Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

বালিয়ায় ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বল যোজনা’ উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ

বালিয়ায় ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বল যোজনা’ উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ


বিপুল সংখ্যায় আগত আমার ভাই ও বোনেরা,

মহান সন্ন্যাসী ভৃগুর ভূমিতে আপনারা থাকেন, সকলকে প্রণাম। ভগবান ব্রহ্মাও এই ভূমিতে নেমে এসেছিলেন। ভগবান রাম এখান থেকেই বিশ্বামিত্র মুনির সঙ্গে গিয়েছিলেন। এই পবিত্র সুন্দর ভূমিতে দাঁড়িয়ে আপনাদের সকলকে হাতজোড় করে প্রণাম জানাই।

ভাই ও বোনেরা, আমি আগেও বালিয়া এসেছি। এই মাটির সন্তান সিপাহী বিদ্রোহের নায়ক বিপ্লবী মঙ্গল পান্ডে থেকে শুরু করে চিতু পান্ডে পর্যন্ত প্রত্যেক প্রজন্মে বিপ্লবের ঐতিহ্য প্রমাণ করে যে এই মাটি কত বীরভোগ্যা। এই মাটির সঙ্গে আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় চন্দ্রশেখর মহোদয়ের নামও যুক্ত রয়েছে। এই উত্তরপ্রদেশের মাটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বাবু জয়প্রকাশ নারায়ণ, রাম মনোহর লোহিয়া এবং দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মতো মনীষীদের নামও। এই উত্তর প্রদেশ মাটি এমনই আরও অনেক মহান মানুষের জন্মভূমি, তাঁদের সকলকে আমার শত শত প্রণাম। আপনাদের আন্তরিক ভালোবাসাকে শ্রদ্ধা জানাই।
আপনারা যত ভালোবাসেন, ততই আমাকে ঋণগ্রস্ত করেন। আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আপনাদের এই ভালোবাসার ঋণ আমি সুদ সহ ফিরিয়ে দেওয়ার সংকল্প নিয়ে কাজ করছি। আপনাদের সার্বিক উন্নয়নসাধনের মাধ্যমে সুদ সহ তা ফিরিয়ে দেব।

আজ পয়লা মে, মে দিবস, গোটা বিশ্ব আজকের দিনটিকে শ্রমিক দিবস হিসেবে উদযাপন করছে আর আজ ভারতে এই ‘মজদুর নম্বর-১’ নরেন্দ্র মোদী দেশের সকল শ্রমিকের পৌরুষ, পরিশ্রম, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কর্মযজ্ঞে তাঁদের অংশগ্রহণকে কোটি কোটি অভিনন্দন জানাচ্ছে।

ভাই ও বোনেরা, আগে সারা বিশ্বে একটি শ্লোগান শোনা যেত, সেই শ্লোগানে রাজনীতির গন্ধও মিশে থাকাটাও স্বাভাবিক ছিল – দুনিয়ার মজদুর এক হও! শ্রেণী সংগ্রামের স্বার্থে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করার এই আহ্বান আকাশে-বাতাসে গুঞ্জরিত হত। যাঁরা এই দর্শনকে পাথেয় করে চলতেন, ভাই ও বোনেরা, আজ বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্রে তাঁরা ধীরে ধীরে নিজেদের স্থান হারাচ্ছেন। একবিংশ শতাব্দীতে এই ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ আহ্বান যথেষ্ট নয়, একবিংশ শতাব্দীর পরিস্থিতি ও প্রয়োজন আলাদা। সেজন্য একবিংশ শতাব্দীর মন্ত্র একটাই হতে পারে ‘দুনিয়ার মজদুর বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ কর, যুক্ত কর’!

তখন ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’-এর সময় ছিল, আর আজ ‘দুনিয়ার মজদুর বিশ্বকে যুক্ত কর’ আহ্বানের সময়। আর বিশ্বকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় রাসায়নিক হল শ্রমিকের ঘাম। এই ঘামের মধ্যেই বিশ্বকে ঐক্যব্দধ করার শক্তি রয়েছে।

