Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘‘মন কি বাত’’, (১১০ তম পর্ব) অনুষ্ঠানের বাংলা অনুবাদ –


আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। মন কি বাতের ১১০ তম পর্বে আমি আপনাদের স্বাগত জানাই। প্রত্যেক বারের মতো এবারও আমরা আপনাদের অনেক পরামর্শ, ইনপুটস এবং কমেন্টস পেয়েছি। আর প্রতিবারের মতোই এবারও কোন্ কোন্ বিষয়কে এপিসোডে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তা ঠিক করা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি পজিটিভিটিতে ভরপুর, একে অন্যকে টেক্কা দেয় এমন বহু ইনপুট পেয়েছি। তাতে এমন অনেক দেশবাসীর কথা আছে যাঁরা অন্যদের কাছে আশার আলো হয়ে তাদের জীবন উন্নততর করার কাজে যুক্ত।

বন্ধুরা, কিছুদিন পরেই ৮ই মার্চ আমরা মহিলা দিবস উদযাপন করব এই বিশেষ দিনটি দেশের বিকাশ যাত্রায় নারী শক্তির অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ দেয়। মহাকবি ভারতীয়ারজি বলেছেন, বিশ্ব তখনই সমৃদ্ধ হবে যখন নারীরা সমান সুযোগ পাবে। আজ ভারতের নারী শক্তি প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রগতির নতুন শিখর স্পর্শ করছে। কিছু বছর আগে পর্যন্ত কে ভেবেছিল যে আমাদের দেশের গ্রামীণ মহিলারাও ড্রোন ওড়াবেন! কিন্তু আজ তা সম্ভব হচ্ছে। আজ তো গ্রামে গ্রামে ‘ড্রোন দিদির’ বিষয়ে এতটাই চর্চা হচ্ছে, যে সকলের মুখে মুখে ‘নমো ড্রোন দিদি’, ‘নমো ড্রোন দিদি’ এই ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। প্রত্যেকে তার বিষয়ে আলোচনা করছেন। এক বিরাট বড় প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। আর তাই আমিও ভাবলাম যে এবারের ‘মন কি বাতে’ এক নমো ড্রোন দিদির সঙ্গে কথা বলা যাক। আমাদের সঙ্গে এই মুহূর্তে নমো ড্রোন দিদি সুনীতা জি রয়েছেন যিনি উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরের বাসিন্দা। আসুন তার সঙ্গে কথা বলি।

 

মোদী জি: সুনীতা দেবীজী, নমস্কার।

সুনীতা দেবী: নমস্কার, স্যার।

মোদীজি: আচ্ছা সুনীতা জি, প্রথমে আমি আপনার সম্বন্ধে জানতে চাইব, আপনার পরিবার সম্বন্ধে জানতে চাইব। একটু কিছু বলুন।

সুনীতা দেবী: স্যার, আমার পরিবারে দুটি বাচ্চা, আমি, আমার স্বামী এবং আমার মা আছেন।

মোদীজি: আপনি কত দূর পড়াশোনা করেছেন সুনীতা জি?

সুনীতা দেবী:  স্যার বি.এ. ফাইনাল।

মোদীজি: আর ঘরে কী কী কাজকর্ম করেন?

সুনীতা দেবী: চাষবাস, ক্ষেতি জমি এই সব কাজকর্ম করি স্যার।

মোদীজি:  আচ্ছা সুনীতা জি, আপনার ড্রোন দিদি হওয়ার যে যাত্রা সেটা কিভাবে শুরু হলো? আপনি ট্রেনিং কোথায় পেলেন, কীভাবে কী কী পরিবর্তন এলো, আমাকে শুরু থেকে বলুন।

সুনীতা দেবী: হ্যাঁ স্যার, ট্রেনিং আমাদের ফুলপুর IFFCO কোম্পানিতে হয়েছিল, এলাহাবাদে। ওখান থেকে আমি ট্রেনিং পেয়েছিলাম।

মোদীজি: সেই সময় আপনি ড্রোনের বিষয়ে শুনেছিলেন কখনো?

সুনীতা দেবী: স্যার, আগে শুনিনি কখনও, কিন্তু, একবার এরকম দেখেছিলাম; কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, যেটা সিতাপুরে আছে, ওখানে আমরা  প্রথমবার ড্রোন দেখেছিলাম।

মোদিজি: সুনীতাজী, আমাকে এটা বুঝতে হবে। যে আপনি ওখানে প্রথমদিন গিয়েছিলেন ।

সুনীতা: হ্যাঁ স্যার

মোদীজী: প্রথমদিন হয়তো আপনাকে ড্রোন দেখানো হয়েছিলো, এরপর বোর্ডে কিছু পড়ানো  হয়েছিলো, কাগজেও কিছু হয়তো পড়ানো হয়েছিলো, এরপর মাঠে নিয়ে গিয়ে প্র্যাকটিস , এরকম কি কী হয়েছে, আমাকে সম্পুর্নরূপে বর্ণনা করে বোঝাতে পারবেন কি?

