Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মহারাষ্ট্রের মারোল-এ আলজেমেয়া-টুস-সাইফিয়াহ-র নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

মহারাষ্ট্রের মারোল-এ আলজেমেয়া-টুস-সাইফিয়াহ-র নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ


পবিত্র সায়েদনা মুফাদ্দলজি, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেজি, উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্রজি এবং এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্য অভ্যাগতগণ!

আপনাদের মধ্যে উপস্থিত থাকা আমার কাছে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে আসার মতো। আপনাদের ভিডিও আজকে আমি দেখেছি। তবে এই ছবি সম্বন্ধে আমার একটি আপত্তি রয়েছে এবং আমি চাই আপনারা এতে কিছু পরিবর্তন করুন। আপনারা বারংবার আমাকে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে সম্বোধন করেছেন। কিন্তু আমি আপনাদের পরিবারের একজন। এখানে আমি প্রধানমন্ত্রীও নই, মুখ্যমন্ত্রীও নই। সম্ভবত খুব কম লোকই আমার মতন সৌভাগ্য লাভ করেছেন। আপনাদের পরিবারের সঙ্গে চার প্রজন্ম ধরে আমি যুক্ত এবং এই চার প্রজন্মই আমার বাড়িতে এসেছেন। খুব কম লোকেরই এই সৌভাগ্য হয়ে থাকে। ফলে এই ছবিতে বারংবার মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী সম্বোধন করায় আমি বিব্রত। আমি আপনাদের পরিবারের একজন এবং পরিবারের সদস্য হিসেবে এখানে আসার আমার সৌভাগ্য হয়। আমি যেন নরম মেঘের দোলায়! যেকোন সম্প্রদায়, সমাজ বা সংগঠন সময়ের সঙ্গে তার প্রাসঙ্গিকতা কি সেই হিসেবেই পরিচিত হয়। দাউদী বোহরা সম্প্রদায় এই পরিবর্তনের সঙ্গে এবং উন্নয়নের পথে বার বার নিজেদের প্রকৃত হিসেবে প্রমাণ করেছে। আজ আলজেমেয়া-টুস-সাইফিয়াহ-এর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রসার এক্ষেত্রে এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত স্বরুপ। মুম্বাই শাখার সূচনা করা এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সকলকে আমি অভিনন্দন জানাতে চাই। দেড়শো বছরের স্বপ্ন সত্য হল। আপনারা এই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। আপনাদেরকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন! আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।

