১। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ অক্টোবর ভারতে সরকারী সফর করেন। নতুনদিল্লিতে সরকারী নানা কর্মসূচীতে যোগদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ৩ থেকে ৪ অক্টোবর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ভারতে অর্থনৈতিক শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন।
২। অত্যন্ত উষ্ণ ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে দুই প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত আলোচনা করেন।এর পর তাঁরা দ্বিপাক্ষিক নানা চুক্তি সাক্ষরের অনুষ্ঠানের পৌরহিত্য করেন। তিনটি দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। উভয় নেতা বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত দাঁড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক এবং সৌভাতৃত্বের যোগাযোগের উপর। এই সম্পর্ক প্রতিফলিত করে সমন্বয়মূলক দ্বিপাক্ষিক অংশিদারিত্বকে, যার ভিত্তি হল সার্বভৌমত্বর প্রতি শ্রদ্ধা, সাম্য পারস্পরিক বিশ্বাস এবং বোঝাপড়া । এটি কৌশলগত অংশিদারিত্বকে অনেকটাই ছাড়িয়ে যায়। উভয় নেতাই ইতিবাচক এবং সুসংহত ভাবে আঞ্চলিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে দুটি দেশের মধ্যে যে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তার সুযোগের সদ্ব্যবহারের উপর উভয় নেতা সহমত পোষণ করেন।
ভারত ও বাংলাদেশ- এক অবিচ্ছেদ্য কৌশলগত সম্পর্ক
৩। ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্মনিরপেক্ষতা সহ দুটি দেশের মধ্যে থাকা অন্যান্য নানা বিষয়ে সাদৃশ্য রয়েছে, তার ফলেই এই অংশিদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বলে দুই প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সব মুক্তিযোদ্ধা, ভারতীয় সৈনিক এবং বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক শহিদ হয়েছিলেন, তাঁদের উদ্দেশে দুই প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশের জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাঁকে বাস্তবায়িত করার লক্ষে চিরাচরিত এবং অচিরাচরিত এলাকায় দুই প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক মুল্যবোধ সংক্রান্ত অংশীদারিত্ব এগিয়ে নিয়ে যাবার বিষয়ে ঐক্যমত্যে আসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমৃদ্ধশালী, শান্তিপূর্ণ, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
সীমান্ত সুরক্ষা এবং ব্যবস্থাপনা
৪। বাংলাদেশ সরকারের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নিরলস প্রচেষ্টাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশংসা করেন। উভয় দেশ এবং এই অঞ্চলের শান্তি এবং স্থিতাবস্থার রক্ষায় সন্ত্রাসবাদ একটি বড় সমস্যা বলে দুই প্রধানমন্ত্রীই মনে করেন। যে কোন রকমের সন্ত্রাসমুলক কার্যকলাপের বিরোধীতা করে তাঁরা সব রকমের সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার বিষয়ে তাঁদের অঙ্গীকার আবারো ব্যক্ত করেন। গত আগষ্ট মাসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারতে সফরের সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যে আলোচনা হয়, সেটিকে অত্যন্ত সফল বলে তাঁরা উল্লেখ করেন। মৌলবাদী গোষ্ঠী, উগ্রপন্থী, সন্ত্রাসবাদী, চোরাচালানকারী, জাল নোট পাচারকারী এবং অন্যান্য় সংঘবদ্ধ অপরাধীদের মোকাবিলায় তাঁরা নিবিড় সহযোগিতা গড়ে তোলার উপর জোর দেন।
৫। উভয়পক্ষই দুদেশের নাগরিকদের যাওয়া আসা্র প্রক্রিয়া সহজ সরল করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নাগরিকদের সড়ক ও রেলপথে ভারতে আসার সময়ে ভ্রমন সংক্রান্ত নথিপত্র সরলীকরণের উদ্যোগের জন্য শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি স্থল বন্দর ব্যবহার করে ভারতে বাংলাদেশী পর্যটকদের ঢোকার সময় সকলপ্রকার বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার আবেদন জানান। উভয় পক্ষই বৈধ নথীপত্রের ভিত্তিতে বাকি নিষেধাজ্ঞা ক্রমপর্যায়ে উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সহমত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ত্রিপুরার আখাউড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে এই উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
৬। উভয় নেতাই শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং অপরাধমুক্ত সীমান্তর গড়ে তোলার বিষয়ে একটি কার্যকরী সীমান্ত ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এর জন্য আন্তর্জাতিক সীমান্তে যে যে স্থানে এখনো বেড়া দেবার কাজ বাকি রয়েছে, তা দ্রুত সম্পন্ন করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে যে কোন ধরণের নাগরিকের জীবনহানির ঘটনা অনভিপ্রেত বলে উভয় নেতাই সহমত হন। সে কারণে দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীকে একযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার উপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার ফলে এই ধরণের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে।