সুনীতা দেবী: হ্যাঁ হ্যাঁ, স্যার। প্রথমদিন আমরা সবাই গেলাম। তারপরের দিন থেকে ট্রেনিং শুরু হল। প্রথমে তো থিওরি পড়ানো হলো, এরপর ক্লাস হলো দু’দিন।  ক্লাসে ড্রোনে কি কি পার্ট আছে, কিভাবে আপনাকে কি কি করতে হবে, এই সবকিছু থিওরিতে পড়ানো হয়েছিল। তৃতীয় দিন স্যার, আমাদের পরীক্ষা হয়েছিল। এরপর স্যার, আবারও একটা কম্পিউটারে পরীক্ষা হলো। অর্থাৎ, প্রথমে ক্লাস হলো, তারপর টেস্ট নেওয়া হলো। এরপর আমাদের আবারও প্র্যাক্টিক্যাল করানো হলো। অর্থাৎ, ড্রোন কিভাবে উড়াতে হয়, কিভাবে ওকে কন্ট্রোল করতে হয়, চালাতে হয়, সবকিছু শেখানো হয়েছিল প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসে।

মোদীজী: এরপর বলুন, ড্রোন কি কি কাজ করবে, সেটা কিভাবে শেখানো হলো।

সুনীতা দেবী: স্যার, ধরুন, তখন ক্ষেতে ফসল বড় হচ্ছিল। বর্ষার মরশুম তখন। বৃষ্টির মধ্যে ক্ষেতে ঢুকে ফসল দেখা খুব মুশকিলের। ড্রোনকে এক্ষেত্রে ক্ষেতের মধ্যে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে সব দেখাও যাবে, আর চাষীকে ক্ষেতে ঢুকতেও হবেনা। নিজেদের ক্ষেতে মজুর লাগিয়ে যে কাজ আমাদের করাতে হতো, মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে ড্রোনের মাধ্যমে খুব সহজেই সেই কাজ আমরা করে ফেলতে পারছি। ক্ষেতের মধ্যে কোনো পোকামাকড় থাকলে আমরা এক্ষেত্রে সাবধান হয়ে যেতে পারছি, আর, কৃষকভাইদেরও তাই, ব্যপারটা খুবই ভালো লাগছে। স্যার, এভাবে আমরা ৩৫ একর জমি স্প্রে করেছি এখনও পর্যন্ত।

মোদি জি: তাহলে কৃষক ভাইয়েরা বুঝতে পারছেন যে এর লাভ আছে।

সুনিতা দেবী: হ্যাঁ, স্যার। কৃষক ভাইরা খুবই সন্তুষ্ট হয়েছেন আর বলছেন যে তাদের ভীষণ ভালো লাগছে। সময়েরও সাশ্রয় হচ্ছে সব রকমের সুবিধা  পাওয়া যাচ্ছে। জল, ওষুধ সবকিছু নিজের সঙ্গে রাখি,  আমাদেরকে এসে শুধু  দেখিয়ে দিতে হয় যে কোথা থেকে কোথা অব্দি আমাদের জমি। সব কাজ আধ ঘন্টার মধ্যে সেরে ফেলা যায়।

মোদি জি: তাহলে এই ড্রোন দেখার জন্য নিশ্চয়ই আরো অনেকে আসে।

সুনিতা দেবী: স্যার অনেক ভিড় হয়। ড্রোন দেখার জন্য অনেক মানুষ একত্রিত হন। যারা বড় মাপের কৃষক তারা আমাদের ফোন নাম্বারও নিয়ে যায় তাদের জমিতে ড্রোনের মাধ্যমে spray করার জন্য।

মোদি জি: আমার জীবনের এক অন্যতম লক্ষ্য হলো ‘লাখপতি দিদি’ গড়ে তোলা, আজ যদি দেশের বোনেরা এই পর্বটি শুনছেন তাহলে জেনে রাখুন, আজ প্রথমবার এক ড্রোন দিদি আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। এই প্রসঙ্গে আপনি কি বলতে চান।

