Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ


বিহারের রাজ্যপাল শ্রী রামনাথ কোবিন্দ,

মঙ্গোলিয়া থেকে আগত শ্রদ্ধেয় খাম্বা লামা ডেম্বেরেল,

তাইওয়ানের শ্রদ্ধাভাজন মিং কোয়াং শি,

ভিয়েতনামের অতিথি শ্রদ্ধেয় থিক থিয়েন তাম,

রাশিয়া থেকে আগত শ্রদ্ধেয় তেলো তুলকু রিনপোশে,

শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি শ্রদ্ধেয় বানাগালা উপাতিসা,

শ্রদ্ধাভাজন লামা লোবজাঙ্গ,

মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী কিরেন রিজিজু,

ভুটান সরকারের মন্ত্রীমহোদয় লিয়োনপো নামগে দোর্জি,

মঙ্গোলিয়ার মাননীয় মন্ত্রী বায়ারসাইখান,

মহাসংঘের মাননীয় সদস্যবৃন্দ এবং এ দেশ সফররত বিদেশের মন্ত্রী ও কূটনীতিকবৃন্দ,

আপনাদের সকলের মাঝে আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। বুদ্ধগয়ায় আসতে পেরে আমি নিজেকে আর্শীবাদধন্য মনে করছি। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর পরে এই পবিত্র স্থান দর্শন করার সুযোগ আমার হয়েছে।

আজ একটি বিশেষ দিনে আমি আপনাদের সঙ্গে এখানে মিলিত হয়েছি। আমাদের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি শিক্ষক ও সুপণ্ডিত ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মবার্ষিকী স্মরণে আজ আমরা ভারতে শিক্ষক দিবস পালন করছি।

বিশ্ব ইতিহাসে যাঁর শিক্ষাদর্শের প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী সেই গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনার জন্যই আজ আমরা এখানে সমবেত। বহু শতাব্দী ধরে তাঁর শিক্ষা ও বাণী অনুপ্রাণিত করেছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে।

আজ আমরা পালন করছি জন্মাষ্টমীও। এই দিনেই জন্ম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের। তাঁর কাছে শিক্ষণীয় অনেক কিছুই রয়েছে বিশ্ববাসীর জন্য। যখন আমরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা আলোচনা করি তখন আমরা বলি “শ্রী কৃষ্ণম বন্দে জগৎ গুরুম” অর্থাৎ সকল শিক্ষকের শিক্ষক এবং সকল গুরুর গুরু হলেন শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং।

গৌতম বুদ্ধ এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উভয়েই বিশ্ববাসীকে অনেক কিছুই শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তাই এই মহাসম্মেলনের মূল বিষয় একদিক থেকে এই দুই জগতপুরুষের মূল্যবোধ ও আদর্শকে কেন্দ্র করেই অনুপ্রাণিত।

মহাভারতের মহাযুদ্ধ শুরুর আগে শ্রীকৃষ্ণের বাণীর কথা আমরা শুনেছি। ভগবান বুদ্ধ এই যুদ্ধবিগ্রহের ঊর্ধ্বে ওঠার কথাই বলে গেছেন বারংবার। ধর্ম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই বিশ্ববাসীকে তাঁরা দিয়ে গেছেন তাঁদের এই বার্তা।

তাঁরা দু’জনেই পন্থা-পদ্ধতি ও ক্রিয়ার বিষয়টিকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে গেছেন। গৌতম বুদ্ধ ছিলেন অষ্ট মার্গ ও পঞ্চশীলের প্রবক্তা। অন্যদিকে, কর্মযোগের মাধ্যমে জীবনে মূল্যবান শিক্ষার কথা বলে গেছেন শ্রীকৃষ্ণ। সমস্তরকম ভেদাভেদ ও বৈষম্যের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে একত্রিত করার এক ঐশ্বরিক ক্ষমতা ছিল এই দুই মহান আত্মপুরুষের। বর্তমান যুগে তাঁদের এই শিক্ষাদর্শ ব্যবহারিক দিক থেকে খুবই প্রাসঙ্গিক এবং সর্বকালে, সর্বযুগে তা এক শাশ্বত সত্য।

আজ আমরা যে স্থানটিতে এই সমস্ত কথা আলোচনার জন্য মিলিত হয়েছি তারও রয়েছে এক বিশেষ তাৎপর্য। কারণ, মানবজাতির ইতিহাসে বুদ্ধগয়া এক বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে।

