিজেদের মা-দের প্রতি ভালোবাসা জানানোর সমান সুযোগ দিয়েছে। তারা নিজেদের ছবি #Plant4Mother এবং #এক_পেড়_মা_কে_নাম – এই হ্যাশট্যাগের সঙ্গে শেয়ার করে অন্যদের অনুপ্রাণিত করছেন।

 

বন্ধুরা, এই অভিযানে আরো একটি লাভ হবে। পৃথিবী তো মায়ের মতই আমাদের লালন করে। ধরিত্রী মাতা আমাদের সকলের জীবনের ভিত্তি-স্বরূপা, সেজন্য আমাদের’ও কর্তব্য ধরিত্রী মায়ের খেয়াল রাখা। মায়ের নামে বৃক্ষরোপন অভিযানে, মাকে সম্মান জানানো তো হবেই, তার সঙ্গে মা বসুন্ধরাকেও রক্ষা করা হবে। ভারতে, গত এক দশকে সকলের প্রচেষ্টায় বনাঞ্চলের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অমৃত-মহোৎসব চলাকালীন, দেশ জুড়ে ৬০ হাজারেরো বেশি অমৃত সরোবর খনন করা হয়েছে। এবার আমাদের সেভাবেই মায়ের নামে বৃক্ষরোপন অভিযানকে আরো দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

 

আমার প্রিয় দেশবাসী, দেশের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে বর্ষা দ্রুত নিজের রূপ মেলে ধরছে। আর এই বৃষ্টি-বাদলের মরশুমে সবার ঘরে ঘরে যে বস্তুটির খোঁজ শুরু হয়ে গেছে, সেটি হল ‘ছাতা’! ‘মন কি বাতে’ আজ আমি আপনাদের একটি বিশেষ ধরনের ছাতা সম্পর্কে বলতে চাই। আমাদের কেরালায় এই ধরণের ছাতা তৈরি হয়। কেরালার সংস্কৃতিতে এমনিতেও ছাতার একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে। সেখানে ছাতা অনেক আচার অনুষ্ঠান এবং ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ; কিন্তু আমি যে ছাতার কথা বলছি তার নাম ‘কার্থুম্বী ছাতা’, আর এগুলো তৈরি করা হয় কেরালার অট্টাপডী-তে। এই রংবেরঙের ছাতাগুলো ভারী সুন্দর; আর এর বিশেষত্ব হলো আমাদের কেরালার পিছিয়ে পড়া জনজাতি গোষ্ঠীর (আদিবাসী) বোনেরা এই ছাতাগুলো তৈরি করেন। এখন দেশ জুড়ে এই ছাতার চাহিদা বাড়ছে। এগুলোর online বিক্রিও হচ্ছে। এই ছাতাগুলো ‘বট্টালক্কী সহকারি কৃষি সোসাইটি’-র তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত করা হয়। এই সোসাইটি পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের নারী শক্তির হাতে। মহিলাদের নেতৃত্বে অট্টাপডীর জনজাতি গোষ্ঠীর (আদিবাসী সম্প্রদায়ের) মানুষ Entrepreneurship-এর এক অদ্ভুত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই society একটা ‘ব্যাম্বু হ্যান্ডিক্রাফট ইউনিট’-ও তৈরি করেছে। এখন তাঁরা একটা retail outlet আর একটি ঐতিহ্যবাহী cafe খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

 

এদের উদ্দেশ্য কেবল নিজেদের ছাতা ও অন্যান্য উৎপাদন বিক্রি করা নয়। এরা নিজেদের পরম্পরা ও সংস্কৃতির সঙ্গে গোটা বিশ্বকে পরিচয় করাতে চায়। আজ কার্থুম্বি ছাতা কেরালার একটা ছোট্ট গ্রাম থেকে multinational company হয়ে ওঠার সফর সম্পূর্ণ করছে। লোকালের জন্য ভোকাল হওয়ার এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কি হতে পারে।

 

