Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভারতে প্রযুক্তি হ’ল সকলের মধ্যে সমতা ও ক্ষমতায়নের এক চালিকাশক্তি

ভারতে প্রযুক্তি হ’ল সকলের মধ্যে সমতা ও ক্ষমতায়নের এক চালিকাশক্তি


নয়াদিল্লি, ১৬ নভেম্বর, ২০২২

 

“ভারতে প্রযুক্তি হ’ল সকলের মধ্যে সমতা ও ক্ষমতায়নের এক চালিকাশক্তি”।

আজ বেঙ্গালুরুর প্রযুক্তি বিষয়ক এক সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণদানকালে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ভারতের যুবশক্তি তাঁদের উদ্ভাবনী প্রতিভার মাধ্যমে মেধা ও প্রযুক্তির বিশ্বায়ন ঘটিয়েছে। বেঙ্গালুরুকে তিনি প্রযুক্তির আবাসভূমি বলে বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর মতে, এই শহরটি হ’ল প্রকৃত অর্থেই এক অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার নগরী। বহু বছর ধরে ভারতের উদ্ভাবন সূচকের শীর্ষে এই শহরটির অবস্থান।

শ্রী মোদী বলেন, ভারতের প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন সারা বিশ্বেই প্রভাব বিস্তার করেছে। কিন্তু, ভারতের যুবশক্তি যেভাবে উদ্ভাবনী প্রতিভাকে কাজে লাগাচ্ছে, তার হাত ধরে দেশের ভবিষ্যৎ আরও বৃহত্তর এক প্রেক্ষাপটে প্রবেশ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় যুবশক্তি একদিকে যেমন প্রযুক্তির বিশ্বায়ন ঘটিয়েছে, অন্যদিকে তেমনই মেধা শক্তির বিশ্বায়ন ঘটেছে তাঁদের হাত ধরেই। বিশ্বের কল্যাণে আমরা দেশের মেধা শক্তিকে কাজে লাগিয়েছি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, বিশ্বের উদ্ভাবন সূচকে ২০১৫ সালে দেশের অবস্থান ছিল ৮১-তে। কিন্তু বর্তমানে অর্থাৎ ২০২২ সালে বিশ্ব প্রযুক্তি সূচকের ৪০তম স্থান অধিকার করে রয়েছে ভারত। ২০২১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভারতে স্থাপিত স্টার্টআপ – এর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সরকারিভাবে স্বীকৃত ৮১ হাজার স্টার্টআপ সংস্থা নিয়ে ভারত এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্থানটি অধিকার করে রয়েছে। ভারতীয় মেধাশক্তি আন্তর্জাতিক স্তরের বহু সংস্থাকে গবেষণা ও উন্নয়নের পথ দেখিয়েছে।

দেশে মোবাইল ও ডেটা বিপ্লবের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত ৮ বছরে ব্রডব্যান্ড সংযোগ ৬ কোটি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮১ কোটিতে। অন্যদিকে, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫ কোটি থেকে ৭৫ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। শহরগুলির তুলনায় দেশের গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এইভাবে এক নতুন জনগোষ্ঠী প্রযুক্তির হাত ধরে তথ্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। এই ঘটনাকে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা বলে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। মানুষের হাতের স্পর্শে কিভাবে প্রযুক্তির প্রসার ঘটতে পারে, তা করে দেখিয়েছে আমাদের দেশ।

বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচি আয়ুষ্মান ভারত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ২০ কোটি পরিবারের ৬০ কোটি মানুষের জন্য এটি এক সুরক্ষা বলয় হিসাবে কাজ করে চলেছে। ভারতে কোভিড ভ্যাকসিনেশন অভিযানও ছিল বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম। অনলাইন ব্যবস্থায় শিক্ষার ক্রমপ্রসারের বিষয়টিও এদিন স্থান পায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন, অনলাইনে শিক্ষা খাতে বর্তমানে ন্যূনতম ব্যয়ে দরিদ্র ছাত্রছাত্রীরা পঠন-পাঠনের সুযোগ লাভ করেছেন। অতিমারী সঙ্কটকালেও এর কোনও ব্যতিক্রম ঘটেনি।

দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রযুক্তিকে একটি হাতিয়ার বলে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। দরিদ্র-বান্ধব কর্মসূচির প্রসারে ড্রোন ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জন ধন আধার মোবাইল’ – এর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়ন ঘটেছে দেশের নাগরিকদের মধ্যে। এই ব্যবস্থায় সুফল গ্রহীতাদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তর সুনিশ্চিত করা হয়েছে। প্রযুক্তির হাত ধরে ছোটখাটো ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলিও এখন বাণিজ্যিক দিক থেকে লাভবান হয়ে উঠছে। সরকারের এই সমস্ত প্রচেষ্টার ফলে দেশে দুর্নীতিও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির মধ্যে যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে তা সুনিশ্চিত করতে অনলাইন টেন্ডার পদ্ধতিও চালু করা হয়েছে।

শ্রী মোদী বলেন, উদ্ভাবন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর সঙ্গে যখন মানুষের সংহতি যুক্ত হয়, তা তখন একটি শক্তি হয়ে ওঠে। সমস্ত রকম কর্মবিমুখ মানসিকতাকে পরিহার করে মানুষ এখন কর্মজগতে আরও বেশি সংখ্যায় পা রাখতে শুরু করেছেন। উন্নয়নের যে কোনও মিলিত মঞ্চেই নিজেকে আলাদা করে রাখার কোনও অবকাশ বা পরিসর নেই। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যানের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এর আওতায় আগামী কয়েক বছরে ১০০ লক্ষ কোটিরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। কারণ, গতিশক্তি হ’ল – রাজ্য, কেন্দ্র, জেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন দপ্তরের একটি মিলিত মঞ্চ, যেখানে পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করে যেতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এখন আর দীর্ঘসূত্রিতার দেশ নয়, বরং বিনিয়োগকারীদের কাছে তা এক বিনিয়োগের স্বর্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সংস্কার কর্মসূচি, ড্রোন সম্পর্কিত নিয়ম-নীতির উদারীকরণ, সেমিকান্ডাক্টর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে উৎপাদন-ভিত্তিক সুযোগ-সুবিধার প্রসার এবং বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজতর করে তোলার ক্ষেত্রে ভারত এখন সম্মিলিত শক্তির এক বিশেষ আধার হয়ে উঠেছে।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের বিনিয়োগ এবং আমাদের উদ্ভাবন শক্তির মিলিত ফল কিন্তু বিস্ময়কর। আপনাদের আস্থা এবং আমাদের প্রযুক্তিগত মেধাশক্তি অসম্ভবকেও সম্ভব করে তুলতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আমরা এখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অবস্থায় রয়েছি। এই পরিস্থিতিতে আমি আপনাদের আবেদন জানাই, আমাদের সঙ্গে এক সাথে কাজ করে যাওয়ার জন্য”।

 

PG/SKD/SB