Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মহারাষ্ট্রের নাগপুরে মাধব নেত্রালয় প্রিমিয়াম সেন্টার-এর শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

মহারাষ্ট্রের নাগপুরে মাধব নেত্রালয় প্রিমিয়াম সেন্টার-এর শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


নয়াদিল্লি, ৩০ মার্চ, ২০২৫

 

ভারত মাতার জয়, 

ভারত মাতার জয়,

ভারত মাতার জয়,

 

গুড়ি পড়ওয়া এবং নববর্ষ উপলক্ষে আমি আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই! অত্যন্ত সম্মানিত সরসঙ্ঘচালকজি ডঃ মোহন ভাগবতজি, স্বামী গোবিন্দ গিরিজি মহারাজ, স্বামী অবদেশানন্দ গিরিজি মহারাজ, মহারাষ্ট্রের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ জি, আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী নীতিন গড়করিজি, ডঃ অবিনাশ চন্দ্র অগ্নিহোত্রীজি, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং এখানে উপস্থিত সমস্ত অতিথিবৃন্দ, রাষ্ট্র যজ্ঞের এই পবিত্র অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছি। আজ চৈত্র শুক্ল প্রতিপদ একটি বিশেষ দিন। পবিত্র নবরাত্রি উৎসব আজ থেকেই শুরু হচ্ছে। আজ দেশের বিভিন্ন অংশে গুড়ি পড়ওয়া, উগাড়ি এবং নভরেহ উদযাপিত হচ্ছে। আজ প্রভু ঝুলেলাল জি এবং গুরু অঙ্গদ দেবজিরও জন্মবার্ষিকী। এ বছর রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের গৌরবময় যাত্রার ১০০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই উপলক্ষে আমি স্মৃতি মন্দির পরিদর্শনের সুযোগ পেয়েছি এবং সম্মানিত ডাক্তার সাহেব ও গুরুজির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। 

 

বন্ধুগণ,

 

আমরা আমাদের সংবিধানের ৭৫ বর্ষপূর্তিও উদযাপন করেছি। আগামী মাসে আমাদের সংবিধানের প্রণেতা বাবা সাহেব আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকী। আজ দীক্ষাভূমিতে বাবা সাহেবের প্রতি প্রণাম জানিয়েছি এবং তাঁর আশীর্বাদ নিয়েছি। নবরাত্রি এবং অন্য সমস্ত উৎসব উপলক্ষে দেশবাসীকে আমি আমার অন্তরের শুভেচ্ছা জানাই।

 

বন্ধুগণ,

 

মাধব নেত্রালয় হল আধ্যাত্মিকতা, জ্ঞান এবং গর্বের এক আশ্চর্য পাঠশালা। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের মনে দশকের পর দশক ধরে পূজ্য গুরুজির আদর্শ প্রচার করে চলেছে। নতুন ক্যাম্পাসের শিলান্যাস হয়েছে। এর ফলে এটির সেবাকার্যে আরও গতি আসবে। 

 

বন্ধুগণ,

 

লালকেল্লার ভাষণে আমি প্রত্যেকের প্রয়াসের কথা বলেছিলাম। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দেশ আজ যেভাবে কাজ করে চলেছে, মাধব নেত্রালয় সেই প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। সরকারের নীতির ফলে কোটি কোটি মানুষ আয়ুষ্মান ভারতের মাধ্যমে আজ বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন। হাজার হাজার জন ঔষধি কেন্দ্রে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ কম দামে ওষুধ পাচ্ছেন। দেশে আজ হাজার হাজার ডায়ালিসিস কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, যেখানে বিনা খরচে কোটি কোটি মানুষ ডায়ালিসিসের সুযোগ পাচ্ছেন এবং এর ফলে দেশবাসীর কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। গত ১০ বছরে গ্রামগুলিতে লক্ষ লক্ষ আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের মানুষ সেরা চিকিৎসকদের কাছ থেকে টেলি-মেডিসিনের সুবিধা পাচ্ছেন। 

 

বন্ধুগণ,

 

আমরা মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা শুধু দ্বিগুণই করিনি, সেইসঙ্গে এইমস-এর সংখ্যাও বাড়িয়ে তিনগুণ করেছি। দেশে ডাক্তারিতে আসন সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এর ফলে ভালো ভালো চিকিৎসক তৈরি হচ্ছে। দেশে আজ গরিব ঘরের সন্তানও চিকিৎসক হয়ে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন। আমরা ডাক্তারদের তাঁদের মাতৃভাষায় পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছি। 

 

বন্ধুগণ,

 

আমরা গুরু নানক দেবজি, কবীরদাস, তুলসীদাস, সুরদাস, সন্ত তুকারাম-এর মতো মহামানবদের পেয়েছি। একইভাবে স্বামী বিবেকানন্দের মতো মহান সাধককেও পেয়েছি। তিনি সমাজকে নাড়া দিয়েছিলেন, হতাশা থেকে দেশবাসীকে জাগিয়ে তুলেছিলেন এবং দেশের প্রকৃত সংস্কৃতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। ১০০ বছর আগে যে বীজ রোপণ করা হয়েছিল, আমরা আজ তার ফল ভোগ করছি। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ হল ভারতের অমর সংস্কৃতির আধুনিক অক্ষয় বট। এই অক্ষয় বট ভারতীয় সংস্কৃতি, আমাদের দেশের সচেতনতাকে ক্রমাগত শক্তি জুগিয়ে চলেছে। 