আমার প্রিয় দেশবাসী, আগামী মাসে এই সময়ে Paris Olympic শুরু হয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস আপনারা সকলে Olympics এ ভারতীয় খেলোয়াড়দের উৎসাহ বাড়ানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আমি ভারতীয় দলকে Olympics er জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। আমাদের সবার মনে Tokyo Olympics এর স্মৃতি এখনো তাজা। Tokyo তে ভারতীয় খেলোয়াড়দের প্রদর্শন আমাদের সকলের মন জয় করে নিয়েছিল। Tokyo Olympics এর পর আমাদের athletes, Paris Olympics-এর খেলোয়াড়রা মনপ্রাণ দিয়ে অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন। সব খেলোয়াড়দের ধরে হিসেব করলে সবাই মিলে প্রায় nine hundred – ৯০০ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। এটা একটা বৃহৎ সংখ্যা।

বন্ধুরা প্যারিস অলিম্পিকসে কিছু জিনিস প্রথমবার দেখা যাবে। শুটিংয়ে আমাদের খেলোয়ারদের প্রতিভা বিশেষভাবে চোখে পড়ছে। টেবিল টেনিসে পুরুষ ও মহিলা দু’টি টিমই কোয়ালিফাই করে গেছে ইতিমধ্যেই। ভারতীয় শটগান টিমে আমাদের শুটার মহিলারাও অন্তর্ভুক্ত আছেন । কুস্তি ও ঘোড় সওয়ারীতে আমাদের ভারতীয় খেলোয়াড়রা এমন কিছু ক্যাটাগরিতে এইবার কমপিট করবেন যেখানে এর আগে কখনো তারা সামিল হননি। আপনারা নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারছেন এবারের অলিম্পিকসে এক অন্য লেবেলের রোমাঞ্চ চোখে পরবে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে থাকবে কিছু মাস আগে ওয়ার্ল্ড প্যারা অলিম্পিকসে আমাদের বেস্ট পারফরম্যান্স হয়েছিল। চেস ও ব্যাডমিন্টন খেলাতেও আমাদের খেলোয়াড়রা জয়ের পতাকা উড়িয়েছেন। এখন গোটা দেশ এটাই প্রার্থনা ও প্রত্যাশা করছে যে অলিম্পিকসেও আমরা খুব ভালো পারফরম্যান্স করি। এই খেলাগুলিতে আমরা মেডেলও জিতবো, দেশবাসীর মনও জিতবো। আসন্ন কয়েকদিনের মধ্যে ভারতীয় দলের সঙ্গে আলাপ হওয়ার সুযোগও আমার হবে। আমি আপনাদের তরফ থেকে তাদের অবশ্যই আরও উৎসাহ দেব। ও হ্যাঁ এবার আমাদের হাসট্যাগ হল #cheer4bharat। এই হাসট্যাগ-এর মাধ্যমে আমাদের ভারতীয় খেলোয়ারদের উৎসাহ বাড়াতে হবে তাদের চিয়ার করতে হবে। এই মোমেন্টাম বজায় রাখতে হবে। আপনাদের এই মোমেন্টাম ভারতের ম্যাজিক কে পৃথিবীর সামনে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে।

 

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি আপনাদের সবার জন্য একটি ছোট অডিও ক্লিপ play করছি।

(Audio Clip-কুয়েত)

 

এই রেডিও অনুষ্ঠানটি শুনে আপনিও অবাক হয়েছেন, তাই না? তাহলে আসুন আপনাদের এর প্রেক্ষাপটটি বলি। আসলে এটি কুয়েত রেডিওর একটি অনুষ্ঠানের ক্লিপ।

এখন আপনি ভাবতেই পারেন যেখানে কুয়েতের কথা হচ্ছে, সেখানে হিন্দি কোথা থেকে এলো? আসলে, কুয়েত সরকার তার ন্যাশনাল রেডিওতে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান শুরু করেছে, তাও আবার হিন্দিতে। এটি কুয়েত রেডিওতে প্রতি রবিবার আধ ঘন্টার জন্য সম্প্রচারিত হয়। এতে ভারতীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। আমাদের চলচ্চিত্র ও কলা জগতের সস্পর্কিত খবরাখবর সেখানে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। আমাকে এও বলা হয়েছে, কুয়েতের স্থানীয় জনগণও এতে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আমি কুয়েত সরকার ও সেখানকার জনগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যারা এই অভিনব উদ্যোগটি নিয়েছেন।

