Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পিএম আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশন-এর সূচনা করেছেন

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পিএম আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশন-এর সূচনা করেছেন


নয়াদিল্লী,  ২৫  অক্টোবর, ২০২১
 
 
    প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশন-এর সূচনা করেছেন। এদিন তিনি বারণসীর জন্য প্রায় ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ ডঃ মান্ডভিয়া, ডঃ মহেন্দ্র নাথ পান্ডে সহ রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী এবং জনপ্রতিনিধিরা।
 
    সমাবেশের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জানান, করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশ ১০০ টিকার ডোজ দেওয়ার একটি বড় মাইলফলক অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, “বাবা বিশ্বনাথের আর্শিবাদে, মা গঙ্গার অটুট মহিমায়, কাশীবাসির অটল বিশ্বাসের সঙ্গে সবার জন্য বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার অভিযান সফলভাবে এগিয়ে চলেছে।”
 
    প্রধানমন্ত্রী দুঃখপ্রকাশ করে জনান যে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়া হয়নি। এরজন্য নাগরিকদের যথাযথ চিকিৎসা করাতে এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ছুটে বেড়াতে হয়েছে। ফলে রোগীর অবস্থার অবনতি হয়েছে এবং আর্থিক চাপ বেড়েছে। মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র মানুষের হৃদ রোগের চিকিৎসা নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যে সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সার্বিক উন্নয়নের পরিবর্তে সাধারণ মানুষকে এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখেছিল। 
 
    শ্রী মোদী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশনের লক্ষ্য হল এই ঘাটতি পূরণ করা। আগামী ৪-৫ বছরে গ্রাম থেকে ব্লক, জেলা থেকে অঞ্চল এবং জাতীয় স্তরে জটিল স্বাস্থ্য পরিষেবা শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করে তোলায় হল এর প্রধান উদ্দেশ্য। এই নতুন মিশনের আওতায় সরকারের গৃহীত উদ্যোগের কথা বর্ণানা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘাটতি মেটাতে আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশনের তিনটি প্রধান দিক রয়েছে। প্রথমটি হল রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য বিস্তৃত সুবিধা তৈরি করা। এর আওতায় গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। সেখানে রোগের প্রাথমিক লক্ষ্যণ শনাক্তকরণে সুবিধা থাকবে। এই কেন্দ্রগুলিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা, পরামর্শ, বিনামূল্যে পরীক্ষা, বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার মতো সুবিধা মিলবে। গুরুতর অসুস্থতার জন্য ৬০০টি জেলায় ৩৫ হাজার নতুন ক্রিটিক্যাল কেয়ার শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 
 
    প্রধানমন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের দ্বিতীয় দিকটি হল রোগ নির্ণয়নের জন্য পরীক্ষার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা। এই মিশনের আওতায় রোগ নির্ণয় ও পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। দেশের ৭৩০টি জেলায় জনস্বাস্থ্য পরীক্ষাগার এবং ৩ হাজারটি ব্লকে জনস্বাস্থ্য ইউনিট গড়ে তোলা হবে। এছাড়াও ৫টি আঞ্চলিক জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, ২০টি মেট্রোপলিটন ইউনিট এবং ১৫টি বিএসএল পরীক্ষাগার এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন।
 
    শ্রী মোদী বলেন, এই মিশনের তৃতীয় দিকটি হল গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ। এই গবেষণাগারগুলি মহামারী বিষয়ে গবেষণার কাজ চালবে। পাশাপাশি বর্তমান ৮০টি ভাইরাল ডায়গনেস্টিক এবং গবেষণা পরীক্ষাগারকে শক্তিশালী করে তোলা হবে। ১৫টি জৈব নিরাপত্তা স্তরীয় পরীক্ষাগার চালু করা হবে। এছাড়াও ৪টি নতুন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ভাইরোলজি ও একটি জাতীয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডাব্লুএইচও-এর আঞ্চলিক গবেষণা প্ল্যাটফর্মও এই নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করে তুলবে বলেও মতপ্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানান, “এর অর্থই হল প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো মিশনের মাধ্যমে চিকিৎসা থেকে জটিল গবেষণা পর্যন্ত পরিষেবাগুলির জন্য দেশের প্রতিটি প্রান্তে একটি সম্পূর্ণ ইকো ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হবে।”
 