সুনিতা দেবী: আজ যেরকম আমি একা ড্রোন দিদি বলে পরিচিতি পেয়েছি এরকম ভাবেই হাজার হাজার বোনেরা এগিয়ে আসুন আর আমার মতন ড্রোন দিদি তারাও  হন আর আমি ভীষণ খুশি হব যখন দেখবো আমার একার সঙ্গে আরো হাজার হাজার বোনেরা আমার সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তখন খুব ভালো লাগবে এটা ভেবে যে আমি একা নই আমার সঙ্গে বহু মহিলারা ‘ড্রোন দিদি’ নামে পরিচিতি পাচ্ছেন ।

মোদি জি: সুনিতা দেবী। আমার তরফ থেকে আপনাকে জানাই অভিনন্দন। ‘NaMo ড্রোন দিদি’ দেশের কৃষি কার্যকে আধুনিক বানানো কাজে, একটি গুরুতপূর্ণ মাধ্যাম হিসাবে কাজ করছে। আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

সুনিতা দেবী: Thank you Thank you Sir

মোদি জি : Thank you

বন্ধুরা, আজ দেশে এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে নারী শক্তির প্রভাব পড়েনি। এমন আরেকটি ক্ষেত্র যেখানে মহিলারা নিজেদের উৎকৃষ্ট মানের নেতৃত্বের ক্ষমতা দেখিয়েছেন তা হল – প্রাকৃতিক কৃষি কার্য, জল সংরক্ষণ আর স্বচ্ছতা। রাসায়ানিক প্রয়োগের ফলে  আমাদের ধরিত্রী মার যে কষ্ট হচ্ছে, পীড়া হচ্ছে, বেদনা হচ্ছে, সেখানে ধরিত্রী মাকে বাচাঁতে আমাদের দেশের মাতৃশক্তি একটি বড় ভূমিকা  পালন করছেন। দেশের কোনায় কোনায় মহিলারা এখন প্রাকৃতিক কৃষিকার্যকে আরো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

আজ যদি দেশে ‘জল জীবন মিশন’-এর দরুন এত কাজ করা সম্ভবপর হচ্ছে তার পিছনে জল সমিতিগুলোর অনেক বড় ভূমিকা আছে। এই জল সমিতিগুলোর নেতৃত্বে মহিলারাই আছেন। এছাড়াও আমাদের মেয়ে, বোনেরা জল সংরক্ষণের জন্য চারিদিকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমার সঙ্গে ফোন লাইনে এমনই একজন মহিলা আছেন, তিনি কল্যাণী প্রফুল্ল পাটিলজি। ইনি মহারাষ্ট্রে থাকেন। আসুন কল্যাণী প্রফুল্ল পাটিলজির সঙ্গে কথা বলে ওনার অভিজ্ঞতা শুনি।

 

প্রধানমন্ত্রী জি: কল্যাণী জি নমস্কার।

কল্যাণী জি: নমস্কার স্যার, নমস্কার।

প্রধান মন্ত্রী জি: কল্যাণী জি, প্রথমেই আপনি আপনার সম্বন্ধে, আপনার পরিবার আর আপনার কাজ সম্বন্ধে কিছু জানান।

কল্যাণী জি: স্যার, আমি Microbiology-তে এম.এস.সি. করেছি, আর আমার ঘরে আমার স্বামী, শ্বাশুড়ি আর আমার দুই সন্তান আছে। আর তিন বছর ধরে আমি আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ করছি।

প্রধানমন্ত্রী জি: আর তারপরেই গ্রামে কৃষিকাজে লেগে গেলেন? কারণ আপনার কাছে basic knowledge-ও আছে, আপনার পড়াশোনাও এই বিষয়ে হয়েছে, আর এখন আপনি চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, এখন কি কি নতুন পরীক্ষা করেছেন আপনি?

কল্যাণী জি: স্যার, আমরা, যে দশ রকমের বনস্পতি হয় তাদের একত্রিত করে একটি অর্গানিক spray বানিয়েছি। আমরা ফসলে যে pesticide ইত্যাদি spray করি তাতে আমাদের বন্ধু কীট ও নষ্ট হয়ে যায়, আর আমাদের মাটি ও দূষিত হয়। উপরন্তু আমাদের জলেও এই ক্ষতিকারক রাসায়নিক মিশে আমাদের শরীরেরও ক্ষতি সাধন করছে। তাই আমাদের যতটা সম্ভব কম pesticide ব্যবহার করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী জি: তাহলে আপনি একপ্রকার পুরোপুরি প্রাকৃতিক কৃষিকার্য অর্থাৎ জৈব চাষের দিকে এগোচ্ছেন।