৭। উভয় নেতাই বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এই লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সমঝোতাপত্র দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়টিকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।
দুই দেশের লাভজনক ব্যবসায়িক অংশীদারীত্বর লক্ষ্যেঃ-
৮। স্বল্প উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের তকমা থেকে বেড়িয়ে আসায় ভারত বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপকভাবে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারীত্ব চুক্তি ( সিইপিএ) সাক্ষরের বিষয়ে দুটি দেশ যৌথ পর্যবেক্ষণের বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে।
৯। আখাউড়া-আগরতলা বন্দর দিয়ে পণ্য যাওয়াআসার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করার যে আবেদন ভারত রেখেছিল, বাংলাদেশ তা বিবেচনা করছে। অদূর ভবিষ্যতে নিয়মিত বাণিজ্যের সকল সামগ্রীর উপর থেকে এই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে বলে বাংলাদেশ জানিয়েছে।
১০। বাংলাদেশ থেকে পাটজাত দ্রব্য সহ যে সব পণ্য উপর ভারত অ্যান্টি ডাম্পিং এবং প্রতারণা বিরোধী শুল্ক আরোপ করায় যে সমস্যাগুলি চলছিল, সেগুলির উপর থেকে ওই শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ জানায়। উভয় নেতাই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বাণিজ্যে ক্ষমতা নির্মাণ ও সহযোগিতার কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
১১। প্রত্যন্ত সীমান্ত অঞ্চলের মানুষদের জন্য নির্মিত সীমান্ত হাটগুলি খুব ফলপ্রসূ হয়েছে, এই অভিমত প্রকাশ করে, উভয় নেতাই আধিকারিকদের সহমতের ভিত্তিতে আর-ও ১২টি এই ধরণের হাট তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
১২। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই) এবং ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস ( বিআইএস) এর মধ্যে সমঝোতা পত্রর পুনর্নবিকরণের বিষয়টিকে উভয় নেতাই স্বাগত জানিয়েছেন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে পণ্য সামগ্রির বাণিজ্যে সমতা আসবে। দুটি দেশই এশিয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় গবেষণাগার স্বীকৃতির সহযোগিতা সংক্রান্ত জোটের সদস্য হওয়ায়, বিএবি এবং এনএবিএল-এর থেকে প্রাপ্ত শংসাপত্র মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৩। ভারতীয় বাজারে নিঃশুল্ক এবং কোটা মুক্ত বাংলাদেশী পণ্য আমদানির সিদ্ধান্তকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশংসা করেছেন। প্রথমবারের মত ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তা্নিকৃত পণ্যর পরিমাণ ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন উভয় নেতাই। এক বছরের নিরিখে এই হার ৫২% বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৪। উভয় দেশ বস্ত্র এবং পাট ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দুই প্রধানমন্ত্রীই কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক এবং বাংলাদেশের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রকের মধ্যে সমঝোতা পত্র দ্রুত চূড়ান্ত করার উপর অভিমত পোষণ করেন।
স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে সংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
১৫। আকাশপথ, জলপথ, সড়কপথ এবং রেলপথে যোগাযোগ বাড়লে বাংলাদেশ এবং ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি সহ আরো অন্যান্য অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করার জন্য পারস্পরিক সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে উভয় নেতাই গুরুত্ব দেন,এর ফলে উভয় দেশই উপকৃত হবে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর দিয়ে উত্তরপূর্ব ভারত সহ ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতির নিয়ম তৈরি হওয়ার বিষয়ে উভয় নেতাই স্বাগত জানিয়েছেন।
১৬। অভ্যন্তরীণ জলপথ এবং উপকূলীয় অঞ্চলে জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণের বিপুল সম্ভাবনাকে উভয় নেতাই গুরুত্ব দিয়েছেন। ধুলিয়ান-গড়গরি-রাজশাহী-দৌলতদিয়া-আরিচা পথ দিয়ে অভ্যন্তরীণ জলপরিবহনের মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করার সিদ্ধান্তকে তাঁরা স্বাগত জানান। এই সংক্রান্ত প্রোটোকলের আওতায় দাউদকান্দি-সোনামুড়া পথটিকেও যুক্ত করা হবে।
১৭। দুই দেশের সামুদ্রিক বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহণের ফলে আর্থিক সুবিধে বৃদ্ধি পাবে। তাই এই বিষয়ে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুটি দেশই গুরুত্ব আরোপ করেছে।