বন্ধুরা, সারা বিশ্বে যেভাবে আমাদের সংস্কৃতিকে মহিমান্বিত করা হচ্ছে তাতে কোন ভারতীয় খুশি হবেন না? যেমন ধরুন, এই বছরের মে মাসে তুর্কমেনিস্তানের জাতীয় কবির ৩০০তম জন্মবার্ষিকী পালিত হল। এই উপলক্ষে তুর্কমেনিস্তানের রাষ্ট্রপতি বিশ্বের ২৪ জন বিখ্যাত কবির মূর্তি উন্মোচন করেন। এই মূর্তিগুলির মধ্যে একটি, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। এটি গুরুদেবের সম্মান এবং ভারতের সম্মান। একইভাবে, জুন মাসে, দু’টি ক্যারিবিয়ান দেশ, সুরিনাম এবং সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডিন্স, Indian Heritage-কে পূর্ণ উদ্যম এবং উৎসাহের সঙ্গে উদযাপন করে। প্রতি বছর ৫ই জুনকে Indian Arrival Day এবং প্রবাসী দিবস হিসেবে পালন করেন সুরিনামে বসবাসকারী ভারতীয়রা। এখানেতো হিন্দির সঙ্গে ভোজপুরী ভাষাও প্রচলিত। সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডিন্সে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভাই-বোনদের সংখ্যা প্রায় ৬০০০। তাঁরা সবাই তাঁদের ঐতিহ্য নিয়ে খুব গর্বিত। ১লা জুন, তারা সকলে যে উৎসাহ ও আড়ম্বরের সঙ্গে Indian Aarrival Day উদ্‌যাপন করেছে, তা তাদের অনুভূতির সুস্পষ্ট প্রতিফলন। যখন সারা বিশ্বে ভারতীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রসার ঘটে, তখন প্রত্যেক ভারতবাসী গর্ববোধ করেন।

 

বন্ধুরা, সারা বিশ্ব, এই মাসে, দশম যোগ দিবস উদযাপন করেছে, পূর্ণ উদ্যম এবং উদ্দীপনার সঙ্গে। জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আয়োজিত যোগ কর্মসূচিতে আমিও অংশ নিয়েছিলাম। কাশ্মীরের যুবকদের পাশাপাশি মা ও বোনেরাও যোগ দিবসে উৎসাহের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন।

যোগ দিবসের আয়োজন যতই এগিয়ে চলেছে, ততই নতুন নতুন record তৈরি হচ্ছে। সারা বিশ্বে যোগ দিবসে প্রভূত সাড়া পাওয়া গেছে। সৌদি আরবে প্রথমবার একজন মহিলা আল হানোফ সাদজী Common Yoga Protocol কে lead করেছেন। এই প্রথম কোনো সৌদি নারী কোন main yoga session এ instruct করলেন। Egypt-এ এই বছর যোগ দিবসে একটি photo competition এর আয়োজন করা হয়েছিল । নীল নদের তীরে, red sea এর beaches এ এবং পিরামিডের সামনে- যোগব্যায়াম করছে, এমন লক্ষাধিক লোকের ছবি খুব জনপ্রিয় হয়েছে। আমাদের marbel budhha statue এর জন্য প্রসিদ্ধ মায়ানমারের মারাউইজায়া প্যাগোডা কমপ্লেক্স, সারা বিশ্বে বিখ্যাত। এখানেও ২১শে জুন একটি চমৎকার Yoga session er আয়োজন করা হয়েছিল। বাহরিনে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য একটি special camp এর আয়োজন করা হয়েছিল। শ্রীলঙ্কায় UNESCO Heritage Site এর জন্য বিখ্যাত গাল ফোর্টেও একটি স্মরণীয় Yoga session হয়েছিল। আমেরিকার নিউইয়র্কের অবজারভেশন ডেকেও মানুষ যোগব্যায়াম করেছে। মার্শাল আইল্যান্ডে প্রথমবারের মতো বৃহৎ পরিসরে আয়োজিত যোগ দিবসের কর্মসূচিতেও রাষ্ট্রপতি অংশগ্রহণ করেছেন। ভুটানের থিম্পুতে একটি বড় যোগ দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী তোবগে অংশগ্রহণ করেন। অর্থাৎ, বিশ্বের প্রতিটি কোণে কোণে যোগব্যায়াম অনুশীলনকারী মানুষের নান্দনিক দৃশ্য মত আমরা সবাই দেখতে পেয়েছি। যোগ দিবসে অংশগ্রহণকারী সকল বন্ধুদের প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার আপনাদের প্রতি একটা পুরনো আগ্রহ ব্যক্ত করার আছে। আমাদের যোগব্যায়ামকে শুধুমাত্র একদিনের অনুশীলন অভ্যাসে পরিণত করলে হবে না। আপনি নিয়মিত যোগব্যায়াম করবেন। এর মাধ্যমে আপনি অবশ্যই আপনার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন অনুভব করবেন।

