নতুন দিল্লি, ৫ই জুন, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরিবেশের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে জীবনশৈলী সংক্রান্ত আন্দোলন “লাইফস্টাইল ফর দ্য এনভায়রনমেন্ট – লাইফ মুভমেন্ট” –এর সূচনা করেছেন। এই উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সচেতন জীবনশৈলীর বিষয়ে বিভিন্ন সংগঠন, সমাজ এবং ব্যক্তি বিশেষ কিভাবে বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সচেতন জীবনশৈলীর অনুসরণ করবেন সেবিষয়ে শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও গবেষকরা তাঁদের মতামত ও পরামর্শ জানাবেন। লাইফ গ্লোবাল কল ফর পেপারস –এ এই পরামর্শ ও মতামতগুলি তুলে ধরা হবে।
এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক এই উদ্যোগ আজ থেকে শুরু হল। আমরা পরিবেশের জন্য জীবনশৈলীর আন্দোলন ‘লাইফ’-এর সূচনা করলাম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মানব কেন্দ্রিক যৌথ উদ্যোগে স্থিতিশীল উন্নয়নকে আরো শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার সময় এসেছে, যার মাধ্যমে আমাদের গ্রহ যে সব সমস্যাগুলির সম্মুখীন, সেগুলি সমাধান করা যাবে।
শ্রী মোদী জোর দিয়ে বলেন, গত বছর COP26 –এ তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী এই উদ্যোগ গৃহীত হয়। ‘লাইফ’ –এর উদ্দেশ্য হল, আমাদের গ্রহের প্রাকৃতিক নিয়মের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে জীবনযাত্রা অতিবাহিত করা, যাতে গ্রহের কোনো ক্ষতি না হয়। যাঁরা এই জীবনযাত্রা মেনে চলেন, তাঁদের গ্রহ দরদী মানুষ – ‘প্রোপ্ল্যানেট পিওপল’ বলে আখ্যাহিত করা হবে। অতীতের থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে, ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে মিশন লাইফ বর্তমান যুগে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেবে। সম্পদের ব্যবহার কমানো, সেগুলিকে আবারও ব্যবহার করা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা এই উদ্যোগের অঙ্গ। আমাদের সংস্কৃতি এবং জীবনশৈলীর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বৃত্তীয় অর্থনীতি।
প্রধানমন্ত্রী ১৩০ কোটি ভারতবাসীকে ধন্য়বাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের দেশের পরিবেশের জন্য তাঁদের সাহায্যেই তিনি অনেক কিছু করতে পেরেছেন। . শ্রী মোদী বলেন, আজ দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঘ, সিংহ, লেপার্ড অথবা হাতি সকলেরই সংখ্যা বেড়েছে। নির্ধারিত সময়ের ৯ বছর আগেই মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ জীবাশ্ম নয়, এধরণের জ্বালানীর সাহায্যে উৎপাদিত হচ্ছে। সৌরশক্তির ব্যবহারের পরিমাণ ১৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, আজ ভারত নির্ধারিত ৫ মাস আগেই জ্বালানীতে ১০ শতাংশ ইথানল মিশ্রনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। এই সাফল্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন, ২০১৩-১৪ সালে জ্বালানীর মধ্যে ১.৫ শতাংশ ইথানল মেশানো হত। ১০১৯-২০ সময়কালে এই বেড়ে দাঁড়ায় ৫ শতাংশ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানীর বিষয়টিকে অত্যন্ত অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এবিষয়ে আরো উদ্ভাবনের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। যখন প্রযুক্তি এবং প্রথার মেলবন্ধন ঘটে , তখন জীবনযাত্রার ধারণার পরিবর্তন ঘটে।
শ্রী মোদী এই প্রসঙ্গে মহাত্মা গান্ধীর কথা উল্লেখ করে বলেন, বাপু কার্বন নিঃসরণ মুক্ত জীবনশৈলীর কথা বলতেন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা এখন বিভিন্ন স্থিতিশীল বিষয়গুলিকে বিবেচনা করবো। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের উদ্দেশে বিভিন্ন সম্পদের পুনর্ব্যবহার, যথাযথ ব্যবহার এবং সেগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার নীতি সকলের অনুসরণ করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। আমাদের গ্রহ একটিই, কিন্তু আমাদের উদ্য়োগ প্রচুর। “উন্নত পরিবেশের জন্য এবং বিশ্বের ভালোর জন্য ভারত যে কোনো উদ্যোগকে সমর্থন করতে প্রস্তুত। আমাদের অতীত ইতিহাস সেটিই বলছে।“