১৮। দুটি দেশের মধ্যে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহণকে সহজতর করতে উভয়েই বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যালস চুক্তির অন্তর্গত দেশগুলির মধ্যে যারা চুক্তিটি বাস্তবায়িত করতে প্রস্তুত রয়েছে, তাদের সঙ্গে কাজ শুরু করার জন্য সম্মত হয়েছে। এর জন্য ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক মোটর ভেহিক্যালস চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে উভয় দেশ কাজ করছে।
১৯। দুই দেশের মধ্যে সড়ক পরিবহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকা-শিলিগুড়ি বাস পরিসেবা সূচনারপরিকল্পনাকে দুই প্রধানমন্ত্রীই স্বাগত জানিয়েছেন।
২০। উভয় নেতাই ঢাকায় এবছরের আগস্ট মাসে জলসম্পদ সচিবদের মধ্যে আলোচনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ১৯৯৬ সালে গঙ্গা জল বন্টন চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ যে জল পেয়ে থাকে, তার সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য প্রস্তাবিত গঙ্গা-পদ্মা বাঁধ প্রকল্পর জন্য সম্ভাব্য দিকগুলি বিবেচনা করতে একটি যৌথ কারিগরী কমিটি গঠন করা হয়েছে।
২১। উভয় নেতা মনু, মুহুরি, খোয়াই, গুমতি, ধরলা এবং দুধকুমার౼ এই ছয়টি নদীর জলবন্টন সংক্রান্ত অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়া কাঠামো তৈরিতে তথ্যের আদানপ্রদান এবং ফেনী নদীর জল বণ্টন সংক্রান্ত অন্তরীণ চুক্তির খসড়া কাঠামো তৈরিতে যৌথ নদী কমিশনের কারিগরি পর্যায় সংক্রান্ত কমিটিকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
২২। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, দুই দেশের সরকারের মধ্যে ২০১১ সালে তিস্তার জলবন্টন সংক্রান্ত যে মতৈক্য হয়েছিল, তা চুক্তি হিসেবে বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের জনগণ অপেক্ষা করছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, তাঁর সরকার এই সংক্রান্ত চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীদারদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছে।
২৩। ত্রিপুরার সাব্রুম শহরের পানীয় জলের জন্য ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক জল তোলার কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য ঢাকায় দুই দেশের জলসম্পদ সচিবদের বৈঠকে গৃহিত সিদ্ধান্তের বিষয়ে উভয় নেতা প্রশংসা করেছেন।
২৪। দুই নেতাই রেল পরিবহণে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনার দিকগুলিতে গুরুত্ব দিয়েছেন। এবছরের আগস্টে দুই দেশের রেলমন্ত্রীদের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনায় তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
২৫। উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ বাড়াতে মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে চার দিনের পরিবর্তে পাঁচ দিন এবং বন্ধন এক্সপ্রেস সপ্তাহে এক দিনের পরিবর্তে দুই দিন চালানোর সিদ্ধান্তে দুই প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানিয়েছেন।
২৬। বাংলাদেশের রেল পরিসেবায় সাহায্যর জন্য ভারতের যেসব জিনিস সরবরাহ করার কথা ছিল তা দ্রুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের সৈয়দপুর ওয়ার্কশপের আধুনিকীকরণের জন্য ভারতের তরফে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২৭। বাংলাদেশকে সাহায্যর অঙ্গ হিসেবে ভারত ব্রডগেজ এবং মিটারগেজ রেল ইঞ্জিন সরবরাহের দিকটি বিবেচনা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে বৃদ্ধি পাবে।
২৮। দুই দেশের মধ্যে বিমান পরিবহণের ক্ষমতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের জন্য উভয় নেতাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই বছর গ্রীষ্ম থেকে প্রতি সপ্তাহে বিমান পরিবহণের পরিসেবা চলতি ৬১ থেকে বাড়িয়ে ৯১ করা হয়েছে। ২০২০ সালের শীতকালে তা বেড়ে করে সপ্তাহে ১২০ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি
২৯। প্রতিবেশির সঙ্গে আরো সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষে দুই নেতাই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে সহমত হয়েছেন। এই প্রসঙ্গে ১৯৭১ এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দুই বাহিনীর যৌথ অভিযানের গৌরবময় ইতিহাসের দিকটি বিবেচিত হয়েছে।
৩০। সমুদ্রপথে নিরাপত্তা সংক্রান্ত অংশীদারিত্বের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, দুই প্রধানমন্ত্রীই তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলাদেশে র্যাডারের মাধ্যমে উপকুল অঞ্চলে নজরদারীর জন্য একটি সমঝোতা পত্র দ্রুত সাক্ষরের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
৩১। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বিধিবদ্ধ শর্তে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার যে চুক্তি এপ্রিল মাসে চূড়ান্ত হয়েছিল, তা দ্রুত রূপায়নের লক্ষ্যে উভয় নেতাই সহমত হয়েছেন।