কল্যাণী জি: হ্যাঁ, আমাদের যে ঐতিহ্যবাহী  কৃষিপদ্ধতি রয়েছে, আমরা সেই অনুযায়ীই গত বছর সব করেছিলাম, স্যার।

প্রধানমন্ত্রী জি: জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

কল্যাণী জি: স্যার আমাদের মহিলাদের কৃষিকার্য-এর পেছনে যে খরচ হয় সেটা কম হয়েছে, আর Sir একটা সমাধান হিসাবে without pest এই product আমরা পেয়েছি। কারণ এখন cancer-এর প্রকোপ যেভাবে বাড়ছে, শহরে তো বটেই এমনকি আমাদের গ্রামেও যেভাবে ঘটনা বাড়ছে, তাতে যদি আপনি নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে চান তাহলে এই পথ আপনাকে বেছে নিতেই হবে; সেই কারণেই মহিলারাও এক্ষেত্রে সক্রিয় ভাবে তাদের অংশীদারিত্ব পালন করছেন।

প্রধানমন্ত্রী জি: আচ্ছা কল্যাণী জী আপনি কি জলসংরক্ষণ নিয়েও কিছু কাজ করেছেন? সেখানে আপনি কি করেছেন?

কল্যানী জি: স্যার Rainwater Harvesting; আমাদের সরকারি যত বাড়িঘর আছে যেমন– প্রাথমিক বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, গ্রাম পঞ্চায়েতের যে building, সেই সমস্ত জায়গা থেকে বৃষ্টির জল এক জায়গায় collect করা হয়েছে, সেটা একটা recharge shaft স্যার, কারণ বৃষ্টির জল মাটিতে পড়ার পর, মাটির ভেতরে চুঁইয়ে যাওয়া অর্থাৎ Percolate হওয়া উচিত। সেই ভাবনা থেকে আমরা ২০টা recharge shaft আমাদের গ্রামের ভেতর তৈরি করেছি, আরো 50টা recharge shaft-এর sanction হয়ে গেছে। খুব তাড়াতাড়ি সেই কাজ শুরু হবে।

প্রধানমন্ত্রী জি: আচ্ছা কল্যাণীজি, আপনার সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো লাগলো। আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

কল্যানী জি: স্যার, আপনাকে ধন্যবাদ স্যার, আমিও আপনার সঙ্গে কথা বলে খুব খুশি। মানে, আমি বিশ্বাস করি যে আমার জীবন সম্পূর্ণরূপে সার্থক হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জি: শুধু সেবা করুন।

প্রধানমন্ত্রী জি: দেখুন, আপনার নামই যখন কল্যাণী, তখন আপনি তো কল্যাণ করবেনই। ধন্যবাদ, নমস্কার।

কল্যানী জি: ধন্যবাদ স্যার, ধন্যবাদ।

বন্ধুরা, সুনীতাজী হোন বা কল্যাণীজী, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীশক্তির সাফল্য খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। আমি আবার আমাদের নারী শক্তির এই spiritকে হৃদয় থেকে সাধুবাদ জানাই।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ আমাদের জীবনে প্রযুক্তির গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। মোবাইল ফোন এবং ডিজিটাল গ্যাজেট আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে ডিজিটাল গ্যাজেটের সাহায্যে আমরা এখন বন্য প্রাণীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম হয়েছি? কয়েকদিন পর, ৩ মার্চ, বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস পালিত হবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা ছড়ানোর লক্ষ্যেই এই দিনটি পালিত হয়। এ বছর, বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসের theme-এ ডিজিটাল উদ্ভাবনকে সর্বাগ্রে রাখা হয়েছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য, প্রযুক্তিকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারের প্রচেষ্টায়, গত কয়েক বছরে, দেশে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরের টাইগার রিজার্ভে বাঘের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াইশোরও বেশি। চন্দ্রপুর জেলায় মানুষ ও বাঘের সংঘর্ষ কমাতে artificial Intelligence-এর সাহায্য নেওয়া হয়েছে। সেখানে, গ্রাম ও বনের সীমান্তে ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যখনই কোনও বাঘ গ্রামের কাছাকাছি আসে, তখনই artificial Intelligence অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে স্থানীয় লোকেদের মোবাইলে একটি alert আসে (সতর্কবার্তা আসে)। আজ এই টাইগার রিজার্ভের আশেপাশের তেরোটি গ্রামে, এই ব্যবস্থা মানুষকে অনেক সুবিধা করে দিয়েছে এবং বাঘের নিরাপত্তার সুনিশ্চিত হয়েছে।