এই অনুষ্ঠানে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চোরম্যান মি. বিল গেটস, পরিবেশ সংক্রান্ত অর্থনীতিবিদ লর্ড নিকোলাস স্টার্ন, নুজ থিয়োরির লেখক অধ্যাপক কাস সানস্টেইন, ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইন্সটিটিউটের -এর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক ও সভাপতি শ্রী অনিরুদ্ধ দাশগুপ্ত, ইউএনইপি –র কর্ণধার মিস ইংগার অ্যান্ডারসন, ইউএনইপি –র কর্ণধার মি. আকিম স্টেনার এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের সভাপতি মি. ডেভিড ম্যালপাস উপস্থিত ছিলেন। এরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র যাদব, নীতি আয়োগের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শ্রী অমিতাভ কান্তও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
মি. গেটস বলেন, কার্বন নিঃসরণ কমাতে ভারতে নেতৃত্ব এবং উদ্যোগে তিনি অনুপ্রাণিত। “সকলের সংঘবদ্ধ উদ্যোগের মাধ্যমে লাইফ আন্দোলনের সম্ভাবনার কথা জেনে তিনি অত্যন্ত উৎসাহিত বোধ করছেন। গ্রীণ হাউস গ্যাসের সমস্যা দূর করতে আমাদের নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে এবং একাজে সকলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তিগুলির সকলের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে। এর জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগের যেমন প্রয়োজন, পাশাপাশি সরকারী, বেসরকারী অংশীদারিত্ব এবং মানুষের চাহিদারও দরকার রয়েছে। ব্যক্তিগত চাহিদা বাজারে অনুভূত হলে, সরকারী এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি এই উদ্ভাবনের কাজে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হবে। আর এর মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি পাবো।” মি. গেটস আরো বলেছেন, “পরিবেশবান্ধব আচার আচরণকে উৎসাহিত করতে এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগে নাগরিকদের নেতৃত্ব দানের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানাই। একযোগে আমরা সকলে মিলে একটি পরিবেশবান্ধব শিল্প বিপ্লব নিশ্চিত করতে পারবো।” তিনি আরো বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার সমাধানের জন্য যৌথভাবে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার প্রয়োজনীয়তা যথেষ্ট এবং আমরা জলবায়ু সংক্রান্ত যে লক্ষ্য ধার্য করেছি, তা পূরণে ভারতের ভূমিকা ও নেতৃত্ব দান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” অধ্যাপন সানস্টেইন বলেন, পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার সমাধান এবং মানুষের আচরণের পরিবর্তন আনার জন্য ভারত ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমাদের কাছে ভারত, অনুপ্রেরণার উৎস। আমরা ভারতের পরামর্শগুলির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি। অধ্যাপক এই অনুষ্ঠানে মানুষের আচরণ পরিবর্তনের জন্য ইস্ট ফ্রেমওয়ার্কের কথা উল্লেখ করেন। ইস্টের অর্থ সহজ ও আকর্ষণীয় সামাজিক উদ্যোগ যথাযথ সময়ে গ্রহণ করা। তিনি এই উদ্যোগে আনন্দ যোগ করার জন্য ‘ফান’ শব্দটির এস অক্ষরটি যোগ করে বলেন, এখন থেকে ইস্ট ফ্রেমওয়ার্কের নতুন নাম ফিস্ট। অধ্যাপন সানস্টেইন বলেন, পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন উদ্যোগ সব সময় আনন্দের সৃষ্টি করে, যা সম্প্রতিক সময়ে ভারত সকলকে দেখিয়েছে।
ইউএনইপি –র কর্ণধার মিস ইংগার অ্যান্ডারসন এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর লাইফ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। “১০০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশ ভারতে উদ্ভাবন ও শিল্পোদ্যোগের এক নতুন জোয়ার এসেছে। ভারত আন্তর্জাতিক স্তরে পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে।”
ইউএনইপি –র কর্ণধার মি. স্টেনার বলেন, ভারতের মতো দেশগুলিই আন্তর্জাতিক স্তরে জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণে চালিকাশক্তির কাজ করবে। আন্তর্জাতিক সৌরজোট, কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং ওয়ান সান, ওয়ান ওয়ার্ল্ড, ওয়ান গ্রীড –এর মতো উদ্যোগগুলির মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হবে।
