Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী সর্দারধাম ভবন লোকার্পণ এবং সর্দারধাম দ্বিতীয় পর্বে কন্যা ছাত্রী নিবাসের ভূমি পুজোয় অংশ নিলেন

প্রধানমন্ত্রী সর্দারধাম ভবন লোকার্পণ এবং সর্দারধাম দ্বিতীয় পর্বে কন্যা ছাত্রী নিবাসের ভূমি পুজোয় অংশ নিলেন


নয়াদিল্লি, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সর্দারধাম ভবন লোকার্পণ করেন এবং সর্দারধাম দ্বিতীয় পর্বে কন্যা ছাত্রী নিবাসের ভূমি পুজোয় অংশ নেন। এই উপলক্ষে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধানমন্ত্রী আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, গণেশ উৎসবের সময় সর্দারধাম ভবনেরও সূচনা হচ্ছে। তিনি সকলকে গণেশ চতুর্থী, গণেশ উৎসব, ঋষি পঞ্চমী এবং কাশামাবনি দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান। মানবতার সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সর্দারধাম ট্রাস্ট্রের সঙ্গে যুক্ত সদস্য সংগঠনগুলির ভূমিকার প্রশংসা করেন। এ ধরনের সদস্য সংগঠনগুলি পতিদার সমাজের যুব সম্প্রদায়ের পাশাপাশি দরিদ্র মানুষ ও মহিলাদের ক্ষমতায়নে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ সূচনা হওয়া ছাত্রী নিবাসটি আরও বেশি বালিকাকে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে আসতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, অত্যাধুনিক সর্দারধাম ভবনে ছাত্রী নিবাসের পাশাপাশি আধুনিক গ্রন্থাগার রয়েছে, যা পড়ুয়াদের ক্ষমতায়নে সাহায্য করবে। এই ভবনেই গড়ে ওঠা শিল্পোদ্যোগ বিকাশ কেন্দ্রটি গুজরাটের সুদৃঢ় বাণিজ্যিক পরিচিতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে। এমনকি, সিভিল সার্ভিস সেন্টারটি সেই সমস্ত আগ্রহী যুবক-যুবতীকে সিভিল, প্রতিরক্ষা ও বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্রে কর্মজীবন গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, সর্দারধাম কেবল দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠবে না, বরং সর্দার সাহেবের আদর্শগুলিকে চিরন্তন রাখতে আগামী প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে।

