Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী প্রগতি ময়দানে সুসংহত যোগাযোগ করিডর প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন

প্রধানমন্ত্রী প্রগতি ময়দানে সুসংহত যোগাযোগ করিডর প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন


নয়াদিল্লি, ১৯ জুন, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ প্রগতি ময়দানের সুসংহত যোগাযোগ ব্যবস্থা করিডর প্রকল্পের অন্তর্গত মূল সূড়ঙ্গ ও ৫টি আন্ডারপাস জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। প্রগতি ময়দান পুনর্গঠন প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে সুসংহত যোগাযোগ ব্যবস্থা করিডর প্রকল্পটি গড়ে তোলা হ’ল। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল, শ্রী হরদীপ সিং পুরী, শ্রী সোম প্রকাশ, শ্রীমতী অনুপ্রিয়া প্যাটেল এবং শ্রী কৌশল কিশোর উপস্থিত ছিলেন।

এই উপলক্ষে ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে দিল্লিবাসীকে এটি সবচেয়ে বড় উপহার। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যানজট ও মহামারী এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় সমস্যার সৃষ্টি করেছে। নতুন ভারতের নতুন কর্মসংস্কৃতির প্রশংসা করে তিনি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত  কর্মী ও ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের প্রশংসা করেন। “নতুন ভারত সমস্যার সমাধান করতে শপথ গ্রহণ করেছে এবং সেই শপথ বাস্তবায়নের জন্য নিরলস কাজ করে চলেছে”।

শ্রী মোদী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চাহিদা পূরণের জন্য প্রগতি ময়দানের সংস্কারের অঙ্গ হিসাবে এই সূড়ঙ্গ নির্মাণ করা হ’ল। এ প্রসঙ্গে তিনি ক্ষোভ ব্যক্ত করে জানান, উদ্যোগের অভাব এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকায় প্রগতি ময়দানের উন্নয়ন পিছিয়ে পড়েছে। “দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রগতি ময়দানের যথেষ্ট ‘প্রগতি’ হয়নি”। এর আগে এই প্রকল্পের বিষয়ে নানা প্রচার চালানো হলেও কাজ হয়নি। “ভারত সরকার দেশের রাজধানীতে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও প্রদর্শশালা গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে”। এ প্রসঙ্গে তিনি দ্বারকায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড এক্সপো সেন্টার – এর কথা উল্লেখ করেন।

“কেন্দ্রীয় সরকার অত্যাধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে দিল্লির আমূল পরিবর্তন ঘটাচ্ছে এবং এই মহানগরকে আধুনিক করে তুলছে। পরিবর্তনের এই চিত্র ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের মাধ্যম”। শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে আফ্রিকা অ্যাভিনিউ এবং কস্তুরবা রোডে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নতুন কমপ্লেক্স – এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধানে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। এক্ষেত্রে পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতিতে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির প্রসঙ্গে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে ভারতের রাজধানী আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচিত হবে আর এই নিয়ে ভারতবাসী গর্ব করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ট্রানজিট করিডর প্রকল্পের সুবিধা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি রূপায়ণের ফলে সময় ও জ্বালানী বাঁচবে। যানজট কমে যাওয়ার ফলে পরিবেশ দূষণমুক্ত হবে। ৫ লক্ষ গাছ লাগিয়ে যে সুফল পাওয়া যায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশের সেই চাহিদা পূরণ হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহজ জীবনযাত্রার সুযোগ বৃদ্ধি করার জন্য স্থায়ীভাবে একটি সমস্যার সমাধান বাস্তবায়িত করা হ’ল। “গত আট বছরে জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা অভূতপূর্ব উদ্যোগ নিয়েছি। জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে গত আট বছরে মেট্রো পরিষেবা ১৯৩ কিলোমিটার থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০ কিলোমিটারে পৌঁছেছে”। এ প্রসঙ্গে তিনি দিল্লি – মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ে, দিল্লি – দেরাদুন এক্সপ্রেসওয়ে, দিল্লি – অমৃতসর এক্সপ্রেসওয়ে, দিল্লি – চন্ডীগড় এক্সপ্রেসওয়ে এবং দিল্লি – জয়পুর এক্সপ্রেসওয়ের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে বলেন, দিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থার সু্যোগ-সুবিধা সম্পন্ন রাজধানী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। দিল্লি – মীরাট দ্রুতগতির রেল পরিষেবার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশীয় প্রযুক্তির সাহায্যে এই প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। এর ফলে, দিল্লি্র প্রকৃত অর্থে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল হিসাবে আত্মপ্রকাশে সুবিধা হবে এবং পেশাদার, সাধারণ মানুষ, ছাত্রছাত্রী, যুবক-যুবতী, স্কুল ও অফিস যাত্রী, ট্যাক্সি – অটো চালক এবং ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।