শ্রী দাশগুপ্ত বহু প্রতীক্ষিত এই আন্দোলনের সূচনা করায় এবং কিভাবে আমরা আমাদের গ্রহের যত্ন নিতে পারি, সম্পদের ব্যবহার করতে পারি এবং কোন ধরণের জীবনশৈলী মেনে চলবো, সেবিষয়ে আলোচনা শুরু করার জন্য শ্রী মোদীকে ধন্য়বাদ জানিয়েছেন।
গ্লাসগোয় COP26 –এ প্রধানমন্ত্রীর নজরকাড়া ভাষণের কথা উল্লেখ করে লর্ড স্টার্ন বলেন, উন্নয়নের নতুন একটি পথের দিশা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, যা অনুপ্রেরণাদায়ক। “জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থ রক্ষায় একবিংশ শতাব্দীতে উন্নয়নযাত্রায় এটি নতুন একটি উদ্যোগ।”
বিশ্ব ব্যাঙ্কের সভাপতি মি. ডেভিড ম্যালপাস পরিবেশ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ভারতীয় তত্ত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বিভিন্ন ভারতীয় লিপির কথা উল্লেখ করেন। ২০১৯ সালে গুজরাটে সিভিল সার্ভিসের দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার সময় তিনি পরিবেশ সংক্রান্ত এই উদ্যোগের গুরুত্বের উপলদ্ধি করেন। মি. ম্যালপাস, পোষণ, আশা এবং স্বচ্ছ ভারতের মতো ভারতের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এগুলির মধ্য দিয়ে আর্থিক সমন্বয় এবং স্থানীয় স্তরে উদ্যোগ গ্রহণ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার সমাধানের জন্য রাষ্ট্রসংঘের ২৬তম সম্মেলন COP-26 গত বছর গ্লাসগোয় অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ‘লাইফ’ –এর ধারণা তুলে ধরেন। যথাযথভাবে জীবনের প্রয়োজনে সম্পদের ব্যবহার করে পরিবেশ সচেতন জীবনশৈলী গড়ে তোলাই এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে বিবেচনাহীনভাবে সম্পদের অপচয় বন্ধ করা সম্ভব হবে।
CG/CB/SFS
On #WorldEnvironmentDay, let us pledge to make 'LiFE – Lifestyle For Environment' a global mass movement. https://t.co/prxaGXf9R9
— Narendra Modi (@narendramodi) June 5, 2022
Today’s occasion and the date of the occasion, both are very relevant.
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
We begin the LiFE - Lifestyle For Environment Movement: PM @narendramodi
Our planet’s challenges are well-known to all of us.
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
The need of the hour is human-centric, collective efforts and robust actions that further sustainable development: PM @narendramodi
The vision of LiFE is to live a lifestyle that is in tune with our planet and does not harm it. And those who live such a lifestyle are called “Pro-Planet People”.
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
Mission LiFE borrows from the past, operates in the present and focuses on the future: PM @narendramodi
Reduce, Reuse and Recycle are the concepts woven in our life.
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
Circular Economy has been an integral part of our culture and lifestyle: PM @narendramodi
Thanks to our 1.3 billion Indians, we have been able to do many good things for the environment in our country.
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
Our forest cover is increasing and so is the population of lions, tigers, leopards, elephants and rhinos: PM @narendramodi
Our commitment to reach 40% of installed electric capacity from non-fossil -fuel based sources has been achieved, 9 years ahead of schedule: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
We have achieved 10% ethanol blending in petrol, 5 months ahead of the November 2022 target.
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
This is a major accomplishment given that blending was hardly 1.5% in 2013-14 and 5% in 2019-20: PM @narendramodi
Mahatma Gandhi talked about a zero-carbon lifestyle.
— PMO India (@PMOIndia) June 5, 2022
In our daily life choices, let us pick the most sustainable options.
Let us follow the principle of reuse, reduce and recycle.
Our planet is one but our efforts have to be many.
One earth, many efforts: PM @narendramodi