Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কার-প্রাপকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়

প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কার-প্রাপকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়


নয়াদিল্লি, ২৪ জানুয়ারি, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কার (পিএমআরবিপি) প্রাপকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। অনুষ্ঠানে ব্লকচেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০২১ ও ২০২২ – এর পিএমআরবিপি-র পুরস্কার-প্রাপকদের পুরস্কৃত করা হয়। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শ্রীমতী স্মৃতি জুবিন ইরানী এবং দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ডঃ মুঞ্জপারা মহেন্দ্রভাই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের শ্রীমান অভি শর্মার সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী রামায়ণের বিভিন্ন প্রেক্ষিত নিয়ে তার ফলপ্রসূ উদ্যোগের কারণ সম্পর্কে জানতে চান। অভি জানিয়েছে, লকডাউনের সময় রামায়ণ সিরিয়ালটি দেখে সে অনুপ্রাণিত হয়েছে। অভি রামায়ণের কয়েকটি শ্লোক আবৃত্তি করে শোনায়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, একটি অনুষ্ঠানে তিনি শ্রীমতী ঊমা ভারতীজির শৈশবেই আধ্যাত্মিকতার বিষয়ে গভীর জ্ঞানের কথা জানতে পারেন। তিনি বলেন, মধ্যপ্রদেশের মাটিতে এমন কিছু আছে, যেখান থেকে এ ধরনের মূল্যবান মেধা উঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী অভিকে জানান, সে অনেকের অনুপ্রেরণার উৎস। এ প্রসঙ্গে তিনি একটি প্রবাদের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছে – বড় কাজে বয়স কোনও সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় না।   

কর্ণাটকের কুমারী রেমোনা এভেত্তে পেরেইরার সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভারতীয় নৃত্যের প্রতি আগ্রহের বিষয়ে জানতে চান। নৃত্যচর্চায় রেমোনা কি ধরনের বাধার সম্মুখীণ হয়েছে, সে সম্পর্কেও শ্রী মোদী জিজ্ঞেস করেন। তিনি রেমোনার মায়ের প্রশংসা করে বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মেয়ের স্বপ্ন পূরণে তিনি পিছপা হননি। শ্রী মোদী বলেন, এই বয়সেই রেমোনা যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। মহান এই দেশের শক্তি তার শিল্পকলার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয়।

ত্রিপুরার কুমারী পুহাবী চক্রবর্তীর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তার কোভিড সংক্রান্ত উদ্ভাবনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেন। পুহাবী এ প্রসঙ্গে খেলোয়াড়দের জন্য তার ফিটনেস অ্যাপটির কথাও জানায়। শ্রী মোদী জানতে চান, স্কুল, বন্ধুবান্ধব এবং অভিভাবক-অভিভাবিকাদের কাছ থেকে তার উদ্যোগের জন্য পুহাবী কি ধরনের সহায়তা পেয়ে থাকে। তিনি খেলাধূলা বজায় রেখে অ্যাপ তৈরিতে পুহাবী কিভাবে সময় বের করে, তা নিয়েও আলোচনা করেন।

বিহারের পশ্চিম চম্পারণের শ্রীমান ধীরজ কুমারের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় কিভাবে সে তার ছোট ভাইকে কুমীরের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল, সে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ভাইকে বাঁচানোর সময় ধীরজের মানসিক অবস্থা এবং বাঁচানোর পর যে সম্মান সে পেয়েছে, তার জন্য তার অনুভূতির কথাও শ্রী মোদী জানতে চান। তিনি ধীরজের সাহস ও উপস্থিত বুদ্ধির প্রশংসা করেন। ধীরজ জানিয়েছে, সে সেনাবাহিনীতে যোগদান করে দেশ সেবা করতে চায়।

পাঞ্জাবের শ্রীমান মেধাংশ কুমার গুপ্তার সঙ্গে আলাপচারিতার সময় প্রধানমন্ত্রী কোভিড সংক্রান্ত অ্যাপ তৈরিতে মেধাংশের সাফল্যের বিষয়ে জানতে চান। মেধাংশের মতো ছেলেমেয়েদের জন্যই শিল্পোদ্যোগে সরকারের উদ্যোগ ফলপ্রসূ হচ্ছে বলে তাঁর মনে হয়। বর্তমানে যুবসম্প্রদায় চাকরি খোঁজার পরিবর্তে চাকরি দেওয়ার মানসিকতায় গড়ে উঠছে।

চন্ডীগড়ের কুমারী তারুষি গৌরের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী তার কাছে জানতে চান কিভাবে সে খেলাধূলা ও পড়াশুনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে। তারুষি জানায় বক্সার মেরি কম-কে সে তার আদর্শ বলে বিবেচনা করে। কেন তার এই সিদ্ধান্ত, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তারুষি জানায়, মেরি কম মা হিসাবেও তাঁর সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন। শীর্ষে ওঠার সঙ্গে তিনি যেভাবে একজন খেলোয়াড় ও মা হিসাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন, তার জন্য সে অভিভূত। প্রধানমন্ত্রী জানান, খেলোয়াড়দের জন্য সবধরনের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রতিটি স্তরে বিজয়ী হওয়ার মানসিকতা তৈরি করার জন্য সরকার আজ উদ্যোগ নিয়েছে।   