উন্নয়নের ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করা
৩২। বাংলাদেশে তৃণমূল স্তরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে বিষয়ে ভারত যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে সাহায্য করছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
৩৩। বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়নে তিনটি সহজ শর্ত ঋণ ব্যবহারে যে অগ্রগতি হয়েছে, দুই প্রধানমন্ত্রী তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা স্ব স্ব আধিকারিকদের এই ঋণ ব্যবস্থার আওতায় প্রকল্পগুলি রূপায়ণ দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
৩৪। ঢাকায় এক্সিম ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিদের দপ্তরে বাংলাদেশকে সহজে ঋণের সীমা ব্যবহারের সুযোগের জন্য একটি কাঠামো চুক্তি সাক্ষরের বিষয়ে উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
৩৫। দুই নেতা আজ ভিডিওর মাধ্যমে তিনটি দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন। সেগুলি হলঃ-
ক। বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণে রান্নার গ্যাস আমদানি
খ। ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে ছাত্রদের জন্য বিবেকানন্দ ভবন(ছাত্রাবাস)-এর উদ্বোধন
গ। খুলনায় ইন্সটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এ ভারত-বাংলাদেশ পেশাদার দক্ষতা বিকাশ সংস্থার উদ্বোধন করা হয়।
৩৬। বাংলাদেশের সরকারি আধিকারিকদের দক্ষতা বিকাশে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রসঙ্গে উভয় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। ভারত , বাংলাদেশের বিচার বিভাগীয় আধিকারিকদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর সংখ্যা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সীমান্তের ওপারে শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা
৩৭। বাংলাদেশ থেকে সেদেশের ট্রাকের মাধ্যমে ত্রিপুরাতে বিপুল হারে রান্নার গ্যাস আমদানী করার প্রকল্পের দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। এর ফলে সীমান্তের ওপারে জ্বালানী সংক্রান্ত ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৩৮। সাম্প্রতি ঢাকায় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য দুই দেশের সপ্তদশ বৈঠকে যে মতৈক্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে, উভয় পক্ষ তাকে স্বাগত জানিয়েছে। এর ফলে ভারতের কাটিহার , বাংলাদেশের পার্বতীপুর এবং ভারতের বরনগরে ৭৬৫ কে ভি ডাবল সার্কিট বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে সীমান্তের ওপারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। দুই নেতাই মনে করেন , এরফলে আন্ত-আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। ভারত, নেপাল ও ভুটানে যে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বাংলাদেশ তা ব্যবহার করতে পারবে।
শিক্ষা এবং যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে আদানপ্রদান
৩৯। ভবিষ্যতের কথা মনে রেখে দুই দেশের যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে উভয়পক্ষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। দুদেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতার বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি সমঝোতাপত্র সাক্ষরের বিষয়টি তাঁরা আলাপ আলোচনায় উল্লেখ করেন। উভয় নেতাই মনে করেন যে, বাংলাদেশের উপযোগী কাঠামোবদ্ধ প্রশিক্ষণ কর্মসূচী আরো উৎপাদন ক্ষম হয়ে উঠবে।
৪০। শিক্ষাগত যোগ্যতার পারস্পরিক স্বীকৃতি দেবার জন্য একটি সমঝোতা প্ত্র চূড়ান্ত করার বিষয়ে দুই নেতা প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন।
২০১৯ সালে মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ জন্মশতবর্ষে এবং ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে ও ২০২১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তীতে সাংস্কৃতিক সহযোগিতামূলক কর্মসূচী
৪১। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, ২০২১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করার বিষয়ে দুই নেতাই জোর দিয়েছেন। এই দুই ঐতিহাসিক বছরকে স্মরণ করতে দুটি দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান বাড়াতে তাঁরা মতৈক্যে পৌঁছেছেন। ২০১৯-২০তে পারস্পরিক সুবিধেজনক সময়ে বাংলাদেশে ভারত উৎসব আয়োজন করার, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
৪২। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচী সংক্রান্ত সমঝোতাপত্র পুণর্নবীকরণ প্রক্রিয়াটিকে দুই প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানিয়েছেন।
৪৩। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে যৌথভাবে কাহিনী চিত্র নির্মাণের জন্য এনএফডিসি এবং বিএফডিসি-র মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে দুই প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন।