 

বন্ধুরা, ভারতের অনেক products রয়েছে যেগুলির সারা বিশ্বে প্রচুর demand রয়েছে এবং আমরা যখন ভারতের কোনও local product কে global হতে দেখি, তখন গর্বিত হওয়া স্বাভাবিক। এরকম একটি product হল আরাকু কফি। আরাকু কফি, অন্ধ্রপ্রদেশের আল্লুরি সীতা রাম রাজু জেলায় প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয় । এটি তার rich flavour এবং aromar জন্য প্রসিদ্ধ। প্রায় দেড় লাখ জনজাতি পরিবার আরাকু কফি বাগানের ওপর নির্ভরশীল। গত কয়েকদিনে আরাকু কফির চাষকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোয় গিরিজান cooperative এর বড়ো ভূমিকা রয়েছে । তিনি এক বছর ধরে এখানকার কৃষক ভাই-বোনদের জন্য বাগানের কাজ করছেন এবং তাদের আরাকু কফি চাষে উৎসাহিত করেছেন। এই কারণে এইসব কৃষকের আয়ও বহুগুণ বেড়েছে। কোন্ডাডোরা জনজাতি সম্প্রদায়ও এর থেকে অনেক উপকৃত হয়েছে। রোজগারের পাশাপাশি সম্মানের জীবনও পাচ্ছেন তাঁরা। আমার মনে আছে একবার আমি অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুজীর সঙ্গে বিশাখাপত্তনমে এই কফির স্বাদ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। এর টেস্ট নিয়ে কোন প্রশ্ন নয়! অসাধারণ হয় এই কফি! আরাকু কফি অনেক Global Aawards পেয়েছে। দিল্লিতে আয়োজিত G-20 সম্মেলনেও এই কফি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সুযোগ পেলেই আপনারাও আরাকু কফি উপভোগ করবেন।

 

বন্ধুরা, লোকাল প্রোডাক্ট কে গ্লোবাল বানাতে আমাদের জম্মু কাশ্মীরের মানুষেরাও পিছিয়ে নেই।বিগত মাসে জম্মু কাশ্মীর যা করে দেখিয়েছে, তা সমগ্র দেশের জন্য একটা উদাহরণ।এখানকার পুলওয়ামার স্নো peas এর প্রথম উৎপাদন লন্ডন পাঠানো হয়েছে।কিছু মানুষের এই বুদ্ধির উদ্রেক হয় যে কাশ্মীরে উৎপন্ন হওয়া এক্সোটিক vegetables গুলিকে দুনিয়ার মানচিত্রে নিয়ে আসা হোক.. ব্যাস তারপর আর কি…. চাকুরা গ্রামের আব্দুল রশিদ মীরজি-এর জন্য সকলের আগেই এগিয়ে এসেছিলেন। উনি গ্রামের অন্য কৃষকদের জমি নিয়ে একসঙ্গে চাষ করার কাজ শুরু করেছিলেন এবং দেখতে দেখতে স্নো পিজ লন্ডন পর্যন্ত পৌঁছোতে শুরু করে। এই সাফল্য জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের উন্নতির ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখায়। আমাদের দেশে এমন অভিনব পণ্যের অভাব নেই। আপনারা এমন প্রোডাক্ট-এর কথা #myproductsmypride এর সঙ্গে অবশ্যই শেয়ার করুন। আমি এই বিষয়ে আগামী মন কি বাতেও আলোচনা করব।

