মহাত্মা গান্ধীর তিরোধান দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের নওসারি জেলার ডান্ডিতে জাতীয় লবণ সত্যাগ্রহ স্মারক জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন।
এই স্মারক প্রাঙ্গণে শ্রী মোদী মহাত্মা গান্ধী সহ ৮০ জন সত্যাগ্রহীর মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন। এই সত্যাগ্রহীরা গান্ধীজীর সঙ্গে ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আইনের বিরুদ্ধে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরির জন্য ঐতিহাসিক ডান্ডি লবণ অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৩০ সালে ঐতিহাসিক লবণ অভিযানের বিভিন্ন ঘটনা ও কাহিনী এই স্মারকের দেওয়ালে বর্ণিত হয়েছে। সমগ্র স্মারক প্রাঙ্গণকে আলোকিত করার জন্য সৌরশক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। সৌরশক্তি উৎপাদনের জন্য কৃত্রিম গাছের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সৌরপ্যানেল বসানো আছে। প্রধানমন্ত্রী সমগ্র স্মারক চত্বর ঘুরে দেখেন।
এই উপলক্ষে এক জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী স্মারক নির্মাণের কাজে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “এই স্মারক স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের দেশের মানুষের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকে স্মরণ করিয়ে দেয়”। ডান্ডি স্মারকে মহাত্মা গান্ধীর আগ্রহ, স্বচ্ছতাগ্রহ ও সত্যাগ্রহের আদর্শকে একত্রিত করা হয়েছে। এই স্মারক আগামী দিনগুলিতে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠবে বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গান্ধীজীর পরম্পরাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমাদের সরকার খাদি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ২০০০টি প্রতিষ্ঠানের আধুনিকীকরণ করেছে। এই উদ্যোগের ফলে লক্ষ লক্ষ হস্তশিল্পী ও খাদির সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা বিপুল উপকৃত হয়েছেন। খাদি এখন কেবল ফ্যাশনেরই বার্তাবাহক নয়, মহিলা ক্ষমতায়নেরও প্রতীক হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে স্বদেশী যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, তেমনই হস্তশিল্পও দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠবে। সরকার প্রতি বছর ৭ই আগস্ট দিনটিকে হস্তশিল্প দিবস হিসাবে উদযাপনের কথা ঘোষণা করেছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁতবস্ত্রের প্রচার ও প্রসারই এই দিনটি উদযাপনের মূল লক্ষ্য।
স্বচ্ছতা বজায় রাখার ব্যাপারে গান্ধীজী যে গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন, সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এক পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা মহাত্মার আদর্শ ও মূল্যবোধগুলিকে আত্মস্থ করেছি। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের প্রভাব কতটা প্রসারিত হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরে শ্রী মোদী জানান, গ্রামাঞ্চলে স্বচ্ছতার পরিধি ২০১৪’র ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে এনডিএ সরকারের শাসনকালে এ পর্যন্ত ৯৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
গ্রামে গ্রামে পরিচ্ছন্ন রান্নার জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং স্বাস্থ্য পরিচর্যা থেকে আর্থিক পরিষেবার মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলি পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টার কথা পুনরায় ব্যক্ত করে শ্রী মোদী বলেন, গ্রামোদয় থেকে ভারতোদয় – এটাই এখন আমাদের মূল মন্ত্র ও আদর্শ।
একদিনের গুজরাট সফরে প্রধানমন্ত্রী এর আগে সুরাট বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের সম্প্রসারণমূলক কাজের শিলান্যাস ও একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন। সুরাটে তিনি এক অনুষ্ঠানে অত্যাধুনিক রাসিলাবেন সেবন্তীলাল ভেনাস হাসপাতাল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। পরে, সুরাট ইন্ডোর স্টেডিয়ামে নতুন ভারত যুবসম্মেলনে ভাষণ দেন।
***
CG/BD/SB…