বন্ধুগণ,

দাউদী বোহরা সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক যে কতো পুরনো তা জানেন না এমন হয়তো কেউ নেই। বিশ্বের যেখানেই আমি যাই না কেন এই ভালোবাসা সব সময় আমার ওপর বর্ষিত হয়। আমি সব সময় একটি কথা বলি সায়েদনা সাহেবের তখন সম্ভবত ৯৯ বছর বয়েস। আমি ভক্তিভাব নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করি। ৯৯ বছর বয়েসেও তিনি শিশুদের পড়াচ্ছেন! এই ঘটনা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করার কী অসীম দায়বদ্ধতা সায়েদনা সাহেবের। তিনি বসেছিলেন এবং ৯৯ বছর বয়েসে শিশুদের পড়াচ্ছেন। আমার বিশ্বাস ৮০০ থেকে ১০০০ শিশু সেখানে একত্রে বসে পড়ছে। এই দৃশ্য সব সময় আমার মনে উৎসাহের সঞ্চার করে। গুজরাটে বাস করে আমরা একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি। একযোগে আমরা অনেক সৃষ্টিশীল উদ্যোগ এগিয়ে নিয়ে গেছি। সায়েদনা সাহেবের শতবর্ষ উদযাপনের কথা আমার এখনও মনে আছে। সুরাটে এই উপলক্ষে বিরাট জনসমাগম হয়েছিল এবং আমিও সেখানে ছিলাম। সায়েদনা সাহিব তখন আমাকে বলেন- “আপনি বলুন আমার কী কাজ করা উচিত?” আমি বললাম, “আপনার কাজ নিয়ে আমি কী বলতে পারি?” কিন্তু তিনি আমাকে জোরাজুরি করায় আমি বললাম, “দেখুন গুজরাটে সব সময় জল সঙ্কট। আপনার এটা নিয়ে কিছু করা উচিত।” আজও এতো বছর পরেও বোহরা সম্প্রদায়ের মানুষরা জল সংরক্ষণে কাজে আন্তরিকভাবে যুক্ত। আমি সৌভাগ্যবান। এই কারণবশতই আমি বলে থাকি আমি গর্বিত যে এই সম্প্রদায় দেখিয়েছে সমাজ এবং সরকার একে অন্যের পরিপূরক শক্তি হয়ে জল সংরক্ষণের মতো অভিযানে এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই করতে পারে। পবিত্র সায়েদনা মহম্মদ বুরহানুদ্দিন সাহেবের সঙ্গে যখনই আমার আলোচনার সুযোগ হয়েছে তাঁর কাজকর্ম এবং সহযোগিতা আমায় পথ দেখিয়েছে। আমি অনেক শক্তি লাভ করেছি। গুজরাট থেকে আমি যখন দিল্লি যায় আপনি তখন পদের দায়িত্বভার নেন। এই ভালোবাসা আজও অমলিন এবং এই সম্পর্ক আজও চক্রবত এগিয়ে চলেছে। ইন্দোরের অনুষ্ঠানে ডঃ সায়েদনা মুফাদ্দল সইফুদ্দিন সাহিব এবং আপনাদের সকলের ভালোবাসা আমার কাছে অমূল্য।

বন্ধুগণ,

আমি যেমন বললাম, কেবল এ দেশেই নয়, আমি যখন বিদেশেও যায় আমার অনেক বোহরা ভাইবোন বিমান বন্দরে এসে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করেন। আমি যদি রাত ২টো তেও নামি, ২-৫টি পরিবার তখনও বিমান বন্দরে থাকেন। আমি তাদেরকে বলি এতো ঠান্ডার মধ্যে এতো কষ্টের আপনাদের কী দরকার ছিল? কী প্রয়োজনটাই বা ছিল? উত্তরে তাঁরা বলেন, “আপনি এসেছেন, তাই আমরা এসেছি।” বিশ্বের যেকোন প্রান্তেই তিনি থাকুন, যে দেশেই তিনি থাকুন ভারতের জন্য তাঁর চিন্তা এবং ভালোবাসা সব সময় তিনি তাঁর হৃদয়ে বহন করে চলেছেন। আপনাদের এই অনুভূতি এবং ভালোবাসাই আপনাদের কাছে বার বার আমায় টেনে নিয়ে আসে।

