মনিপুরের মাননীয় রাজ্যপাল ডঃ নাজমা হেপতুল্লা
মনিপুরের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী এন বীরেন সিং, আমারমন্ত্রিসভার সহকর্মী ডঃ হর্ষবর্ধন
মঞ্চে উপবিষ্ট অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ
প্রতিনিধিবৃন্দ,
মাননীয় ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ
আমি আমার বক্তব্য শুরু করতে চাই তিনজন ভারতীয় বিজ্ঞানীর প্রতি,যাঁদের আমরা সম্প্রতি হারিয়েছি, শ্রদ্ধা নিবেদন করে । এঁরা হলেন, পদ্মবিভূষণ অধ্যাপক যশপাল, পদ্মবিভূষণ অধ্যাপক ইউ.আর.রাও এবংপদ্মশ্রী ডঃ বলদেব রাজ । এঁরা প্রত্যেকেই ভারতীয় বিজ্ঞান এবং শিক্ষারক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন ।
আসুন, আমরা সম্প্রতি প্রয়াত বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠপদার্থবিজ্ঞানী এবং আধুনিক জ্যোর্তিবিজ্ঞানের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র স্টিফেনহকিং-এর প্রতি বিশ্বের সবার সঙ্গে একযোগে শোক ব্যক্ত করি । তিনি ছিলেন ভারতের এক বিশিষ্ট বন্ধু এবং দু ’ বার আমাদের দেশে সফরকরে গেছেন । সাধারন মানুষ হকিং-এর নাম যে কেবলমাত্র কৃষ্ণগহ্বরনিয়ে তাঁর কাজের জন্যই জানেন তাই নয়, বরং সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তাঁর অদম্যমনোবলের জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন । তাঁকে বিশ্বেরঅন্যতম শ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণাদাতা হিসেবে মানুষ মনে রাখবে ।
বন্ধুগণ,
আমি আজ ইম্ফলে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের একশো পাঁচতম অধিবেশনেউপস্হিত থাকতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত । যাঁদের কাজভবিষ্যতের পথকে সুগম করে সেইসব বিজ্ঞানীদের পাশে থাকতে পেরে আমি খুব আনন্দিত বোধকরছি । মনিপুর বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে এই গুরুত্বপূর্ণকর্মকান্ডের আয়োজন করেছে, তা দেখে আমি খুব খুশি । এই বিশ্ববিদ্যালয় উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে উচ্চশিক্ষার একগুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে উঠে এসেছে । আমি শুনলাম বিগত১০০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার উঃ পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বিজ্ঞানকংগ্রেসের আয়োজন করা হয়েছে । উঃ পূর্বাঞ্চলেরক্রমবর্ধমান ইচ্ছাশক্তির প্রমান এই অনুষ্ঠান ।
এতে ভবিষ্যতের পক্ষে খুব ভালো হবে । আবহমানকাল ধরেই বিজ্ঞান প্রগতি এবং সমৃদ্ধির সঙ্গে জুড়ে আছে । আপনারা, আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠতম বিজ্ঞান মনীষা, আজ এখানে সমবেত হয়েছে । আপনারাই হলেন জ্ঞান, উদ্ভাবন এবং শিল্পোদ্যোগের শক্তিকেন্দ্র এবং দেশেরপরিবর্তনকে আপনারাই এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম ।
গবেষনা ও উন্নয়নের মতো দুটি শব্দকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাখ্যাকরার সময় এসেছে । এই দুটি শব্দের নতুন ব্যাখ্যা হওয়া উচিত ‘ দেশের উন্নয়নের জন্যগবেষনা ’ । বিজ্ঞান হচ্ছে মানবকল্যাণের এক উপায়- মানুষেরজীবনের রূপান্তরের এবং মানবকল্যাণ ও বিকাশকে এগিয়ে নিয়ে চলার এক পদ্ধতি । সময় এসেছে আমাদের ‘ ইজ অফ্ লিভি ’ বা জীবনযাপনের সুবিধাগুলিবিশেষ করে ভারতের ১২৫ কোটি মানুষের জীবনকে সহজতর করে তোলার প্রতি নিজেদের দায়বদ্ধকরে তোলা । দেশের নিজস্ব শক্তি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অপারসম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জীবনকে সহজতর করে তুলতে হবে ।
