Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মরিশাসের সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সারাংশ


s2015031262990 [ PM India 156KB ]

s2015031262992 [ PM India 218KB ]

s2015031262993 [ PM India 242KB ]

s2015031262995 [ PM India 177KB ]

নয়াদিল্লি, ১২ মার্চ, ২০১৫ মরিশাসের জাতীয় দিবসে সেদেশের সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, স্বাধীনতা দিবস উদযাপন সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ঘটনাকেও স্মরণ করিয়ে দেয়। আজকের দিনটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসেও একটি বিশেষ দিন। ১৯৩০ – এর আজকের দিনেও মহাত্মা গান্ধী তাঁর ডান্ডি অভিযান শুরু করেছিলেন এবং এরই সঙ্গে স্বাধীনতার লক্ষ্যে ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের সূচনা হয়েছিল। এই উপলক্ষ্যে, প্রধানমন্ত্রী মরিশাসের স্বাধীনতায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য স্যর সিওসাগুর রামগুলামের প্রতিও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, মরিশাস গণতন্ত্রের এক উজ্জ্বল আলোক সঙ্কেত হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ১০ লক্ষের কিছু বেশি জনসংখ্যাবিশিষ্ট এই দেশটির মানুষের মধ্যে যেমন ব্যাপক বিবিধতা রয়েছে, তেমনই এদের সম্প্রীতিও দেখার মতো। দৃঢ়ভাবে সমৃদ্ধির পথে দেশটি অগ্রসর হচ্ছে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মরিশাসের মানুষের আধুনিক পছন্দ এবং কঠোর পরিশ্রমে তাদের উৎসাহ ও শিল্পোদ্যোগী মনোভাব দেখে তিনি বিস্মিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশটি বস্ত্র ও পর্যটন ক্ষেত্রের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কৃষি নির্ভর অর্থনীতি থেকে মাঝারি আয় বিশিষ্ট ও বৈচিত্র্যপূর্ণ অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। দেশটি এখন বিদেশে অর্থ বিনিয়োগ ও তথ্য প্রযুক্তি রপ্তানি করছে। তিনি বলেন, এই দেশটির সৌজন্যবোধ ও উষ্ণতা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্পর্কে কদাচিৎ দেখা যায়। দেশটি আজ ভারতের সঙ্গে এক অটুট আস্থার বন্ধন কায়েম করেছে। সমসাময়িক সমর্থনের দিক থেকেও দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তাতে ভারত ও মরিশাস উভয়ই সমান গর্বিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। দুই দেশকে একে-অপরের অর্থনৈতিক অংশীদার হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তার পরিস্থিতির উন্নতিসাধনে দুই দেশই অভিন্ন দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিয়েছে। উভয় দেশই উন্নয়নশীল বিশ্বের স্বার্থে এবং এই গ্রহের ভবিষ্যৎ কল্যাণে এক সুরে কথা বলে। প্রধানমন্ত্রী মরিশাস’কে ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলির নেতা ও আফ্রিকার সঙ্গে সেতুবন্ধনকারী দেশ হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বিশ্বে হিন্দিভাষার প্রসারে এই দেশটির অগ্রণী ভূমিকা যথেষ্ট সাহায্য করছে। গত বছর দুই দেশের গণতান্ত্রিক পট পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় পর উভয় দেশই একটি একক দল নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে। তিনি বলেন, এখানে আরও একটি কৌতুহলের বিষয় হল যে, দুই দেশের সংসদেই মহিলা অধ্যক্ষা রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের কাছেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার এক স্থিতিশীল মঞ্চ রয়েছে। বিগত নয় মাস ধরে ভারত সার্বিক উন্নয়নের একটি স্বচ্ছ ধারণা নিয়েই অগ্রসর হয়েছে। দুই দেশই নিজেদের আর্থিক ক্ষেত্রের বিকাশ বাড়াতে, অর্থনীতির সংস্কারে এবং জনসাধারণের জীবনযাত্রার পরিবর্তনে দ্রুত, সংকল্পবদ্ধ ও সাহসী হয়ে কাজ করেছে। তিনি আস্থা ব্যক্ত করেন যে, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী শ্রী জগন্নাথের সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশটি আরও প্রভাবশালী হয়ে উঠবে। সেদেশের অগ্রগতির প্রচেষ্টাগুলিতে ভারতের সহায়তা আগের মতোই বজায় রাখারও আশ্বাস দেন তিনি। দ্বৈত কর আরোপ প্রত্যাহারের বিষয়েও দুই দেশ একযোগে কাজ করবে বলে সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গতকাল তাঁর বৈঠকে কথা হয়েছে। একই সঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী সেদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন যে, মরিশাসের মতো কৌশলগত দিক থেকে ঘনিষ্ট অংশীদার দেশটির কর সংক্রান্ত ক্ষেত্রে স্বার্থ ক্ষুন্ন হয় এমন কোনও কাজ ভারত করবে না। মরিশাসে দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও একটি সাইবার শহর নির্মাণে তিনি ভারতের সহায়তার কথা ঘোষণা করেন। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মরিশাসের ই-স্বাস্থ্য কর্মসূচি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তিনি এই কর্মসূচিটির অগ্রগতিতেও ভারতের সহায়তাদানে আগ্রহের কথা উল্লেখ করেন। সেদেশে পেট্রোলিয়াম জ্বালানির ঘাটতি মেটাতে নতুন একটি প্রকল্প নির্মাণের কথা তিনি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক হাব হিসাবে মরিশাসের অবস্থানকে আরও মজবুত করবে। মৎস্যচাষ থেকে পর্যটন ক্ষেত্রে মরিশাসের মহাসাগরীয় অর্থনীতির অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতও সামুদ্রিক বাণিজ্যের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল। তাই, নৌ-বাণিজ্য অর্থনীতির উন্নয়নে নতুন নতুন সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে বিশেষভাবে আগ্রহী। এই ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশ একযোগে কাজ করলে নিজেদের সক্ষমতা আরও মজবুত করা যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় দুই দেশের অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ২০২২ সাল নাগাদ ১০০ গিগাওয়াট সৌরশক্তি ও ৬০ গিগাওয়াট বায়ুশক্তি উৎপাদনের এক উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। জ্বালানি দক্ষতা বাড়ানোর ওপরও ভারত নজর দেবে বলে তিনি জানান। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে মরিশাস সর্বদাই আন্তর্জাতিক স্তরে জোরালো সওয়াল করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্ব জুড়ে আরও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণে ভারত সেদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত মহাসাগরীয় স্রোতের সঙ্গেই ভারত ও মরিশাসের নিয়তি জড়িত রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত অংশীদারিত্বই একে-অপরের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মজবুত স্তম্ভ এবং সম্পর্ক কালোত্তীর্ণ হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। অভিন্ন পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থাই এই সম্পর্কের ভিত্তি। আর এই সম্পর্কই ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতি দুই দেশের অভিন্ন অঙ্গীকারকে ব্যক্ত করে। তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও নিজেদের সক্ষমতাকে আরও মজবুত করতে করণীয় যা কিছু রয়েছে তা সবই করা হবে। ভারত মহাসাগরের এই অংশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য মরিশাস যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে, তার ফলে এই অঞ্চল আরও নিরাপদ হয়ে উঠবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলের সব দেশকেই নিজেদের দায়িত্ব ভাগাভগি করে নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসা উচিৎ। ভারত এই অঞ্চলে নিরাপত্তা, আর্থিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক ও মানুষের সঙ্গে মানুষের দিক থেকে আরও ঘনিষ্ঠ সুসংবদ্ধ অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায় বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। সময়ের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলতে এই প্রতিষ্ঠানের সংস্কারে প্রধানমন্ত্রী মরিশাসের সমর্থন দাবি করেন। ভারত ও মরিশাসের সম্পর্ক হৃদয় প্রোথিত এবং আবেগের সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন এই সম্পর্কের পরিপোষণে ভারতের যা কিছু করণীয় আছে, তা সবই করবে। প্রভূত ধন্যবাদ।