বন্ধুগণ,

এমন কিছু প্রয়াস ও সাফল্য রয়েছে যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু দশকের প্রাচীন স্বপ্ন। মুম্বাই শাখার মধ্যে দিয়ে আলজেমেয়া-টুস-সাইফিয়াহ’এর প্রসার মহান সায়েদনা আব্দুল কাদির নাজমুদ্দিন সাহেবের বহু দশকের স্বপ্ন ছিল। দেশ যখন ঔপনিবেশিক শাসনের অধীন শিক্ষা ক্ষেত্রে এই জাতীয় বৃহৎ স্বপ্ন নিজ গুণেই এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। কিন্তু স্বপ্ন যদি তা সঠিক চিন্তাধারা পথে ধাবিত হয় তাহলে তা পূর্ণতা পেতে বাধ্য। আজ যখন দেশ আজাদি কা অমৃতকালের যাত্রাপথে অগ্রসর হয়েছে, শিক্ষা ক্ষেত্রে বোহরা সম্প্রদায়ের এই অবদানের গুরুত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি যখন স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপনের কথা ভাবি একটি বিষয়ের আমি উল্লেখ করতে চাই এবং আপনাদেরকে অনুরোধও করবো যখনই আপনারা সুরাট বা মুম্বাই যান একবার ডান্ডি ঘুরে আসুন। এটা এক সন্ধিক্ষণ স্বরূপ। আমার কাছে আরও গুরুত্বপূর্ণ হল ডান্ডিতে লবন সত্যাগ্রহের আগে ডান্ডিতে আপনাদের বাড়িতে গান্ধীজি ছিলেন। আমি যখন মুখ্যমন্ত্রী হলাম সায়েদনা সাহিবকে আমি একটা অনুরোধ করি। আমি আমার মনের  গভীর বাসনার কথা তাকে জানাই। দ্বিতীয়বার চিন্তা না করেই সমুদ্রের সামনে সেই সুবিশাল বাংলো তিনি আমাকে দেন। আজ ডান্ডি যাত্রার স্মরণে এক অপূর্ব স্মারক সেখানে তৈরি করা হয়েছে। ডান্ডি যাত্রার সঙ্গে সায়েদনা সাহেবের এই স্মৃতিও চিরকালীন হয়ে রয়েছে। আজ দেশে আমরা বিভিন্ন সংস্কারের পথে হেঁটেছি। যেমন নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু হয়েছে। অনেক পুরনো এবং বর্তমান উপাচার্যরা এখানে বসে আছেন। তাঁরা সকলেই আমার বন্ধু। মহিলা এবং কন্যারা আজ নতুন শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। আলজেমেয়া-টুস-সাইফিয়াহ নতুন লক্ষ্য এবং নতুন সমাধান সূত্র নিয়ে অমৃতকালে আমাদের লক্ষ্যপথে এগিয়ে চলেছে। আধুনিক শিক্ষা অনুযায়ী আপনারা পাঠ্য পুস্তকের বিষয়সূচিকেও সময়োপযোগী করে তুলেছেন এবং আপনাদের চিন্তা সম্পূর্ণ সময়োপযোগী। বিশেষত মহিলা শিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানের প্রভূত গুরুত্ব রয়েছে এবং তা সামাজিক পরিবর্তনে নতুন শক্তি যোগাচ্ছে।

বন্ধুগণ,

শিক্ষা ক্ষেত্রে নালন্দা, তক্ষশিলার মতো বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র পুনরায় ভারত। সারা বিশ্ব থেকে জ্ঞানার্জনের জন্য মানুষরা এখানে আসতেন। আমরা যদি ভারতের অতীত গরিমাকে ফিরিয়ে আনতে চাই তাহলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সেই গরিমাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এই কারনবশতই দেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভারতীয় শৈলীতে আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতি আজ গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই এই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে চলেছি। আপনারা নিশ্চয় প্রত্যক্ষ করেছেন বিগত ৮ বছরে রেকর্ড সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যুবদের মধ্যে চিকিৎসা শিক্ষা একটি জনপ্রিয় প্রবণতা এবং দেশের চাহিদা মতো আমরা প্রত্যেকটা জেলায় মেডিকেল কলেজ খুলছি। আপনারা দেখুন ২০০৪-২০১৪র মধ্যে দেশে ১৪৫টি মেডিকেল কলেজ খোলা হয়েছে। সেখানে ২০১৪-২০২২এর মধ্যে ২৬০টিরও বেশি মেডিকেল কলেজ খোলা হয়েছে। গত ৮ বছরে দেশে প্রতি সপ্তাহে একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দুটি কলেজ স্থাপন করা হয়েছে এবং তা নিঃসন্দেহে এক আনন্দের বিষয়। যে দুরন্ত গতিতে এই কাজ এগিয়ে চলেছে তাতে দৃশ্যতই প্রতীয়মান তরুণ প্রজন্মের এক ভান্ডার হয়ে উঠছে ভারত যা বিশ্বকে আগামী দিনের পথ দেখাবে।

