Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

‘বিকশিত ভারত বিকশিত ছত্তিশগড়’ কর্মসূচিতে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী

‘বিকশিত ভারত বিকশিত ছত্তিশগড়’ কর্মসূচিতে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লি, ২৪ ফেব্রুয়ারি,২০২৪

 

‘বিকশিত ভারত বিকশিত ছত্তিশগড়’ কর্মসূচিতে আজ এক ভিডিও মঞ্চে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে তিনি ৩৪,৪০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পাশাপাশি কয়েকটিকে আবার উৎসর্গ করেন জাতির উদ্দেশে। প্রকল্পগুলির আওতায় বিশেষভাবে জোর দেওয়া হবে রেল, সড়ক, কয়লা, বিদ্যুৎ এবং সৌর জ্বালানির মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ক্ষেত্রগুলির উন্নয়নে। 

প্রধানমন্ত্রীর আজকের কর্মসূচি উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে বিশেষ জোর দিয়ে তিনি বলেন যে দেশের যুব সমাজ, নারী সমাজ, দরিদ্র সাধারণ মানুষ এবং কৃষিজীবীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’ গড়ে তোলা হবে। এই নতুন ছত্তিশগড়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেবে নতুন নতুন অত্যাধুনিক পরিকাঠামো। আজকের এই প্রকল্পগুলি থেকে ছত্তিশগড়বাসীর জীবনে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধারও প্রসার ঘটবে।

জাতীয় তাপবিদ্যুৎ নিগম (এনটিপিসি)-এর বৃহদায়তন তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের সুযোগ এখন নাগরিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে অনেক কম খরচে। ১,৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের আজ শিলান্যাসও করেন প্রধানমন্ত্রী। ছত্তিশগড় রাজ্যটিকে সৌর জ্বালানি উৎপাদনের এক বিশেষ কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলার সরকারি উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতে নাগরিকদের ব্যয়ের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনতে বিশেষভাবে সচেষ্ট। তিনি জানান যে ‘প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর’ কর্মসূচির আওতায় বিনা ব্যয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১ কোটি পরিবার এর ফলে উপকৃত হতে যাচ্ছে।

রুফটপ সোলার প্যানেল সংস্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কথাও আজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এর সাহায্যে সংস্থাপিত সৌর প্যানেলগুলি থেকে উৎপাদিত ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিবারগুলি বিনা খরচে ব্যবহার করতে পারবে। উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ সরকার ক্রয় করে নেবে তাদের কাছ থেকে। যার ফলে, সংশ্লিষ্ট নাগরিকরা হাজার হাজার টাকার অতিরিক্ত আয় ও উপার্জনের সুযোগও লাভ করবেন। শ্রী মোদী আরও বলেন যে ‘অন্নদাতা’রা যাতে ‘শক্তিদাতা’র ভূমিকাও পালন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হল সরকারের এক অন্যতম বিশেষ লক্ষ্য। এর আওতায় পতিত ও অনুর্বর কৃষি জমিতে ছোট ছোট সৌর প্রকল্প স্থাপনের জন্য কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

ছত্তিশগড়ে ডবল ইঞ্জিন সরকারের দেওয়া গ্যারান্টির বাস্তবায়ন প্রচেষ্টার বিশেষ প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই রাজ্যের লক্ষ লক্ষ কৃষক তাঁদের দু’বছরের বকেয়া বোনাস ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছেন। কেন্দুপাতা সংগ্রহের মাধ্যমে যাঁরা জীবিকা নির্বাহ করতেন, তাঁদের বিশেষ ভাতা দেওয়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ইতিমধ্যেই পালন করা হয়েছে। অন্যদিকে, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ এবং ‘হর ঘর নল সে জল’ – এই দুটি কর্মসূচিও জোর কদমে এগিয়ে চলেছে। পরীক্ষা গ্রহণের সময় যে সমস্ত অসাধুতার আশ্রয় গ্রহণ করা হত, সে সম্পর্কে তদন্ত ও অনুসন্ধান চালিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘মেহতারি বন্দন যোজনা’র জন্য রাজ্যের মহিলাদের অভিনন্দিত করেন প্রধানমন্ত্রী। 