এই দেশ আলোয় উত্তরণের দেশ। বহু বছর আগে সিদ্ধার্থের আবির্ভাব হয়েছিল বুদ্ধগয়ায়। বিনিময়ে বুদ্ধগয়া বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছে ভগবান বুদ্ধ যিনি ছিলেন জ্ঞান, শান্তি ও সহমর্মিতার এক নামান্তর মাত্র।

তাই, জন্মাষ্টমীর শুভক্ষণ এবং শিক্ষক দিবস পালনের এই মুহূর্তে আলোচনায় মিলিত হওয়ার পক্ষে এই স্থানটি হল আদর্শ।

বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশন ও টোকিও ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং দিল্লির আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ কনফেডারেশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত ‘সংঘাত পরিহার ও পরিবেশ সচেতনতা’ সম্পর্কিত প্রথম আন্তর্জাতিক হিন্দু-বৌদ্ধ মহাসম্মেলনে অংশগ্রহণের সুযোগ গত পরশু আমার হয়েছিল।

সংঘাত সম্পর্কে প্রস্তাবনা নয়, সংঘাত পরিহার এবং শুধুমাত্র পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ নয়, প্রয়োজন পরিবেশ সচেতনতা – এই ধারণা ও চেতনা থেকেই আয়োজিত এই মহাসম্মেলন।

বিশ্বের যে দুটি কঠিন চ্যালেঞ্জ মানবজাতির পক্ষে আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সে সম্পর্কে আমি কিছু মতবিনিময়ও করেছিলাম। সংঘাতের অবসান এবং পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ – দুটি বিষয়ই বিভিন্ন দেশের মানসিকতার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু তার উত্তরোত্তর ব্যার্থতার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের চিন্তাভাবনার জগতে পরিবর্তনের জন্য বিশ্ব আজ বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে গৌতম বুদ্ধের শিক্ষাদর্শের ওপরই।

আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং বেশ কিছু বুদ্ধিজীবী ব্যক্তিত্ব দু’দিনের এই সম্মেলনে তাঁদের বক্তব্য ও মতামত পেশ করেছেন। তাঁদের অনেকেই বৌদ্ধ সমাজের মানুষ। আধ্যাত্মিক, ধর্মীয় এবং বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে দু’দিনের সম্মেলন শেষ হওয়ার পর টোকিও ফাউন্ডেশন ঘোষণা করেছে যে ২০১৬-র জানুয়ারিতে এই ধরণের আরেকটি সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছেন তারা। অন্যদিকে, অন্যান্য বৌদ্ধ দেশগুলিও তাদের নিজের নিজের দেশে এই ধরণের সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নেবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে।

অর্থনৈতিক তথা সভ্যতার এক মূল কেন্দ্র হিসেবে এশিয়ার উত্থানের সঙ্গে এই ঘটনা এক অসাধারণ সমাপতন। হিন্দু-বৌদ্ধ সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে এই সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় দুটি বেছে নেওয়া হয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে সংঘাত পরিহার সম্পর্কে দার্শনিক চিন্তাভাবনা এবং পরিবেশ সচেতনতা সম্পর্কে মননশীলতা এশিয়ার পরিধি অতিক্রম করে সমগ্র বিশ্বে গভীরতর উপলবদ্ধির মধ্য দিয়ে ক্রমপ্রসারিত হবে।

এই দুটি বিষয় সম্পর্কে দু’দিনের এই সম্মেলনে মোটামুটিভাবে এক সহমতে উপনীত হওয়া গেছে। সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনার মূলে রয়েছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের মতে ধর্মীয় আচার-আচরণের স্বাধীনতা সুপ্রতিষ্ঠিত হলে কোন সমস্যা থাকে না। কিন্তু ধর্মীয় উন্মাদনায় যখন কেউ তাদের আদর্শ ও ধ্যান-ধারণা অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে উদ্যত হয় সংঘাত বা সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় তখনই। পরিবেশের প্রশ্নে এই সম্মেলন মতপ্রকাশ করেছে যে প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের সুরক্ষার মূলে রয়েছে ধর্মীয় দর্শন যা নিরন্তর উন্নয়নের দিশারী। রাষ্ট্রসঙঘও এ ব্যাপারে একমত যে মানবজাতির স্থানীয় ও আঞ্চলিক সংস্কৃতির বিকাশের মধ্য দিয়েই উন্নয়ন নিরন্তর হয়ে উঠতে পারে।