বন্ধুরা, আজ তরুণ অন্ত্রপ্রেনাররা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং ইকো-ট্যুরিজমের জন্য নতুন নতুন ইনোভেশন সামনে আনছেন। উত্তরাখণ্ডের রুরকিতে, ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সহযোগিতায় রোটোর প্রিসিশন গ্রুপস এমন একটি ড্রোন তৈরি করেছে যা ‘কেন’ নদীতে ঘড়িয়ালদের উপর নজর রাখতে সাহায্য করছে। একইভাবে বেঙ্গালুরুর একটি কোম্পানি ‘বঘিরা’ এবং ‘গরুড়’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছে। বঘিরা অ্যাপের সাহায্যে জঙ্গল সাফারির (SAFARI) সময় গাড়ির স্পিড এবং অন্যান্য গতিবিধির ওপর নজর রাখা সম্ভব। দেশের অনেক টাইগার রিজার্ভে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ইন্টারনেট অফ থিংস – এর উপর ভিত্তি করে গরুড় অ্যাপটি, যেকোনো সিসিটিভির সাথে সংযুক্ত করলে সেটার থেকে রিয়েল টাইম অ্যালার্ট পাওয়া যায়৷ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রতি এমন প্রতিটি প্রচেষ্টার ফলে আমাদের দেশের জীববৈচিত্র্য আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।

