Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

বিশ্ব শান্তির জন্য কৃষ্ণগুরু একনাম অখন্ড কীর্তনে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্ব শান্তির জন্য কৃষ্ণগুরু একনাম অখন্ড কীর্তনে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর


নয়াদিল্লি, ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং –এর মাধ্যমে আসামের বরপেটায় কৃষ্ণগুরু সেবাশ্রমে বিশ্ব শান্তির জন্য আয়োজিত কৃষ্ণগুরু একনাম অখন্ড কীর্তনে ভাষণ দিয়েছেন। এক মাসব্যাপী এই কীর্তন গত ৬ জানুয়ারি থেকে কৃষ্ণগুরু সেবাশ্রমে শুরু হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষ্ণগুরু একনাম অখন্ড কীর্তন এক মাস ধরে চলছে। তিনি বলেন, জ্ঞান, সেবা ও মানবতার যে প্রাচীন ঐতিহ্য ভারতের রয়েছে, তার প্রচারে কাজ করেছেন কৃষ্ণগুরুজী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অনুষ্ঠানে গুরু কৃষ্ণ প্রেমানন্দ প্রভুজীর অংশগ্রহণ ও অন্য শিষ্যদের নিরলস প্রচেষ্টা একে সফল করে তুলেছে। তিনি বলেন, আজ এবং অতীতেও ব্যক্তিগতভাবে তিনি এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণগুরুর আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন এবং অদূর ভবিষ্যতে এই সেবাশ্রম ঘুরে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

কৃষ্ণগুরুজীর আয়োজনে প্রতি ১২ বছরে অখন্ড একনাম জপ অনুষ্ঠানের যে ঐতিহ্য রয়েছে, তার উপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্তব্য পালনের পাশাপাশি, আধ্যাত্মিক আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন ভারতীয় ঐতিহ্য ও পরম্পরার পরিচায়ক। তিনি বলেন, “এই আয়োজন ব্যক্তি-সমাজে কর্তব্য চিন্তা জাগ্রত করে। জনগণ বিগত ১২ বছরের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণের জন্য একত্রিত হন। পাশাপাশি, বর্তমানের মূল্যায়ন করে ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরি করা হয়”। 

প্রধানমন্ত্রী একনাম অখন্ড কীর্তন এক শক্তিশালী ঐতিহ্যের প্রতিষ্ঠা করে এবং উত্তর-পূর্বের ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিক চেতনার সঙ্গে সমগ্র বিশ্বের পরিচিতি ঘটায়।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, কৃষ্ণগুরুর জীবনের সঙ্গে জড়িত বিশেষ আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনা, প্রতিভা ও অসাধারণ ঘটনা – এই সবকিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়। তাঁর চিন্তাভাবনা আমাদের শিখিয়েছে যে, কোনও কাজ ছোট বা বড় হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ জনগণের উন্নতির জন্য ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ মন্ত্র নিয়ে কাজ করে চলেছে। এতদিন পর্যন্ত যাঁরা উপেক্ষিত ছিলেন, তাঁদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আসাম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এতদিন পর্যন্ত এই অঞ্চল উন্নয়ন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে ছিল। কিন্তু, বর্তমানে এই অঞ্চলের উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। 

এ বছরের বাজেটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনীতিতে পর্যটনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই, এবারের বাজেটে উত্তর-পূর্ব ভারতে ৫০টি পর্যটন গন্তব্য গড়ে তোলার সংস্থান রাখা হয়েছে। এর ফলে, এই অঞ্চল বিশেষ উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গঙ্গা বিলাস প্রোমোদ তরীটি শীঘ্রই আসামে পৌঁছবে। 

প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্য প্রচারে কৃষ্ণগুরু সেবাশ্রমের কাজের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাঁশ সম্পর্কিত আইনে পরিবর্তন এসেছে। এর ফলে, বাঁশ ব্যবসায়ীদের সামনে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বাজেটে যে ‘ইউনিটি মল’ – এর প্রস্তাব রাখা হয়েছে, তা কৃষকদের এবং আসামের যুবক ও শিল্পীদের জন্য বিশেষ সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী গামোসার প্রতি জনগণের বিশেষ আকর্ষণের কথাও উল্লেখ করেন। বর্তমানে এর চাহিদা বেড়েছে। তাই, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিও উপকৃত হচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন, এবারের বাজেটে এই ধরনের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য বিশেষ সংস্থান রাখা হয়েছে। মহিলাদের সশক্তিকরণের জন্য বিশেষ শংসাপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বেশিরভাগ বাড়িই মহিলাদের নামে করা হয়েছে। এছাড়াও, বাজেটে ত্রিপুরা, আসাম, নাগাল্যান্ড এবং মেঘালয়ের মহিলারা উপকৃত হবেন, এমন একাধিক সংস্থান রয়েছে। 

কৃষ্ণগুরুর শিক্ষাকে উদ্বৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলেরই উচিৎ নিজের আত্মাকে সন্তুষ্ট করা। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প দেশের উন্নয়নের জন্যই চালু করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনঅংশীদারিত্বের মাধ্যমে এই কর্মসূচিগুলি আরও সফলভাবে রূপায়ণ করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে তিনি স্বচ্ছ ভারত ও ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মতো প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’, পুষ্টি অভিযান, খেলো ইন্ডিয়া, ফিট ইন্ডিয়া, যোগ ও আয়ুর্বেদের মতো প্রকল্পগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কৃষ্ণগুরু সেবাশ্রমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ঐতিহ্যশালী শিল্পীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা কৌশল যোজনা চালু করা হচ্ছে। দেশ এই ধরনের শিল্পীদের কৌশল বিকাশের সংকল্প গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণগুরু সেবাশ্রমের সদস্যদের উদ্দেশে এই প্রকল্পে প্রচার চালানোর আহ্বান জানান। তিনি সেবাশ্রমের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আবেদনও জানান। পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১২ বছর পর আবার যখন এই অখন্ড কীর্তন হবে, তখন আমাদের দেশ হবে আরও অনেক বেশি শক্তিশালী। 

প্রেক্ষাপট:

পরমগুরু কৃষ্ণগুরু ঈশ্বর ১৯৭৪ সালে আসামের বরপেটার নাসত্রা গ্রামে কৃষ্ণগুরু সেবাশ্রমের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন, মহাবৈষ্ণব মনোহরদেবের নবম বংশধর। তিনি মহান বৈষ্ণব সন্তশ্রী শঙ্করদেবের অনুগামী ছিলেন। বিশ্ব শান্তির জন্য ৬ জানুয়ারি থেকে কৃষ্ণগুরু সেবাশ্রমে একমাসব্যাপী কৃষ্ণগুরু একনাম অখন্ড কীর্তনের আয়োজন করা হয়। 

 

PG/PM/SB