Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভারত-চীন সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভারত-চীন সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি সর্বদলীয় বৈঠক করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভাপতিরা এই বৈঠকে যোগ দেন।

 

সশস্ত্র বাহিনীর শৌর্যঃ-
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা সবাই আমাদের সৈনিকদের পাশে  রয়েছি যাঁরা আমাদের সীমান্তকে রক্ষা করছেন। তাঁদের সাহসের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তিনি বলেন, এই সর্বদলীয় বৈঠকের মাধ্যমে আমরা শহীদ জওয়ানদের পরিবারকে এই বলে আশ্বস্ত করতে চাই যে সারা দেশ তাঁদের সঙ্গেই রয়েছে। 

এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে জানান, আমাদের ভূখণ্ডের কোন অংশ অথবা সেনা চৌকি দখল হয়নি। তিনি বলেন, লাদাখে আমাদের ২০ জন বীর সৈনিক শহীদ হয়েছেন, জাতি এঁদের সাহস ও আত্মবলিদানকে কখনই ভুলবে না।  একই সঙ্গে  যারা আমাদের মাতৃভূমির দিকে তাকিয়েছে, তাদেরকেও উচিৎ শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চীনের পদক্ষেপে সারা দেশ ব্যথিত এবং ক্ষুব্ধ। তিনি নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করে বলেন, দেশকে রক্ষা করতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সর্বতো প্রয়াস চালিয়ে যাবে। স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী দেশকে রক্ষা করতে সম্ভাব্য সবরকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে, প্রত্যাঘাতের পথেও যাওয়া হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমাদের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চির জমির দিকেও কারোর তাকাবার সাহাস নেই। ভারতীয় বাহিনী একযোগে সমগ্র সেক্টরে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। সেনাবাহিনীকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সবরকমের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ভারত চীনকে কূটনৈতিক মাধ্যমে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। 

সীমান্ত অঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়ন
প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারত শান্তি এবং মৈত্রীতে বিশ্বাসী, কিন্তু, তার সার্বভৌমত্বকে সর্বদাই অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। সরকার সীমান্ত অঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে যার ফলে, আমাদের সীমান্ত আরও সুরক্ষিত হবে। যুদ্ধ বিমান, আধুনিক হেলিকপ্টার, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থাপনার মতো আমাদের সেনাবাহিনীর যা যা প্রয়োজন, সেই চাহিদার সবই  মেটানো হচ্ছে। সীমান্ত এলাকার পরিকাঠামোর উন্নয়নের ফলে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর টহলদারির ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় যা কিছুই ঘটুক না কেন, তা সেনাবাহিনীর নজরে রয়েছে এবং প্রয়োজনে যথোচিত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেসব অঞ্চলে এর আগে কোন বাধা ছাড়াই অন্য দেশের সেনাবাহিনী ঢুকে পড়ত, আজ আমাদের জওয়ানরা তা আটকে দিচ্ছেন। এর ফলে, উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, উন্নত পরিকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহের ফলে প্রতিকূল অঞ্চলে সেনাবাহিনী অপেক্ষাকৃত ভালো কাজ করতে পারছে। 

শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, দেশ এবং নাগরিকদের কল্যাণে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা বা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা – যে কোন বিষয়েই সরকার কোন চাপের  কাছে মাথা নত করবে না। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, দেশের নিরাপত্তার জন্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে  দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমাদের সীমান্ত রক্ষায়  সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষমতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন এবং বলেন, যে কোন পরিস্থিতিতে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। 

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং বলেন, বীর সেনাদের আত্মবলিদান দেশ কখনই ভুলবে না। বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর সীমান্ত এলাকার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানান এবং বলেন, ২০১৪ সালে এই অঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকার সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জানান।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যঃ-
রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ লাদাখে সশস্ত্র বাহিনী যে সাহস দেখিয়েছে তার প্রশংসা করেন। তাঁরা বর্তমান সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ব্যক্ত করেছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাঁরা তাঁদের চিন্তাভাবনা ভাগ করে নিয়েছেন।

শ্রীমতী মমতা ব্যানার্জি বলেন, তাঁর দল সরকারের পাশে রয়েছে। শ্রী নীতিশ কুমার বলেন, নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোন মতপার্থক্য থাকা উচিৎ নয় এবং রাজনৈতিক দলগুলি এমন  কোন অনৈক্য দেখাবে না যা অন্য কোন দেশের সহায়ক হতে পারে। শ্রী চিরাগ পাসোয়ান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ নিরাপদ বোধ করছে। শ্রী উদ্ধব ঠাকরে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, সারা দেশ আজ একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পাশে রয়েছে। 

শ্রীমতী সোনিয়া গান্ধী বলেন, নেতৃবৃন্দ এখনও পরিস্থিতির বিষয়ে পুরো অন্ধকারে রয়েছে। তিনি সরকারকে গোয়েন্দাদের প্রতিবেদন সহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। শ্রী শরদ পাওয়ার জানতে চান, সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক কোন চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্রশস্ত্র বহন করছে কিনা। তিনি এই ধরনের পরিস্থিতির সংবেদনশীলতার বিষয়টিও রাজনৈতিক দলগুলিকে ভাবতে বলেন। শ্রী কনরাড সাংমা বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যে  উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, তা অব্যাহত রাখা উচিৎ। শ্রীমতী মায়াবতী বলেন, এখন রাজনীতি করার সময় নয়, প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্তই নেবেন তিনি তাতে সমর্থন জানাচ্ছেন। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যকে শ্রী এম কে স্ট্যালিন স্বাগত জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী নেতৃবৃন্দকে তাঁদের মতামত জানানোর জন্য এবং এই বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

 

CG/CB/DM