Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে (১৮৫৭-১৯৪৭) শহীদদের নিয়ে অভিধান প্রকাশ


প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লীর লোক কল্যাণ মার্গে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে (১৮৫৭-১৯৪৭) শহীদদের নিয়ে এক অভিধান প্রকাশ করেছেন।

এই উপলক্ষ্যে শ্রী মোদী বলেন, ১৮৫৭-তে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে ১৯৪৭-এ স্বাধীনতা পর্যন্ত স্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদদের নিয়ে ৫ খন্ড বিশিষ্ট এই অভিধানটি প্রকাশ করা হল।

শ্রী মোদী বলেন, এই অভিধানে জালিয়ান ওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড, অসহযোগ আন্দোলন, ভারত ছাড় আন্দোলনের শহীদদের পাশাপাশি আজাদ-হিন্দ ফৌজের নির্ভিক সেনানীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শহীদদের নিয়ে এ ধরনের প্রচেষ্টা এই প্রথম। বৃহদাকারের এই অভিধান প্রকাশে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রয়াসেরও প্রশংসা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে জাতি দেশ গঠনে যুক্ত মহান ব্যক্তিত্বদের সম্মান দেয় না বা তাঁদের স্মরণ করে না, এমনকি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীও বিস্মৃত হয়, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, অভিধান প্রকাশের এই প্রচেষ্টা ইতিহাসের ঘটনাবলীকে স্মরণ করাই নয়, বরং ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা এক উপযুক্ত পন্হাও। যুব সম্প্রদায়কে এই প্রয়াস সম্বন্ধে বিশেষভাবে সচেতন করা প্রয়োজন বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

কেন্দ্রীয় সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সৈনিকদের নির্ভীক কাহিনীকে যথাযথ সম্মান জানায় এবং তাঁদের অবদানকে স্মরণ করে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের এই প্রয়াস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং তাদেরকে ‘ভারতই প্রথম’ এই মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এতদিন পর্যন্ত ভারতে কোনও যুদ্ধ স্মারক ছিল না। সম্প্রতি তিনি জাতির উদ্দেশে যুদ্ধ স্মারক বা সমর স্মারক উৎসর্গ করেছেন বলেও জানান। একইভাবে, পুলিশকর্মীদের অবদানকে স্মীকৃতি জানাতে জাতীয় পুলিশ স্মারক গড়ে তোলা হয়েছে। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিশ্বের সুউচ্চ একতার মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের অসম সাহসিকতার ঘটনাকে স্মরণে রেখে লালকেল্লায় ক্রান্তি মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়া আদিবাসী বীর সেনানীদের অসম সাহসিকতার প্রতি সম্মান জানাতে একাধিক সংগ্রহালয় গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ডঃ মহেশ শর্মা উপস্হিত ছিলেন।

প্রেক্ষাপট

১৮৫৭-র প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের স্বার্ধ শতবার্ষিকী উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদদের নিয়ে অভিধান প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই অভিধান তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিকাল রিসার্চ প্রতিষ্ঠানকে।

এই অভিধানে একজন শহীদকে এক ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি ভারতের মুক্তির জন্য জাতীয় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে প্রয়াত হয়েছেন বা তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বা তাঁকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে অথবা তাঁকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়েছে।

অভিধানটিতে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির প্রাক্তন সেনানী বা প্রাক্তন সেনাকর্মীদের নামও সামিল করা হয়েছে, যারা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রাণ বির্সজন দিয়েছিলেন।

এই অভিধানে ১৮৫৭-র প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ, জালিয়াল ওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড (১৯১৯), অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০-২২), আইন অমান্য আন্দোলন (১৯৩০-৩৪), ভারত ছাড়ো আন্দোলন (১৯৪২-৪৪), কিষান আন্দোলন, আদিবাসী আন্দোলন, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (১৯৪৩-৪৫) প্রভৃতির সঙ্গে যুক্ত শহীদদের নাম স্হান পেয়েছে। ৫ খন্ড বিশিষ্ট এই অভিধানে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ শহীদের বিভিন্ন তথ্য রয়েছে।

পাঁচ খন্ড বিশিষ্ট এই অভিধানটি নিম্নরূপ-

· “শহীদদের অভিধান : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৮৫৭-১৯৪৭)”, প্রথম খন্ড, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব। এই খন্ডে দিল্লী, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও হিমাচলপ্রদেশের ৪ হাজার ৪০০-র বেশি শহীদের নাম ও বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।

· “শহীদদের অভিধান : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৮৫৭-১৯৪৭)”, দ্বিতীয় খন্ড, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্ব। এই খন্ডে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্হান এবং জম্মু-কশ্মীরে ৩ হাজার ৫০০-র বেশি শহীদের নাম ও বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।

· “শহীদদের অভিধান : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৮৫৭-১৯৪৭)”, তৃতীয় খন্ড। এই খন্ডে ১ হাজার ৪০০-জনের বেশি শহীদের নাম ও বিবরণ উল্লেখ রয়েছে। মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও সিন্ধ এলাকার শহীদদের বিবরণী এখানে স্হান পেয়েছে।

· “শহীদদের অভিধান : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৮৫৭-১৯৪৭)”, চতুর্থ খন্ড। এই খন্ডে বাংলা, বিহার, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, অসম, অরুণাচলপ্রদেশ, মনিপুর, মেঘালয়, নাগল্যান্ড ও ত্রিপুরার ৩ হাজার ৩০০-জনের বেশি শহীদের নাম ও বিবরণ উল্লেখ রয়েছে।

· “শহীদদের অভিধান : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৮৫৭-১৯৪৭)”, পঞ্চম খন্ড। এই খন্ডে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, কণাটক, তামিলনাড়ু ও কেরালা থেকে ১ হাজার ৪৫০ জনের বেশি শহীদের নাম ও বিবরণী উল্লিখিত হয়েছে।

CG/BD/NS/…