নয়াদিল্লি, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে ‘ওড়িশা পর্ব ২০২৪’ – এর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। ভাষণে তিনি উপস্থিত ওড়িশার সকল ভাই ও বোনকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, এ বছর স্বভাবকবি গঙ্গাধর মেহেব – এর প্রয়াণ বার্ষিকী এবং তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়াও তিনি শ্রদ্ধা জানান ভক্ত দাসিয়া ভাউরি, ভক্ত সালাবেগা এবং ওড়িয়া ভাগবতের লেখক শ্রী জগন্নাথ দাসকে।
শ্রী মোদী বলেন, “ওড়িশা চিরকালই সন্ত ও বিদ্বানদের ভূমি”। তিনি বলেন যে, সন্ত ও বিদ্বানরা সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির লালনে বড় ভূমিকা নিয়েছেন। সরল মহাভারত, ওড়িয়া ভাগবতের মতো বই যাতে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেন যে, ওড়িশা ভাষায় মহাপ্রভূ জগন্নাথকে নিয়ে অনেক লেখা আছে। মহাপ্রভূ জগন্নাথের একটি কাহিনীর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভগবান জগন্নাথ সামনে থেকে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ভগবানের সরলতার প্রশংসা করেন। কারণ, ভগবান যুদ্ধে যাওয়ার সময় মণিকা গৌরিনী নামে এক ভক্তের হাত থেকে দই নিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন যে, ঐ কাহিনী থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। শ্রী মোদী বলেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হ’ল এই যে, যদি আমরা সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করি, তা হলে ভগবান নিজেই সেই কাজে নেতৃত্ব দেন। তিনি আরও বলেন, ভগবান সবসময় আমাদের সঙ্গে আছেন। আমাদের কখনই ভাবা উচিত নয় যে, দুঃখের সময় আমরা একা।
ওড়িশার কবি ভীম ভোই – এর থেকে পংক্তি আবৃত্তি করেন, যেখানে লেখা আছে – যতই না কষ্ট হোক, বিশ্বকে বাঁচাতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী এই সূত্রেই বলেন যে, এটাই হ’ল ওড়িশার সংস্কৃতি। শ্রী মোদী বলেন যে, পুরী ধাম ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর ধারণাকে শক্তিশালী করেছে। তিনি আরও বলেন, ওড়িশার বীর সন্তানরা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়ে দেশকে দিশা-নির্দেশ দিয়েছেন। পাইকাক্রান্তির শহীদদের ঋণ আমরা কখনই শোধ করতে পারব না। শ্রী মোদী বলেন সরকারের সৌভাগ্য যে, তাঁরা পাইকাক্রান্তি নিয়ে স্মারক ডাকটিকিট এবং মুদ্রা প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছে।
উৎকল কেশরী হরেকৃষ্ণ মেহতাবজিকে বর্তমানে সমগ্র দেশ স্মরণ করছে জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, সরকার তাঁর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী বিশালভাবে পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী অতীত থেকে এখনও পর্যন্ত দেশকে ওড়িশা যে নেতৃত্ব দিয়েছে, সেকথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জনজাতি সমাজ থেকে আগত দ্রৌপদী মুর্মুজি ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন, এটা আমাদের সকলের কাছে গর্বের বিষয়। তাঁরই অনুপ্রেরণায় আদিবাসীদের কল্যাণে কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আজ ভারতে রূপায়িত হয়েছে এবং এই কর্মসূচিগুলি শুধুমাত্র ওড়িশার নয়, সমগ্র ভারতের জনজাতি সমাজের কল্যাণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশা নারীশক্তির ভূমি। মাতা সুভদ্রা রূপে এই শক্তি প্রতিভাত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশা তখনই এগোবে, যখন ওড়িশার নারীরা এগোবেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর সুযোগ হয়েছে যে, কয়েকদিন আগে ওড়িশার মা-বোনেদের জন্য সুভদ্রা যোজনার সূচনা করার, যা ওড়িশার মহিলাদের কল্যাণ করবে।
শ্রী মোদী ভারতের সমুদ্রপথের শক্তিকে নতুন দিশা দেওয়ার কাজে ওড়িশার অবদানকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, ওড়িশায় গতকাল বালি যাত্রা সমাপ্ত হয়েছে, যা বিশালাকারে আয়োজিত হয়েছিল কার্তিক পূর্ণিমার দিনে কটকের মহানদীর তীরে। এছাড়াও শ্রী মোদী বলেন, বালি যাত্রা ভারতের সমুদ্রপথের শক্তির প্রতীক। অতীতের নাবিকদের সাহসের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের মতো আধুনিক প্রযুক্তি না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা সাহসের সঙ্গে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন। তিনি এও বলেন যে, বণিকরা জাহাজে চড়ে ইন্দোনেশিয়ার বালি, সুমাত্রা, জাভায় যেতেন, যাতে বিভিন্ন জায়গায় সমৃদ্ধ সংস্কৃতি পৌঁছনো এবং বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো সহজ হ’ত। শ্রী মোদী বলেন, বর্তমানে উন্নত ভারতের সংকল্প পূরণে ওড়িশার সমুদ্রপথের শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ বছর ধরে ওড়িশাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার লাগাতার প্রয়াসে নতুন ভবিষ্যতের আশা দেখা গেছে। অভূতপূর্ব আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য ওড়িশার মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, সেই আশায় এটি নতুন সাহস যোগাবে। সরকারের অনেক বড় বড় স্বপ্ন আছে এবং অনেক বড় লক্ষ্য আছে। ২০৩৬ সালে ওড়িশা রাজ্য প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পালন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সংকল্প ওড়িশাকে দেশের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী, সমৃদ্ধশালী এবং দ্রুতবিকাশশীল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, একটা সময় ছিল, ওড়িশা সহ ভারতের পূর্বাঞ্চলকে মনে করা হ’ত অনুন্নত। শ্রী মোদী বলেন, তিনি মনে করেন, ভারতের পূর্বাঞ্চল দেশের উন্নয়নের ইঞ্জিন। সেজন্য সরকার পূর্ব ভারতের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং সমগ্র পূর্ব ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত সব কাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন যে, বর্তমানে ওড়িশা ১০ বছর আগের তুলনায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে তিনগুণ বেশি বাজেট বরাদ্দ পাচ্ছে। তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরে ৩০ শতাংশ বেশি বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ওড়িশার উন্নয়নের জন্য। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, ওড়িশার সার্বিক উন্নতির জন্য সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বন্দর-ভিত্তিক শিল্পোন্নয়নের জন্য ওড়িশায় প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে”। সেজন্য ধামরা, গোপালপুর, অষ্টরঙ্গ, পালুর এবং সুবর্ণরেখা বন্দরের উন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ওড়িশা ভারতে খনিজ পদার্থের আকর। তিনি বলেন, ওড়িশাকে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে এগুলি শক্তিশালী করবে। তিনি আরও বলেন, এই ক্ষেত্রগুলির উপর জোর দিয়ে ওড়িশার জন্য উন্নয়নের নতুন পথ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
ওড়িশায় কাজু, পাট, তুলা, হলুদ এবং তৈলবীজের উৎপাদন প্রচুর বলে মন্তব্য করে শ্রী মোদী বলেন, সরকারের প্রয়াস এইসব পণ্যগুলিকে বৃহৎ বাজারে পৌঁছে দিয়ে কৃষকদের কল্যাণ করা। তিনি আরও বলেন, ওড়িশায় সামুদ্রিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের প্রসার ঘটানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য আন্তর্জাতিক বাজারে ওড়িশার সামুদ্রিক খাদ্যকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে পেশ করা।
লগ্নিকারকদের কাছে ওড়িশাকে পছন্দের গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারি প্রয়াসের উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশায় সহজে ব্যবসা করার বিষয়টির প্রসারে সরকার দায়বদ্ধ। ‘উৎকর্ষ উৎকল’ – এর মাধ্যমে বিনিয়োগকে আহ্বান করা হবে জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, ওড়িশায় নতুন সরকার গঠনের পরই প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদিত হয়েছে। তিনি বলেন যে, বর্তমানে ওড়িশার নিজস্ব ভাবনার পাশাপাশি আছে নিজস্ব পথনির্দেশ, যা বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মানঝিজি এবং তাঁর দলকে তাঁদের প্রয়াসের জন্য অভিনন্দন জানান।
শ্রী মোদী বলেন, ওড়িশার সম্ভাবনাকে সঠিকপথে চালিত করে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া যায়। ওড়িশার রণকৌশলগত অবস্থিতির সুযোগের সদ্ব্যবহার করে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের সুযোগ নেওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, “ওড়িশা পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ তালুক ছিল”। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মূল্যশৃঙ্খলে ওড়িশার গুরুত্ব আগামী দিনে আরও বাড়বে। তিনি আরও বলেন যে, সরকারের লক্ষ্য এই রাজ্য থেকে রপ্তানি বৃদ্ধি করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নগরায়নে ওড়িশার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই লক্ষ্যে সরকার নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আরও বেশি সংখ্যায় প্রাণবন্ত এবং সু-যোগাযোগ বিশিষ্ট শহর গড়ে তুলতে সরকার দায়বদ্ধ। ওড়িশায় টিয়ার-২ শহরগুলিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে সরকার। বিশেষ করে, পশ্চিম ওড়িশার জেলাগুলিতে, যেখানে নতুন পরিকাঠামোর উন্নয়ন নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারবে।
উচ্চ শিক্ষার বিষয়ে শ্রী মোদী বলেন, সারা দেশের ছাত্রদের জন্য ওড়িশা একটি নতুন আশা। এখানে অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা রাজ্যকে শিক্ষা ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি আরও বলেন যে, এই প্রয়াস রাজ্যে স্টার্টআপ পরিমণ্ডলের প্রসারের লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে।
