Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ব্রিকস্-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস্ প্লাস বার্তালাপে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ

ব্রিকস্-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস্ প্লাস বার্তালাপে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বঙ্গানুবাদ


নতুন দিল্লি, ২৪ আগস্ট, ২০২৩

 

 

আফ্রিকার ভূমিতে আমার সকল বন্ধুদের মধ্যে উপস্থিত হয়ে আমি আনন্দিত।

ব্রিকস্ আউটরিচ সম্মেলন চলাকালীন আফ্রিকা, এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলির সঙ্গে চিন্তাভাবনা ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি রাষ্ট্রপতি রামাফোসা-কে আমার অভিনন্দন জানাই।

গত দু’দিনে ব্রিকসের সমস্ত আলোচনায় আমরা দক্ষিণ বিশ্বের দেশগুলির অগ্রাধিকার এবং উদ্বেগের উপর আলোকপাত করেছি।

আমরা বিশ্বাস করি যে, ব্রিকস্-এর পক্ষ থেকে এই বিষয়গুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া বর্তমান সময়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

আমরা ব্রিকস্ গোষ্ঠী সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা সমস্ত অংশীদার দেশকে স্বাগত জানাই।

এটি বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠান ও গোষ্ঠী, প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তিকরণের জন্য আমাদের প্রয়াসের ক্ষেত্রে এক পদক্ষেপ।

মাননীয়,

যখন আমরা ‘গ্লোবাল সাউথ’ এই শব্দটি ব্যবহার করি, তখন এটি শুধুমাত্র কূটনৈতিক শব্দ নয়। 

আমাদের ইতিহাসে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ঔপনিবেশিকতা ও বর্ণবাদের বিরোধিতা করেছি।

আফ্রিকার এই ভূমিতেই মহাত্মা গান্ধী অহিংসা ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিরোধের মতো শক্তিশালী চিন্তাভাবনা গড়ে তুলেছিলেন, পরখ করেছিলেন এবং তা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কাজে লাগিয়েছিলেন।

তাঁর চিন্তাভাবনা নেলসন ম্যান্ডেলার মতো মহান নেতাদেরও অনুপ্রাণিত করেছিল। 

এই দৃঢ় ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর ভর করে আমরা আমাদের আধুনিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিচ্ছি।

মাননীয়,

ভারত আফ্রিকার সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বাগ্রে রেখেছে। 

উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পাশাপাশি আমরা আফ্রিকায় ১৬টি নতুন দূতাবাস খুলেছি। 

বর্তমানে, ভারত হল আফ্রিকার চতুর্থ বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার এবং পঞ্চম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ।

সুদান, বুরুন্ডি এবং রুয়ান্ডায় বিদ্যুৎ প্রকল্পই হোক কিংবা ইথিওপিয়া ও মালাউইতে চিনি কারখানা হোক।

তা সে মোজাম্বিক, আইভোরি কোস্ট ও এসওয়াতিনি-র প্রযুক্তি পার্কই হোক বা তানজানিয়া এবং উগান্ডায় ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ক্যাম্পাস।

ভারত সবসময় আফ্রিকার দেশগুলিতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে।

এজেন্ডা ২০৬৩-র আওতায় ভবিষ্যতে বিশ্বের শক্তি কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার জন্য আফ্রিকার উন্নয়ন যাত্রায় ভারত একটি নির্ভরযোগ্য এবং ঘনিষ্ঠ অংশীদার। 

আফ্রিকায় ডিজিটাল সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা টেলি-শিক্ষা এবং টেলি-মেডিসিন ক্ষেত্রে ১৫ হাজারেরও বেশি বৃত্তি প্রদান করেছি।

আমরা নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়া ও তানজানিয়াতে প্রতিরক্ষা অ্যাকাডেমি এবং কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি।

আমরা বৎসোয়ানা, নামিবিয়া, উগান্ডা, লেসোথো, জাম্বিয়া, মরিশাস, সেশেলস এবং তানজানিয়ায় প্রশিক্ষণের জন্য দল পাঠিয়েছি।

মহিলা সহ প্রায় ৪ হাজার ৪০০ জন ভারতীয় শান্তিরক্ষী আফ্রিকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অবদান রেখেছেন।

সন্ত্রাস এবং জলদস্যুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে একযোগে কাজ করছি। 

কোভিড অতিমারি সঙ্কট মোকাবিলার সময়ে আমরা বিভিন্ন দেশে খাদ্য সামগ্রী ও টিকা সরবরাহ করেছি।

এখন আমরা আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে একযোগে কোভিড ও অন্য টিকা তৈরিতে কাজ করছি।

মোজাম্বিক ও মালাউইতে ঘূর্ণিঝড়ই হোক বা মাদাগাসকারের বন্যা, ভারত সর্বদাই সবার আগে আফ্রিকার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে।

মাননীয়,

লাতিন আমেরিকা থেকে মধ্য এশিয়া;

পশ্চিম এশিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া;

ভারত – প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারত – আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত;

ভারত সব দেশকে এক বিশ্ব পরিবারের অঙ্গ হিসেবে দেখে।

“বসুধৈব কুটুম্বকম” – সমগ্র বিশ্ব এক পরিবারের চিন্তাভাবনা হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের জীবনধারার ভিত্তি।

এটি আমাদের জি২০ সভাপতিত্বের মূল মন্ত্রও।

দক্ষিণ বিশ্বের উদ্বেগের কারণে আমরা তিনটি আফ্রিকার দেশ এবং বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশকে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

ভারত জি২০-তে আফ্রিকান ইউনিয়নের স্থায়ী সদস্যপদেরও প্রস্তাব দিয়েছে।

মাননীয়,

আমি বিশ্বাস করি যে, ব্রিকস্ এবং বর্তমানে সব বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলি একটি বহুমুখী বিশ্বকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করতে পারে।

আমরা বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও দায়িত্বশীল এবং প্রাসঙ্গিক করে তুলতে সংস্কারসাধন করতে পারি।

আমাদের নিজেদের স্বার্থে সন্ত্রাস দমন, পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকান্ড, সাইবার নিরাপত্তা, খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা দরকার। এক্ষেত্রে সহযোগিতার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। 

আমি আন্তর্জাতিক সৌর জোট, এক সূর্য এক বিশ্ব এক গ্রীড, বিপর্যয় মোকাবিলায় পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সহযোগিতা, এক বিশ্ব এক স্বাস্থ্য, বিগ ক্যাট অ্যালায়েন্স এবং পরম্পরাগত ওষুধের জন্য বিশ্বমানের কেন্দ্রের মতো আমাদের আন্তর্জাতিক উদ্যোগে আপনাদের সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানাই।

ভারতের ডিজিটাল গণ পরিকাঠামোর সঙ্গে আপনাদের যুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ এবং এর থেকে সুবিধালাভের আহ্বান জানাচ্ছি।

আপনাদের সঙ্গে আমাদের অভিজ্ঞতা এবং ক্ষমতা ভাগ করে নিতে পেরে আমরা খুশি।

আমি নিশ্চিত যে আমাদের যৌথ প্রয়াস এক নতুন আত্মবিশ্বাস যোগাবে, যাতে আমরা একসঙ্গে সমস্ত সমস্যার মোকাবিলা করতে পারি।

এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি আপনাদের সকলকে বিশেষ করে রাষ্ট্রপতি রামাফোসা-কে ফের একবার ধন্যবাদ জানাই।

ধন্যবাদ।

(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল)

 

AC/SS/SKD/