Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী এবং শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যৌথভাবে ইউপিআই পরিষেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী

মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী এবং শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যৌথভাবে ইউপিআই পরিষেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লি, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি শ্রী রনিল বিক্রমাসিংঘে এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী শ্রী প্রবিন্দ জগন্নাথের সঙ্গে যৌথভাবে শ্রীলঙ্কা ও মরিশাসে ইউপিআই পরিষেবা এবং মরিশাসে রুপে কার্ডের সূচনা করেন। 
মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী শ্রী প্রবিন্দ জগন্নাথ জানান, যৌথ ব্র্যান্ডের রুপে কার্ড মরিশাসে দেশী কার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন আজকের এই সূচনাপর্বের ফলে উভয় দেশের মানুষই উপকৃত হবেন। 
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি শ্রী রনিল বিক্রমাসিংঘে অযোধ্যা ধামে রামমন্দির স্থাপনে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং শতবর্ষ প্রাচীন অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপরে জোর দেন। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীরতা পাবে এবং তাদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন গতি সঞ্চারিত হবে। 
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত-শ্রীলঙ্কা এবং মরিশাসের ঐতিহাসিক সম্পর্কের পাশাপাশি আধুনিক ডিজিটাল যোগসূত্র গড়ে ওঠায় আজকের এই অনুষ্ঠান এক উল্লেখযোগ্য দিন হিসেবে সূচিত হবে। তিনি বলেন, মানুষের উন্নয়নে সরকারি দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে এটি এক সাক্ষ্য হিসেবে এটি পরিগণিত হবে। প্রধানমন্ত্রী ফিনটেক যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে আন্তঃসীমান্ত বিনিময় এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে গতি সঞ্চারিত হবে। তিনি বলেন, ভারতের ইউপিআই অর্থাৎ ইউনাইটেড পেমেন্ট ইন্টারফেস আজ এক নতুন ভূমিকায় উত্তীর্ণ হল ভারতের সঙ্গে সহযোগী দেশগুলিকে যুক্ত করার মধ্যে দিয়ে। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল জনপরিকাঠামো ভারতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। এতে দেখা যাচ্ছে একেবারে প্রান্তবর্তী গ্রামে এক ক্ষুদ্র বিক্রেতাও ইউপিআই-এর মাধ্যমে বিনিময় করছেন এবং ডিজিটাল মাধ্যমে পেমেন্ট দিচ্ছেন। ইউপিআই-এর সুবিধা ও গতির কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর ইউপিআই-এর মাধ্যমে দশ হাজার কোটি বিনিময় ঘটেছে, যার অর্থ মূল্য ২ লক্ষ কোটি টাকা। শ্রীলঙ্কার মুদ্রায় যা ৮ ট্রিলিয়ন এবং মরিশাসের মুদ্রায় এক ট্রিলিয়নের সমান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেম ট্রিনিটি অর্থাৎ ব্যাঙ্ক আমানত, আধার এবং মোবাইল ফোনের মধ্যে সংযুক্তির ফলে একেবারে প্রান্তবর্তী এলাকার শেষ মানুষটির কাছেও সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক আমানতে ৩৪ লক্ষ কোটি বা ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সরাসরি পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী জানান কো-উইন মঞ্চের মাধ্যমে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম টিকাকরণ কর্মসূচি রূপায়িত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার স্বচ্ছতা নিয়ে আসে, দুর্নীতি দূর করে এবং সমাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রসার ঘটায়। 
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারতের নীতি হল প্রতিবেশীর প্রতি অগ্রাধিকার। আমাদের সামুদ্রিক দিশা হল সাগর অর্থাৎ সুরক্ষা এবং   প্রতিবেশী এলাকার সমৃদ্ধি সাধন। ভারত উন্নয়নকে তার প্রতিবেশীদের থেকে কোনো আলাদা চোখে দেখে না।   
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির শেষ সফরে গৃহীত ভিশন ডকুমেন্টের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থিক যোগাযোগকে শক্তিশালী করাই ছিল এর মূল উপাদান। জি-২০ শিখর সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগন্নাথ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকায় তাঁর সঙ্গেও এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করে বলেন, ইউপিআই যোগসূত্রের ফলে শ্রীলঙ্কা এবং মরিশাস উভয়ই উপকৃত হবে, কারণ এই ডিজিটাল বিনিময় গতি পাবে, স্থানীয় অর্থনীতির ওপর তার এক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং পর্যটন বিশেষভাবে প্রসার লাভ করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি ইউপিআই লেনদেন হতে পারে এমন জায়গাকে ভারতীয় পর্যটকরা ভ্রমণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেবেন। শ্রীলঙ্কায় বসবাসকারী অনাবাসী ভারতীয়রা এবং মরিশাসে পাঠরত ছাত্রছাত্রীরা এর থেকে বিশেষ সুবিধা পাবেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি রীতিমত আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, নেপাল, ভুটান, সিঙ্গাপুর এবং এশিয়ার উপসাগরীয় এলাকায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর পর মরিশাস থেকে এই রুপে কার্ড আফ্রিকাতেও চালু হচ্ছে। এর ফলে মরিশাস থেকে ভারতে আশা মানুষদের সুবিধা হবে। টাকা পয়সা সঙ্গে নিয়ে ঘোরার ঝক্কি কমবে। ইউপিআই এবং রুপে কার্ড সময় সাশ্রয়ী, অর্থসাশ্রয়ী এবং নিজের টাকায় পেমেন্ট মেটানোর সুযোগ করে দেবে। আগামী দিনে আমরা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি (পিটুপি) পেমেন্ট পরিষেবার ক্ষেত্রে আন্তসীমান্ত ছাড়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যাব। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই শুভারম্ভ গ্লোবাল সাউথ সমন্বয়ের এক সাফল্য স্বরূপ। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সম্পর্ক কেবলমাত্র বিনিময় সম্পর্ক নয়, এ এক ঐতিহাসিক সম্পর্ক। তিন দেশের মধ্যে মানুষে মানুষে সম্পর্ক নিবিড় হয়ে ওঠার ওপরও জোর দেন তিনি। গত ১০ বছরে ভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতি যে সমর্থনের হাত প্রসারিত করেছে তা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের যেকোনো সংকটে ভারত পাশে দাঁড়িয়েছে। তা সে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়, আর্থিক বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমর্থনের প্রশ্ন যাই হোক না কেন ভারত সবসময়ই প্রথম সমর্থক হিসেবে দেখা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এর কোনো অন্যথা হবে না। জি-২০-র সভাপতিত্বকালেও অসচ্ছল দেশগুলির উদ্বেগের প্রতিও ভারত বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। সামাজিক প্রভাব তহবিল গড়ে তোলা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসচ্ছল দেশগুলির কাছে ভারত তার ডিজিটাল জনপরিকাঠামো পরিষেবাকে পৌঁছে দিতে চায়। 
আজকের এই সূচনা পর্বে তাদের বিশেষ ভূমিকার জন্য ভাষণ শেষে রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংঘে এবং প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগন্নাথের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। আজকের এই পরিষেবা পর্বের উদ্বোধনকে সফল রূপ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং তিন দেশের সংস্থাগুলিকেও সবিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন।  

PG/AB /SG