বন্ধুরা, ভারতে প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। হাজার হাজার বছর ধরে আমরা প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীর সাথে সহাবস্থানের ভাবনা নিয়ে চলেছি। আপনি যদি কখনও মহারাষ্ট্রের মেলঘাট টাইগার রিজার্ভে যান তবে আপনি নিজেই এটি অনুভব করতে পারবেন। এই টাইগার রিজার্ভের পাশে খটকলি গ্রামে বসবাসকারী আদিবাসী পরিবারগুলি সরকারের সহায়তায় তাদের বাড়িগুলিকে হোম স্টে-তে রূপান্তরিত করেছে। এটি তাদের আয়ের একটি বড় উৎস হয়ে উঠছে। এই গ্রামেরই অধিবাসী কোরকু উপজাতির প্রকাশ জামকার জি, তার দুই হেক্টর জমিতে সাতটি রুমের একটি হোম স্টে তৈরি করেছেন। তার পরিবার তার বাড়িতে থাকা পর্যটকদের জন্য খাবার এবং পানীয়ের ব্যবস্থা করে। ঔষধি গাছের পাশাপাশি তিনি তার বাড়ির আশেপাশে আম ও কফির গাছও লাগিয়েছেন। এটি শুধু পর্যটকদের আকর্ষণই বাড়ায়নি, বরং অন্যান্য মানুষের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করেছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমরা যখন পশুপালনের কথা বলি, তখন সেটা প্রায়শই শুধু গরু-মহিষের কথা পর্যন্তই সীমিত থাকে। তবে ছাগলও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী, যাকে নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহু মানুষ ছাগল প্রতিপালনের সঙ্গে যুক্ত। ওড়িশার কালাহান্ডিতে, ছাগল প্রতিপালন গ্রামের মানুষের জীবিকার পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠছে। এই প্রচেষ্টার পিছনে রয়েছে জয়ন্তী মহাপাত্র জি এবং তাঁর স্বামী বীরেন সাহু জির একটি বড় সিদ্ধান্ত। তারা দু’জনেই বেঙ্গালুরুতে ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল ছিলেন, কিন্তু তাঁরা ব্রেক নিয়ে নিয়ে কালাহান্ডির সালেভাটা গ্রামে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা এমন কিছু করতে চেয়েছিলেন যা এখানকার গ্রামবাসীদের সমস্যার সমাধান করবে এবং তাদের ক্ষমতাশালী করবে। সেবা ও নিষ্ঠায় পরিপূর্ণ এই চিন্তা নিয়ে তাঁরা মানিকাস্তু এগ্রো প্রতিষ্ঠা করেন এবং কৃষকদের নিয়ে কাজ শুরু করেন। জয়ন্তী জি এবং বীরেন জি এখানে একটি চমৎকার মানিকাস্তু গোট ব্যাঙ্কও খুলেছেন৷ তাঁরা সামুদায়িক স্তরে ছাগল পালনের প্রচার করছে। তাঁদের গোট ফার্মে প্রায় ডজন খানেক ছাগল রয়েছে। মানিকাস্তু গোট ব্যাঙ্ক, এটি কৃষকদের জন্য একটি সম্পূর্ণ সিস্টেম প্রস্তুত করেছে। এর মাধ্যমে কৃষকদের ২৪ মাসের জন্য দুটি ছাগল দেওয়া হয়। ছাগল ২ বছরে, ৯ থেকে ১০টি বাচ্চা দেয়, যার মধ্যে ৬টি বাচ্চা ব্যাঙ্কে রাখা হয়, বাকিগুলি ওই পরিবারকে দেওয়া হয়, যারা ছাগল পালন করে। শুধু তাই নয়, ছাগলের পরিচর্যার জন্য প্রয়োজনীয় সেবাও দেওয়া হয়। বর্তমানে ৫০টি গ্রামের এক হাজারেরও বেশি কৃষক এই দম্পতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের সহায়তায় গ্রামের মানুষ পশুপালনের ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি এটা দেখে খুবই আনন্দিত বোধ করছি যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল প্রফেশনালস ক্ষুদ্র কৃষকদের ক্ষমতাশালী ও স্বনির্ভর করার জন্য নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন। তাঁদের এই প্রচেষ্টা সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী আমাদের সংস্কৃতির শিক্ষা হলো “পরমার্থ পরমো ধর্মঃ” অর্থাৎ অন্যদের সাহায্য করাই সবথেকে বড় কর্তব্য। এই মূল্যবোধে বিশ্বাসী আমাদের দেশের অগণিত মানুষ নিঃস্বার্থভাবে অন্যদের সেবায় নিজেদের জীবন সমর্পণ করেছেন। এমনই একজন মানুষ হলেন বিহারের ভোজ পুরের ভীম সিং ভবেশ জি। নিজের এলাকায় মুশহর জাতির মানুষদের মধ্যে ওঁর কর্মকাণ্ড খুবই আলোচিত। তাই আমার মনে হল এনাকে নিয়েই আজ আপনাদের সাথে কথাবার্তা বলি। বিহারের মুশহর এক অত্যন্ত বঞ্চিত ও অতি দরিদ্র সম্প্রদায়। ভীম সিংহ ভবেশ জি এই সম্প্রদায়ের বাচ্চাদের শিক্ষাদান করাকে নিজের জীবনের ফোকাস বানিয়েছেন যাতে ওদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়। উনি এই জাতির প্রায় ৮০০০ ছেলেমেয়েকে স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন । ওদের জন্য একটি বড় লাইব্রেরী ও বানিয়ে দিয়েছেন যাতে বাচ্চারা পড়াশোনা করার জন্য আরও সুবিধা পায়। ভীমসিং জি নিজের সম্প্রদায়ের মানুষদের জরুরি ডকুমেন্টস তৈরি করাতে, ওদের ফর্ম ভর্তি করতেও অনেক সাহায্য করছেন। এর ফলে বিভিন্ন জরুরি পরিষেবা গ্রামের এই মানুষদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় পরিষেবার জন্য উনি একশোরও বেশি মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেছেন। যখন করোনার মহা সংকট উপস্থিত ছিল তখন ও ভীমসিং জি নিজের এলাকার মানুষজনদের ভ্যাকসিন নেবার জন্য উৎসাহিত করেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভীম সিং ভবেশ জির মত আরও অনেক মানুষ আছেন যারা সমাজে এরকম নানান সৎ কার্যের সাথে যুক্ত । একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমরা যদি এই ভাবেই নিজেদের কর্তব্য পালন করতে পারি তাহলে এক শক্তিশালী রাষ্ট্র নির্মাণে তা খুবই কার্যকরী প্রমাণিত হবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, ভারতের সৌন্দর্য এখানকার বৈচিত্র ও আমাদের সংস্কৃতির নানা  রং মধ্যে সমাহিত। আমার এটা দেখে খুব ভালো লাগে যে কত মানুষ নিঃস্বার্থভাবে ভারতীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও একে আরো বেশি সুন্দর করে গড়ে তোলার চেষ্টা সাথে যুক্ত আছেন। আপনারা এরকম মানুষ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তেই পেয়ে যাবেন। এরমধ্যে সিংহভাগ মানুষ আছেন যারা ভাষার ক্ষেত্রে কাজ করছেন। যেমন জম্মু-কাশ্মীরে গান্দারবল-এর মহম্মদ মানসা জি। উনি বিগত ৩ দশক ধরে গোজরি ভাষাকে সংরক্ষিত করবার চেষ্টা করে চলেছেন। উনি গুজ্জার বকারওয়াল সম্প্রদায়ের একজন মানুষ যেটি একটি জনজাতি ভুক্ত গোষ্ঠী। ওণাকে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। রোজ প্রায় হেঁটে কুড়ি কিলোমিটার এর দূরত্ব অতিক্রম করতে হতো। এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলা করেই উনি মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন এবং এই ভাবেই নিজের ভাষাকে সংরক্ষিত করার সংকল্প ওঁনার আরও দৃঢ় হয়। সাহিত্যক্ষেত্রে মানসা জির কর্মকান্ড এত বিশাল যে অন্তত ৫০ সংস্করণে ওনার কাজ সংরক্ষিত করা হয়েছে । এর মধ্যে কবিতা ও লোকগীতি ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে । উনি অনেক বইয়ের অনুবাদও গোজরি ভাষাতে করেছেন।

