Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভারত-মার্কিন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রেস বিবৃতির বঙ্গানুবাদ

ভারত-মার্কিন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রেস বিবৃতির বঙ্গানুবাদ


নতুন দিল্লি, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

মাননীয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প,
দুই দেশের প্রতিনিধিরা,
সংবাদমাধ্যমের বন্ধুরা,

নমস্কার!

আমাকে যে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও আতিথেয়তা দেওয়া হয়েছে, সেজন্য প্রথমেই আমি আমার প্রিয় বন্ধু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁর নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারত-মার্কিন সম্পর্কের লালন করেছেন, তাকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন। 

তাঁর প্রথম মেয়াদে যে উৎসাহের সঙ্গে আমরা হাতে হাতে মিলিয়ে কাজ করেছিলাম! আমি আজ সেই একই উৎসাহ, উদ্দীপনা এবং একই প্রতিশ্রুতি অনুভব করছি। 

তাঁর প্রথম মেয়াদে আমরা যেসব সাফল্য অর্জন করেছি এবং আমাদের মধ্যে যে গভীর পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আজকের আলোচনা ছিল তারই এক সেতুবন্ধন। একইসঙ্গে, আমরা নতুন লক্ষ্য অর্জনের সংকল্প নিয়েছি। আমরা মনে করি, ভারত ও আমেরিকার মধ্যেকার সহযোগিতা এক উন্নততর বিশ্ব গড়ে তুলতে পারে। 

বন্ধুগণ,

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মূল মন্ত্র ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন বা মাগা’-র সঙ্গে মার্কিন দেশের জনগণ পরিচিত। ভারতের মানুষজনও ঐতিহ্য ও উন্নয়নের পথ ধরে ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’-এর সংকল্প গ্রহণ করে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছেন।

আমেরিকার ভাষায় বলতে গেলে, উন্নত ভারতের অর্থ হল মেক ইন্ডিয়া গ্রেট এগেইন অর্থাৎ ‘মিগা’। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত যখন একযোগে কাজ করে অর্থাৎ ‘মাগা’-র সঙ্গে যখন ‘মিগা’ যুক্ত হয়, তখন সমৃদ্ধির এক ‘মেগা’ অংশীদারিত্বের সৃষ্টি হয়। এই মেগা চেতনা আমাদের লক্ষ্যগুলিকে নতুন মাত্রা ও পরিধি দেয়। 

বন্ধুগণ,

আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে ৫০০ বিলিয়ন ডলার করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট একটি বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত করতে আমাদের টিমগুলি কাজ করবে। 

ভারতের জ্বালানি সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে আমরা তেল ও গ্যাস বাণিজ্যকে শক্তিশালী করব। জ্বালানি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়বে। 

পরিমাণু জ্বালানি ক্ষেত্রে আমরা ছোট মডিউলার চুল্লি সংক্রান্ত সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেছি। 

বন্ধুগণ,

ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিতে আমেরিকার এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হয়েছে। কৌশলগত বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে আমরা যৌথ উন্নয়ন, যৌথ উৎপাদন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে চলেছি। 

আগামী দিনে নতুন প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়িয়ে তুলবে। আমরা অটোনমাস সিস্টেমস শিল্প জোট তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 

আগামী দশকের জন্য একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কাঠামো গড়ে তোলা হবে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আন্তঃ-সক্রিয়তা, লজিস্টিকস, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ এর প্রধান অঙ্গ হবে। 

বন্ধুগণ,

একবিংশ শতক প্রযুক্তিচালিত শতক। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী দেশগুলির মধ্যে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নিবিড় সহযোগিতা সমগ্র মানবতাকে এক নতুন দিশা, শক্তি এবং সম্ভাবনা দিতে পারে।

ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৃত্রিম মেধা, সেমিকনডাকটর, কোয়ানটাম, জৈব প্রযুক্তি এবং অন্যান্য প্রযুক্তি নিয়ে একযোগে কাজ করবে। 

আমরা আজ TRUST অর্থাৎ Transforming Relationship Utilizing Strategic Technology-র বিষয়ে সহমত হয়েছি। এর আওতায় বিরল খনিজ, উন্নত উপাদান এবং ফার্মাসিউটিক্যাল ক্ষেত্রে শক্তিশালী সরবরাহশৃঙ্খল গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হবে। লিথিয়াম সহ বিরল খনিজগুলির পুনরুদ্ধার ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য উদ্যোগ শুরু করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। 

মহাকাশ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। ‘ইসরো’ ও ‘নাসা’র যৌথ উদ্যোগে নির্মিত ‘নিসার’ উপগ্রহ খুব শীঘ্রই ভারতীয় উৎক্ষেপণযানের মাধ্যমে মহাকাশে পাঠানো হবে।

বন্ধুগণ,

ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দেয়। এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি, সুস্থিতি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করবো। এক্ষেত্রে কোয়াড এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

এই বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে আমরা অংশীদার দেশগুলির সঙ্গে নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়িয়ে তুলবো। ‘IMEC’ এবং ‘I2U2’ উদ্যোগের আওতায় অর্থনৈতিক করিডর এবং সংযোগসাধনের পরিকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করবো। 

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারত ও আমেরিকা দৃঢ়ভাবে একে অপরের পাশে রয়েছে। সীমান্তপারের সন্ত্রাস নির্মূল করতে সুসমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। 

২০০৮ সালে ভারতে হত্যাকাণ্ড চালানো অপরাধীকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাই। ভারতীয় আদালত এখন এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

বন্ধুগণ,

আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায় আমাদের সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র। দুদেশের নাগরিকদের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুগভীর করতে আমরা শীঘ্রই লস অ্যাঞ্জেলেস ও বোস্টনে বাণিজ্য দূতাবাস খুলতে চলেছি।

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আমরা ভারতে অফ-শোর ক্যাম্পাস খোলার আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আপনার বন্ধুত্ব এবং ভারতের প্রতি অবিচল প্রতিশ্রুতির জন্য আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। ভারতের মানুষ এখনও ২০২০ সালে আপনার ভারত সফরকে মনে রেখেছে। তারা আশা করে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আবারও তারা নিজেদের মধ্যে পাবে।

১৪০ কোটি ভারতীয়ের পক্ষ থেকে আমি আপনাকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 

আপনাদের সবাইকে অজস্র ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছিলেন।

SC/SD/SKD