আমি আজ দাঁড়িয়ে আছি মনিপুরের সেই দুর্জয় সাহসের ভূমিতে, যেখানে১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাসে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস – এর আজাদ হিন্দবাহিনী স্বাধীনতার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিল । আমি নিশ্চিত যেআপনারা যখন মনিপুর ছেড়ে যাবেন, তখন আমাদের জাতির জন্য দীর্ঘস্হায়ী কোনো কাজ করারঅনুরূপ ইচ্ছাশক্তি নিয়ে যাবেন । আমি এটাওনিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে আপনারা আজ এখানে মিলিত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবেযোগাযোগ রেখে নিজেদের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন ।
সত্তি কথা বলতে কি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বৃহত সমস্যাসমাধানের জন্যও বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্ত বিজ্ঞানীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগীতা ওসমন্বয়ের প্রয়োজন । কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে উঃপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য বেশ কয়েকটি নতুন কর্মসূচী শুর করেছেন । ‘ গ্রামীণ কৃষি মৌসম সেবা ’ -র আওতায় কৃষি সংক্রান্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ারব্যবস্হা হয়েছে । এর ফলে ৫ লক্ষেরও বেশি কৃষক উপকৃত হয়েছেন । আমরা বর্তমানে এই পরিষেবাকে উঃ পূর্বাঞ্চলের সবকটি জেলাতে ছড়িয়ে দেওয়ারলক্ষ্যে কাজ করছি । উঃ পূর্বাঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিকবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তা দিতে বেশ কয়েকটি নতুন কেন্দ্র এখানে গড়ে তোলা হয়েছে । মনিপুরে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী কর্তৃক ব্যবহৃত প্রাচীন ও চিরাচরিত ওষুধপত্র বিষয়েগবেষনাকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে । এই গবেষনাকেন্দ্রটিতে উঃ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্নরাজ্যে প্রাপ্ত সুগন্ধী এবং ঔষধি গাছগাছড়া নিয়ে গবেষনা চালানো হবে ।
সাতটি উঃ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের প্রত্যেকটিতেই একটি করে রাজ্যজলবায়ু পরিবর্তন কেন্দ্র স্হাপন করা হয়েছে । এইসব কেন্দ্রগুলিথেকে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা এবং এ বিষয়ে ঝুঁকিরবিশ্লেষন ও গবেষনা চালানো হবে । আমরা ‘ বাঁশ ’ -কে গাছের প্রজাতিহিসাবে পরিচিতি থেকে মুক্তি দিয়েছি এবং বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে বাঁশকে ‘ ঘাস ’ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধকরা হয়েছে । এর জন্য আমাদের একটি পুরোনো আইন পরিবর্তন করতেহয়েছে । আইনের এই সংশোধনের ফলে বাঁশ কাটা ও তার অবাধ চলাচলসম্ভব হবে । এছাড়া উৎপাদন এবং এই বস্তুটির গ্রাহককেন্দ্রগুলির মধ্যেও সমন্বয়সাধন সম্ভব হবে । কৃষকরা বাঁশেরসরবরাহ শৃঙ্খলে সম্ভাবনা বুঝে কাজ করতে পারবেন । সরকার ‘ জাতীয় বাঁশ অভিযান ’ -কে ১২০০ কোটি টাকার বরাদ্দে পুনরুজ্জীবিত করেতোলার উদ্যোগ নিয়েছেন । মনিপুরের মতো রাজ্যগুলি এই সিদ্ধান্তের ফলে উপকৃতহবে ।
বন্ধুগণ,
ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে । আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস, সি.ভি.রমন, মেঘনাদ সাহা এবং সত্যেন্দ্রনাথ বোসের মতোভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন । এইসব মহান বিজ্ঞানীদের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান গবেষনার ধারার উচ্চমান থেকে নতুনভারতকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে হবে । বিজ্ঞানীদের সঙ্গেবিভিন্ন অনুষ্ঠানে মত বিনিময়ের সময় আমি আমাদের দেশের বিজ্ঞানীদের দেশেরআর্থসামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছি । সমাজের দরিদ্র এবং বঞ্চিত শ্রেণির মানুষের সুবিধার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহনকরে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি । এই প্রসঙ্গে আমিবলতে চাই যে এ বছরের ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের মূল সুর হিসাবে ‘ বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তির মাধ্যমে দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া ’ -এটি অত্যন্তপ্রাসঙ্গিক, বিজ্ঞান কংগ্রসের গৃহীত এই মূল সুরটি আমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি ।