বন্ধুগণ,

মহাত্মা গান্ধী বলতেন, আমাদের পারিপার্শিক অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিক্ষাকে গড়ে তুলতে হবে তাহলেই তার প্রাসঙ্গিকতা অটুট থাকবে। এই কারনে শিক্ষা ক্ষেত্রে দেশ আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এই পরিবর্তন হল আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া। আমরা দেখেছি যে আমাদের বন্ধুরা গুজরাটি ভাষায় কবিতায় জীবনের মূল্য কী তা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এই অর্থের মধ্যে নিহিত আবেগকে আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। মাতৃভাষার যে অপরিসীম ক্ষমতা তা আমি অনুভব করতে পেরেছি।

বন্ধুগণ,

দাসত্বের সময়কালে ব্রিটিশরা ইংরাজিকে শিক্ষার মান হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। দুর্ভাগ্যবশত স্বাধীনতার পরেও আমরা সেই হীনমন্যতাকে বহন করেছি। আমাদের দরিদ্র, দলিত, পিছিয়ে পড়া এবং দুর্বল শ্রেণীর মানুষরা এর ক্ষতিকারক ফল ভোগ করেছে। মেধা থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র ভাষার ভিত্তিতে তাদের প্রতিযোগিতার বাইরে রেখে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আজ চিকিৎসা এবং কারিগরি ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষা লাভ করা যায়। ঠিক তেমনি ভারতের প্রয়োজনের ভিত্তিতে দেশ আরও একটা সংস্কার ঘটিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে আমরা স্বত্ত্ব বাস্তুতন্ত্র নিয়ে কাজ করেছি এবং স্বত্ত্বের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়াকে সহজ করে দিয়েছি। আজ আইআইটি, আইআইএসসি-র মতো প্রতিষ্ঠানে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় ছাত্রছাত্রীরা স্বত্ত্বের জন্য আবেদন করতে পারছেন। আজ শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্যালয়গুলিতে লার্নিং টুলের ব্যবহার করা হচ্ছে। আজ যুব সম্প্রদায় কেবলমাত্র পুঁথিগত জ্ঞানলাভ করে নয়, দক্ষতা প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী সক্ষমতায় সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে। ফলস্বরূপ আমাদের যুব সম্প্রদায় প্রকৃত বিশ্বের সমস্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত হচ্ছেন। তারা এই সমস্ত সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজে বের করছেন।

বন্ধুগণ,

যেকোন দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিল্প বাস্তুতন্ত্রকে শক্তিশালী হওয়া দরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প ক্ষেত্র পরস্পরের পরিপূরক। এই দুইই যুবদের জন্য ভবিষ্যতের ভিত্তি রচনা করে। দাউদী বোহরা সম্প্রদায়ের মানুষরা ব্যবসা ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সক্রিয় এবং সফল। গত ৮-৯ বছরে আপনারা দেখেছেন অনায়াসে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কী ঐতিহাসিক সংস্কার ঘটানো হয়েছে এবং তার প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে দেশ ৪০ হাজারেরও বেশি বাধ্যবাধকতা বিলোপ ঘটিয়েছে এবং কয়েকশো সংস্থানকে ফৌজদারি বিধির বাইরে করেছে। ইতিপূর্বে উদ্যোগপতিদের এইসব আইনের বেড়াজালে হয়রানি ভোগ করতে হতো। এতে তাদের ব্যবসা মার খেতো। কিন্তু আজ সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী সঙ্গে রয়েছে এবং তাদের পূর্ণ সহায়তা প্রদান করছে। বিগত কয়েক বছরে অভূতপূর্ব এক আস্থার বাতাবরণ সৃষ্টি করা হয়েছে। ৪২টি কেন্দ্রীয় আইনের সংস্কার ঘটাতে আমরা জন বিশ্বাস বিল এনেছি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার ভাব প্রতিষ্ঠা করতে “বিবাদ সে বিশ্বাস” প্রকল্প নিয়ে এসেছি। এই বাজেটে কর হারের সংস্কার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কর্মী এবং উদ্যোগপতিদের হাতে অনেক বেশি টাকা আসবে। যেসব তরুণ কর্ম সৃষ্টিকারক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্য এই পরিবর্তন অনেক সম্ভাবনার ক্ষেত্র খুলে দেবে।

