প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো, ভারত সরকার: নয়াদিল্লি, ১২ মার্চ, ২০১৫ মরিশাসের উপকূলে বারাকুদা জাহাজ ভাসানোর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্যর অনিরুদ্ধ জগন্নাথ এবং সম্মানিত অতিথিবৃন্দ, আমাদের সমুদ্র উপকূলের রক্ষী ভারতীয় নৌ-সেনাকর্মী যাঁরা এখানে উপস্থিত আছেন, তাঁদের সকলকেই জানাই আমার বিশেষ অভিনন্দন। মরিশাসের জাতীয় উপকূল রক্ষীবাহিনীর সেবায় বারাকুদা আনুষ্ঠানিকভাবে জলে ভাসানো আমার কাছে এক বিশেষ সম্মানের বিষয়। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। ভারতকে একজন অংশীদার হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্যও আপনাদের ধন্যবাদ। জাহাজটি সুদূর কলকাতা থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে এই সুন্দর উপকূলে এসে পৌঁছেছে। বহু প্রজন্ম আগে ভারতের কিছু মানুষ এই নতুন দেশে এসে নতুনভাবে জীবন শুরু করেছে। আজ বারাকুদা জাহাজটি সঙ্গে নিয়ে এসেছে ভারতীয় জনগণের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জাহাজটি আমাদের সবিশেষ আস্থা ও আত্মবিশ্বাসেরই প্রতীক। এর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বের বিষয়টি যা আজ কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। আমাদের দু’দেশের মধ্যেই ভারত মহাসাগর পারস্পরিক অঙ্গীকার, শান্তি ও নিরাপত্তার এক সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। বারাকুদা জাহাজটি সত্যিই খুব সুন্দর। এটি যেমন মজবুত, তেমনই মরিশাসের উপযোগী করে তৈরি। আজ এই জাহাজটি জলে ভাসল মরিশাসের পতাকাকে সঙ্গে নিয়ে। এই জাহাজ আপনাদের জলভূমি ও দ্বীপপুঞ্জকে রক্ষা করবে। দুর্যোগ ও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এই জাহাজ হয়ে উঠবে আপনাদের সুরক্ষার সহায়ক। কিন্তু এই জাহাজটির কাজ হবে তার থেকেও আরও অনেক বেশি। ভারত মহাসাগরকে আরও নিরাপদ ও সুরক্ষিত করতে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আর, এইভাবেই মরিশাস আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাবে। কারণ, সমগ্র বিশ্বের ভবিষ্যতের স্বার্থে ভারত মহাসাগরের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মহাসাগরের ওপর দিয়েই ভেসে চলে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ তৈলবাহী জাহাজ, এক-তৃতীয়াংশ পণ্যবাহী জাহাজ এবং প্রায় অর্ধেক বড় বড় কন্টেনার জাহাজ। এর ওপর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলির তিন-চতুর্থাংশই পৌঁছে যায় বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে। এই বিশাল ভারত মহাসাগরকে ঘিরে রয়েছে ৪০টিরও বেশি দেশ। বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষের বাস এই মহাসাগরের উপকূলেই। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকার পূর্ব সমুদ্র উপকূল জুড়ে এই মহাসাগরের প্রসার ও বিস্তৃতি। আর, একইসঙ্গে বিভিন্ন দ্বীপ রাষ্ট্রেরও অবস্থান এই ভারত মহাসাগর অঞ্চলেই। সভ্যতার এই যোগাযোগের কথা আপনারা একবার চিন্তা করুন তো ! ভেবে দেখুন তো এই বিশাল অঞ্চলে জুড়ে তার বৈচিত্র্যের সমারোহের কথা ! চিন্তা করতে পারেন, কি বিশাল সুযোগ এই মহাসাগরটিকে ঘিরে ! এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির কর্মশক্তি ও গতিশীলতা আজ একবিংশ শতাব্দীকে উজ্জ্বল করে তুলেছে – একথা আজ বিশ্বের সর্বত্র স্বীকৃতি লাভ করেছে। কিন্তু ভারত মহাসাগরের ঢেউ তার মধ্যে নিয়ে এসেছে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য। আর, এই কারণেই সর্বকালের তুলনায় ভারত মহাসাগর আজ বিশ্ববাসীর ভাবনাচিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভারত মহাসাগরে সমগ্র বিশ্বই আজ তাদের উপস্থিতির জানান দিতে চায়। আজকের এই পরিবর্তনশীল বিশ্বে মহাসাগরগুলি হবে অদৃষ্টের সূচক। তাই, আমাদের সমুদ্র উপকূলকে সকলের জন্যই নিরাপদ, সুরক্ষিত ও অবাধ করে তুলতে পারলেই আসবে সকলের বিকাশ ও সমৃদ্ধি। এই বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করে তোলাই হবে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। কিন্তু একই সঙ্গে এই অঞ্চলে আরও কিছু বিশেষ বিশেষ চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলিও আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। সুনামি ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিপর্যয়ের মোকাবিলা আমরা করেছি। সমুদ্র উপকূল বরাবর হামলার মোকাবিলাও আমাদের করতে হয়েছে। এই সমুদ্র উপকূল দিয়েই সন্ত্রাস তার থাবা বাড়িয়েছে। জলদস্যুদের আক্রমণে ব্যাপক প্রাণহানি যেমন ঘটেছে, তেমনই হয়েছে বাণিজ্যিক ক্ষতি ও লোকসান যা আজকের এই আধুনিক যুগে এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার। অবৈধভাবে মাছ ধরা এবং তেল চুরি করার মতো ঘটনা আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি করেছে। আমাদের বিভিন্ন দ্বীপ ও উপকূলে ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাও কম নয়। উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং দ্বীপ রাষ্ট্রগুলিতে স্থিতিশীলতার অভাব ও উত্তেজনা আমাদের সমুদ্র বরাবর নিরাপত্তার ব্যবস্থাতেও কম চাপ সৃষ্টি করেনি। ভারত মহাসাগরের সন্ধিস্থলে অবস্থিত আমাদের এই দেশ। বিশ্বের প্রাচীনতম সমুদ্র বন্দরের একটি হল গুজরাটের লোথাল। তাই, আমাদের রয়েছে দীর্ঘদিনের এক নৌ-ঐতিহ্য। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রসারিত এশিয়া ও আফ্রিকায়। ভারত মহাসাগর বরাবর আমাদের এই মহাদেশে রয়েছে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। বাণিজ্য, সংস্কৃতি এবং ধর্মের মেলবন্ধন ঘটেছে আমাদের এই সমুদ্র উপকূলেই, যা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে প্রসার লাভ করেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে। এই মহাদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে যে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের বাতাবরণ গড়ে উঠেছে তার সমর্থন মেলে আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসেই। আমাদের দেশ জুড়ে যে সমুদ্র এলাকা রয়েছে তা ভারতকে আরও নানাভাবে বিকশিত হতে সাহায্য করেছে। বর্তমানে আমাদের মোট বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ এবং তেল আমদানির ৯০ শতাংশই হয় জলপথে। ৭৫০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে আমাদের উপকূল রেখা। এর মধ্যে অবস্থিত ১২০০টি দ্বীপ এবং ২০ লক্ষ ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত দিন দিন আরও সংহত হয়ে উঠছে। যত দিন যাচ্ছে ততই আমরা ভারত মহাসাগর এবং সন্নিহিত এলাকার ওপর আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। তাই, এর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্বও আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। আর, এই কারণেই ভারত মহাসাগর অঞ্চল রয়েছে আমাদের নীতি সংক্রান্ত অগ্রাধিকারের শীর্ষে। ভারত মহাসাগর অঞ্চল সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সমগ্র অঞ্চলে সহযোগিতার বাতাবরণ গড়ে তোলার বিষয়টি। একইসঙ্গে, এই সমুদ্র এলাকায় সকলের কল্যাণেই আমাদের কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। এর অর্থ কিন্তু একটি নয়। দেশের মূল ভূখণ্ড ও দ্বীপগুলিকে রক্ষা করতে এবং আমাদের স্বার্থ রক্ষায় যা কিছু করা প্রয়োজন তা আমাদের করতে হবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চল যাতে আমাদের সকলকে সমৃদ্ধির উপকূলে নিয়ে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে এই অঞ্চলের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও সুস্থিতির জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে মহাসাগরের রোষ থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য। যারা সমুদ্র উপকূলে বিপদে পড়বেন, তাদের বাঁচাতে হবে আমাদেরই। দ্বিতীয়ত, এই অঞ্চলের বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতাকে আরও গভীর করে তুলতে হবে। বিশেষত, বিভিন্ন দ্বীপ রাষ্ট্র এবং উপকূল রেখা বরাবর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধনকে করে তুলতে হবে আরও নিবিড়। ঐ দেশগুলির সমুদ্র উপকূলে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির জন্যও আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তৃতীয়ত, সমবেত সহযোগিতা ও কর্মপ্রচেষ্টা আমাদের এই নৌ-উপকূলে শান্তি ও নিরাপত্তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আপৎকালীন পরিস্থিতির আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে তা আমাদের বিশেষভাবে সাহায্য করবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২০০৮ সালে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নৌ-সংক্রান্ত এক আলোচনা আহ্বান করা হয়েছিল। বর্তমানে এই মহাসাগর জুড়ে রয়েছে ৩৫টি নৌ-বাহিনীর সম্মিলিত শক্তি। আমাদের লক্ষ্য হল, নৌ-সংক্রান্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় পারস্পরিক সমঝোতাকে আরও বাড়িয়ে তোলা। একইসঙ্গে এই লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত কর্মক্ষমতাকেও আরও জোরদার করে তুলতে হবে। নৌ-সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কাজকর্মকে আরও শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সমর্থন যুগিয়ে যেতে হবে। একদিকে জলদস্যুর হামলা এবং অন্যান্য নৌ-অপরাধ যেমন আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে, অন্যদিকে তেমনই সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলাও আমাদেরই করে যেতে হবে। ভারত ইতিমধ্যেই মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে নৌ-নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা প্রসারের কাজ শুরু করেছে। আমরা আশা করব মরিশাস ও সেশল্স সহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলিও আমাদের এই উদ্যোগে সামিল হবে। চতুর্থত, সকলের জন্য নিরন্তর বিকাশের সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত করে তোলার লক্ষ্যে সকলের সহযোগিতার ভিত্তিতে আমাদের গ্রহণ করতে হবে এক