শ্রী মোদী বলেন, আজ ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্বের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। আজকের দিনেই মানবতার ওপর আঘাত হানা হয়েছিল। কিন্তু এই দিনটি সমগ্র বিশ্বকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে। এক শতাব্দীর বেশি সময় পূর্বে ১৮৯৩-এর ১১ সেপ্টেম্বর শিকাগোতে বিশ্ব ধর্মসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই ঘটনার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগোতে বিশ্ব ধর্মসভায় দাঁড়িয়ে বিশ্বমঞ্চে ভারতের মানবিক মূল্যবোধগুলি তুলে ধরেছিলেন। আজ সমগ্র বিশ্ব এটা উপলব্ধি করছে যে কেবল মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে ৯/১১-র মতো বিপর্যয়ের স্থায়ী সমাধান সম্ভব। 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজ ১১ সেপ্টেম্বর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভারতের অন্যতম বিদ্বান, দার্শনিক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী সুব্রহ্মনিয়া ভারতীর ১০০তম মৃত্যু বার্ষিকী। মহাকবি ভারতীর তামিল লেখনিতে সর্দার সাহেবের ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর দর্শন যথার্থভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দের কাছ থেকে প্রেরণা নিয়ে এবং শ্রী অরবিন্দের কাছ থেকে প্রভাবিত হয়ে কাশীতে থাকার সময় মহাকবি ভারতী তাঁর চিন্তাধারায় এক নতুন দিশা পেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মহান এই কবির সম্মানে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্মানিক ‘সুব্রহ্মনিয়া ভারতী চেয়ার’ স্থাপনের কথা ঘোষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগে এই সাম্মানিক চেয়ার গড়ে তোলা হবে। শ্রী মোদী বলেন, সুব্রহ্মনিয়া ভারতী সর্বদাই মানবতা এবং ভারতের একতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তাই তাঁর আদর্শগুলি ভারতীয় চিন্তাভাবনা ও দর্শনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাট অতীত থেকে এখনও পর্যন্ত সমবেত প্রয়াসের এক উজ্জ্বল কেন্দ্র। তিনি বলেন, গান্ধীজি এখান থেকেই ডান্ডি যাত্রার সূচনা করেছিলেন যা আজও স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের সমবেত প্রয়াসের প্রতীক। একইভাবে, সর্দার প্যাটেলের নেতৃত্বে খেদা আন্দোলনে কৃষক, যুব সম্প্রদায় ও দরিদ্র মানুষের একতা ব্রিটিশ সরকারকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিল। শ্রী মোদী বলেন, এই প্রেরণা, এই প্রাণশক্তি এখনও আমাদের সামনে সমানভাবে অটুট রয়েছে। এর উজ্জ্বল নিদর্শন হল গুজরাটের মাটিতে সর্দার সাহেবের গগনচুম্বী মূর্তি ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেছনে পড়ে থাকা সমাজের সেই সমস্ত মানুষকে বিকাশের মূলস্রোতে নিয়ে আসার লক্ষ্যে নিরন্তর প্রয়াস চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আজ একদিকে দলিত ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষের অধিকার ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে, অন্যদিকে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা চালু হয়েছে। সরকারের এই প্রয়াস সমাজে নতুন আস্থার সঞ্চার করছে বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।

শ্রী মোদী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ভবিষ্যৎ বাজারের জন্য দেশের যুব সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় দক্ষতা দিয়ে প্রস্তুত করে তুলবে। এই প্রেক্ষিতে ‘স্কিল ইন্ডিয়া মিশন’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই কর্মসূচিতে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পেয়েছেন এবং আজ তাঁরা স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন। ন্যাশনাল অ্যাপ্রেন্টিসশিপ প্রোমোশন বা জাতীয় শিক্ষানবিশি উৎসাহ কর্মসূচিতে ছাত্রছাত্রীরা দক্ষতার মান আরও ক্ষুরধার করার পাশাপাশি, আরও বেশি উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন। শ্রী মোদী যোগ করেন, গুজরাটে বহু বছরের নিরন্তর প্রয়াসের ফলে আজ স্কুলছুটের সংখ্যা ১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। একইসঙ্গে, লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নতুন ভবিষ্যতের দিশা দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আজ গুজরাটের যুব সম্প্রদায়ের মেধা স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচির মাধ্যমে এক নতুন সুযোগ পাচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী পতিদার সমাজের প্রশংসা করে বলেন, তাঁরা যেখানেই গেছেন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নতুন পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। পতিদার সমাজের এই দক্ষতা কেবল গুজরাট বা ভারতেই নয়, সারা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পাচ্ছে। তিনি আরও জানান, পতিদার সমাজের আরও একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল, তাঁরা বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, ভারতের প্রতি তাঁদের টান এখনও অটুট। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে মহামারীর প্রভাব পড়লেও অর্থ ব্যবস্থায় পুনরুদ্ধারের গতি ক্ষতির তুলনায় বেশি। বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতিধর দেশগুলি যখন সংরক্ষণমূলক মানসিকতা নিয়েছে, ভারত তখন সংস্কারের পথে হেঁটেছে। বিশ্ব সরবরাহ শৃঙ্খল যখন ব্যাহত হয়েছে, তখন দেশে উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচি (পিএলআই) শুরু হয়েছে। বিদেশি লগ্নি আকর্ষণ করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে শ্রী মোদী জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বস্ত্রক্ষেত্রের জন্য সম্প্রতি উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচি চালু হয়েছে। এর ফলে সুরাটের মতো শহর উপকৃত হবে। 

 

CG/BD/DM/