বন্ধুগণ,

উন্নয়ন এবং ঐতিহ্য ভারতের মতো দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের প্রত্যেকটি শ্রেণী, সম্প্রদায় এবং আদর্শের ক্ষেত্রে এই বিশেষত্ব ধরা পরে। এই কারনে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে। একদিকে দেশে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে অন্যদিকে সামাজিক পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। আজ আমরা উৎসবের ক্ষেত্রে প্রাচীন ঐতিহ্যগত পদ্ধতির পথে না হেঁটে উৎসবে কেনাবেচার ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে দাম মেটাচ্ছি। আপনারা দেখেছেন এবারের বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরাতাত্ত্বিক নথিকে ডিজিটাল ব্যবস্থার মধ্যে আনা হচ্ছে। আমি দেখছিলাম শতবর্ষ প্রাচীন হাতে লেখা পুরাণ সমগ্রকে। ভারত সরকারের একটা বৃহৎ প্রকল্প রয়েছে। আমি সরকারকে বলেছি সমস্ত কিছুকেই ডিজিটাল ব্যবস্থার মধ্যে আনতে। এতে আগামী প্রজন্ম উপকৃত হবেন। প্রত্যেক সমাজ এবং প্রত্যেক শ্রেণীকে এই প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি আমি। যদি কোথাও সংশ্লিষ্ট প্রাচীন পাঠ্য থাকে তাহলে তার ডিজিটাল রূপান্তর করা দরকার। সম্প্রতি আমি মঙ্গোলিয়ায় গেছিলাম। মঙ্গোলিয়ায় ভগবান বুদ্ধের সময়কালে হাতে লেখা কিছু নথি রয়েছে। সেখানে তা থাকতে দেখে আমি তাদেরকে বললাম এগুলি ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য আমাকে দেওয়া হোক এবং আমরা সে কাজ করেছি। প্রতি ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বাস এক শক্তি স্বরূপ। যুবদেরকে এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। দাউদী বোহরা সম্প্রদায় এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। ঠিক তেমনি পরিবেশগত সংরক্ষণ বা বাজরাকে জনপ্রিয় করা বিশ্বজুড়ে এইসব ক্ষেত্রে ভারত সক্রিয় নেতৃত্ব দিচ্ছে। জন-অংশীদারি বাড়াতে এই অভিযানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প নিতে পারেন আপনি। ভারত জি২০র মতো গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব মঞ্চে এ বছর সভাপতিত্ব করছে। বোহরা সম্প্রদায় যারা সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে এই উপলক্ষে তারা ভারতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হিসেবে কাজ করতে পারেন। আপনারা সব সময় যা করেছেন অনুরূপ উৎসাহের সঙ্গে আমার বিশ্বাস আপনারা এই দায়িত্ব নির্বাহ করবেন। দাউদী বোহরা সম্প্রদায় উন্নত ভারতের লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং আমার স্থির বিশ্বাস রয়েছে এক্ষেত্রেও আপনাদের অনুরূপ ভূমিকায় দেখা যাবে। এই আশা এবং বিশ্বাসের সঙ্গে এই পুণ্য অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলকে পুনরায় শুভেচ্ছা জানায়। এই অনুষ্ঠানে আমাকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ। সায়েদনা সাহিব এক বিশেষ ভালোবাসার জায়গা অর্জন করেছেন। সংসদে অধিবেশন চললেও এখানে আসা আমার কাছে অনুরূপ গুরুত্বপূর্ণ এবং আজ এখানে এসে আমি আপনাদের আশীর্বাদ লাভের সুযোগ পেলাম। হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আমি পুনরায় আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

অসংখ্য ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে।