Search

পিএমইন্ডিয়াপিএমইন্ডিয়া

সাম্প্রতিক সংবাদ

বিষয়টিকে সরাসরি পিআইবি থেকে নেওয়া হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী তুমাকুরুতে হ্যাল হেলিকপ্টার কারখানা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন

প্রধানমন্ত্রী তুমাকুরুতে হ্যাল হেলিকপ্টার কারখানা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন


নয়াদিল্লি, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ তুমাকুরু-তে হ্যাল হেলিকপ্টার কারখানা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। তিনি তুমাকুরু-তে শিল্প নগরী এবং তিপ্তুর এবং চিক্কানয়াকানাহল্লি-তে দুটি জল জীবন মিশন প্রকল্পেরও শিলান্যাস করেছেন। শ্রী মোদী হেলিকপ্টার কারখানা ঘুরে দেখেন এবং হ্যাঙ্গার কাঠামো পরিদর্শন করেন। লাইট ইউটিলিটি হেলিকপ্টারেরও উদ্বোধন করেন তিনি।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্ণাটক সাধু-সন্তদের দেশ যাঁরা দেশের পারমার্থিক জ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিক মূল্যবোধের ভারতীয় পরম্পরাকে শক্তিশালী করেছে। তিনি তুমাকুরু এবং সিদ্ধগঙ্গা মঠের অবদানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, পূজ্য শিবকুমার স্বামীর রেখে যাওয়া ‘অন্ন, অক্ষর এবং আশ্রয়’-এর পরম্পরা আজও এগিয়ে নিয়ে চলেছেন শ্রী সিদ্ধলিঙ্গস্বামী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আজ বহু কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস হল যা তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, গ্রামীণ সমাজ এবং মহিলাদের জীবনযাত্রা সহজ করবে, সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করবে এবং ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’র ধারণাকে তুলে ধরবে।

প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকের তরুণদের প্রতিভা এবং উদ্ভাবনী শক্তির প্রশংসা করে বলেন, উৎপাদন ক্ষেত্রের শক্তি প্রকাশিত হয়েছে ড্রোন থেকে তেজস যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে। “ডবল ইঞ্জিন সরকার কর্ণাটককে লগ্নিকারীদের প্রথম পছন্দে পরিণত করেছে” জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গীকৃত হ্যাল প্রকল্পের উল্লেখ করে বলেন যে ২০১৬-য় এর শিলান্যাস করাই হয়েছিল প্রতিরক্ষার প্রয়োজনে বিদেশি নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্য নিয়ে।

প্রধানমন্ত্রী আনন্দ প্রকাশ করে বলেন যে আজকাল সশস্ত্র বাহিনী যে অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করছে তার অনেকটাই তৈরি হচ্ছে ভারতে। শ্রী মোদী বলেন, “অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল থেকে ট্যাঙ্ক, বিমানবাহী পোত, হেলিকপ্টার, ফাইটার জেট, মালবাহী বিমান – ভারত এখন সবকিছু তৈরি করছে।” বিমানক্ষেত্রে আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন যে গত ৮-৯ বছরে এই ক্ষেত্রে লগ্নি বেড়েছে ২০১৪-র আগের ১৫ বছরের তুলনায় পাঁচগুণ। শ্রী মোদী বলেছেন, ভারতীয় অস্ত্রশস্ত্র শুধুমাত্র আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকেই দেওয়া হচ্ছে না, এর রপ্তানিও বেড়েছে বহুগুণ ২০১৪-র আগের তুলনায়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অদূর ভবিষ্যতে এই কারখানায় কয়েকশ’ হেলিকপ্টার তৈরি হতে চলেছে যার দ্বারা ব্যবসার পরিমাণ দাঁড়াবে ৪ লক্ষ কোটি টাকা। শ্রী মোদী বলেন, “যখন এরকম কারখানা তৈরি হয় তখন তা শুধু সশস্ত্র বাহিনীকেই শক্তিশালী করে তাই নয়, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি এবং স্বনির্ভরতার সুযোগ তৈরি করে।”