ওড়িশা তার সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশার শিল্পকলা সে ওড়িশি নৃত্যই হোক অথবা ছবি, যা দেখা যায় পটচিত্র অথবা জনজাতির শিল্পের প্রতীক সৌর চিত্রাবলীতে – যা সকলকে মুগ্ধ করে। তিনি আরও বলেন, ওড়িশায় সম্বলপুরী, বমকাই এবং কোটপাদ বুনন শৈলী দেখার মতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যত শিল্প ও কারুকলাকে ছড়িয়ে দেব এবং সংরক্ষণ করব ওড়িশা মানুষের সম্মান তাতে আরও বৃদ্ধি পাবে।
ওড়িশার স্থাপত্য ও বিজ্ঞানের ঐতিহ্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোণারকের সূর্য মন্দির, লিঙ্গরাজ ও মুক্তেশ্বর মন্দিরের বিজ্ঞান, স্থাপত্য ও বিস্তৃতি তাদের কারু কৌশলের জন্য সকলকে মুগ্ধ করেছে।
পর্যটন ক্ষেত্রেও ওড়িশার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, ওড়িশার পাশাপাশি, দেশেও এমন একটি সরকার আছে, যারা ওড়িশার ঐতিহ্য ও পরিচিতিকে সম্মান করে। গত বছর জি-২০’র একটি সম্মেলন ওড়িশায় আয়োজিত হয়েছিল, সেকথা জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, বিভিন্ন দেশের প্রধান ও কূটনীতিকদের সামনে সূর্য মন্দিরের আকর্ষণকে তুলে ধরা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তিনি খুশি কারণ, মহাপ্রভূ জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গণের চারটি দরজার পাশাপাশি রত্ন ভান্ডারও খুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশার প্রতিটি পরিচিতির বিষয়ে বিশ্বকে জানাতে নতুন নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন আছে। তিনি এ প্রসঙ্গে উদাহরণ দেন যে, বালি যাত্রা দিবস ঘোষণা এবং উদযাপন করা যেতে পারে যাতে বালি যাত্রা আরও জনপ্রিয় হয় এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছতে পারে। তিনি আরও বলেন যে, ওড়িশি নৃত্যের মতো শিল্পের জন্য ওড়িশি দিবস পালন করা যেতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন জনজাতির ঐতিহ্য নিয়ে দিবস পালন করা যেতে পারে। তাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হবে পর্যটন ও ক্ষুদ্র শিল্পের সুযোগ সম্পর্কে। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে ভুবনেশ্বরে প্রবাসী ভারতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যা ওড়িশাকে বিপুল সুযোগ এনে দেবে।
বিশ্ব জুড়ে মানুষের নিজের মাতৃভাষা ও নিজের সংস্কৃতি ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন যে, তিনি খুশি, যেখানেই ওড়িয়া মানুষ থাকেন, তাঁরা কিন্তু নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা ও উৎসব নিয়ে চর্চা বজায় রাখেন। তিনি আরও বলেন যে, গায়ানায় তাঁর সাম্প্রতিক সফরে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, মাতৃভাষা ও সংস্কৃতির কত শক্তি, যা তাঁদের মাতৃভূমির সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখে। তিনি আরও বলেন, প্রায় ২০০ বছর আগে কয়েকশো শ্রমিক ভারত ছেড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁরা সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন রামচরিত মানস। এমনকি, আজও তাঁরা ভারতভূমির সঙ্গে একাত্মবোধ করেন। শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন যে, আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে এর উপকারিতা প্রত্যেকের কাছে পৌঁছতে পারে, যখন উন্নয়ন ও পরিবর্তন ঘটে। তিনি আরও বলেন যে, এইভাবেই ওড়িশাও নতুন উচ্চতা অর্জন করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই আধুনিক যুগে আমাদের শিকড়কে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আধুনিক পরিবর্তনগুলিকেও আপন করে নেওয়া জরুরি। ওড়িশা উৎসবের মতো অনুষ্ঠানগুলি এর মাধ্যম হতে পারে। তিনি বলেন যে, ‘ওড়িশা পর্ব’ – এর মতো অনুষ্ঠান আগামী দিনগুলিতে আরও বেশি করে করতে হবে এবং শুধুমাত্র দিল্লিতেই আবদ্ধ রাখলে হবে না। শ্রী মোদী বলেন, প্রয়াস নিতে হবে যাতে আরও বেশি করে মানুষ এতে অংশ নেন এবং স্কুল-কলেজ থেকেও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি নিশ্চিত হয়। দিল্লিতে বসবাসকারী অন্য রাজ্যের মানুষকে এতে অংশ নিয়ে ওড়িশাকে আরও জানবার আবেদন জানান প্রধানমন্ত্রী।
পরিশেষে শ্রী মোদী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন যে, আগামী দিনে এই উৎসবের রঙ ওড়িশার পাশাপাশি ভারতের প্রতিটি কোণে পৌঁছবে এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণের একটি কার্যকরী মঞ্চ হয়ে উঠবে বলে তাঁর আশা।
রেল, তথ্য ও সম্প্রচার, বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, ওড়িয়া সমাজের সভাপতি শ্রী সিদ্ধার্থ প্রধানও অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।
PG/AP/SB