‘মন কি বাত ২.০’-র নবম পর্বে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন, যা, বহু ভারতবাসীকে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বলেন, বিহারের পুর্নিয়া দেশের সব জায়গার মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। এটা এমন এক এলাকা, যেখানে কয়েক দশক ধরে মানুষ বিধ্বংসী বন্যার সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। এই কারণে এখানে ফসল ফলানো এবং জীবিকা অর্জনের অন্যান্য উপায়গুলির সুযোগ খুবই কম। তিনি বলেন, আগে পুর্ণিয়ার মহিলারা তুঁত বা মলবরী গাছে রেশমকীটের গুটি থেকে রেশম তৈরি করতেন, যার থেকে ওঁরা খুব স্বল্প অর্থ উপার্জন করতেন। অন্যদিকে রেশম ক্রেতারা গুটি থেকে রেশমের সুতো বানিয়ে অনেক বেশি লাভ করত। কিন্তু আজ পূর্ণিয়ার মহিলারা সরকারী সহযোগিতায় উৎপাদন-এর জন্য সমবায় স্থাপন করেছেন। তাঁরা গুটিপোকা থেকে রেশমের সুতো তৈরি করে সেই সুতো দিয়ে নিজেরা শাড়ি তৈরি করাও শুরু করেছেন এবং প্রচুর রোজগারও করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি কাম্যা কার্তিকেয়নের অনুপ্রেরণাদায়ক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন ౼ যে মাত্র ১২ বছর বয়সে মাউন্ট একোনকাগুয়া পর্বতমালা জয় করার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। এটি দক্ষিণ আমেরিকার অ্যান্ডিস্ পর্বতের সবচাইতে উঁচু শৃঙ্গ, যা প্রায় ৭০০০ মিটার উঁচু। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই মেয়েটির একটা নতুন মিশন আছে যার নাম ‘মিশন সাহস’। এই মিশনে, সে, সব মহাদেশের সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গগুলো জয় করার লক্ষ্য রেখেছে”। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ইতিবাচক ফলাফল আনার প্রয়াসকে প্রশংসা করেন, যার মাধ্যমে সকলে ‘ফিট’ থাকার অনুপ্রেরণা পাবেন। তিনি ‘মিশন সাহস’-এর জন্য তাঁকে অভিনন্দন-ও জানান। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ভারতের ভৌগোলিক গঠন এমনই, যা আমাদের দেশে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস-এর পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক । নিজের পছন্দমতো জায়গা বেছে নিয়ে নিজস্ব রুচি অনুযায়ী কর্মতৎপরতা ঠিক করতে এবং অ্যাডভেঞ্চারের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে তিনি সকলের কাছে আবেদন জানান।
এছাড়া তিনি ১০৫ বছর বয়সী ভাগীরথী আম্মার সাফল্যের কথা শোনান, যিনি কেরালার কোল্লামে থাকেন এবং খুব ছোটবেলায় উনি ওঁর মা-কে হারিয়েছেন। ১০৫ বছর বয়সে তিনি আবার স্কুলে পড়া শুরু করেন। এত বয়স হওয়া সত্ত্বেও ভাগীরথী আম্মা লেভেল-ফোর পরীক্ষা দেন এবং খুব উৎসাহের সঙ্গে রেজাল্ট-এর অপেক্ষা করতে থাকেন। তিনি পরীক্ষায় ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। এখন আরও পড়াশোনা করতে চাইছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাগীরথী আম্মার মতন মানুষই দেশের শক্তি। প্রেরণার এক বিরাট স্রোত।
প্রধানমন্ত্রী সলমনের উদাহরণ তুলে ধরেন, যে মোরাদাবাদের হামিরপুরের বাসিন্দা, জন্ম থেকেই ভিন্ন ভাবে সক্ষম। তিনি বলেন যে, এমন প্রতিবন্ধকতায় সলমন হার মানেননি এবং নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জীবিকা শুরু করার। একই সঙ্গে সলমন ঠিক করে নিয়েছিলেন তাঁর মতো অন্য ভিন্ন ভাবে সক্ষমদেরও তিনি সাহায্য করবেন। সলমন নিজের গ্রামে চটি ও ডিটেরজেন্ট বানানোর কাজ শুরু করে দিলেন। খুব দ্রুত তাঁর সঙ্গে আরও তিরিশ জন ভিন্ন ভাবে সক্ষম এই কাজে যোগ দিলেন।
গুজরাটের কচ্ছ এলাকার অজরক গ্রামের মানুষদের এমনই সংকল্পের আরেকটি ঘটনার কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন । ২০০১ সালের ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের পর সবাই যখন গ্রাম ছেড়ে চলে যান, ইসমাইল ক্ষত্রী নামে এক ব্যক্তি গ্রামে থেকেই পরিবারের বংশানুক্রমিক শিল্পকলা অজরক প্রিন্টের কাজ চালিয়ে যান। দেখতে দেখতে প্রাকৃতিক রঙের অজরক শিল্প সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠলো এবং গ্রামের সবাই তাঁদের এই প্রাচীন শিল্পধারায় নিয়োজিত হলেন।
প্রধানমন্ত্রী সদ্য উদযাপিত মহাশিবরাত্রী উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে তাঁর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মহাশিবরাত্রিতে ভোলে বাবার আশীর্বাদ আপনাদের ওপর বর্ষিত হোক। আপনাদের সব মনষ্কামনা পূর্ণ হোক, আপনাদের উদ্যম, স্বাস্থ্য ও সুখ অটুট থাকুক। দেশের প্রতি আপনারা কর্তব্যপরায়ণ হয়ে উঠুন”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ আর কিছুদিনের মধ্যেই হোলি উৎসব, তারপরে পরেই গুড়ি পরব ও নবরাত্রি পরব আসবে। নবরাত্রী উৎসব বসন্ত ঋতুর সঙ্গে যুক্ত। তারপর আসবে রামনবমী। পরব আর উৎসব আমাদের সামাজিক জীবনের অচ্ছেদ্য অংশ। সব উৎসবের পিছনেই কোন না কোন বার্তা লুকিয়ে থাকে, যা শুধু সমাজ নয় পুরো দেশের ঐক্যকে সুদৃঢ় করে”।
CG/CB/23rd
Inspiring anecdote from Bihar that would inspire many Indians... #MannKiBaat pic.twitter.com/j1f0CbNIII
— PMO India (@PMOIndia) February 23, 2020