বন্ধুরা, অরুণাচল প্রদেশে তীরপ-এর banwang লসুজি একজন শিক্ষক।  উনি wancho ভাষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা করেছেন। এই ভাষাটি অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ও  আসামের কিছু অংশে বলা হয়ে থাকে। উনি একটি ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুল বানানোর কাজ করেছেন যার ফলে বাঞ্চোভাষার একটি লিপিও তৈরি হয়েছে। উনি আগামি প্রজন্মকেও বাঞ্চোভাষা শেখাচ্ছেন, যাতে এই ভাষাকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো যেতে পারে। বন্ধুরা ,আমাদের দেশে এমন অনেক  মানুষ আছেন যারা নাচ গানের মাধ্যমে নিজেদের সংস্কৃতি ও ভাষার সংরক্ষণ করার কাজে যুক্ত রয়েছেন। কর্নাটকের বেঙ্কপ্পা আম্বাজি সুগেৎকার নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন এমনই কাজে যা খুবই প্রেরণাদায়ক। এই অঞ্চলের বাগল কোর্টের বাসিন্দা সুগেৎকার জি একজন লোক গায়ক। উনি হাজারের থেকেও বেশি গোঁধলি গান গেয়েছেন, সঙ্গে এই ভাষায় লেখা গল্পের ব্যাপক প্রচার করেছেন। উনি কোন পারিশ্রমিক ছাড়াই অজস্র শিক্ষার্থীকে ট্রেনিংও দিয়েছেন। ভারতে এমন আগ্রহী ও উৎসাহী মানুষের কোন অভাব নেই যাঁরা আমাদের সংস্কৃতিকে অনবরত সমৃদ্ধ করে চলেন। আপনারাও এঁদের থেকে প্রেরণা গ্রহণ করুন, নিজেরাও কিছু করে দেখানোর চেষ্টা করুন। এতে আপনাদের প্রশান্তি অনুভূব হবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, দু’দিন আগে আমি বারাণসীতে ছিলাম আর ওখানে আমি একটি চমৎকার চিত্র প্রদর্শনী দেখেছিলাম। কাশী এবং তার আশেপাশের অঞ্চলের যুবক-যুবতীরা নিজেদের ক্যামেরায় যেসব মোমেন্ট ক্যাপচার করেছেন তা আশ্চর্য রকমের সুন্দর। এর মধ্যে কয়েকটা ফটোগ্রাফ তো মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তোলা। সত্যি, এখন যার কাছে মোবাইল ফোন থাকে সে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে ওঠে। নিজের প্রতিভা এবং দক্ষতা দেখানোর ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ভীষণভাবে সাহায্য করেছে। ভারতের যুবরা কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম যাই হোক না কেন ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে আলাদা আলাদা কনটেন্ট শেয়ার করতে থাকা যুব বন্ধুদের আপনি ঠিকই খুঁজে পাবেন। ট্যুরিজম, সোশ্যাল কজ, পাবলিক পার্টিসিপেশন অথবা অনুপ্রেরণামূলক জীবনযাত্রা এই সব কিছুর সাথেই যুক্ত নানা ধরনের কনটেন্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকে। কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছেন দেশের এমন যুবদের কথা এখন অনেকখানি প্রভাব ফেলে। এঁদের প্রতিভাকে সম্মান জানানোর জন্য দেশে ‘ন্যাশনাল ক্রিয়েটর্স অ্যাওয়ার্ড’ শুরু করা হয়েছে। এর অনেক আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে সেই চেঞ্জ মেকারদের সম্মানিত করার প্রস্তুতি চলছে যাঁরা সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রভাব সৃষ্টি করা কন্ঠ হয়ে ওঠার জন্য টেকনোলজির ব্যবহার করছেন। এই কনটেস্ট ‘মাই গভ পোর্টালে’ চলছে; আর আমি কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করব। আপনিও যদি এমন ইন্টারেস্টিং কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের চেনেন তাহলে তাঁদের national creators award-এর জন্য অবশ্যই নমিনেট করুন।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি এই বিষয়ে খুশী যে কিছুদিন আগেই নির্বাচন কমিশন আরও একটি অভিযান শুরু করেছে- ‘আমার প্রথম ভোট- দেশের জন্য’। এর মাধ্যমে বিশেষ করে যাঁরা first time voters – তাঁদের কাছে অধিক থেকে অধিকতর সংখ্যায় ভোটদানের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারতের, উদ্যম্‌ এবং ক্ষমতায় ভরপুর যুবশক্তির জন্য গর্ববোধ হয়। আমাদের যুবশক্তি যত বেশি করে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে, এর ফলাফল দেশের জন্য তত বেশি লাভজনক হবে। আমিও যাঁরা first time voters, তাঁদের কাছে আবেদন করবো যাতে তাঁরা record সংখ্যায় ভোট দেয়। ১৮ বছর হওয়ার পর আপনারা ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে সদস্য নির্বাচন করার সুযোগ পাচ্ছেন। অর্থাৎ এই ১৮তম লোকসভা নির্বাচন যুব আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বহন করছে। এই জন্য আপনাদের প্রতিটি ভোটের মহত্ব আরও বেড়ে গেছে। সাধারণ নির্বাচনের এই আবহাওয়ায়, আপনারা অর্থাৎ যুবারা, না শুধু, এই রাজনৈতিক গতিবিধিতে অংশ নিন, বরং আলোচনা ও বিতর্ক নিয়েও সজাগ থাকুন। আর মনে রাখুন, ‘আমার প্রথম ভোট-দেশের জন্য’। আমি দেশের influencers-দেরও আবেদন করবো, সে ক্রীড়া জগতের হোক, ফিল্ম জগতের হোক, সাহিত্য জগতের হোক, বা অন্য কোন professionals হোক বা আমাদের ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবের influencers হোক, তারাও অনেক বেশি মাত্রায় এই অভিযানে অংশগ্রহণ করুক এবং first time voters দের ভোট দানের জন্য motivate করুক।