সুসংহত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার অঙ্গীকার। বাণিজ্য, পর্যটন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করতে হবে। পরিকাঠামো উন্নয়ন, নৌ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মৎস্যচাষ, নৌ-পরিবেশের সুরক্ষা এবং মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামগ্রিক বিকাশের লক্ষ্যে প্রয়োজন আমাদের এই পারস্পরিক সহযোগিতা। আমাদের জাতীয় পতাকায় যে নীল রঙের চক্র আমরা দেখতে পাই আমার মতে তা হল নীল বিপ্লবের, অর্থাৎ মহাসাগরীয় অর্থনীতির সম্ভাবনার প্রতীক। আর, এই কারণেই মহাসাগরীয় অর্থনীতি রয়েছে আমাদের চিন্তাভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সমুদ্র উপকূল বরাবর বসবাসকারী মানুষের কাছে জলবায়ু পরিবর্তন হয়তো সেভাবে আলোচনার বিষয় নয়। কিন্তু তা মানুষের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তোলে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় এই অঞ্চলের মানুষের হয়ে বিশ্বে আমাদের নেতৃত্ব দিতে হবে। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী আরও সংহত এক প্রচেষ্টার জন্য সকলকে আহ্বান জানাতে হবে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ভবিষ্যৎ যাতে নিরন্তর সমৃদ্ধির সূচক হয়ে উঠতে পারে সেজন্য এক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে ইন্ডিয়ান ওশ্যন রিম অ্যাসোসিয়েশনের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমুদ্রবেষ্টিত ভূখণ্ডে আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা আমরা বলে থাকি। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এক সহযোগিতা গোষ্ঠী গড়ে তোলার সময় এখন উপস্থিত। আগামী বছরগুলিতে আরও নতুন উদ্যম নিয়ে এই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। পঞ্চমত, এই অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের প্রাথমিক দায়িত্ব হল ভারত মহাসাগর অঞ্চলে শান্তি, সুস্থিতি ও সমৃদ্ধির এক বাতাবরণ গড়ে তোলা। একথা আমাদের অজানা নয় যে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা এই অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষভাবে আগ্রহী। ভারত নিবিড়ভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। পারস্পরিক আলোচনা, সফর বিনিময় কর্মসূচি, কর্মদক্ষতার উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং কর্মপ্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে এই যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আস্থা ও স্বচ্ছতার এক পরিবেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। একইসঙ্গে আমরা আগ্রহী আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সকল দেশেরই সমুদ্র আইন মেনে চলার বিষয়টিতে। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে। নৌ-সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের গ্রহণ করতে হবে এক শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব। গড়ে তুলতে হবে নৌ-সহযোগিতার ক্ষেত্রও। ভারত মহাসাগরের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে আমরা আগ্রহী যা ‘সাগর’ নামেই পরিচিত। এর অর্থ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সকলের জন্য বিকাশ ও নিরাপত্তা। বর্ষা সহ নানা ঋতু আমাদের নানাভাবে উৎসাহ যোগায়। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সকলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ঘটায়। ভৌগোলিক দিক থেকে আমরা যেমন একে অপরের সঙ্গে যুক্ত, ঠিক একইভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও আমরা একে অপরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে চাই। যে মহাসাগর সমগ্র বিশ্বকে এক করে তুলেছে তাকে সকলের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য উন্নত করে তুলতে হবে। মরিশাসে ভারত মহাসাগরের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা যে আজ আমি তুলে ধরতে পারছি তা কিন্তু নেহাত সমাপতন নয়। বিশ্বের যে সমস্ত দেশের সঙ্গে আমাদের নৌ-সম্পর্ক রয়েছে, মরিশাস শুধুমাত্র তাদের অন্যতমই নয়, এই দেশের সঙ্গে আমাদের গড়ে উঠেছে এক ঘনিষ্ঠ ও নিবিড় সম্পর্ক। আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। একসঙ্গেই আমরা বাড়িয়ে তুলব আমাদের কর্মদক্ষতা। সমুদ্র উপকূল বরাবর প্রশিক্ষণ ও প্রহরার কাজও আমরা করে যাব যুক্তভাবে। এই অংশীদারিত্বের ভিত কিন্তু বিশাল ও প্রসারিত। এক সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি ও সাধারণ মূল্যবোধের অংশীদার আমরা। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের স্বার্থে নিজেদের গণ্ডিতে আবদ্ধ না থেকে আমাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এক নিরন্তর, সুরক্ষিত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কাজে মরিশাসের নেতৃত্বও অনস্বীকার্য। তাই, ভারত মরিশাসের সহযোগী দেশ হয়ে ওঠার জন্য গর্বিত। আপনাদের সকলকে জানাই ধন্যবাদ। সকলের জন্য রইল আমার শুভেচ্ছা।