২০১৮ সালে পদ্মশ্রী প্রাপক বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রাজাগোপালনবাসুদেবন-এর কথা এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে । মাদুরাই-এর এইঅধ্যাপক বিজ্ঞানী রাস্তা নির্মাণের জন্য প্লাস্টিক বর্জ্য পুর্নব্যবহারের একপদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন ও তার পেটেন্ট নিয়েছেন । তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে প্লাস্টিক বর্জ্য পুর্নব্যবহার করে নির্মত রাস্তাগুলিজলে নষ্ট হয় না, অনেক বেশি ভার বহন করতে পারে এবং দীর্ঘস্হায়ী হয় । একইসঙ্গে তিনি প্লাস্টিক বর্জ্যের পুর্নব্যবহারের অন্য গঠনমূলক পদ্ধতিওউদ্ভাবন করেছেন । অধ্যাপক বাসুদেবন তাঁর নিজের উদ্ভাবিত এইপ্রযুক্তি ভারত সরকারকে বিনামূল্যে দিয়েছেন । এই প্রযুক্তিব্যবহার করে ইতিমধ্যেই ১১টি রাজ্যে ৫ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি স্হায়ী সড়ক নির্মাণকরা হয়েছে ।
অনুরূপভাবে ২০১৮ সালে পদ্মশ্রীপ্রাপক আরেক বিজ্ঞানী অরবিন্দগুপ্তা-র কথা আমি বলতে চাই । তিনি গৃহস্হের ফেলেদেওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং বর্জ্য থেকে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনেরখেলনা তৈরি করে ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করেছেন । চিন্তাকিন্ডি মাল্লেশম নামে ২০১৭-র আরেক পদ্মশ্রীপ্রাপক বিজ্ঞানী এমন এক বুননযন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন যা ব্যবহার করে তাঁতিদের শাড়ি বোনার জন্য সময় এবং শ্রমবহুলাংশে লাঘব হয়েছে । আমি তাই আপনাদের কাছে আমাদের সময়ের সমস্যাগুলিরনিরসনের লক্ষ্যে আপনাদের উদ্ভাবনী গবেষনা চালানোর জন্য আহ্বান জানাই । কারণ, এর মাধ্যমেই মানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করা সম্ভব হবে । বিজ্ঞানীদের সামাজিক দায়বদ্ধতা এই সময় সবচেয়ে বেশি করে প্রয়োজন ।
বন্ধুগণ,
বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশনের মূল সুরটিও বেশ কিছু প্রশ্নের জন্মদেয় । আমরা কি ভারতের ছেলেমেয়েদের যথাযথভাবে বিজ্ঞানেরসঙ্গে পরিচয় করানোর জন্য পর্যাপ্ত কাজ করেছি ? আমরা কিতাদের মধ্য সুপ্ত প্রতিভার জাগরন ঘটাতে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে পেরেছি ? বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেআমাদের অগ্রগতিকে সমাজের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে । এর মধ্যে দিয়েই আমাদেরযুব সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতা গড়ে উঠবে, এ থেকেই আমাদের যুব সম্প্রদায়বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যত জীবন গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়ে উঠবে । আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানএবং গবেষনাগারগুলিকে আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য খুলে দিতে হবে । আমি, স্কুলেরছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিজ্ঞানীদের পারস্পরিক মতবিনিময়ের একটি উপযুক্তপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্হা গড়ে তোলার জন্য বিজ্ঞানীদের কাছে আবেদন জানাই । আমি তাঁদের প্রত্যেককেপ্রতি বছর ১০০ ঘন্টা সময় দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ১০০ জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গেবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানাই । ১০০ ছাত্রছাত্রীর জন্যযদি ১০০ ঘন্টা সময় ব্যয় করা হয় তাহলে কল্পনা করুন আমরা এইভাবে কতজন ভাবীবিজ্ঞানীকে লালন-পালন করতে পারব ।
