Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের ভারত সফরকালে সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের ভারত সফরকালে সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি


মাননীয় প্রেসিডেন্ট মিশেল টেমার, সংবাদ মাধ্যমের সদস্যবৃন্দ এবং বন্ধুগণ,

প্রেসিডেন্ট মিশেল টেমারকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। তাঁর এই প্রথম ভারত সফরকালে গোয়ার মতো একটি সাধারণ পর্তুগিজ ঐতিহ্যের স্থানে তাঁকে নিয়েআসার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। ভৌগোলিক দিক থেকে ব্রাজিল ও ভারত দুটি বিচ্ছিন্ন দেশহলেও গণতন্ত্রের সাধারণ মূল্যবোধ, আইনের শাসন, উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা এবং শান্তি ওসমৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের স্বাভাবিক সহযোগী ও অংশীদার। প্রেসিডেন্ট টেমারহলেন একজন অগ্রণী সংবিধান বিশেষজ্ঞ। সুতরাং, এই বিষয়টি তিনি অনুভব ও উপলব্ধিকরেছেন খুব ভালোভাবেই। তাঁর এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন আমাদের দুটিদেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের এক দশক পূর্ণ করেছে। এই দশ বছরে বিশেষপরিবর্তন ঘটে গেছে সমগ্র বিশ্বে। ভারত ও ব্রাজিলের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উত্তরোত্তরউন্নত হয়ে উঠেছে। সমস্ত পর্যায়েই বৃদ্ধি পেয়েছে আমাদের আলাপ-আলোচনা। আন্তর্জাতিকপ্রেক্ষাপটে আমাদের সাধারণ প্রচেষ্টা ও লক্ষ্যগুলির অনুসরণেসহযোগিতার মধ্য দিয়েযুক্ত হয়েছি আমরা। ২০১৪ সালে আমার ব্রাজিল সফরের কথা এখনও পরিষ্কার মনে আছে।দায়িত্বভার গ্রহণের পর এশিয়ার বাইরে ব্রাজিলই ছিল প্রথম দেশ যেখানে আমি সফরকরেছিলাম। ব্রাজিলের বন্ধুদের ভারতের প্রতি গভীর টানের কথা তখনই আমি অনুভবকরেছিলাম। মাননীয় প্রেসিডেন্ট, গুরুত্বপূর্ণ নতুন দায়িত্বভার গ্রহণের পর লাতিনআমেরিকার বাইরে দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য আপনি প্রথমেই বেছে নিয়েছেন ভারতকে।দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আমরা কতটা গুরুত্ব দিই তা প্রতিফলিত হয়েছে আপনার এই সফরেরমধ্য দিয়ে। আজ সকালে আমাদের সফল আলোচনাতেই তা প্রমাণিত।

বন্ধুগণ,

দ্বিপাক্ষিকসহযোগিতার সবক’টি বিষয় নিয়েই পর্যালোচনায় বসেছিলাম প্রেসিডেন্ট টেমার এবং আমি।সম্ভাবনাময় আরও অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের প্রচেষ্টাকে প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিআমরা। আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও জোরদার করে তোলার পারস্পরিকসদিচ্ছাই তাতে প্রতিফলিত হয়েছে। লাতিন আমেরিকায় আমাদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণঅর্থনৈতিক অংশীদারদেশগুলির অন্যতম হল ব্রাজিল। আমি একথা ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিতযে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে আমাদের এই দুটি দেশ। পারস্পরিকবাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্কে তা আরও এক উন্নত মাত্রা যোগ করবে। ব্রাজিলের নিজস্বঅর্থনৈতিক কার্যসূচির পুনরুদ্ধারের বিষয়টিকে প্রেসিডেন্ট টেমার অগ্রাধিকার দিয়েছেনএকথা আমরা জানতে পেরেছি। তাঁর এই প্রচেষ্টায় ভারত এক মূল্যবান সহযোগীর ভূমিকা পালনকরতে পারে। ভারতে এসে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যব্রাজিলের শিল্প সংস্থাগুলিকে আমি স্বাগত জানাই। আমাদের দু’দেশের সিইও-দের কাছথেকে সরাসরি তাঁদের বক্তব্য শোনার জন্য প্রেসিডেন্ট টেমার এবং আমি আজ মিলিতহয়েছিলাম তাঁদের সঙ্গে।

আমরাসমস্তরকমভাবে সহযোগিতা যুগিয়ে যাব তাঁদের এই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায়।

ভারতীয়সংস্থা এবং এখানকার উৎপাদনের যাতে ভালো বাজার সৃষ্টি করা যায় এবং বিনিয়োগের সুযোগপ্রসারিত করা যায়, সেজন্য আমি সমর্থন প্রত্যাশা করিপ্রেসিডেন্ট টেমারের কাছ থেকে। এই বিষয়টিতে প্রেসিডেন্ট টেমার ইতিবাচক মনোভাবদেখানোয় আমি ধন্যবাদ জানাই তাঁকে। তাঁর এই সফরকালে ওষুধপত্রের মান নিয়ন্ত্রণ, কৃষিগবেষণা এবং সাইবার নিরাপত্তা সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিতে সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্রউন্মুক্ত করার কাজেও আমরা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিকমঞ্চগুলিতে আমাদের সহযোগিতা ও সমন্বয়কে আরও গভীর ও শক্তিশালী করে তুলতে সম্মতহয়েছি প্রেসিডেন্ট টেমার এবং আমি। পরিস্থিতি এবং দৃষ্টিভঙ্গির অনেকগুলি ক্ষেত্রেইমিল রয়েছে আমাদের মধ্যে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ, জি-২০, জি-৪ ডব্ল্যুটিও, আইবিএসএ এবংঅন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে আমরা পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করেযাব।

মাননীয়প্রেসিডেন্ট,

সন্ত্রাসদমনে ভারতের প্রচেষ্টাকে ব্রাজিল সমর্থন জানানোয় তাঁদের এই ভূমিকার প্রশংসা করিআমি। কোনরকম পার্থক্য বা বৈষম্য না করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্বকে যেএকজোট হয়ে কাজ করে যেতে হবে এই বিষয়টিতে সহমত প্রকাশ করেছি আমরা। রাষ্ট্রসঙ্ঘে আন্তর্জাতিকসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এক সুসংবদ্ধ প্রস্তাব যাতে দ্রুত গৃহীত হয় সেই লক্ষ্যেব্রাজিলের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাব আমরা। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্যপদলাভের জন্য ভারতের আকাঙ্ক্ষার বিষয়টিকে ব্রাজিল উপলব্ধি করায় ধন্যবাদ জানাই মাননীয়প্রেসিডেন্টকে।

মাননীয়প্রেসিডেন্ট এবং বন্ধুগণ,

দ্বিপাক্ষিকএবং বহুপাক্ষিক দিক থেকে ভারত ও ব্রাজিলের সহযোগিতার সম্পর্ক প্রচুর সম্ভাবনাময়।এই সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার আমাদের সম্ভব করে তুলতে হবে। প্রেসিডেন্ট টেমারেরসফর আমাদের এই লক্ষ্য পূরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সন্দেহ নেই। পর্তুগিজভাষায় একটি কথা প্রচলিত রয়েছে –“এ ইউনিয়াও ফজ এ ফরসা”যার অর্থ হল আমাদেরমিলিত শক্তি আরও শক্তিশালী করে তোলেআমাদের।

ধন্যবাদ।

PG/SKD/DM/