৪৪। উপনিবেশিক শক্তি এবং অসাম্যর বিরুদ্ধে অহিংসপন্থায় সংগ্রামের দর্শনে খ্যাত মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ জন্মশতবর্ষ সারা বিশ্ব জুড়ে উদযাপিত হচ্ছে। এই উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
৪৫। ভারতের জাতীয় সংগ্রহালয় এবং বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু সংগ্রহশালার মধ্যে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতাপত্রের বিষয়ে উভয় নেতাই সহমত পোষণ করেছেন। তাঁরা এই সমঝোতাপত্র দ্রুত চূড়ান্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বাস্তুচ্যুতদের প্রসঙ্গঃ-
৪৬। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষদের আশ্রয় দেওয়ায় এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের মানবিক এই উদ্যোগে সাহায্যর জন্য কক্সবাজারে সাময়িক শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের ভারত পঞ্চম দফায় নানা জিনিষ পাঠাবে। এর মধ্যে রয়েছে তাবু, মহিলাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এক হাজার সেলাই মেশিন সহ নানা ত্রাণ সামগ্রী। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ভারত প্রথম দফায় ২৫০টি বাড়ি তৈরি করেছে। ওই এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে আরো একগুচ্ছ প্রকল্প রূপায়ণে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
৪৭। মায়ানমার থেকে আসা বাস্তুচ্যুত মানুষদের নানা চাহিদা মেটাতে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ভারত যে মানবিক সাহায্য পাঠাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বাস্তুচ্যুত মানুষদের দ্রুত নিরাপদে প্রত্যার্পনের বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীই সহমত হয়েছেন। তাঁরা ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নে আরো উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন বলে মনে করেন।
আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ক্ষেত্রে অংশিদারত্বঃ
৪৮। রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্য বহুমুখি সংস্থায় নিবিড়ভাবে কাজ করার বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী তাঁদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। উন্নত রাষ্ট্রগুলি বিভিন্ন বিষয়ে যে সব অঙ্গীকার করেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে তা রূপায়নের জন্য দুই দেশ একযোগে কাজ করবে।
৪৯। দুই দেশ আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক স্তরে সহযোহিতার বিষয়ে সহমত পোষণ করে। বিমস্টেক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সমষ্টিগত সমৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন লক্ষ্য পূরণে দুটি দেশ উদ্যোগী হবে বলে জানান উভয় নেতা।
৫০। শেখ হাসিনার সফরকালে যে চুক্তি সাক্ষর এবং বিনিময় হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-
উপকুলীয় অঞ্চলে নজরদারী ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষে সমঝোতা পত্র
ভারত থেকে বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য পরিবহণের প্রয়োজনে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের ব্যবহারের লক্ষ্যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাব্রুম শহরে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের জন্য ফেনী নদী থেকে ভারতের ১.৮২ কিউসেক জল উত্তোলনের বিষয়ে সমঝোতাপত্র
বাংলাদেশকে সহজে ঋণ দানের জন্য চুক্তি
হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতাপত্র
সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান কর্মসূচির পুণর্নবীকরণ
যুবসংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা পত্র
৫১। চেন্নাই-এ বাংলাদেশের উপদুতাবাস খোলার জন্য সেদেশের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্মত হওয়ায় শেখ হাসিনা তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উচ্চপর্যায়ের সফরের মাধ্যমে সুস্থিতিমুলক উদ্যোগে গতি আনা
৫২। ভারত সফরকালে যে আন্তরিক উষ্ণ আতিথেয়তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সঙ্গে আসা প্রতিনিধিদলের সদস্যরা পেয়েছেন, তার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান।
৫৩। শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান। শ্রী মোদী আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। কুটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে তাঁর বাংলাদেশ সফরের দিন চূড়ান্ত হবে।
SSS/CB
Remarks by PM @narendramodi at the joint remote inauguration of 3 bilateral projects in Bangladesh- “मुझे खुशी है कि Prime Minister शेख हसीना जी के साथ तीन और bilateral projects का उद्घाटन करने का मौका मुझे मिला है”
