Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে পিএম স্বনিধি প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন

প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে পিএম স্বনিধি প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন


নয়াদিল্লি, ১৪ মার্চ, ২০২৪

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে আজ জেএলএন স্টেডিয়ামে পিএম স্বনিধি প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি ১ লক্ষ পথ হকারকে এই প্রকল্পের আওতায় ১ লক্ষ টাকা করে ঋণ বিতরণ করেন। এদের মধ্যে ছিল দিল্লির ৫০০০ পথ হকার। প্রধানমন্ত্রী ৫ জন সুবিধাভোগীর হাতে পিএম স্বনিধি ঋণের চেক তুলে দেন। দিল্লি মেট্রোর চতুর্থ পর্বে দুটি অতিরিক্ত করিডরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে ১০০-রও বেশি শহর থেকে লক্ষ লক্ষ পথ হকার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়ায় তাঁদের ধন্যবাদ জানান। অতিমারী পর্বে পথ হকাররা যে অবিচল মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, দেশ জুড়ে ১ লক্ষ পথ হকারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ টাকা সরাসরি হস্তান্তর করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দিল্লি মেট্রোর লাজপথ নগর-সাকেত-জি ব্লক এবং ইন্দ্রলোক-ইন্দ্রপ্রস্থ দুটি অতিরিক্ত করিডরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে লক্ষ লক্ষ পথ হকার কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে নিজেদের আত্মসম্মান বজায় রেখে পরিবারের প্রয়োজন মেটান। তিনি বলেন, দোকান এবং জিনিসপত্র বিক্রির গাড়ি তাঁদের ছোট হতে পারে, তবে তাঁদের জীবনে অপরিসীম স্বপ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, অতীতের সরকার পথ হকারদের কল্যাণে যত্নশীল না হওয়ায় তাঁদের জীবন অসম্মানের এবং সংগ্রামপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি জানান যে ব্যবসা চালানোর জন্য তাঁদের পুঁজি উচ্চহারে সুদের বিনিময়ে জোগাড় করতে হত। তাঁদের ঋণের জন্য বন্ধক রাখার মতো কিছু না থাকায় ব্যাঙ্কেরও সুযোগ থেকেও তাঁরা বঞ্চিত ছিল। এমতাবস্থায় ব্যবসার নথি বা ব্যাঙ্ক আমানত না থাকার ফলে ঋণ পাওয়ারও কোনো প্রশ্ন উঠত না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ভৃত্য আজ দারিদ্রাবস্থা কাটিয়ে উঠেছে। আমিও দারিদ্রের মধ্যে বসবাস করেছি। ফলে যাদের প্রতি কেউ কোনোদিন নজর করেনি, তাদের প্রতি এখন কেবল নজর দেওয়াই হচ্ছে না, বরং মোদী তাঁদের পুজোই করছেন।’ তিনি বলেন, কোল্যাটারাল হিসেবে যাদের গ্যারান্টি দেওয়ার মতো কিছু ছিল না তাঁরা আজকে মোদীর গ্যারান্টির মাধ্যমে নিশ্চয়তা প্রাপ্ত হয়েছেন। পথ হকারদের সততার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের ডিজিটাল লেনদেনের সংখ্যার ভিত্তিতে ১০, ২০ এমনকি ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৬২ লক্ষ সুবিধাভোগীকে মোট ১১,০০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী রীতিমত আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, যে এই সমস্ত সুবিধাভোগীদের অর্ধেকেরও বেশি হলেন মহিলা। 

কোভিড অতিমারীর সময় পিএম স্বনিধি প্রকল্পের সূচনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে পথ হকারদের আয় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাঁদের ডিজিটাল লেনদেনের সংখ্যার ভিত্তিতে তাঁরা ব্যাঙ্ক ঋণেরও সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, প্রতি বছর ডিজিটাল লেনদেনের এই সংখ্যার নিরিখে ১২০০ টাকা করে তাঁদের ক্যাশব্যাকের সুযোগও দেওয়া হচ্ছে যা তাঁরা ভাঙিয়ে নিতে পারেন। 

পথ হকারদের কঠোর পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেঁচে থাকার তাগিদে এঁদের অনেকেই শহর থেকে গ্রামে চলে এসেছেন। পিএম স্বনিধি, সুবিধাভোগীদের কেবলমাত্র ব্যাঙ্কর সঙ্গেই যুক্ত করে তা নয়, অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধার সঙ্গেও তাঁদেরকে যুক্ত করে। উদাহরণ স্বরূপ তাঁরা নিখরচায় রেশন, চিকিৎসা এবং গ্যাস সংযোগ পেয়ে থাকেন। এক দেশ এক রেশন কার্ড প্রকল্পে রূপান্তরমূলক অভিমুখের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে নিখরচায় রেশন পাওয়া সম্ভব। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৪ কোটি পাকা বাড়ির মধ্যে শহরের গরিবদের জন্য ১ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে। বস্তি এলাকায় পাকা বাড়ি তৈরির যে বিরাট উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে দিল্লিতে ইতিমধ্যেই ৩,০০০ পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। আরও সাড়ে ৩ হাজার সম্পূর্ণ হওয়ার মুখে। অননুমোদিত কলোনীগুলিকে দ্রুত নিয়মিতকরণের মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে এবং পিএম সূর্যঘর নিঃশুল্ক বিদ্যুৎ যোজনার আওতায় ৭৫,০০০ টাকা করে বরাদ্দ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিল্লিতে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্তদের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য বিধানের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার নিরলস কাজ করে চলেছে। এক্ষেত্রে তিনি শহুরে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য পাকা বাড়ি নির্মাণের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। এই পাকা বাড়ি নির্মাণে ৫০,০০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। ডজন খানেক শহরে মেট্রো পরিষেবা দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সেই সঙ্গে দূষণ এবং যানজট সমস্যা নিরসনে বৈদ্যুতিক বাস চালানোর কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে দিল্লি মেট্রো নেটওয়ার্কে দু-দফায় বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে। দিল্লির মতো মেট্রো পরিষেবা বিশ্বের নামমাত্র কয়েকটি শহরেই পাওয়া সম্ভব বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে নমো ভারত র‌্যাপিড রেল সংযোগ চালু হয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণে ১ হাজারেরও বেশি বৈদ্যুতিক বাস চালাচ্ছে। এছাড়াও দিল্লিকে ঘিরে অসংখ্য এক্সপ্রেসওয়ে গড়ে উঠেছে। এই উপলক্ষে তিনি গত সপ্তাহে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করেন।

যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে খেলাধুলার প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে সরকারি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলো ইন্ডিয়ার মাধ্যমে একেবারে সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের উন্নত মানের প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য মোদী নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। মোদীর ভাবনাই হল জনসাধারণের কল্যাণের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রের কল্যাণ। একেবারে শিকড় থেকে দুর্নীতি এবং তোষণ সম্পূর্ণ নির্মূল করে ভারতকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তোলাই লক্ষ্য বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শেষ বলেন, সাধারণ মানুষের স্বপ্নের ভাগিদার হয়ে মোদী তাঁদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা প্রদানের সংকল্প নিয়েছেন। 

দিল্লির লেফ্টেনেন্ট গর্ভনর শ্রী বিনয় কুমার সাক্সেনা, কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী, কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী শ্রী ভগবত কিষাণরাও কারাদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। 

PG/AB/NS…