    প্রধানমন্ত্রী এই ব্যবস্থাপনায় কর্মসংস্থানের সম্ভাবনার দিক তুলে ধরে জানান, প্রধানমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো হল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের পাশাপাশি একটি আত্মনির্ভরতার অন্যতম মাধ্যম। শ্রী মোদী বলেন, সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য অর্জনে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে সকলে সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। স্বচ্ছ ভারত মিশন, জল জীবন মিশন, উজ্জ্বলা যোজনা, পোষণ অভিযান, মিশন ইন্দ্রধনুষের মতো প্রকল্পগুলি কোটি কোটি মানুষকে রোগ থেকে বাঁচিয়েছে বলেও তিনি জানান। আয়ুষ্মান ভারত যোজনার আওতায় ২ কোটিরও বেশি দরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশনের মাধ্যমে অনেকের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা গেছে। 
 
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন কেন্দ্রে এবং উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে এমন এক সরকার রয়েছে যা দরিদ্র, নিপীড়িত, অনগ্রসর শ্রেণী এবং মধ্যবিত্তের ব্যাথা-বেদনা বোঝে। শ্রী মোদী বলেন, দেশে স্বাস্থ্য সুবিধার উন্নতি সাধনে সরকার দিন-রাত কাজ করে চলেছে।
 
    প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উত্তরপ্রদেশে যে গতিতে নতুন মেডিকেল কলেজ খোলা হচ্ছে তা রাজ্যে মেডিকেল পড়ুয়াদের আসন সংখ্যা পূরণ করবে এবং প্রচুর পরিমাণে চিকিৎসক পাওয়া যাবে। এখন দরিদ্র পিতা-মাতারা সন্তানদের চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন থেকে বঞ্চিত হবেন না। 
 
    পবিত্র শহর কাশীর অতি দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, শহরের পরিকাঠামোগত করুণ অবস্থার জন্য সাধারণ মানুষ এখান থেকে প্রায় অন্যত্র চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে। কাশীর হৃদয় ও মন একই রয়েছে, শুধু শরীরে উন্নতি সাধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “গত ৭ বছরে বারাণসীতে যে কাজ হয়েছে তা গত কয়েক দশকে করা হয়নি।”
 
    প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরে কাশীর অন্যতম প্রধান সাফল্য বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি হিসেবে বিশ্বব্যাপি শ্রেষ্ঠত্বের দিকের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আজ প্রযুক্তি থেকে স্বাস্থ্য, বিএইচইউ-তে অভূতপূর্ব সুবিধা তৈরি হয়েছে। সারা দেশ থেকে তরুণ বন্ধুরা এখানে পড়াশোনার জন্য আসছেন।” 
 
    বারাণসীতে গত ৫ বছরে খাদি এবং অন্যান্য কুটির শিল্পের পণ্য বিক্রি ৯০ শতাংশ এবং উৎপাদন ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী পুনরায় দেশবাসীকে স্থানীয় পণ্যের বিষয়ে প্রচার ও সোচ্চার- ‘ভোকাল ফর লোকাল’-এর জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, স্থানীয় পণ্যের অর্থ  শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু পণ্যকে তুলে ধরা নয়, দেশবাসীর কঠোর পরিশ্রমের ফল হিসেবে যেকোন উৎপাদিত পণ্যকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা। তাই উৎসবের মরশুমে এই বিষয়ে প্রচার ও প্রসারের জন্য দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানান তিনি।
 
 
 
CG/SS/NS