বন্ধুগণ, আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদেরদেশের মোট বিদ্যু ৎ উ ৎ পাদনের ৪০ শতাংশ জীবাশ্ম জ্বালানী নয়, এই ধরনের কোনো জ্বালানী থেকে উ ৎ পাদন করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহন করেছি । ভারত বহুরাষ্ট্রিক আন্তর্জাতিক সৌরজোটের এবং উদ্ভাবনঅভিযানের নেতৃস্হানীয় দেশ । এই জোটগুলি পরিচ্ছন্ন শক্তির জন্য গবেষনা ও উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে থাকে । আমাদের পরমানুশক্তি দপ্তরদেশে দশটি নতুন ৭০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন চাপযুক্ত ভারী জল চালিত বিদ্যুতচুল্লিস্হাপনের উদ্যোগ নিয়েছে । অভ্যন্তরীন পারমানবিক শিল্পে এই সিদ্ধান্ত গতি আনবে । এছাড়া পারমানবিক সরঞ্জাম নির্মানেরক্ষেত্রে এই ধরনের সিদ্ধান্ত ভারতের পরিচিতিকে আরও জোরালো করবে । সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের শিল্প গবেষনা পর্ষদ হাতে বহনযোগ্য দুগ্ধ পরীক্ষারসরঞ্জাম উদ্ভাবন করেছে । এই সরঞ্জাম ব্যবহার করে প্রত্যেক পরিবার কয়েকসেকেন্ডের মধ্যে দুধের গুনমান যাচাই করতে পারবে । এছাড়াও শিল্প গবেষনা পর্ষদ বিরল জিনঘটিত রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষারযন্ত্রপাতি নির্মাণ করছে । কৃষকদের আয় বাড়াতে সুগন্ধি ও ঔষধি গাছগাছড়ারক্ষেত্রেও তার উদ্ভাবনের কাজ করেছে ।
আমরা, ভারত থেকে যক্ষ্মারোগ নির্মূল করার লক্ষ্যে সমন্বিত প্রয়াসগ্রহন করেছি । কয়েকদিন আগেই নতুন দিল্লিতে যক্ষ্মারোগ নির্মূলকরণসংক্রান্ত্র শিখর বৈঠকে আমরা ২০২৫ সালের মধ্যেই ভারত থেকে এই রোগ সম্পূর্ণভাবেনির্মূল করার প্রত্যয় দেখিয়েছি । বিশ্ব স্বাস্হ্যসংগঠন এই রোগ নির্মূলের জন্য ২০৩০ সালের যে সময়সীমা ঘোষনা করেছে আমরা তার ৫ বছরআগেই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চাই । আমাদের মহাকাশগবেষনা কর্মসূচী একবারে ১০০ টিরও বেশি উপগ্রহ মহাকাশে প্রেরণের ক্ষমতা অর্জন করেছে । ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের কঠোর শ্রম ও নিষ্ঠার ফলেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে ।
চন্দ্রযান-১ কর্মসূচীর সাফল্যের পর আমরা আগামী কয়েকমাসের মধ্যেইদ্বিতীয় চন্দ্রযান কর্মসূচীর সূচনা করতে চলেছি । সম্পূর্ণ দেশজ উদ্যোগে নির্মিত এই কর্মসূচীর মধ্যে চাঁদের মাটিতে একটিরোভারের অবতরণ এবং চলাচল করার কথা রয়েছে । গত শতাব্দীর মহানবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন ‘ গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস্ ’ বা মহাকর্ষ তরঙ্গের যে তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিলেন তা প্রমাণ করার আন্তর্জাতিকউদ্যোগে ৯টি ভারতীয় সংস্হার ৩৭ জন বিজ্ঞানী যেভাবে অংশ নিয়েছেন তা অত্যন্ত গর্বেরবিষয় । ইন্টারন্যাশনাল লেসার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি(লিগো)-তে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত উদ্যোগে ৩ বছর আগে এই তত্ত্ব সত্যপ্রমানিত হয়েছে । আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই দেশে তৃতীয় লিগো ডিটেক্টর স্হাপনের প্রস্তাব অনুমোদনকরেছে । এর ফলে লেসার, আলোকতরঙ্গ এবং কম্পিউটিং-এর মতো মৌল বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদেরজ্ঞানের পরিধি প্রসারিত হবে । আমাকে জানানো হয়েছে যে আমাদের বিজ্ঞানীরা এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যেঅক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন । আমি গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক সংস্হার কাছাকাছি শহরগুলিতে বিজ্ঞীন গবেষনারএকগুচ্ছ কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব করেছি । এর লক্ষ্য হচ্ছে শহরভিত্তিক গবেষনা ও উন্নয়নেরক্লাস্টার তৈরি করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকর সমস্ত অংশীদার যেমন শিক্ষা ও গবেষনাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিল্প ও স্টার্ট আপ সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এক জায়গায় নিয়ে আসা । এর ফলে নতুন আবিষ্কারযেমন উ ৎ সাহিত হবে, একইসঙ্গে বিশ্বমানের সমতুল গবেষনা হাবওগড়ে উঠবে ।
আমরা সম্প্রতি ‘ প্রধানমন্ত্রী গবেষনা ফেলো ’ নামে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন করেছি । এই কর্মসূচির আওতায় দেশেরশ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলি যেমন- আই.আই.এস.সি., আই.আই.টি, এন.আই.টি, আই.আই.এস.ই.আরএবং আই.আই.আই.টি-র মতো প্রতিষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ ছাত্রছাত্রীরা আই.আই.টি এবংআই.আই.এস.সি-তে পিএইচডি কর্মসূচীতে সরাসরি ভর্তি হতে পারবেন । এই কর্মসূচী আমাদের দেশথেকে মগজচালান বন্ধে সহায়ক হবে । এছাড়া অত্যাধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশজ গবেষনা উ ৎ সাহিত হবে ।
বন্ধুগণ, ভারতে বহু আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জরয়েছে যার সঙ্গে আমাদের জনসংখ্যার এক বড়ো অংশের কল্যান জড়িয়ে আছে । আমরা ভারতকে পরিচ্ছন্ন,সবুজ এবং সমৃদ্ধ করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চাই । আমি বিজ্ঞানীদের কাছেথেকে আমার চাহিদা বিষয়ে আরও একবার জানাতে চাই । আমাদের উপজাতীয় জনসংখ্যারএক বড়ো অংশ সিকল সেল অ্যানিমিয়ার মতো রোগে ভোগেন । আমাদের বিজ্ঞানীরা কীঅদূর ভবিষ্যতে এই সমস্যার সহজ এবং সুলভ সমাধান বের করতে পারেন ? আমাদের শিশুদের এক বিরাটঅংশ অপুষ্টি জনিত সমস্যায় ভোগে । এই সমস্যা মোকাবিলায় জাতীয় পুষ্টি মিশন নামে এক কর্মসূচি রূপায়ণ শুরু করেছে । এই মিশনের লক্ষ্যপূরণেআপনারা বিজ্ঞানীরা কিছু প্রস্তাব এবং সমাধান দিতে পারেন ?
ভারতে কোটি কোটি নতুন বাড়ির প্রয়োজন । আমাদের বিজ্ঞানীরা কী এইচাহিদা মেটাতে ত্রৈমাত্রিক মুদ্রন প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারবেন ? আমাদের দেশের নদীগুলিদূষিত হয়ে পড়েছে, এই নদীগুলিকে পরিচ্ছন্ন করে তোলার জন্য আমাদের অভিনবধ্যান-ধারনা এবং নতুন প্রযুক্তি প্রয়োজন । আমাদের দেশের বহু সমস্যার সমাধানে আমাদের বহুমাত্রিরউদ্যোগের প্রয়োজন । যেমন সুলভ সৌর এবং বায়ুশক্তি । এই শক্তি সংরক্ষণের ব্যবস্হা, বৈদ্যুতিক পরিবহন ব্যবস্হা, পরিচ্ছন্ন রান্নারব্যবস্হা, কয়লা থেকে মিথানলের মতো পরিচ্ছন্ন জ্বালানীর ব্যবস্হা, কয়লা থেকেপরিচ্ছন্ন শক্তি সংগ্রহনের ব্যবস্হা, স্মার্ট গ্রিড এবং মাইক্রো গ্রিড গড়ে তোলা ওজৈব গ্যাস উ ৎ পাদন ।
আমরা ২০২২ সালের মধ্যে ১০০ গিগাওয়াটসৌরবিদ্যু ৎ উ ৎ পাদনের ব্যবস্হা গ্রহণ করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছি । বর্তমানে প্রচলিত এবংবাজার থেকে প্রাপ্ত সৌর মডিউলের কর্মদক্ষতা মাত্র ১৭ থেকে ১৮ % আমাদের বিজ্ঞানীরা কী আরওদক্ষতা সম্পন্ন সৌর মডিউল নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে পারেন যা ভারতে তৈরি হবেএকই খরচায় । এই কাজ করা সম্ভব হলে কি বিরাট পরিমান সম্পদ সাশ্রয় করা যাবে ভেবে দেখুন । ভারতীয় মহাকাশ গবেষনাসংস্হা মহাকাশে উপগ্রহ পরিচালনার জন্য অন্যতম সেরা ক্যাটারি সিস্টেম ব্যবহার করে । অন্যান্য সংস্হগুলি ইসরোরসঙ্গে জোট বেঁধে সুলভ এবং দক্ষ ব্যাটারি ব্যবস্হা নির্মাণ করতে পারে যা মোবাইল ফোনকিংবা বিদ্যু ৎ চালিত গাড়িতে ব্যবহার করাসম্ভব হবে ।