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সকলের উদ্দেশে জানান, দেশ এখন আজাদি কা অমৃত মহোৎসব পালন করছে। এই সময়কালে পুরস্কারগুলি বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। অতীতের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অমৃতকালের আগামী ২৫ বছরে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সকলকে সচেষ্ট হতে হবে। জাতীয় কন্যা শিশু দিবস হিসাবে তিনি দেশের কন্যা শিশুদের অভিনন্দন জানান। স্বাধীনতা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বীরবালা কণকলতা বড়ুয়া, ক্ষুদিরাম বসু এবং রানী গাইদিনিলুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। “খুব অল্প বয়স থেকেই এইসব সংগ্রামীরা দেশকে স্বাধীন করতে ব্রতী হয়েছিলেন এবং নিজেদের এই কাজে উৎসর্গ করেছিলেন”।

প্রধানমন্ত্রী গত বছর দীপাবলীর দিন জম্মু-কাশ্মীরের নওশেরা সেক্টরে তাঁর সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। সেখানে তিনি বলদেব সিং ও বসন্ত সিং – এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। স্বাধীনোত্তরকালে যুদ্ধের সময় শিশু সৈনিক হিসাবে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অল্প বয়সেই বলদেব ও বসন্ত সিং সেনাবাহিনীকে সাহায্য করেছিলেন। এই সাহসী যোদ্ধাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

গুরু গোবিন্দ সিংজীর ছেলেদের সাহস ও আত্মবলিদানের উদাহরণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুব অল্প বয়সেই সাহিবজাদারা আত্মোৎসর্গের মধ্য দিয়ে তাঁদের শৌর্য প্রদর্শন করেছেন। ভারতের সভ্যতা, সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও ধর্মের জন্য গুরু গোবিন্দ সিংজীর সাহিবজাদাদের আত্মবলিদান অতুলনীয় ঘটনা। তরুণ-তরুণীদের প্রধানমন্ত্রী সাহিবজাদাদের আত্মবলিদানের বিষয়ে আরও বিশদে জানার পরামর্শ দেন।  

তিনি বলেন, দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটের কাছে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর একটি ডিজিটাল প্রতিকৃতি বসানো হয়েছে। “আমরা সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত হই দেশের প্রতি নেতাজীর কর্তব্য পরায়ণ মনোভাবের জন্য। নেতাজীর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তোমরাও দেশের প্রতি কর্তব্যের পথ অনুসরণ কর”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনও ক্ষেত্রে, যে কোনও নীতি প্রণয়নে এবং যে কোনও উদ্যোগে যুবসম্প্রদায়ের কথাই প্রথমে বিবেচনা করা হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি স্টার্টআপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ডআপ ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, মেক ইন ইন্ডিয়া, আত্মনির্ভর ভারতের জন্য জনআন্দোলন এবং আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। ভারতের যুবসম্প্রদায় দেশে-বিদেশে নতুন যুগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্ভাবন ও নতুন শিল্পোদ্যোগের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান উৎসাহের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তরুণ ভারতীয় মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকরা আজ বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির নেতৃত্ব দিচ্ছে, যা দেশের জন্য গর্বের বিষয়। স্টার্টআপ – এর দুনিয়ায় যখন আমরা ভারতীয় যুবক-যুবতীদের উন্নতি দেখতে পাই, তখন গর্ববোধ করি। যখন আমরা দেখি ভারতের যুবক-যুবতীরা উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন আমরাও গর্ববোধ করি।  

শ্রী মোদী বলেন, আগে অনেক জায়গায় মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল, আজ সেইসব ক্ষেত্রে মেয়েরা দারুণ কাজ করছে। এটিই নতুন ভারত, যে ভারত উদ্ভাবন থেকে পিছপা হয় না। আজ ভারতের হলমার্ক হ’ল – সাহস ও অধ্যাবসায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকাকরণ কর্মসূচিতে ভারতীয় তরুণ-তরুণীরা তাঁদের আধুনিক ও বিজ্ঞান মনস্ক মনোভাব দেখিয়েছে, যা অত্যন্ত প্রশংসার যোগ্য। তেসরা জানুয়ারি থেকে মাত্র ২০ দিনে ৪ কোটিরও বেশি তরুণ-তরুণী করোনার টিকা নিয়েছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানে তাঁদের নেতৃত্বের প্রশংসা করে শ্রী মোদী ‘ভোকাল ফর লোকাল’ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’-এ তরুণ-তরুণীদের দূতের ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।

 

CG/CB/SB