ভাই ও বোনেরা, আপনারা ভারতীয় জনতা পার্টিকে সংখ্যাধিক্যের ভোটে বিজয়ী করেছেন। দীর্ঘ ৩০ বছর পর দিল্লিতে একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার ক্ষমতায় এসেছে। যেদিন এন ডি এ-র সকল দলের নির্বাচিত সাংসদরা আমাকে নেতা নির্বাচন করেন, সেদিন সংসদের সেন্ট্রাল হল-এ আমার প্রথম ভাষণে বলেছিলাম যে, আমার সরকার দেশের দরিদ্রদের প্রতি সমর্পিত। ভাই ও বোনেরা, আমরা কথা রেখেছি। ইতিমধ্যেই শ্রম আইন এবং শ্রমিকদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছি। আপনারা শুনলে দুঃখ পাবেন, আমরা এসে দেখি, ৩০ লক্ষেরও বেশি শ্রমিক সরকারি পেনশন পান, মাসে ১৫ টাকা, ২০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা মাত্র। আপনারা বলুন তো ঐ পেনশন তুলতে যে বৃদ্ধ শ্রমিক যাবেন, তাঁর বাসভাড়াই এর থেকে বেশি লাগবে কি না! কিন্তু যুগ যুগ ধরে তাঁরা প্রতি মাসে এই সামান্য পেনশন পেতেন। আমরা ক্ষমতায় এসে ন্যূনতম পেনশন মাসে ১ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত নিই। সেই সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই কার্যকর হয়েছে, আর ৩০ লক্ষেরও বেশি পরিবার উপকৃত হয়েছেন।

ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশে গরিবদের স্বার্থে নানা পরিকল্পনা নিয়ে অনেক আলাপ-আলোচনা হয়, তাঁদের কল্যাণে কাজ করার গালভরা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। আমরা সেপথে না হেঁটে একটি ‘শ্রম সুবিধা পোর্টাল’ চালু করি। এর মাধ্যমে ৮টি গুরুত্বপূর্ণ শ্রম আইনকে মিশিয়ে সেগুলি সরলীকরণের কাজ করি। এই প্রথম দেশে সকল শ্রমিককে একটি স্বতন্ত্র ‘লেবার আইডেন্টিটি নম্বর’ বা এল আই এন দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে তাঁদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে গোটা দেশে তাঁদের কাজে সুযোগদানের পরিসর তৈরি হয়েছে। আমরা তাঁদের জন্য একটি ‘ন্যাশনাল কেরিয়ার সার্ভিস পোর্টাল’ও তৈরি করেছি। এর মাধ্যমে চাকরিদাতা ও চাকরি প্রার্থীর মধ্যে সহজ যোগাযোগ গড়ে উঠবে।

ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশে অনেক বছর ধরেই বোনাস দেওয়ার আইন রয়েছে। আইনটি হল – যাঁদের বেতন ১০ হাজার টাকার কম, কোম্পানি চাইলে তাঁদের বোনাস দিতে পারে। আজকের দিনে ১০ হাজার দিয়ে কী হয়? আমরা সেজন্য ন্যূনতম রোজগার ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২১ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধু তাই নয়, আগে বোনাস দেওয়া হতো সাড়ে তিন হাজার টাকা, আমরা ন্যূনতম বোনাস সাড়ে সাত হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাঁদের এর থেকে বেশি পাওয়া উচিৎ, তাঁরা সেটাও পাবেন।

ভাই ও বোনেরা, আগে শ্রমিকরা একটি কোম্পানি ছেড়ে অন্য কোম্পানিতে চাকরি নিলে, তাঁদের পি এফ-এর টাকা ফেরৎ পেতেন না। দেশের রাজকোষে এরকম ফেরৎ না দেওয়া টাকার পরিমাণ হল প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। আমরা ক্ষমতায় এসে আইন পাশ করি যে, কোম্পানি পরিবর্তন হলেও কর্মচারীর পি এফ পরিবর্তন হবে না। নতুন কোম্পানির বেতন কাঠামো অনুযায়ী, পি এফ-এর টাকা পুরনো অ্যাকাউন্টে জমা হতে থাকবে। ফলস্বরূপ, যাঁদের পি এফ-এর টাকা বকেয়া রয়েছে, সরকারের রাজকোষে পড়ে থাকা ২৭ হাজার কোটি টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে যাবে। এভাবে গরিব শ্রমিকের পরিশ্রমের টাকা তাঁদেরকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করেছি।

ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে চার কোটি শ্রমিক নির্মাণ ক্ষেত্রে কাজ করেন। আমরা শ্রমিক আইনে পরিবর্তন এনে তাঁদের চিকিৎসাখাতে খরচের জন্য বিমা চালু করেছি। কোনও নির্মাণ শ্রমিক অসুস্থ হলে ঐ বিমা কোম্পানিগুলি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য থাকবে। পাশাপাশি, তাঁদের জন্য চালু করা পেনশন প্রকল্প থেকেও তাঁরা লাভবান হবেন।