প্রথমবার দেশের কোনও সরকার শহরাঞ্চলের প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের জন্য আরও সুযোগ-সুবিধা গড়ে তুলতে গত আট বছরে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শহরাঞ্চলে দরিদ্রদের জন্য ১ কোটি ৭০ লক্ষ পাকাবাড়ি নির্মাণ নিশ্চিত করা হয়েছে। মধ্যবিত্তদের যাতে তাঁদের নিজের বাড়ি নির্মাণ করতে পারেন, তার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিএনজি চালিত বাসকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্রের ‘ফেম’ প্রকল্প এর আদর্শ উদাহরণ।

প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য:

প্রগতি ময়দান সুসংহত যোগাযোগ করিডর প্রকল্পটি ৯২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার পুরো প্রকল্পটির ব্যয়ভার বহন করেছে। প্রগতি ময়দানে যে আন্তর্জাতিক মানের প্রদর্শশালা ও সম্মেলন কক্ষ গড়ে তোলা হবে, নতুন এই যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সেখানে বাধাহীনভাবে চলাচল করা যাবে। এর ফলে প্রগতি ময়দানে যেসব প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে, সেইসব প্রদর্শনীর আয়োজক এবং অংশগ্রহণকারীরা সহজেই এখানে পৌঁছতে পারবেন।

প্রগতি ময়দানের নীচ দিয়ে ইন্ডিয়া গেট-এর সঙ্গে মূল সুড়ঙ্গটি রিং রোডকে যুক্ত করবে। সুড়ঙ্গটিতে ছয়টি লেন রয়েছে। আলাদা আলাদা উদ্দেশ্যে প্রত্যেকটি লেনকে ব্যবহার করা যাবে। এর ফলে প্রগতি ময়দানের নীচে খুব বড় যে পার্কিং অঞ্চলটি রয়েছে সেখানে সহজেই পৌঁছনো যাবে। এই প্রকল্পের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এখানে দুটি আড়াআড়ি সুড়ঙ্গপথ মূল সুড়ঙ্গটির নীচে নির্মিত হয়েছে। এর ফলে, পার্কিং লটে যে কোনও দিক থেকে সহজেই পৌঁছনো যাবে। নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল নিশ্চিত করার জন্য এখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। উন্নত অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম, বায়ু চলাচল ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় নিকাশি ব্যবস্থা, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসিটিভি নিয়ন্ত্রণ ও সর্বসাধারণের জন্য ঘোষণারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। বহু প্রতীক্ষিত এই সুড়ঙ্গটি ভৈরোঁ মার্গ-এর বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এতদিন ভৈরোঁ মার্গ-এ ক্ষমতার থেকে বেশি যান চলাচল করত। আগামীদিনে অধিকাংশ যানবাহনই নবনির্মিত সুড়ঙ্গটি ব্যবহার করবে।

এই সুড়ঙ্গ ছাড়াও মথুরা রোডের নীচে চারটি, ভৈরোঁ মার্গ-এর নীচে একটি এবং রিং রোড ও ভৈরোঁ মার্গ-এর সংযোগ স্থলের নীচ দিয়ে আরও একটি অর্থাৎ, মোট ছয়টি আন্ডারপাস এখানে তৈরি করা হয়েছে।

 

PG/CB/SB