আমাদের ম্যালেরিয়া এবং জাপানি এনসেফ্যালাইটিসেরমতো নীরব ঘাতক রোগ থেকে মুক্তি পেতে নতুন চিকি ৎ সা পদ্ধতি, ওধুষপত্র এবং ভ্যাকসিন প্রয়োজন । যোগা, খেলাধুলা এবংচিরাচরিত জ্ঞান নিয়েও আমাদের গবেষনা চালানো দরকার । ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পইউনিটগুলি আমাদের দেশের কর্মসংস্হানের এক প্রধান উ ৎ স । বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার মুখে তাদের সহায়তা করতে আমাদের বিজ্ঞান এবংপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলি কী এগিয়ে আসতে পারে ? ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে কাজের পদ্ধতি এবংতাদের উ ৎ পাদিত পণ্যদ্রব্যেরউন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কী কাজে লাগানো সম্ভব ।
বন্ধুগণ, আমাদের জাতীয় উন্নতি এবং বৃদ্ধিরজন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিবিদ্যাকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি রাখতে হবে । প্রযুক্তি, শিক্ষা,স্বাস্হ্য পরিষেবা এবং ব্যাঙ্কি-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও বেশি করে মানুষেরকাছে নিয়ে আসতে পারে । ভারতকে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম উদ্ভাবন ও নির্মাণেরক্ষেত্রে প্রাধান্য অর্জন করতে হবে । ২০২০ সালের মধ্যে আমাদের দেশের পঞ্চম প্রজন্মের (৫-জি) ব্রডব্যান্ডটেলি-যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে । কৃত্রিম মেধা, বিগ ডেটা অ্যানালিটিকস্, মেশিনলার্নিং এবং সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেম সহ দক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্হা, অত্যাধুনিক উ ৎ পাদন ব্যবস্হা এবং স্মার্ট সিটি ও শিল্পের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণউপাদান হয়ে উঠতে চলেছে । আসুন আমরা ভারতকে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব উদ্ভাবন সূচকের তালিকায় প্রথম দশটিদেশের মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করি ।
বন্ধুগণ,
এখন থেকে চার বছর পর, আমরা আমাদেরস্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উদযাপন করবো । আমরা ২০২২ সালের মধ্যে এক নতুন ভারত গড়ে তোলার সংকল্প গ্রহণ করেছি । আমাদের ‘ সব কা সাথ, সব কা বিকাশ ’ -এর ধারনায় সবার জন্যসমৃদ্ধির লক্ষ্য কাজ করা যেতে হবে । এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে, আপনাদের সকলের আন্তরিক অবদান প্রয়োজন ।
ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমানে উচ্চ বৃদ্ধিররেখায় রয়েছেন । কিন্তু আমরা মানব উন্নয়নসূচক-এ পিছিয়ে আছি । এই বৈষম্যের অন্যতমগুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, বিভিন্ন রাজ্যের অভ্যন্তরে এবং রাজ্যগুলির মধ্যে বৈষম্য । এই বৈষম্য দূরীকরণেরলক্ষ্যে আমরা, ১০০টির বেশি উন্নয়নকামী জেলার কাজের অগ্রগতির জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহনকরেছি । আমরা স্বাস্হ্য ও পুষ্টি, শিক্ষা, কৃষি এবং জলসম্পদ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি,দক্ষতা বিকাশ ও বুনিয়াদি পরিকাঠামোর ওপর জোর দেব । এই সবকটি ক্ষেত্রেইআপনাদের উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োজন, যে সমাধানের মধ্যে স্হানীয় চ্যালেঞ্জ ওচাহাদিপূরণের বিষয়টি থাকবে । ‘ সবার জন্য এক সাইজ ’ -এর ধারনা এক্ষেত্রে কাজ করবে না । আমাদের বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলি কি এইসব উন্নয়নকামী জেলাগুলির জন্য কাজ করতেপারে ? তারা কি এমন কোনো উপযুক্ত প্রযুক্তিতৈরি করে দক্ষতা ও উদ্যোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে ?