ভাই ও বোনেরা, উত্তরপ্রদেশ দেশকে অনেক অনেক প্রধানমন্ত্রী দিয়েছে। তা হলে এই রাজ্যে দারিদ্র্য বৃদ্ধির কারণ কী? সরকারি নীতিতে এমনকি খামতি ছিল, যা গরিব মানুষকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত করে তুলতে পারেনি। ভাই ও বোনেরা, একটু আগেই ধর্মেন্দ্রজী বলছিলেন, গাজীপুরের সাংসদ নেহরুর আমলে গোটা দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি সংসদে বলেছিলেন, আমার পূর্ব উত্তরপ্রদেশের ভাই ও বোনেরা এত গরিব যে তাঁরা পশুর গোবর ধুয়ে তাঁর মধ্য থেকে যে শস্যদানা পাওয়া যায়, সেগুলি খেয়ে বেঁচে থাকেন। তাঁর এই মন্তব্য শুনে সংসদে আলোড়ন উঠেছিল, এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে প্যাটেল কমিশন বসানো হয়েছিল। আজ থেকে ৫০ বছর আগে প্যাটেল কমিশন যে উপদেশগুলি দিয়েছিল, সেগুলি কি বাস্তবায়িত হয়েছে? একটি পরামর্শ ছিল – তাড়ীঘাট, গাজীপুর এবং মৌ-এর মধ্যে রেল সংযোগ গড়ে তোলা হোক। গত ৫০ বছর ধরে এই পরামর্শ কাগজেই থেকে গিয়েছিল। এই প্রথম ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ ভাই মনোজ সিনহা’র উদ্যোগে প্যাটেল কমিশনের সেই উপদেশ বাস্তবায়িত হতে চলেছে। সেজন্য আমি মনোজ সিনহাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। তাঁর নিয়মিত প্রয়াসে এখন গঙ্গার ওপর রেল ও সড়ক যোগাযোগের সেতু গড়ে উঠবে। পরিকাঠামোর যত উন্নয়ন হবে, উন্নয়নও তত ত্বরান্বিত হবে।

ভাই ও বোনেরা, আজ আমি বালিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে দেশের ১ কোটি পরিবারকে অভিনন্দন জানাতে চাই। আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে এই ১ কোটি ১০ লক্ষেরও বেশি পরিবার রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি ত্যাগ করেছে। আজকের যুগে মানুষ এমনকি পরিবারের কারও জন্য কিছু ত্যাগ করতে রাজি থাকেন না। আপনারা দেশের গরিব মানুষদের স্বার্থে এই ত্যাগ স্বীকার করেছেন। সেজন্য আপনাদের সকলকে আমি অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানাই। আপনাদের ত্যাগ করা গ্যাস সিলিন্ডারগুলি যে গরিব পরিবারগুলির হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি, তাঁদের হাততালির শব্দ হয়তো টেলিভিশনের মাধ্যমে আপনাদের কানে পৌঁছচ্ছে।

ভাই ও বোনেরা, আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আপনারা যে ত্যাগ করছেন, সেই টাকা সরকারের রাজকোষে যাবে না। আমি কথা রেখেছি। ১৯৫৫ সাল থেকে দেশে রান্নার গ্যাস বিতরণের কাজ চলছে। এত বছরে দেশের ১৩ কোটি পরিবার রান্নার গ্যাসের সংযোগ পেয়েছেন। ভাই ও বোনেরা, ৬০ বছরে ১৩ কোটি, আর আমরা এক বছরে ৩ কোটিরও বেশি পরিবারের হাতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দিতে পেরেছি।

ভাই ও বোনেরা, অনেকে ভাবছেন, মোদী এই প্রকল্প বালিয়া থেকে কেন শুরু করলেন? আপনারা নিশ্চিত থাকুন, এর পেছনে কোনও রাজনীতি নেই। অদূর ভবিষ্যতে এখানে কোনও নির্বাচনও নেই।