(Audio Clip)

মম প্রিয়াঃ দেশবাসীনঃ

অদ্য অহং কিঞ্চিৎ চর্চা সংস্কৃত ভাষায়াং আরভে

 

আপনারা ভাবছেন যে মন-কি-বাত্‌ অনুষ্ঠানে হঠাৎ সংস্কৃত বলছি কেন আমি? এর কারণ আজ সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে যুক্ত একটি বিশেষ দিন। আজ ৩০শে জুন আকাশবাণীর সংস্কৃত বুলেটিন তার সম্প্রচারের ৫০ বছর পূর্ণ করছে। ৫০ বছর ধরে ক্রমাগত এই বুলেটিন অনেক মানুষকে সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে যুক্ত করে রেখেছে। আমি অল ইন্ডিয়া রেডিও পরিবারকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

 

বন্ধুরা সংস্কৃত ভাষা ভারতের প্রাচীন জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের উন্নতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে। এটা বর্তমান সময়ের দাবি যে আমরা সংস্কৃত ভাষাকে সম্মান করব এবং একে নিজেদের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গেও যুক্ত করব। আজকাল ব্যাঙ্গালুরুর কিছু মানুষ এমনই এক প্রচেষ্টায় মেতেছেন। ‌বেঙ্গালুরুতে একটি পার্ক রয়েছে-কব্বান পার্ক। এই পার্কে এখানকার লোকেরা এক নতুন প্রথা শুরু করেছেন। এখানে সপ্তাহে একদিন, প্রতি রবিবার শিশু, যুবক-যুবতী এবং বয়স্করা নিজেদের মধ্যে সংস্কৃত ভাষায় কথা বলেন। শুধু তাই নয় এখানে তর্ক-বিতর্কের বিভিন্ন সেশন সংস্কৃত ভাষায় আয়োজন করা হয়।

 

এঁদের এই উদ্যোগের নাম – সংস্কৃত উইকএণ্ড। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সমষ্টি গুব্বির সদস্যরা শুরু করেছিল এটা। মাত্র কিছু দিন আগে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ দেখতে-দেখতে বেঙ্গালুরুবাসীর কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যদি এমন সব উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হই আমরা তবে বিশ্বের এত প্রাচীন ও বৈজ্ঞানিক ভাষা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারব।

আমার প্রিয় দেশবাসী, মন কি বাতের এই পর্বে আপনাদের সঙ্গে যোগ দিতে পেরে ভালো লাগছে। এবার এই ধারা আবার আগের মত চলতে থাকবে। এখন থেকে এক সপ্তাহ পরে পবিত্র রথযাত্রা শুরু হচ্ছে। আমার কামনা, মহাপ্রভু জগন্নাথের কৃপা সর্বদা থাকুক দেশবাসীর উপর। অমরনাথ যাত্রাও শুরু হয়েছে, আর আগামী কয়েক দিনে পণ্ডরপুর ওয়ারি-ও শুরু হতে চলেছে। এই সব যাত্রায় সামিল সব ভক্তদের শুভকামনা জানাই আমি। এর পর কচ্ছী নববর্ষ – আষাঢ়ী বীজ উৎসবও রয়েছে। এই সব পরব-উৎসবের জন্যও আপনাদের অনেক শুভাকামনা জানাই। আমার বিশ্বাস সদর্থক চিন্তার সঙ্গে যুক্ত জনগণের অংশগ্রহণের এই সব উদ্যোগ আপনারা অবশ্যই আমার সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। আমি পরের মাসে আবার আপনাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার প্রতীক্ষায় থাকব। ততদিন অবধি নিজের ও নিজের পরিবারের খেয়াল রাখুন। অনেক-অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।