 

বন্ধুগণ,

 

আমরা সাম্প্রতিককালে দেখেছি, প্রয়াগের নেত্র কুম্ভে স্বেচ্ছাসেবকরা লক্ষ লক্ষ মানুষকে সাহায্য করেছেন। যেখানেই সেবা থাকবে, সেখানেই স্বয়ংসেবক থাকবেন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যা, ভূমিকম্প – যাই হোক না কেন, স্বেচ্ছাসেবকরা সুশৃঙ্খল বাহিনীর মতো সেখানে পৌঁছে যান। তাঁদের কেউই নিজেদের সংসারের কথা ভাবেন না, নিজেদের যন্ত্রণার দিকে নজর দেন না। সেবা আমাদের হৃদয়ের মধ্যেই রয়েছে। 

 

বন্ধুগণ,

 

অত্যন্ত সম্মানিত গুরুজিকে এক সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, তিনি কেন সঙ্ঘের সর্বব্যাপী উপস্থিতির কথা বলেন? জবাবে তিনি বলেছিলেন, আলো সর্বত্র বিরাজ করে। এটি অন্ধকার দূর করে, এটি অন্যকে কাজ করার পথ দেখায়। গুরুজির এই শিক্ষা আমাদের জীবনে মন্ত্রের মতো। আমাদের আলো হয়ে উঠতে হবে এবং অন্ধকার দূর করতে হবে, বাধা সরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। 

 

বন্ধুগণ,

 

আমরা দেখতে পাচ্ছি, দাসত্বের মানসিকতা কাটিয়ে ভারত কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। গত ৭০ বছর ধরে চলতে থাকা দাসত্বের ক্ষতকে সরিয়ে দেশ আজ গর্বের নতুন পথে যাত্রা শুরু করেছে। ব্রিটিশ জমানায় তৈরি আইনগুলিকে তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন চালু করা হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। আমাদের মন্ত্র ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ আজ বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। গোটা বিশ্ব আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কোভিডের সময় বিশ্বকে ভারত নিজের পরিবার হিসেবে বিবেচনা করেছিল এবং টিকা প্রদান করেছিল। বিশ্বের যেখানে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, ভারত সেখানে পাশে দাঁড়িয়েছে। আপনারা দেখেছেন, গতকাল মায়ানমারে একটি বড় ভূমিকম্প হয়েছে। সেখানে ভারত প্রথম দেশ হিসেবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তুরস্ক বা নেপালের ভূমিকম্প, মালদ্বীপের জল সঙ্কট, যখনই সাহায্যের প্রয়োজন হয়েছে, ভারত সময় নষ্ট না করে পাশে দাঁড়িয়েছে। 

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ হল আমাদের যুব সম্প্রদায়। তাঁদের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁরা নতুন নতুন উদ্ভাবন করছেন, স্টার্ট-আপ-এর দুনিয়ায় নিজেদের সাফল্যের পতাকা উত্তোলন করছেন এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ হল, আজকের তরুণ প্রজন্ম ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে গর্ববোধ করে। সম্প্রতি প্রয়াগরাজ মহাকুম্ভে আমরা দেখেছি যে, লক্ষ লক্ষ তরুণ সেখানে ভিড় জমিয়েছিলেন এবং সনাতন পরম্পরার সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করে ফেলেছেন। আজকের ভারতের তরুণরা দেশের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে কাজ করেন। ভারতের তরুণরা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কে সফল করে তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে এই অনুভূতি গড়ে উঠেছে যে, দেশের জন্য আমাদের বাঁচতে হবে, দেশের জন্য আমাদের কিছু করতে হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই একই তরুণ প্রজন্ম ২০৪৭-এ উন্নত ভারত গড়ার পথ প্রশস্ত করছে। 

 

বন্ধুগণ,

 

যখন সঙ্ঘ তৈরি হয়েছিল, তখন দেশের অবস্থা অন্যরকম ছিল, পরিস্থিতিও আলাদা ছিল। ১৯২৫ থেকে ১৯৪৭ – এই সময়টুকু ছিল লড়াইয়ের। দেশের সামনে তখন স্বাধীনতার বড় লক্ষ্য ছিল। আজ সঙ্ঘের ১০০ বছরের যাত্রার পর দেশ আবার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ পর্বটি হল, ২০২৫ থেকে ২০৪৭, এই পর্বেও আমাদের সামনে একটি বড় লক্ষ্য রয়েছে। আমাদের কঠোর পরিশ্রম করে যেতে হবে। উন্নত ভারতের স্বপ্ন আমাদের অনুভব করতে হবে। আগামী ১ হাজার বছরের জন্য আমাদের শক্তিশালী ভারতের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা উন্নত ভারতের অঙ্গীকার পূরণ করব। এই অঙ্গীকার নিয়ে আমি আবার আপনাদের সবাইকে নববর্ষ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ!

 

প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি দিয়েছেন হিন্দিতে

 

 

SC/MP/DM