ভাই ও বোনেরা, গত সপ্তাহে আমি ঝাড়খন্ডে একটি প্রকল্পের উদ্বোধনে গিয়েছিলাম, তার কিছুদিন আগে মধ্যপ্রদেশে, আর তার কিছুদিন আগে হরিয়ানায় বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও অভিযান চালু করেছিলাম। ঐ রাজ্যগুলিতেও অদূর ভবিষ্যতে কোনও নির্বাচন নেই। আমরা হিসাব করে দেখেছি, উত্তর প্রদেশে অন্যান্য জেলার তুলনায় বালিয়ায় গ্রাম পিছু গড় গ্যাস সিলিন্ডার সংযোগ সবচেয়ে কম। সেজন্য আমরা বালিয়া থেকে এই প্রকল্প শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখনও এই অঞ্চলে ৮ শতাংশ দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারে গ্যাস সিলিন্ডারের সংযোগ রয়েছে। আমরা সেই পরিস্থিতি শুধরানোর চেষ্টা করছি। হরিয়ানায় দেশের মধ্যে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের সংখ্যা ছিল ন্যূনতম। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যেই হরিয়ানায় বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প শুরু করেছিলাম, যার সুফল আমরা ইতিমধ্যেই পেতে শুরু করেছি। তেমনই, পূর্ব উত্তর প্রদেশ তথা পূর্ব ভারত’কেই পশ্চিম ভারতের সমকক্ষ করে তুলতে আমরা ‘পূবে তাকাও’ নীতি গ্রহণ করেছি, যাতে পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট ছোট রাজ্যগুলির উন্নয়নসাধনের মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।

একটা সময় ছিল যে, রান্নার গ্যাস নিয়ে অনেক রাজনীতি হতো। অনেকেই এখনও এই রাজনীতি বুঝতে পারেন না। আমি রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মনে করাতে চাই, যাঁরা দিল্লিতে বাতানুকূল ঘরে বসে বড় বড় উপদেশ দেন, তাঁদেরকে মনে করাতে চাই, এক সময় প্রত্যেক সাংসদ ২৫টি করে গ্যাস সিলিন্ডার সংযোগের কুপন পেতেন। তাঁরা গর্বের সঙ্গে বলতেন, গত এক বছরে আমি ২৫টি পরিবারকে গ্যাস সিলিন্ডারের সংযোগ এনে দিয়েছি। পাশাপাশি, তাঁরা তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ কালোবাজারে তা বিক্রিও করে দিতেন। অনেকে ১০-১৫ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের সংযোগ পেতেন। আর এখন গত এক-দেড় বছরে প্রত্যেক সাংসদ এলাকায় ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার মানুষ এই সংযোগ পেয়েছেন। আমরা তিন বছরের মধ্যে ৫ কোটি দরিদ্র পরিবারে গ্যাস সিলিন্ডার সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার সংকল্প নিয়েছি। এটা কম কথা নয়। ২০১৯ সালে মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতে আমরা এই লক্ষ্য পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মহাত্মা গান্ধীর প্রতি এটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধার্ঘ্য।

ভাই ও বোনেরা, আমরা এই কাজকে এত অগ্রাধিকার দিয়েছি কারণ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন যে, কাঠের উনুনে রান্না করলে একদিনে মা, বোন এবং পরিবারের সদস্যদের ৪০০টি সিগারেটের ধোঁয়ার সমান ক্ষতি হয়। আমরা ডাক্তারদের বলতে শুনেছি যে, সিগারেট খেলে ক্যান্সার হয়। কাজেই দেশের মা ও বোনেদের এই সমস্যা থেকে বাঁচানোর জন্য এছাড়া আর কোনও পথ আমাদের কাছে খোলা ছিল না। ধনীদের স্বার্থ দেখার জন্য দেশে একের পর এক সরকার এসেছে। কিন্তু আমরা গরিবদের স্বার্থ দেখতে এসেছি। সেজন্য তিন বছরে ৫ কোটি পরিবারকে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দিয়ে ঐ পরিবারগুলির মানুষকে নানারকম রোগ থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি।

ভাই ও বোনেরা, শুধু তাই নয়, যে মহিলাদের নামে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার সংযোগ দিচ্ছি, তাঁদের ভর্তুকির টাকা তাঁদের জন ধন অ্যাকাউন্টে জমা হবে। যাঁরা গরিব মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চান, সেই সরকারের সঙ্গে অন্য সরকারের এটাই পার্থক্য। আজ ভারত সরকার, উত্তর প্রদেশের উন্নয়নে যত টাকা খরচ করছে, পূর্ববর্তী কোনও সরকার তা করেনি। কারণ, আমরা চাই, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে গরিব রাজ্যগুলির উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। গঙ্গা সাফাই অভিযান সাধারণ মানুষের অংশীদারিত্বে সফল হবে। সেজন্য সবাই মিলে সংকল্প গ্রহণ করুন। মা গঙ্গা এবং সরযূর তটে অবস্থিত আমাদের বালিয়া। এখন আমরা মা গঙ্গার কোলে বসে আছি। সেজন্য মা গঙ্গা’কে পরিচ্ছন্ন করে তোলার সংকল্প প্রত্যেক নাগরিককেই নিতে হবে। আমরা নিজেরা যাতে গঙ্গাকে দূষিত না করি এবং অন্যদেরকেও করতে না দিই। মা’কে নোংরা করার মতো পাপ আর কিছুতে হয় না। আমরা যদি স্থির সংকল্প নিই, তা হলে বিশ্বের কোনও শক্তিই মা গঙ্গাকে দূষিত করতে পারবে না।