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে “ ‘নেশন ফার্স্ট’ – এই মনোভাব নিলে সাফল্য সুনিশ্চিত।” তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির কাজকর্ম ঢেলে সাজানো ও সংস্কার করার পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করা নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী হ্যাল-এর নামে সরকারকে লক্ষ্য করে সাম্প্রতিক প্রচারের উল্লেখ করে বলেন, মিথ্যা, সে যতই বড় হোক, যতই বারবার বলা হোক, সত্যের কাছে তার পরাজয় হবেই। “এই কারখানা এবং হ্যাল-এর উত্তরোত্তর শক্তি বৃদ্ধি মিথ্যার বেসাতিকে প্রকাশ করে দিয়েছে। বাস্তব তার নিজের কথাই বলে।” তিনি আরও বলেন, এই একই হ্যাল ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জন্য আধুনিক তেজস তৈরি করছে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধি করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ফুড পার্ক এবং হ্যাল-এর পরে তুমাকুরু-র জন্য বড় উপহার শিল্প নগরী যা তুমাকুরু-কে দেশের মধ্যেই একটি বড় শিল্পকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে।” শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই শহর গড়ে উঠছে ‘পিএম গতি শক্তি মাস্টার প্ল্যান’-এর অধীনে। একে যুক্ত করা হবে মুম্বাই-চেন্নাই হাইওয়ে, বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর, তুমাকুরু রেল স্টেশন, ম্যাঙ্গালুরু বন্দরের মাধ্যমে বহুমুখী যোগাযোগের সঙ্গে।

শ্রী মোদী বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার যেমন সামাজিক পরিকাঠামোর দিকে নজর দিচ্ছে, সেই একইরকম নজর দিচ্ছে মৌলিক পরিকাঠামোর দিকে। এ বছরের বাজেট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, জল জীবন মিশন-এর বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় ২০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন মা এবং বোনেরা। তাঁদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে গিয়ে আর জল আনতে যেতে হবে না। তিনি বলেন, গত তিন বছরে এই প্রকল্পের আওতায় আসা মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি গ্রামীণ পরিবার থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ কোটি গ্রামীণ পরিবার। ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান যে আপার ভদ্রা প্রকল্পের জন্য ৫,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে যাতে উপকৃত হবে তুমাকুরু, চিকমাঙ্গালুরু, চিত্রদূর্গ, দেবাঙ্গিরি এবং খরা পীড়িত মধ্য-কর্ণাটক। প্রধানমন্ত্রী সেইসব কৃষকদের কথাও উল্লেখ করেন যাঁরা বৃষ্টির জলের ওপর নির্ভরশীল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই বছরের মধ্যবিত্ত শ্রেণী-বান্ধব বাজেট ‘বিকশিত ভারত’-এর জন্য সকলের প্রয়াসকে শক্তিশালী করবে। “এই বাজেট ‘সমর্থ ভারত, সম্পন্ন ভারত, স্বয়ম্পূর্ণ ভারত, শক্তিমান ভারত, গতিমান ভারত’-এর লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ” জানিয়ে তিনি বলেন, এই জনপ্রিয়, সর্বাত্মক, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেট সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। কৃষিতে বঞ্চিত, তরুণ এবং মহিলাদের সুবিধার উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমরা তিনটি ব্যাপার মনে রেখেছিলাম – আপনাদের প্রয়োজনীয়তা, আপনাদের কি সহায়তা দিতে হবে এবং আপনাদের আয়।”