এই কাজ হবে, ভারতমাতার জন্য এক মহান সেবা । ভারতের আবিষ্কার ওবিজ্ঞান প্রযুক্তি ব্যবহারের এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে । এই ক্ষেত্রে বিশ্বেরপ্রথম সারির দেশগুলির মধ্যে আমাদের নিজস্ব স্হান পুর্নদখল নেবার সময় এসেছে । আমি আমাদের বৈজ্ঞানিকগোষ্ঠীর কাছে, তাঁদের গবেষণাকে গবেষনাগার থেকে বাস্তবের ভূমিতে নিয়ে যাওয়ার আহ্বানজানাই । আমি নিশ্চিত যে, আমাদের বিজ্ঞানীদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগের মাধ্যমে, আমরা একসুন্দর ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে পারবো । এই ভবিষ্যত চাই আমাদের জন্য এবং আমাদের সন্তানদেরজন্য ।
ধন্যবাদ ।
PG /PB/NS/…
I am told that this is just the second time in over a century, that the Indian Science Congress is being held in the North-East. This is a testimony to the resurgent spirit of the North East. It bodes well for the future: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
The time is ripe to redefine ‘R&D’ as ‘Research’ for the ‘Development’ of the nation. Science is after all, but a means to a far greater end; of making a difference in the lives of others, of furthering human progress and welfare: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
An 'Ethno-Medicinal Research Centre' has been set up in Manipur to undertake research on the wild herbs available in the North-East region, which have unique medicinal and aromatic properties.
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
State Climate Change Centres have been set up in 7 North-Eastern States: PM
Our scientific achievements need to be communicated to society. This will help inculcate scientific temper among youth. We have to throw open our institutions & laboratories to our children. I call upon scientists to develop a mechanism for interaction with school-children: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
We are committed to increasing the share of non-fossil fuel based capacity in the electricity mix above 40% by 2030. India is a leader in the multi-country Solar Alliance and in Mission Innovation. These groupings are providing a thrust to R&D for clean energy: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
Our Government has already given the go-ahead to establish 3rd LIGO detector in the country. It will expand our knowledge in basic sciences in the areas of lasers, light waves & computing. I am told that our scientists are tirelessly working towards making this a reality: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
Our Government has already given the go-ahead to establish 3rd LIGO detector in the country. It will expand our knowledge in basic sciences in the areas of lasers, light waves & computing. I am told that our scientists are tirelessly working towards making this a reality: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
We have set a target of 100 GW of installed solar power by 2022. Efficiency of solar modules currently available in the market is around 17%-18%. Can our scientists take a challenge to come up with a more efficient solar module, which can be produced in India at the same cost: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
We have to be future ready in implementing technologies vital for the growth and prosperity of the nation. Technology will allow far greater penetration of services such as education, healthcare, and banking to our citizens: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
India has a rich tradition and a long history of both discovery and use of science and technology. It is time to reclaim our rightful place among the front-line nations in this field. I call upon the scientific community to extend its research from the labs to the land: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018
I am confident that through the dedicated efforts of our scientists, we are embarking on the road to a glorious future. The future we wish for ourselves and for our children: PM
— PMO India (@PMOIndia) March 16, 2018