ভাই ও বোনেরা, আমরা প্রত্যেক গরিব মানুষের জীবনকে উন্নত করতে চাই। আজ পয়লা মে শ্রমিক দিবস। শ্রমিকরা সকলেই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসেন। ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশে দারিদ্র্য দূরীকরনের জন্য অনেক কথা বলা হয়েছে। অনেক পরিকল্পনা গড়ে তোলা হয়েছে। গরিব মানুষের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে একের পর এক নির্বাচনে জয়লাভ করে যাঁরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা কেন কিছু করতে পারলেন না? আসলে ভোট বাক্সের কথা ভেবে উন্নয়ন পরিকল্পনা গড়ে তুললে তা বাস্তবায়ন খুব কঠিন। দারিদ্র্য দূর করতে হলে দরিদ্র মানুষদের মনে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামর্থ্য গড়ে তুলতে হবে। তাঁদের মনে ইচ্ছাশক্তি জাগিয়ে তুলতে হবে। তাঁদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান, বাসস্থান, শৌচালয়, পানীয় জল, বিদ্যুৎ সংযোগ ইত্যাদি সুনিশ্চিত করে তবেই গরিব মানুষের সামর্থ্য বৃদ্ধি সম্ভব। ভাই ও বোনেরা, আমরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি।

স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেছে। এখনও দেশে ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগে পৌঁছয়নি। এই একবিংশ শতাব্দীতেও ঐ গ্রামগুলিতে মানুষ অষ্টাদশ শতাব্দীর মতো জীবনযাপন করেন। আমি গত বছর ১৫ আগস্ট লালকেল্লার প্রাকার থেকে ঘোষণা করেছি যে, আগামী ১ হাজার দিনের মধ্যে ঐ ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেব। রোজ হিসাব নিচ্ছি। যে উত্তর প্রদেশ দেশকে এতজন প্রধানমন্ত্রী দিয়েছে, সেই উত্তর প্রদেশে এখনও ১ হাজার ৫২৯টি গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পৌঁছয়নি। আমরা এই কাজে হাত দেওয়ার পর আড়াইশো দিনও হয়নি, ইতিমধ্যেই ঐ গ্রামগুলির মধ্যে ১ হাজার ৩২৬টিতে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যে গ্রামগুলিতে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি, কিছুদিনের মধ্যেই সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। কারণ, আমরা উত্তর প্রদেশে প্রত্যেকদিন তিনটি করে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছি।

ভাই ও বোনেরা, গোটা দেশে আজ যে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বল যোজনা সূচনা হচ্ছে, দেশের ১২৫ কোটি জনগণ প্রায় ২৫ কোটি পরিবারের মানুষ, সেই ২৫ কোটির মধ্যে ৫ কোটি পরিবারের জন্য এই প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বল যোজনা। এটি একটি বিরল প্রকল্প, যার মাধ্যমে ৫ কোটি পরিবার উপকৃত হবেন। এহেন প্রকল্প বালিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা রাম মনোহর লোহিয়া, পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়, চন্দ্রশেখর এবং বাবু জয়প্রকাশ নারায়ণের আশীর্বাদ পাচ্ছি। আমি আরেকবার আমাদের সাংসদ ভাই ভরত’কে কৃতজ্ঞতা জানাই। ধর্মেন্দ্র প্রধান ও তাঁর টিমকে অভিনন্দন জানাই। তাঁদের উৎসাহ ও উদ্দীপনায় এই প্রান্তিক পরিবারগুলি আজ ‘পেট্রোলিয়াম সেক্টর’-এর সঙ্গে যুক্ত হল। এই সুযোগ্য নেতৃত্বের জন্য ধর্মেন্দ্রজী’কে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

PG/SB/SB