প্রধানমন্ত্রী জানান, সমাজের সেই সকল মানুষ যাঁদের সরকারি সাহায্য পাওয়া খুব দুরূহ ছিল তাঁদের জন্য ২০১৪ থেকে সরকার কি কি প্রয়াস নিয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, “হয় সরকারি কর্মসূচিগুলি তাঁদের কাছে পৌঁছত না, অথবা মাঝখান থেকে কেউ লুঠ করত।” তিনি জানান, প্রত্যেক শ্রেণীর জন্য সরকার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে যাঁরা বঞ্চিতই হতেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথম ‘কর্মচারী-শ্রমিক’ শ্রেণী অবসর ভাতা এবং বিমার সুযোগ পেয়েছেন। ‘পিএম কিষাণ সম্মান নিধি’র উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি ছোট ছোট কৃষকদের সাহায্য করার জন্য। পথবিক্রেতাদের ঋণ দেওয়ার বিষয়টিরও উল্লেখ করেন তিনি। ঐ একই মনোভাব নিয়ে এবারের বাজেট তৈরি হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পিএম বিকাশ যোজনা’ কুমোর, কামার, শিল্পী ইত্যাদি শ্রেণীর কারুশিল্পী বা বিশ্বকর্মাদের দক্ষতা বাড়ানোর এবং তাঁদের শিল্পকে উন্নত করার সুযোগ এনে দেবে।

প্রধানমন্ত্রী বঞ্চিত এবং দরিদ্রদের সাহায্যে নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। অতিমারীর সময়ে বিনামূল্যে খাদ্য দেওয়ার জন্য সরকার ৪ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে। অভূতপূর্বভাবে দরিদ্রদের আবাসনের জন্য ৭০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

শ্রী মোদী আয়করের সুবিধা ব্যাখ্যা করে বলেন, “৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়কর না থাকায় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে প্রচুর উৎসাহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ৩০ বছরের নিচে যেসব তরুণ-তরুণীর বয়স, যাঁদের নতুন চাকরি, নতুন ব্যবসা, তাঁদের অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে বেশি টাকা জমা পড়বে।” একইরকমভাবে, ১৫ লক্ষ টাকা থেকে জমার সীমা ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি হওয়ায় উপকৃত হবেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী এবং বরিষ্ঠ নাগরিকরা। লিভ এনক্যাশমেন্টে কর ছাড় পূর্বেকার ৩ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।

মহিলাদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণের মূল কারণের ওপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহিলাদের আর্থিকভাবে অন্তর্ভুক্তিকরণ করা হলে পরিবারে তাঁদের বক্তব্য প্রতিষ্ঠা পায় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তাঁদের মতামত বেশি করে বিবেচিত হয়। এই বাজেটে আমাদের মা, বোন এবং কন্যাদের আরও বেশি করে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করতে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়ে এসেছি ‘মহিলা সম্মান সেভিংস সার্টিফিকেট’। এটি ‘সুকন্যা সমৃদ্ধি’, ‘মুদ্রা’, ‘জন ধন যোজনা’ এবং ‘পিএম আবাস’-এর পরে মহিলাদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে একটি বড় উদ্যোগ।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে সবথেকে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর। কৃষকদের প্রতি পদে সাহায্যের কথা ভাবা হয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে অথবা সমবায় ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। তিনি বলেন, এতে কৃষক, পশুপালক এবং মৎস্যজীবীরা উপকৃত হবেন। কর্ণাটকের আখ চাষীরা সমবায় গড়তে সাহায্য পাবেন। তিনি জানান, অনেক নতুন সমবায় সমিতি তৈরি করা হবে। সারা দেশে তৈরি হবে অনেকগুলি গুদাম যাতে অদূর ভবিষ্যতে খাদ্যশস্য জমানো যায়। এতে ছোট ছোট কৃষকরা খাদ্য জমা রাখতে পারবেন এবং ভালো দাম পেলে বিক্রি করে দিতে পারবেন। শ্রী মোদী জানান, কয়েক হাজার সহায়তা কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে যাতে ছোট ছোট কৃষকদের স্বাভাবিক চাষের খরচ কমে।

প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটকে মিলেটের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন এবং বলেন যে এই ভাবনা নিয়েই মোটা দানাশস্যকে ‘শ্রী অন্ন’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেটে মিলেট উৎপাদনে জোর দেওয়ার উল্লেখ করেন তিনি এবং বলেন যে এতে কর্ণাটকের ছোট চাষীরাও উপকৃত হবেন।

নুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজ বোম্মাই, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রী শ্রী এ নারায়ণস্বামী এবং রাজ্যের অন্য মন্ত্রীরা।

 

PG/AP/DM/