আমার মনে হ্য় বৈচিত্র্যের যে পৃথিবীতে আমরা বাস করছি তাকে এক উন্নয়নের আদর্শ স্থান হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি ইতিবাচক দিক। বিশ্ব পর্যায়ে চিন্তাভাবনার জগতে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে তা এমন এক পরিবেশের বাতাবরণ গড়ে তুলেছে যা হিন্দু-বৌদ্ধ সমাজকে তাদের সম্মিলিত মত ও আদর্শের কথা বিশ্ব প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে অনুপ্রেরণা যোগাবে। সংঘাত পরিহার এবং পরিবেশ সচেতনতা – এই দুটি বিষয় সম্পর্কে পৃথিবীতে এর আগে চিন্তাভাবনা খুব কমই হয়েছে। তাই এই দুটি বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত হিন্দু-বৌদ্ধ মহাসম্মেলন এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলেই আমি মনে করি।

ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাব এবং তাঁর শিক্ষাদর্শের ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে হিন্দু দর্শন।

অনেক পণ্ডিত ও বিদগ্ধ ব্যক্তি হিন্দু ধর্মের ওপর বুদ্ধের প্রভাব নানাভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। আদি শংকরাচার্যকে অনেকেই বুদ্ধ দ্বারা প্রভাবিত বলে সমালোচনা করে থাকেন। কেউ কেউ আবার তাঁকে বলে থাকেন ‘প্রচ্ছন্ন বুদ্ধ’, অর্থাৎ, বুদ্ধের ছদ্মবেশী রূপই হল শংকরাচার্য। আদি শংকরাচার্যের ওপর বুদ্ধের প্রভাব এতটাই ছিল যে তাঁকে বলা হত হিন্দু দার্শনিক। সাধারণ জনতার কাছে বুদ্ধ ছিলেন এমনই শ্রদ্ধার পাত্র যে জয়দেব তাঁর ‘গীত গোবিন্দ’ গ্রন্থে মহাবিষ্ণু বলে বন্দনা করেছেন বুদ্ধকে যিনি অহিংসা প্রচারের জন্যই ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সুতরাং, বুদ্ধের আবির্ভাবের পর হিন্দু ধর্ম হয়ে উঠেছিল বৌদ্ধ-হিন্দু ধর্ম বা হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্ম। দুটি ধর্ম বিশ্বাসই বর্তমান বিশ্বে অবিচ্ছেদ্য এবং পরস্পর সম্পৃক্ত।

স্বামী বিবেকানন্দ যে কথা বলে বুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছিলেন আমি এখন তাই উদ্ধৃত করব –

“বুদ্ধ যে সময় জন্মগ্রহণ করেন তখন ভারতে একজন বড় আধ্যাত্মিক নেতা অর্থাৎ, এক মহান গুরুর আবির্ভাব প্রয়োজন ছিল।

বুদ্ধ কখনই বেদ, বর্ণ, ধর্মগুরু বা আচার-আচরণের কাছে নতি স্বীকার করেননি। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে সেই যুক্তি-তর্কে বিশ্বাসী ছিলেন, যে যুক্তি তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হত।

অন্য যেকোন শিক্ষকের তুলনায় বুদ্ধ ছিলেন অনেক বেশি নির্ভীক ও আন্তরিক।

বুদ্ধই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি বিশ্বকে এক সম্পূর্ণ নীতি-ব্যবস্থা উপহার দিয়েছিলেন। ঈশ্বর প্রেমই তাঁকে সকলের কাছে প্রিয় করে তুলেছিল। তিনি মানুষকে ভালোবাসতেন ভালোবাসার টানেই।

মানুষে মানুষে অভিন্নতার কথা প্রচার করতেন বুদ্ধ। নারী-পুরুষ সকলেরই যে সমান আধ্যাত্মিকতার অধিকার রয়েছে – এই শিক্ষাদর্শের প্রবক্তা ছিলেন তিনি।