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2019
पिछले एक साल में, हमने वीडियो लिंक से 9 projects को लान्च किया।आज के तीन projects को जोड़कर एक साल में हमने एक दर्जन joint projects लांच किए हैं।: PM
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2019
आज की ये तीन परियोजनाएं तीन अलग-अलग क्षेत्रों में हैं:— LPG import, vocational training और social facility: PM
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2019
बांग्लादेश से bulk LPG की supply दोनों देशों को फायदा पहुंचाएगी। इससे बांग्लादेश में exports, income और employment भी बढ़ेगा। ट्रॉन्सपोर्टेशन दूरी पंद्रह सौ किमी. कम हो जाने से आर्थिक लाभ भी होगा और पर्यावरण को भी नुकसान कम होगा।: PM
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2019
दूसरा project- Bangladesh-India Professional Skill Development Institute, बांग्लादेश के औद्योगिक विकास के लिए कुशल मैनपावर और टेक्निशियन तैयार करेगा।: PM
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2019
ढाका के रामकृष्ण मिशन में विवेकानंद भवन का project, जो दो महामानवों के ज़ीवन से प्ररेणा लेता है।हमारे समाजों और मूल्यों पर स्वामी रामकृष्ण और स्वामी विवेकानंद का अमिट प्रभाव है।: PM
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2019
मुझे खुशी है कि हमारी आज की बातचीत से हमारे संबंधों को और भी ऊर्जा मिलेगी।: PM
— PMO India (@PMOIndia) October 5, 2019
Benefits to the common man at the core of our relations
— Raveesh Kumar (@MEAIndia) October 5, 2019
PM @narendramodi & Bangladesh PM #SheikhHasina jointly inaugurated 3 projects which will directly improve the lives of both our people pic.twitter.com/JyWBoAWAfU
PM @narendramodi & Bangladesh PM #SheikhHasina jointly inaugurated the project for bulk import of LPG from Bangladesh to north-eastern India pic.twitter.com/lfBJTh955o
— Raveesh Kumar (@MEAIndia) October 5, 2019
PM @narendramodi & Bangladesh PM #SheikhHasina jointly inaugurated Common Facility Centre for SMEs which would generate employment + income for hundreds of people in Bangladesh pic.twitter.com/5v8CxJ3ZuM
— Raveesh Kumar (@MEAIndia) October 5, 2019
PM @narendramodi & Bangladesh PM #SheikhHasina jointly inaugurated Vivekanada Bhavan at Rama Krishna Mission, Dhaka which would provide facilities for more than 100 university students & scholars pic.twitter.com/Q1sfrxQCi5
— Raveesh Kumar (@MEAIndia) October 5, 2019
Had an excellent meeting with PM Sheikh Hasina. We reviewed the full range of bilateral ties between India and Bangladesh. pic.twitter.com/16nquL9a2y
— Narendra Modi (@narendramodi) October 5, 2019
This visit of PM Sheikh Hasina has led to remarkable outcomes for India-Bangladesh cooperation in the areas of water resources, energy, trade, ports and more.
— Narendra Modi (@narendramodi) October 5, 2019
People from both nations will benefit thanks to them.
I congratulate the people of India and Bangladesh! pic.twitter.com/cA9T0ye55x
The Sabroom town of Tripura will get 1.82 cusec of drinking water from the Feni river in Bangladesh.
— Narendra Modi (@narendramodi) October 5, 2019
This augurs extremely well for the people of Tripura.
Glad that India and Bangladesh are strengthening cooperation in harnessing water resources to further ‘Ease of Living.’ pic.twitter.com/VFFkFLr0Hy
A win-win for India and Bangladesh!
— Narendra Modi (@narendramodi) October 5, 2019
The supply of LPG through Bangladesh, to Tripura, using Bangladeshi trucks ensures:
Reliable gas support at lower transportation costs for India.
Employment generation in Bangladesh. pic.twitter.com/BBMMPyuz5E
You would be happy to know that the protocol route has been expanded to include new inland river ports near Tripura. The focus on port-led development will ensure greater commercial linkages and more prosperity. pic.twitter.com/1LZmo54MDQ
— Narendra Modi (@narendramodi) October 5, 2019
Adding to the growth of India’s Northeast.
— Narendra Modi (@narendramodi) October 5, 2019
Signing of Standard Operating Procedures for the use of Chattogram and Mongla ports of Bangladesh will enable easier transportation of goods to and from our Northeast.
Fascinating products from the Northeast will get better markets! pic.twitter.com/FICrYLLYWF