নয়াদিল্লি, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং – এর মাধ্যমে বিপর্যয় সহনশীল পরিকাঠামো সংক্রান্ত ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উপস্থিত বিশিষ্ট জনেদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তাঁদের এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিপর্যয়ের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির উপযোগী পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে কোনও উদ্যোগ শক্তিশালী হবে এবং এ সংক্রান্ত আলোচনা ফলপ্রসূ হয়ে উঠবে। ২০১৯ সালে কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (সিডিআরআই) গঠিত হওয়ার পর এই সংস্থার উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসার ঘটছে। বর্তমানে ৩৯টি রাষ্ট্র এবং ৭টি প্রতিষ্ঠান এই সংস্থার সদস্য। “ভবিষ্যতের জন্য এটি অত্যন্ত শুভ লক্ষণ”।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর ফলে, যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তার পরিমাণ ডলারে হিসেব করলেও জনসাধারণ, পরিবার এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব মূল্যায়ন করা অত্যন্ত কঠিন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে মানুষ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভূমিকম্পের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। ভূমিকম্পে ঘর-বাড়ি ভেঙে যাওয়ার ফলে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে জল পরিষেবা এবং নিকাশি ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ে। ফলস্বরূপ, জনস্বাস্থ্যে সঙ্কটের সৃষ্টি হয়। এমনকি, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সবমিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, “সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সহনশীল এক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আমাদের বিনিয়োগ করতেই হবে”। বিপর্যয় পরবর্তী সময়কালে নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলার সময় তা যাতে বিপর্যয় সহনশীল হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাই, ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের পরেই এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।
প্রকৃতি এবং বিপর্যয়কে দেশের গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখা যায় না বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান বিশ্বে সর্বত্রই যে কোনও বিপর্যয়ের প্রভাব অনুভূত হয়। কারণ, এখন পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্ত অন্য অংশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। “যখন প্রত্যেকটি দেশ উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলবে, তখনই সারা বিশ্বে সামগ্রিকভাবে এ ধরনের পরিকাঠামো নির্মিত হবে”। বিভিন্ন বিপর্যয়ের কারণে যে ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়, তার প্রভাব যেহেতু একাধিক রাষ্ট্রের উপর অনুভূত হয়, সেই কারণে সহনশীল পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলির অংশীদারিত্বের উপর তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই, সিডিআরআই – এর এই সম্মেলন এক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
শ্রী মোদী বলেন, “একটি অভিন্ন পরিকাঠামোগত ব্যবস্থাপনা অর্জন করতে আমাদের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ রাষ্ট্রগুলিকে সহায়তা করতে হবে”। ক্ষুদ্র উন্নয়নশীল দ্বীপরাষ্ট্রগুলি বর্তমানে বড়সড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। সিডিআরআই এ ধরনের রাষ্ট্রে ১৩টি বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়িত করছে। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে ডোমিনিকায় বিপর্যয় সহনশীল আবাসন এবং পাপুয়া নিউ গিনিতে বিপর্যয় সহনশীল পরিবহণ ব্যবস্থাপনা। এছাড়াও, তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ডোমিনিকা ও ফিজিতে দ্রুত সতর্কতামূলক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথাও জানান। সিডিআরআই গ্লোবাল সাউথ-কে অগ্রাধিকার দেওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
ভারতের সভাপতিত্বে জি-২০ গোষ্ঠীর বৈঠকে বিপর্যয় সংক্রান্ত ঝুঁকি হ্রাসের জন্য কর্মী গোষ্ঠী গঠনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ বিপর্যয় সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি, সিডিআরআই – এর প্রসারও ঘটবে। আগামী দু’দিন এই সম্মেলনে যে আলোচনা হবে, তা ফলপ্রসূ হবে বলে শ্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন।
PG/CB /SB