বুদ্ধের সমস্ত মূল্যবোধ এবং শিক্ষার গুণাবলী লাভ করেছে ভারত। ভারতের ধর্মীয় পণ্ডিত ও বিদ্জ্জন তাঁদের সাহিত্যে বুদ্ধের এই মূল্যবোধ ও শিক্ষার গুণাবলীকে সন্নিবেশিত করেছেন। আমি তাই ভারতকে বৌদ্ধ ভারত বলেই মনে করি”।

ভারতের এক মহান হিন্দু দার্শনিকের এই যে গভীর শ্রদ্ধামিশ্রিত অভিজ্ঞতা তার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান হিন্দু ধর্মকে মনে-প্রাণে বৌদ্ধ-হিন্দু ধর্ম বললে ভুল কিছু বলা হবে না।

বুদ্ধ ছিলেন ভারতের এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক যিনি সকল ধর্মকেই গ্রহণ করেছিলেন তাঁর আদর্শ রূপে। ভারতে বহু আধ্যাত্মিক মহাগুরুর চিন্তাভাবনার ফসল ছিল হিন্দু ধর্ম এবং তাঁদের মধ্যে বুদ্ধই ছিলেন অগ্রগণ্য। আর এভাবেই গড়ে উঠেছে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতি বা চরিত্র।

বুদ্ধগয়ায় যে মহানির্বাণের অভিজ্ঞতা হয়েছিল বুদ্ধের তারই আলোয় আলোকিত হিন্দু ধর্ম।

এক প্রাচীন জাতির প্রথম সেবক হিসেবে আমি বুদ্ধকে শ্রদ্ধা জানাই শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের একজন সংস্কারক বলেই নয়, তাঁকে আমি মনে করি বিশ্ব ধর্মেরও সংস্কারক। তিনি আমাদের সকলের কাছে তুলে ধরেছেন এক নতুন বিশ্ব দর্শন যা শুধু আমাদের কাছেই নয়, সমগ্র বিশ্বের কাছেও অস্তিত্ব রক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন।

বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধগয়াকে যে একটি পবিত্র তীর্থস্থানের মর্যাদা দেন তা আমি জানি। আমরা ভারতে বুদ্ধগয়াকে এমনভাবে গড়ে তুলব যাতে এই স্থানটি এক আধ্যাত্মিক রাজধানী এবং বিশ্বের বৌদ্ধ সমাজের সঙ্গে ভারতের সভ্যতার এক অটুট বন্ধন রূপে প্রতিভাত হয়। পবিত্রতম এই স্থানটি আমাদের পরমাত্মীয় বৌদ্ধ জাতিগুলি যাতে তাদের আধ্যাত্মিক প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে সেজন্য ভারত সরকার সম্ভাব্য সকলরকম প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাবে।

বৌদ্ধ ধর্ম এবং আধ্যাত্মিক নেতৃবৃন্দের ঘোষণা পাঠ করে আমি আনন্দিত হয়েছি। কঠোর শ্রম এবং বিস্তারিত আলোচনার ফলশ্রুতি এই ঘোষণা। এটি একটি প্রামাণ্য নথি যা আমাদের আগামীদিনে পথনির্দেশ করবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সহনশীলতা, বৈচিত্র্য, সহমর্মিতা এবং ভ্রাতৃত্বের যে কথা সেদিন বলেছিলেন আমি তারই প্রতিধ্বনি করি। এই মহাসমাবেশে তাঁর বার্তা এবং এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর সতত সমর্থন নিঃসন্দেহে আমাদের শক্তি যুগিয়ে যাবে।

আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সংঘাত ও সংঘর্ষের ঊর্ধ্ব উঠে সভ্যতার সম্প্রীতি ও বিশ্ব শান্তি বজায় রাখার যে আহ্বান এই মহাসম্মেলন রেখেছে তা আমাদের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। আমাদের জ্ঞান উত্তরাধিকার সূত্রে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মেও যাতে সঞ্চারিত হয় এবং ব্যবহারিক ক্ষেত্রে তা যাতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে সেজন্য আপনাদের নিরন্তর ও সংকল্পবদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য আপনাদের সকলকে জানাই শুভেচ্ছা। শুধুমাত্র আমাদের বা অন্যের জন্যই নয়, সমগ্র মানবজাতির সমৃদ্ধি এবং বসুন্ধরার দান এই সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রেও তা একান্ত প্রয়োজন।

আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ; অসংখ্য ধন্যবাদ।