বন্ধুরা, ‘মন কি বাতের’ এই এপিসোডে আমার কথা আজকের মত এইটুকুই। সারা দেশে এখন লোকসভা নির্বাচনের পরিবেশ আর যেরকম গতবার হয়েছিল, মার্চ মাসে আচরণবিধি জারি করার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা ‘মন কি বাতের’ অনেক বড়ো একটা সাফল্য যে এই ১১০টি পর্ব পর্যন্ত আমরা সরকারের ছায়া থেকে একে দূরে রেখেছি। ‘মন কি বাতে’ দেশের সমষ্টিগত শক্তির কথা হয়, দেশের উপলব্ধির কথা হয়। এটা একপ্রকার মানুষের, মানুষের জন্য, মানুষের দ্বারা সৃষ্ট একটি অনুষ্ঠান। কিন্তু তবুও রাজনৈতিক মর্যাদা পালনের উদ্দেশ্যে লোকসভা নির্বাচনের এই দিনগুলিতে আগামী তিন মাস মন কি বাত অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হবে না। এরপর যখন ‘মন কি বাতে’র মাধ্যমে যোগাযোগ হবে সেটা ‘মন কি বাতের’ ১১১তম পর্ব হবে। পরবর্তী episode এর শুরু শুভ ১১১তম  সংখ্যা দিয়ে হবে, এর থেকে ভালও আর কি হতে পারে। কিন্তু, বন্ধুরা আপনাদেরকে একটা কাজ করতে হবে, ‘মন কি বাত’ হয়তো তিন মাসের জন্য স্থগিত থাকবে, কিন্তু দেশের উপলব্ধি তো থেমে থাকবে না, এইজন্য, আপনারা ‘মন কি বাত’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে সমাজের উপলব্ধি, দেশের উপলব্ধির কথা social media-তে পোস্ট করতে থাকবেন। কিছু সময় আগেই আমাকে এক যুবক ভালো পরামর্শ দিয়েছেন, পরামর্শ এটাই যে এখনও পর্যন্ত হওয়া- ‘মন কি বাত’ এপিসোড থেকে ছোট ছোট video , YouTube shorts এর আকারে share করা উচিৎ। এইজন্য আমি ‘মন কি বাত’ শ্রোতাদের আবেদন করবো যাতে তাঁরা এইধরনের shorts গুলো অনেক বেশি মাত্রায় share করেন।

বন্ধুরা, এরপর যখন আপনাদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ হবে, তখন, নতুন উদ্যম, নতুন তথ্য নিয়ে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে। আপনারা নিজেদের খেয়াল রাখবেন, অনেক অনেক ধন্যবাদ, নমস্কার।

 

*********