Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতির সঙ্গে উন্নততর আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্ভব করে তোলার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী

প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতির সঙ্গে উন্নততর আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্ভব করে তোলার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী


নয়াদিল্লি, ১৭ অক্টোবর ২০২২

উন্নততর এবং অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগে দেশের কৃষকদের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তোলার লক্ষ্যে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সেইসঙ্গে, ক্ষেত-খামার থেকে বাজার তথা বিপণনের দূরত্ব কমিয়ে আনতেও আমরা বদ্ধপরিকর। এই ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন দেশের ক্ষুদ্র কৃষকরা, কারণ ফল, শাকসবজি, মাছ এবং দুধের মতো পচনশীল পণ্যের উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নির্বাহ হয়।

আজ নয়াদিল্লিতে ভারতীয় কৃষি গবেষণা সংস্থায় আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান সম্মেলন, ২০২২’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন পন্থাপদ্ধতির প্রয়োগে যেমন আমাদের সচেষ্ট হতে হবে, অন্যদিকে তেমনই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে খোলা মনেই আমাদের গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন স্টার্ট-আপ সংস্থা এবং উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার সঙ্গে যুক্ত দেশের তরুণ সমাজকে ভারতীয় কৃষি ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ বলে উল্লেখ করেন তিনি। দেশের গ্রামীণ অর্থনীতির দিশারী বলে তিনি তাঁদের অভিহিত করেন। শ্রী মোদী বলেন, ব্যয়সাশ্রয় থেকে পরিবহণ – সবকিছুরই সমাধানসূত্র রয়েছে তাঁদের কাছে।

প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষি উৎপাদন ও প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ভবিষ্যতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সমাধানে প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতি হয়ে উঠতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। দেশে এ সম্পর্কে সচেতনতারও যথেষ্ট প্রসার ঘটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতির লক্ষ্যে গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের কৃষকরা ক্রমশ উদ্যোগী হয়ে উঠছেন। গুজরাটে জেলা ও গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যায়ে এজন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা রচনার কাজও ছকে ফেলা হচ্ছে।

আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার সঙ্কল্পকে বাস্তবায়িত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে কৃষিক্ষেত্রে সার ও ভোজ্যতেল আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। এছাড়া, চাহিদা ও যোগানের মধ্যেও যথেষ্ট ফারাক থেকে যায়। এই কারণে অশোধিত তেল ও গ্যাসের মতো পণ্যের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীল না থেকে জৈব জ্বালানি ও ইথানলের মাধ্যমে সমাধানের পথ আমাদের খুঁজে দেখতে হবে। ভোজ্যতেল ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে ‘মিশন অয়েল পাম’ কর্মসূচির সুযোগ গ্রহণ করার জন্য কৃষকদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তৈলবীজের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোজ্যতেল আমদানির মাত্রাও যে ক্রমশ কমিয়ে আনা সম্ভব, একথাও উল্লেখ করেন তিনি।

‘পিএম কিষাণ’-এর মতো রূপান্তরমুখী একটি উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকরা কিভাবে উপকৃত হতে পারেন তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’। এই কর্মসূচিটির সূচনার পর থেকে ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সরাসরি হস্তান্তরিত হয়েছে কৃষকদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে। দেশের ৮৫ শতাংশ কৃষকই হলেন ক্ষুদ্র কৃষিজীবী। এই কর্মসূচি তাঁদের কাছে এক বিরাট আশীর্বাদস্বরূপ।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান এবং জয় অনুসন্ধান’-এর একত্র সমাবেশ ঘটেছে আজকের এই ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান সম্মেলন’-এ। বর্তমান কৃষি ব্যবস্থার এটিই হয়ে উঠেছে মূলমন্ত্র। প্রধানমন্ত্রীর মতে, কিষাণ সম্মেলন হল কৃষকদের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তোলা, তাঁদের দক্ষতা ও ক্ষমতার প্রসার ঘটানো এবং উন্নত কৃৎকৌশলে সড়গড় হয়ে ওঠার এক বিশেষ মঞ্চ। তিনি জানান, ৬০০-টিরও বেশি ‘প্রধানমন্ত্রী সমৃদ্ধি কেন্দ্র’-এর আজ সূচনা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি থেকে শুধু সারই বিক্রি করা হবে না, সেইসঙ্গে তা দেশের কৃষকদের সঙ্গে এক নিবিড় বন্ধন গড়ে তুলবে। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’র নতুন আরও এক কিস্তির কথা ঘোষণা করে তিনি বলেন, কোনরকম মধ্যস্বত্ত্বভোগী ছাড়াই এই অর্থ সরাসরি হস্তান্তরিত হবে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। মোট ১৬ হাজার কোটি টাকার এই কিস্তির অর্থ দীপাবলীর আগেই পৌঁছে যাবে কৃষকদের কাছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন উর্বরক পরিযোজনা’ নামে একটি কর্মসূচিও আজ চালু করা হয়েছে। এর লক্ষ্য হল, ‘এক জাতি, একটিই সার’ নীতির বাস্তবায়ন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সুলভ মূল্যে উন্নতমানের সার পৌঁছে দেওয়া হবে কৃষকদের কাছে। ১০০ শতাংশ নিমের ব্যবহারের মাধ্যমে ইউরিয়া সারকে কিভাবে কালোবাজারির হাত থেকে বাঁচানো গেছে, সে কথারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের ছয়টি বৃহত্তম ইউরিয়া উৎপাদন কারখানা দীর্ঘকাল বন্ধ থাকার পর তাঁর সরকারের আন্তরিক উদ্যোগেই আবার চালু করা সম্ভব হয়েছে। ন্যানো-ইউরিয়ার মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে অধিক শস্যের ফলন বাস্তবায়িত হয়েছে। ইউরিয়ার পরিবহণ ব্যয় যে ভবিষ্যতে অনেকটাই হ্রাস পেতে চলেছে, একথাও এদিন ঘোষণা করেন তিনি। তিনি বলেন, এখন থেকে ভারত ব্র্যান্ডের উন্নতমানের ইউরিয়ার যোগান দেওয়া হবে কৃষিকাজের জন্য। এর ফলে, ব্যয়সাশ্রয়ী উপায়ে সার ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে শস্যের ফলনও বৃদ্ধি পাবে আশানুরূপভাবে।

আজ ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান সম্মেলন, ২০২২’-এর উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে দেশের ৬০০টি ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সমৃদ্ধি কেন্দ্র’ও আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন তিনি। সূচনা করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন উর্বরক পরিযোজনা’রও। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’র দ্বাদশ কিস্তির ১৬ হাজার কোটি টাকা এদিন কৃষকদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি হস্তান্তরের ঘোষণাও করেন তিনি। এছাড়াও, ‘ইন্ডিয়ান এজ’ নামে সারের ওপর একটি ই-ম্যাগাজিনেরও সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

 
PG/SKD/DM