Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ভারতীয় মহাকাশ অ্যাসোসিয়েশনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

ভারতীয় মহাকাশ অ্যাসোসিয়েশনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লি, ১১ অক্টোবর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারতীয় মহাকাশ অ্যাসোসিয়েশনের সূচনা করেন। এই উপলক্ষে তিনি মহাকাশ ক্ষেত্রে যুক্ত শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। 

এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী দেশের দুই মহান সন্তান ভারতরত্ন জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং ভারতরত্ন নানাজী দেশমুখকে তাঁদের জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ভারতমাতার এই দুই মহান সন্তান স্বাধীনোত্তরকালে দেশকে সঠিক দিশা দেখাতে বড় ভূমিকা পালন করেছে। তাঁরা দেখিয়েছেন, সকলকে সঙ্গে নিয়ে সমবেত প্রয়াসের মাধ্যমে কিভাবে পরিবর্তনকে বাস্তব রূপ দেওয়া যায়। এদের জীবনাদর্শ আজও অনুপ্রাণিত করে বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, নির্ণায়ক ও সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের মতো সরকার আগে কখনও ছিল না, যা এখন রয়েছে। মহাকাশ ক্ষেত্র ও মহাকাশ প্রযুক্তিতে দেশে আজ যে সমস্ত সংস্কার পরিচালিত হচ্ছে, সেগুলি সবই এর দৃষ্টান্ত। ভারতীয় মহাকাশ অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তোলার সূচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে তিনি অভিনন্দন জানান।

শ্রী মোদী বলেন, মহাকাশ ক্ষেত্রে সংস্কারে সরকারের প্রয়াস ৪টি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রথমত, বেসরকারি ক্ষেত্রকে উদ্ভাবনে আরও স্বাধীনতা। দ্বিতীয়ত, এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা অনুঘটকের। তৃতীয়ত, যুবসম্প্রদায়কে ভবিষ্যতের উপযুক্ত করে তোলা। চতুর্থত, সাধারণ মানুষের সার্বিক অগ্রগতিতে সম্পদ হিসাবে মহাকাশ ক্ষেত্রকে কাজে লাগানো। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৩০ কোটি দেশবাসীর সার্বিক অগ্রগতিতে মহাকাশ ক্ষেত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তিনি বলেন, ভারতের কাছে মহাকাশ ক্ষেত্র হ’ল আরও আধুনিক মানচিত্র ও নক্‌শা প্রণয়ন এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তোলা। একইভাবে, শিল্পোদ্যোগীদের জন্য পণ্য সামগ্রী পরিবহণ থেকে বন্টনের কাজেও মহাকাশ প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো। শুধু তাই নয়, মহাকাশ প্রযুক্তিকে মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা ও উপার্জনের মাধ্যম হিসাবে সদ্ব্যবহার করা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আরও ভালো পূর্বাভাষ দেওয়া বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভর ভারত অভিযান কেবল একটি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন উদ্যোগই নয়, বরং এক সুপরিকল্পিত, সুচিন্তিত, সুসংবদ্ধ আর্থিক কৌশল। এই কৌশলের উদ্দেশ্যই হ’ল ভারতের শিল্পোদ্যোগী ও যুবসম্প্রদায়ের দক্ষতা বাড়িয়ে দেশকে উৎপাদন ক্ষেত্রে বিশ্বের মহাশক্তিধর দেশে পরিণত করা। একইভাবে, ভারতের প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতাকে ভিত্তি করে দেশকে বিশ্বের অন্যতম উদ্ভাবন কেন্দ্রে পরিণত করা। শ্রী মোদী বলেন, এই কৌশল বিশ্বের উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করবে। সেই সঙ্গে, আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের মানবসম্পদ ও মেধার মর্যাদা আরও বাড়াবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলি নিয়ে সরকার এক সুস্পষ্ট নীতি গ্রহণ করে অগ্রসর হচ্ছে। সেই অনুসারে, যেখানে সরকারের প্রয়োজনীয়তা নেই, সেই সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রকে বেসরকারি সংস্থার জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা সরকারের অঙ্গীকার ও আন্তরিকতার প্রতিফলন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৭ বছরে মহাকাশ প্রযুক্তিকে প্রান্তিক মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে, অপচয় রোধ করতে এবং স্বচ্ছ প্রশাসন গড়ে তোলার মাধ্যম হিসাবে সদ্ব্যবহার করা হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি দরিদ্র মানুষের জন্য আবাসন, সড়ক ও পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে জিওট্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া চিত্রের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির ওপর নজরদারি করা হচ্ছে। ফসল বিমা যোজনার দাবি-দাওয়া নিষ্পত্তিতে, মৎস্যজীবীদের সহায়তা, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে মহাকাশ প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রযুক্তির সুবিধা প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ওপর প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার দেন। ডিজিটাল প্রযুক্তির উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারত আজ ডিজিটাল অর্থনীতিতে অন্যতম অগ্রণী দেশ, কারণ আমরা ডেটা ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধা দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের কাছেও পৌঁছে দিয়েছি।

তরুণ শিল্পোদ্যোগী ও স্টার্টআপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রতিটি স্তরে শিল্প সংস্থা, তরুণ উদ্ভাবক এবং স্টার্টআপগুলিকে উৎসাহিত করছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, স্টার্টআপের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। তিনি জানান, এই প্ল্যাটফর্ম এমন একটি প্রয়াস, যেখানে সরকার শিল্প সংস্থাগুলিকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয় এবং এই প্ল্যাটফর্মের ওপর ভিত্তি করে শিল্পোদ্যোগীরা নতুন সুরাহা সূত্রের হদিশ পান। ইউপিআই ব্যবস্থার উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই প্ল্যাটফর্মের ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, এরকম প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে পারলে তা মহাকাশ, জিওস্পেসিয়াল ও দ্রোণের ব্যবহারকে উৎসাহিত করবে। 

আজকের অনুষ্ঠান থেকে পাওয়া মতামত ও পরামর্শগুলি সহ সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে শীঘ্রই দেশে আরও ভালো স্পেসকম ও রিমোর্ট সেন্সিং নীতি প্রণয়ন করা যাবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাকাশ ও মহাকাশ ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব স্থাপনের লক্ষ্যে বিংশ শতাব্দীর প্রয়াসগুলি বিভিন্ন দেশকে পৃথক করেছে। একবিংশ শতাব্দীতে সমগ্র বিশ্বকে সংঘবদ্ধ করে তুলতে ও পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপনে মহাকাশ প্রযুক্তি যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে, ভারতকে তা সুনিশ্চিত করতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। 

 

CG/BD/SB