Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভারত – অস্ট্রেলিয়া ভারচুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী ভাষণ


মহামাণ্যবর, নমস্কার!

সবার আগে আমি আমার নিজের এবং সমগ্র ভারতের পক্ষে অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড -১৯ এর দরুণ ক্ষতিগ্রস্থ সকল মানুষ এবং পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাতে চাই। এই বিশ্বব্যাপী মহামারী বিশ্বের সব ধরণের ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করেছে। আর আমাদের এবারের শীর্ষ সম্মেলনের এই ডিজিটাল রূপটিও এই প্রভাবের একটি উদাহরণ।

মহামান্যবর, আমি এই ডিজিটাল মাধ্যমে আপনার সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আনন্দিত, তবে কিছুটা হতাশও, কারণ আমরা ভারতে আপনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর সুযোগ পাইনি। আমরা প্রথমে জানুয়ারিতে এবং তার পরে গত মাসে আপনার ভারত সফরের প্রতীক্ষায় ছিলাম, কিন্তু, দুর্ভাগ্যক্রমে দু’বারই আপনাকে যাত্রা স্থগিত করতে হয়েছে। আমাদের আজকের বৈঠকটি আপনার ভারত সফরের স্থান নিতে পারে না। বন্ধু হিসাবে, আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আপনি শীঘ্রই ভারতে একটি সপরিবার সফরের পরিকল্পনা করবেন এবং আমাদের আতিথেয়তা স্বীকার করবেন।

মহামান্যবর, ভারত-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক যতটা বিস্তৃত ততটাই নিবিড়। আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের এই গভীরতা সৃষ্টি হয়েছে আমাদের পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া মূল্যবোধ, পরস্পরের প্রতি আগ্রহ, ভৌগোলিক অবস্থানগত যোগাযোগ,এবং পারস্পরিক উদ্দেশ্যগুলি থেকে। গত কয়েক বছরে আমাদের সহযোগিতা এবং সমন্বয় গতি অর্জন করেছে। এটি সৌভাগ্যের বিষয় যে আমাদের সম্পর্কের একটি প্রান্ত আপনার মতো শক্তিশালী এবং দূরদর্শী নেতার হাতে রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার এটিই উপযুক্ত সময়, এটাই উপযুক্ত সুযোগ।

আমাদের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আমাদের সামনে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। অবশ্য এই সম্ভাবনাগুলি সঙ্গে করে অনেক সমস্যাও নিয়ে আসে। কিভাবে এই সম্ভাবনাগুলিকে বাস্তবে রূপান্তরিত করা যায়, যাতেউভয় দেশের নাগরিক, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাক্ষেত্র, গবেষক – ইত্যাদির মধ্যে যোগসূত্রগুলি আরও দৃঢ় হয়। কিভাবে আমাদের সম্পর্ক আমাদের অঞ্চল এবং বিশ্বের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের জন্য আমরা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করি, এই সমস্ত দিক বিবেচনা করা দরকার।

মহামান্যবর,সমকালীন বিশ্বে দেশগুলির একে অপরের কাছ থেকে প্রত্যাশা এবং আমাদের থেকে আমাদের নাগরিকদের প্রত্যাশা বেড়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলি ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে, আমাদের উভয় দেশেরই এই প্রত্যাশাগুলি অনুসারে কাজ করার কর্তব্য রয়েছে। সুতরাং, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, স্বাধীনতা, পারস্পরিক সম্মান, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সম্মান এবং স্বচ্ছতা ইত্যাদি বিশ্বব্যাপী কল্যাণের মূল্যবোধকে সমর্থন করে সেগুলিকে রক্ষা করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। এগুলি একদিক থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আমাদের ঐতিহ্য। আজ, যখন এই মূল্যবোধগুলি বিভিন্ন উপায়ে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে, তখন পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করেই আমরা সেগুলিকে আরও শক্তিশালী করতে পারি।

মহামান্যবর, ভারত অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আরও দ্রুত ও জোরালো পারস্পরিক সম্পর্ক সম্প্রসারণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি কেবল আমাদের দুই দেশের জন্য নয়, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমি সন্তুষ্ট যে আমাদের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বার্তালাপগুলি আমাদের সম্পর্কের জন্য প্রয়োজনীয় আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আদানপ্রদান করছে। দু’দেশের মধ্যে নিরন্তর উচ্চ-পর্যায়ের মতবিনিময়ও হচ্ছে। বাণিজ্য এবং বিনিয়োগও বাড়ছে। কিন্তু আমি বলব না যে আমি এই গতিতে, এই সম্প্রসারণে সন্তুষ্ট। আপনার মতো নেতা যখন আমাদের মিত্র দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন আমাদের সম্পর্ক উন্নয়নের গতির মানদণ্ডও উচ্চাভিলাষী হওয়া উচিত। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমরা আজ আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সর্বার্থসাধক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রূপে উন্নীত করছি।

বিশ্বব্যাপী মহামারীর এই সময়ে আমাদের সর্বার্থসাধক কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই অতিমারীটির অর্থনৈতিক ও সামাজিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি কাটিয়ে উঠতে বিশ্বের একটি সমন্বিত এবং সহযোগী দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজন।

আমাদের সরকার এই সংকটকে একটি সুযোগ হিসাবে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতে প্রায় সব ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শীঘ্রই তৃণমূল স্তরে ফলাফল দেখাবে। অস্ট্রেলিয়ায় এই কঠিন সময়ে আপনি প্রবাসী ভারতীয়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায় এবং বিশেষ করে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের যেভাবে যত্ন নিয়েছেন তার জন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।

CG/SB