শ্রী মোদী বলেন, ছত্তিশগড়ের কৃষকরা কঠোর পরিশ্রমী। এই রাজ্যটির তরুণ-তরুণীদের মধ্যে মেধা ও দক্ষতারও কোন অভাব নেই। তাছাড়া, প্রাকৃতিক সহায়সম্পদে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ ছত্তিশগড় রাজ্যটি। এ সমস্ত কিছুই ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’ গড়ে তুলতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে বলে তিনি মনে করেন। এই রাজ্যটি বহুদিন ধরে পিছিয়ে থাকার জন্য পূর্ববর্তী সরকারগুলির বংশানুক্রমিক রাজনৈতিক স্বার্থকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মোদীর কাছে এই রাজ্যের সকলেই হলেন তাঁর নিজের পরিবার-পরিজন এবং তাঁদের সকল স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন মোদীর কাছে এক সঙ্কল্প বিশেষ। এই কারণেই ‘বিকশিত ভারত’ এবং ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’-এর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে তিনি দৃঢ় প্রচেষ্ট। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর সেবক হিসেবে আমি তাঁদের কাছে কঠোর ও নিরলস শ্রমের গ্যারান্টি দান করতে পারি। বিশ্বে ভারতের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করে তোলার যে গ্যারান্টি তিনি ২০১৪ সালে দিয়েছিলেন, তারও পুনরাবৃত্তি করেন এদিন। তিনি ঘোষণা করেন যে দরিদ্র নাগরিকদের অর্থ যারা লুন্ঠন করে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি কখনই পিছিয়ে যাবেন না। তাই, সরকারি অর্থ দরিদ্র সাধারণ মানুষদের কল্যাণেই তিনি ব্যবহার করতে আগ্রহী। এইভাবেই দরিদ্র সাধারণ মানুষের জন্য বিনামূল্যে রেশন, বিনা খরচে চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা, সুলভ ওষুধ, বাসস্থান, পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিশ্রুত জল, গ্যাস সংযোগ এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা করতে তিনি বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছেন। ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’র গাড়িটি পৌঁছে যাচ্ছে দেশের প্রতিটি গ্রামে। এর মাধ্যমেই দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ‘মোদী গ্যারান্টি’র বার্তা। 

গত ১০ বছরের ‘মোদী গ্যারান্টি’ প্রসঙ্গটির উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূর্ব প্রজন্মগুলির স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এক নতুন ও উন্নত ভারত গড়ে তুলতে তিনি স্থির সঙ্কল্প এবং এই নতুন ভারতেরই অভ্যুদয় ঘটছে পর্যায়ক্রমে। প্রসঙ্গত, ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি এবং আধুনিক ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন যে কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তরের মাধ্যমে নাগরিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে ৩৪ লক্ষ কোটি টাকা পৌঁছে দিয়েছে। অন্যদিকে, ‘মুদ্রা’ যোজনার আওতায় কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভর কর্মসূচির ব্যবস্থা করতে দেশের তরুণ ও যুবকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে হস্তান্তরিত হয়েছে ২৮ লক্ষ কোটি টাকার মতো আর্থিক সহায়তা। আবার, ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’র আওতায় সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন যে পূর্ববর্তী সরকারগুলির আমলে অর্থ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে নানারকম রাজনীতি করা হত। ফলে, সার্বিক বিষয়টিতে স্বচ্ছতারও অভাব ছিল। কিন্তু, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় দুর্নীতি যখন সমূলে উৎপাটিত হচ্ছে, তখনই সূচনা হচ্ছে নতুন নতুন উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞের। এর সুবাদে কর্মসংস্থানের সুযোগও হচ্ছে ক্রমপ্রসারিত। দেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টিও ছিল এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। সুপ্রশাসন এবং সুপরিচালনের হাত ধরে নতুন নতুন রেল ও সড়ক কাঠামো গড়ে তোলার ওপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

তিনি বলেন যে এই কর্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে গড়ে উঠবে ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’ এবং আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠতে চলেছে বর্তমান ভারত। ঐ সময়কালে নতুন নতুন উন্নয়নের এক বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছে যাবে এই রাজ্যটিও। যাঁরা এই প্রথম ভোটদাতার স্বীকৃতি লাভ করতে চলেছেন, সেই সমস্ত তরুণ নাগরিকদের কাছে এ হল এক বিশেষ সুযোগের মুহূর্ত। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হবে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধা। তাদের স্বপ্নগুলিকে সফল ও সার্থক করে তুলবে ‘বিকশিত ছত্তিশগড়’।

PG/SKD/DM